নড়াইল প্রতিনিধি
নড়াইলের কালিয়া উপজেলার নড়াগাতী থানার চর জয়নগর গ্রামটি বর্তমানে পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে। আতঙ্কে ঘর ছাড়া নারীরাও জীবনের নিরাপত্তার দাবি জানিয়েছেন। গত রমজান মাসে চর জয়নগর গ্রামের সৌদি প্রবাসী আকরাম শেখ (৪৩) হত্যাকাণ্ডের জেরে প্রায় ২১ বাড়িতে ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। হত্যাকাণ্ড ও ভাঙচুর-লুটপাটের ঘটনায় এরই মধ্যে পুলিশ ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।
গত বুধবার সকালে গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, মধুমতী নদীর তীরবর্তী চর জয়নগর গ্রামটি সৌদি প্রবাসী অধ্যুষিত হওয়ায় এ গ্রামের অধিকাংশ ঘরবাড়ি পাকা। কিন্তু প্রতিপক্ষের ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগে মাটিতে মিশে গেছে অনেক বাড়ি। এমন প্রায় ১৫-২০টি বাড়ি ঘুরে কোনো মানুষ দেখা যায়নি। বাড়িগুলো বসবাসের অযোগ্য অবস্থায় পরে আছে।
বিভিন্নভাবে আশ্রয় নেওয়া নারীরা বলেন, ‘আমাদের বাড়ি-ঘরের ওপর তাণ্ডব চালানো হয়েছে। জীবনের ঝুঁকির কারণে আমরা গ্রামছাড়া। আমরা এসব ঘটনার ন্যায়বিচার চাই। আমরা আমাদের বাড়ি-ঘরে ফিরে যেতে চাই।’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আধিপত্য বিস্তার ও পূর্ব বিরোধের জেরে গত ১২ মার্চ সন্ধ্যায় চর জয়নগর গ্রামের একটি দোকানে সৌদি প্রবাসী আকরাম শেখকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে প্রতিপক্ষের লোকজন। পরে তাকে গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতালে নেওয়ার পথে মৃত্যু হয়।
এই খবরে ওই দিন গ্রামের পিরু শেখ, ইকরাম শেখ, দ্বীন ইসলাম মোল্যার নেতৃত্বে ৫০-৬০ জন প্রতিপক্ষ আনসার জমাদ্দার, ইসমাইল জমাদ্দার, ফহম সিকদার, সৈয়দ শেখ, ইমরান শেখ, ইমরুল শেখ, তোরাফ খান, মাফুল শেখ, ইউসুফ শেখ, রহমত শেখ, সদর শেখ, সিরু শেখ, সারু শেখ, বাদশা শেখ, মাহিন হাওলাদার, আইয়ুব আলী জমাদ্দার, আশরাফ আলী জমাদ্দার, সবুর জমাদ্দার ও ইকরাম জমাদ্দারসহ বেশ কয়েকজনের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। এ ঘটনায় একটি মামলা করেছে ভুক্তভোগী পরিবারগুলো।
এ দিকে হত্যাকাণ্ডের ৫ দিন পর নিহতের ভাই ইকরাম শেখ বাদী হয়ে ৪৬ জনের নাম উল্লেখসহ ১০-১২ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে নড়াগাতী থানায় হত্যা মামলা করেন।
এ বিষয়ে নড়াগাতী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শরিফুল ইসলাম বলেন, আকরাম শেখ হত্যা মামলায় এজাহারভুক্ত আসামি আনসার জমাদ্দার ও বকুল শেখকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া বাড়িঘর ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনার মামলায় দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata
