ঢাকা , শুক্রবার, ০২ মে ২০২৫ , ১৯ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
অন্তর্বর্তী সরকারের ভুল সিদ্ধান্তে অর্থনীতি আরও সংকটে- রিজভী অবিলম্বে সাংবাদিক ছাঁটাই বন্ধসহ ১০ম ওয়েজবোর্ড গঠন করুন চাপ সামাল দিতে পরিবহন সক্ষমতা বাড়াচ্ছে বেবিচক রমনা বটমূলে বোমা হামলা হাইকোর্টের রায় ৮ মে ৩০০ শিক্ষক ও গবেষককে সম্মাননা দিবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বিএসইসির ২১ কর্মকর্তা সাময়িক বরখাস্ত করমুক্ত আয়সীমা সাড়ে ৪ লাখ টাকা করার পরামর্শ এফবিসিসিআইয়ের দাম কমিয়েও ক্রেতা মিলছে না সিমেন্টের চিন্ময় দাসের জামিন চেম্বারে স্থগিত সংখ্যালঘুদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় আমরা জীবন দিতেও প্রস্তুত-মির্জা ফখরুল যুদ্ধের দোরগোড়ায় পাকিস্তান-ভারত প্রস্তুতি থাকতে হবে যুদ্ধের রাজনৈতিক বিতর্ক ও আর্থিক সংশ্লেষ নেই এমন সংস্কার সুপারিশ ইসির রাজধানীতে পর পর তিনদিনে ৪ সমাবেশ আজ মহান মে দিবস রণতরী থেকে সমুদ্রে পড়ে গেছে যুক্তরাষ্ট্রের ৮১০ কোটির বিমান পাকিস্তানের পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ে জল্পনা-কল্পনা দাম আড়াই হাজার কোটির বেশি ইয়েমেনে যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ হামলা সামরিক অভিযানের সবুজ সংকেত মোদির

দাম কমিয়েও ক্রেতা মিলছে না সিমেন্টের

  • আপলোড সময় : ০২-০৫-২০২৫ ১২:০৫:৫০ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ০২-০৫-২০২৫ ১২:০৫:৫০ পূর্বাহ্ন
দাম কমিয়েও ক্রেতা মিলছে না সিমেন্টের
দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সরকারের বিভিন্ন অবকাঠামোগত উন্নয়ন তথা নির্মাণ খাতে ধীরগতি চলছে। পাশাপাশি বেসরকারি ও ব্যক্তি মালিকানাধীন উন্নয়ন কার্যক্রমেও ধীরগতি চলছে। সারা দেশের মতো নারায়ণগঞ্জেও এই পরিস্থিতি বিরাজমান। আর এই ধীরগতির প্রভাব পড়েছে নির্মাণ সামগ্রীর অন্যতম প্রধান উপকরণ সিমেন্ট ব্যবসায়।
গত বছরের ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর নির্মাণ সামগ্রীর অনেক উপকরণের দামই কমে গিয়েছিল। স্থিতিশীল ছিল একমাত্র সিমেন্টের দাম। কিন্তু এবার সিমেন্টের দামও যেন কমে আসছে। আর এই দাম কমিয়েও যেন চাহিদা বাড়ানো সম্ভব হচ্ছে না। বেচাকেনা প্রায় অর্ধেকেরও বেশি নেমে এসেছে। অনেক সময় ডিলাররা নিজেদের ব্যবসা টিকিয়ে রাখার স্বার্থে নামমাত্র লাভেই সিমেন্ট বিক্রি করে দিচ্ছেন।
ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ক্রাউন সিমেন্ট বস্তাপ্রতি ৫৩০ টাকা থেকে ৪৯০ টাকা, আকিজ সিমেন্ট বস্তাপ্রতি ৫২০ টাকা থেকে ৪৮০ টাকা, প্রিমিয়ার সিমেন্ট বস্তাপ্রতি ৫০০ টাকা থেকে ৪৭০ টাকা, শাহ সিমেন্ট ৫১০ টাকা থেকে ৪৮০ টাকা ও আমান সিমেন্ট ৫১০ টাকা থেকে ৪৭০ টাকায় নেমে এসেছে। ঠিক এভাবে প্রতিটি সিমেন্টেই বস্তাপ্রতি ৩০ থেকে ৪০ টাকা কমে গেছে।
নারায়ণগঞ্জে অনেকদিন ধরেই নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন শাহবাজ। বর্তমানে তিনি লেবার সর্দার হিসেবে রয়েছেন। শাহবাজ বলেন, বিগত কয়েক বছর এরকম পরিস্থিতি ছিল না। কোনো কাজ নেই, সারাদিন আমাদের বসে সময় কাটে। কাজ হলে তো আমরা আর বসে থাকতাম না। আর আমাদের কাজ বন্ধ থাকলে সিমেন্টসহ নির্মাণ সামগ্রীর দামও কম থাকাটাই স্বাভাবিক।
আয়াত এন্টারপ্রাইজের প্রোপ্রাইটর মো. ইসমাইল হোসেন নয়ন বলেন, বর্তমানে বেচাকেনা একেবারেই বন্ধ। সারাদিন চলে যায়, কোনো ক্রেতা পাই না। এখন মানুষের কাছে টাকা নেই। দেশ একটা অস্থিতিশীল পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে। যার কারণে মানুষের মধ্যে কিছুটা অস্থিরতা রয়েছে। সেটার প্রভাব আমাদের নির্মাণ সামগ্রীর ওপর পড়েছে। শহরের বোয়ালিয়াখাল এলাকার তুরাগ ও তুরান এন্টারপ্রাইজের মালিক মো. ফারুক মাল। তিনি ক্রাউন সিমেন্ট, আকিজ সিমেন্ট ও প্রিমিয়ার সিমেন্টসহ তিন কোম্পানির ডিলার হিসেবে রয়েছেন।
মো. ফারুক মাল বলেন, ব্যবসা এখন ভালো না। দিন দিন কাজকর্ম বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। সরকারি কোনো কাজ কর্ম নেই। আমার লেবার বসে রয়েছে। দেশের বর্তমান পরিস্থিতির কারণে কোনো কাজকর্ম হচ্ছে না। সিমেন্টের দাম কমেছে। তারপরও কোনো ক্রেতা পাওয়া যায় না। বেচাকেনা একেবারেই বন্ধ হয়ে গেছে।
আকিজ সিমেন্ট কোম্পানির সেলস ও মার্কেটিং অফিসার মো. হাবিবুর রহমান রিগান বলেন, বর্তমান বাজারে সিমেন্টের রেট কমিয়ে দিয়েও বিক্রি বাড়ানো সম্ভব হচ্ছে না। সারাদেশেই অবকাঠামোগত উন্নয়ন কাজ বন্ধ রয়েছে। অবকাঠামোগত উন্নয়ন না হলে সিমেন্টসহ নির্মাণ সামগ্রীর বেচাকেনা বাড়ে না। সেইসঙ্গে সব প্রজেক্ট বন্ধ রয়েছে। পাশাপাশি যাদের কাছে টাকা তারা এখন দেশে নেই। সবমিলিয়ে সিমেন্টের বাজার ভালো যাচ্ছে না।
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্রথম শ্রেণির ঠিকাদার মো. রফিকুল ইসলাম সানু বলেন, বর্তমানে সরকারের উন্নয়নমূলক কাজ স্থিতিশীল হয়ে আছে। কোনো কাজই চলমান নেই। যার কারণে সিমেন্টসহ নির্মাণ সামগ্রীর ব্যবসা ভালো যাচ্ছে না। উন্নয়ন কাজ চলমান থাকলে নির্মাণ সামগ্রীর বেচাকেনা বাড়ে। সেইসঙ্গে দামও বাড়ে। কিন্তু বর্তমানে তাদের ব্যবসা ভালো যাচ্ছে না। বাজারে চাহিদা দিন দিন কমে যাচ্ছে।
রূপান্তর লিভিং লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ফরিদুল মাইয়ান বলেন, বর্তমানে নির্মাণ সামগ্রীর ব্যবহার অনেকটা কমে গেছে। এর কারণ মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থা আগের মতো নেই। এই সময়ে যারা একান্ত কাজ না করলে নয়, তারাই কাজ করছে। নতুন অনেকেই কাজ ধরছে না। তারপর অনেক রাজনৈতিক অস্থিরতা আছে। নির্মাণ সামগ্রী বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অবস্থার সঙ্গে সম্পৃক্ত। তিনি আরও বলেন, দেশের অর্থনীতি যখন ভালো হয় তখন দেশের নির্মাণ কাজ বাড়ে, স্থাপনা বাড়ে, কাজের গতি বাড়ে। এই নির্মাণ সেক্টরের সঙ্গে ২৩৬টি কোম্পানি জড়িত। এখন এই ২৩৬টি সেক্টরেই অনেকটা ধস নেমে গেছে। যে কারণে সিমেন্টসহ অন্যান্য নির্মাণ সামগ্রীর বেচাকেনা কমে গেছে। সবগুলো নির্মাণ সামগ্রী প্রতিষ্ঠান দুর্বলভাবে বেঁচে আছে।
 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স