ঢাকা , শনিবার, ৩১ মে ২০২৫ , ১৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
আমতলীতে শহিদ রাষ্টপতি জিয়াউর রহমানের মৃত্যু বার্ষিকীতে সেচ্ছায় রক্তদান ও আলেচনা সভা মগবাজারে কুপিয়ে ব্যাগ ছিনতাইয়ের ঘটনায় গ্রেফতার ৩ ২ জুন বাজেট ঘোষণা স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা নিহত বাংলাদেশের জন্য জাপান গুরুত্বপূর্ণ শ্রমবাজার : প্রেস সচিব বাড়ছে নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা সরকারের আশ্বাসে প্রাথমিক শিক্ষকদের কর্মবিরতি স্থগিত ডিসেম্বরের আগেই জাতীয় নির্বাচন দেয়া সম্ভব -তারেক রহমান দেশে গণতন্ত্রের নিরাপদ যাত্রা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে : খালেদা জিয়া নির্বাচন ইস্যুতে এনসিপির সমালোচনায় ববি হাজ্জাজ আনু মুহাম্মদের স্ট্যাটাসে আসিফ নজরুলের বিস্ময় প্রকাশ জিয়াউর রহমানের ৪৪তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ উত্তাল নগর ভবনে পা রাখলেন ইশরাক আরও উজ্জীবিত আন্দোলনকারীরা সচিবালয়ে কর্মচারীদের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা প্রশাসনে ১০ মাসেও ফেরেনি শৃঙ্খলা ভারী বৃষ্টিতে বন্যার শঙ্কা শেখ হাসিনার আমলে ২৩৪ বিলিয়ন ডলার পাচার অবাধ-নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনে একসঙ্গে কাজ করবে সরকার, ইসি ও জাতিসংঘ মিডিয়ার হেডলাইন দেখে মন্তব্য করা যায় না-ইশরাক ইস্যুতে সিইসি নানামুখী চাপে দেশের অর্থনীতি
নির্বাচন পরবর্তী রোডম্যাপ চান তারা

কূটনীতিকদের আগমনে সরগরম অভিজাতপাড়া

  • আপলোড সময় : ১৮-০৪-২০২৫ ০৭:০৫:১৬ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১৮-০৪-২০২৫ ০৭:০৫:১৬ অপরাহ্ন
কূটনীতিকদের আগমনে সরগরম অভিজাতপাড়া
* সংস্কার ও নির্বাচন নিয়ে দলগুলোর সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক
* নিজেদের মধ্যেও চলছে আলোচনা
* নির্বাচন নিয়ে আলোচনা যত এগোবে কূটনৈতিক তৎপরতাও তত বাড়বে


জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে কূটনৈতিক তৎপরতার বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশে কিভাবে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হবে সে বিষয়ে তারা সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে বৈঠক করছেন।  রাজনৈতিক পরিস্থিতি, সংস্কার, গণতন্ত্র ও পরবর্তী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকের পাশাপাশি বিদেশি মিশনগুলোর কূটনীতিকরাও নিজেদের মধ্যে নানা ইস্যুতে বৈঠক করছেন। বিদেশি কূটনীতিকদের আগমনে সরগরম হয়ে উঠেছে ঢাকার কূটনৈতিকপাড়া।
গত আগস্টে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত উচ্চপর্যায়ের ২০টিরও বেশি বিদেশি কূটনৈতিক প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ সফর করেছেন। গত বুধবার ঢাকায় পৌঁছান পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব আমনা বালুচ। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল পৌনে ১১টার দিকে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মো. জসীম উদ্দিন ও পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব আমনা বালুচের ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। দীর্ঘ সময় পর দুই দেশের মধ্যে এমন আলোচনাকে ইতিবাচক অবস্থান থেকে দেখছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, ইসলামাবাদের সঙ্গে ঢাকার বাণিজ্যিক সম্পর্ক বৃদ্ধিতে দুই দেশকেই মনোযোগী হতে হবে। এছাড়া আলোচনায় একাত্তরের অমীমাংসিত বিষয়গুলো সমাপ্ত হবে। গত ৪ অক্টোবর মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম ঢাকা সফর করেন। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর এটিই ছিল কোনো বিদেশি সরকারপ্রধানের প্রথম ঢাকা সফর। তিনি দুই দেশের সম্পর্ক এগিয়ে নেয়ার বার্তার পাশাপাশি দেশের সংস্কার প্রক্রিয়ার ওপরও গুরুত্ব দেন। একই মাসে অস্ট্রেলিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী টনি বার্গের নেতৃত্বে আসা একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল নির্বাচন ও সংস্কার ইস্যুতে গুরুত্ব দেয়। চলতি বছরের জানুয়ারিতে যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্ট সদস্য রূপা হক এবং জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বাংলাদেশ সফরে এসে নির্বাচন ও সংস্কার প্রসঙ্গে কথা বলেন। বর্তমানে ঢাকায় অবস্থান করছেন মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি নিকোল অ্যান চুলিক ও তার সফরসঙ্গীরা। তাদের সফরের মূল এজেন্ডা নির্বাচন ও সংস্কার প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশকে সহায়তা দেয়ার উপায় নিয়ে আলোচনা করা। প্রতিনিধিদলটি এরই মধ্যে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে নির্বাচন নিয়ে আলোচনা করেছে।
কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলেছেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে আলোচনা যত এগোবে, দেশে কূটনৈতিক তৎপরতাও তত বাড়বে। নির্বাচন কীভাবে হবে, কারা অংশ নেবে কিংবা নির্বাচনের পরে কী হবে এ নিয়ে এখন রোডম্যাপ চান বিদেশি কূটনীতিকরাও। তাই সব পক্ষের সঙ্গেই বসছেন বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা।
কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, ঢাকায় এখন প্রতিদিন গড়ে ১৫টির বেশি কূটনৈতিক বৈঠক হচ্ছে। বিদেশি মিশনের রাষ্ট্রদূত ও পলিটিক্যাল কাউন্সিলররা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে নিয়মিত আলোচনায় বসছেন, যেখানে নির্বাচনের রোডম্যাপ, সংস্কার এবং ক্ষমতায় এলে তাদের দেশ পরিচালনার রূপরেখা কেমন হবে-তা নিয়ে কথা হচ্ছে। পাশাপাশি নিজেদের মধ্যে নানা ইস্যুতে আলোচনা করছেন বিদেশি মিশনের কূটনীতিকরা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, যারা আসছে তারা স্বাভাবিকভাবেই নির্বাচন চাইবে। অনেকেই দেশে আসছেন, প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন; কিন্তু বিনিয়োগ করছেন না। কারণ, নির্বাচন না হলে কেউ বিনিয়োগ করবে না। ব্যবসায়ীরা তাদের মূলধন নিয়ে ঝুঁকি নিতে চান না। তিনি বলেন, এই সরকারের সময়ে এর আগে যারা যুক্তরাষ্ট্র থেকে সফরে এসেছেন, তারা ছিলেন ডেমোক্র্যাট। এই প্রথম দেশে যুক্তরাষ্ট্র থেকে যারা এসেছেন তারা রিপাবলিকান। ডেমোক্র্যাটরা থাকলে একটু ফ্লেক্সিবল সিচুয়েশন হতেও পারত, কারণ অনেকের সঙ্গেই প্রধান উপদেষ্টার ব্যক্তিগত সম্পর্ক ছিল। তবে রিপাবলিকানদের বেলায় একটু ভিন্ন। রিপাবলিকানরা এখন নির্বাচনের রোডম্যাপ চাইবে। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্র এখন সংখ্যালঘু ইস্যুতেও কথা বলবে। আমেরিকা জানতে চাইবে সংখ্যালঘু ইস্যুতে কী করা হচ্ছে। যতক্ষণ দেশে নির্বাচনের রোডম্যাপ না আসবে, ততদিন বিদেশিরা নির্বাচন নিয়ে কথা বলবেই। তিনি আরও বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বিদেশি কূটনীতিকরা নিয়মিত বৈঠকে বসছেন। কারণ, বাংলাদেশে বিদেশি যত মিশন আছে তারা তো জানতে চাইবে-ই নির্বাচন কবে হবে। এ ছাড়া বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কী অবস্থা বা তারা কীভাবে নির্বাচন করার কথা ভাবছে, নির্বাচনে কারা অংশ নেবে, নির্বাচন অন্তর্ভুক্তিমূলক (ইনক্লুসিভ) হবে কি না এ বিষয়গুলো তারা জানতে চায়, কারণ তাদের এ দেশে ইনভেস্টমেন্ট আছে। তারা আমাদের নিয়ে যতটা না চিন্তিত, তার চেয়ে বেশি ভাবছে নিজেদের বিনিয়োগ নিয়ে। কারণ, এখন তারা কোনো চুক্তিতে গেলে পরবর্তী সরকার এসে যদি তা বাতিল করে দেয়! তাই বিভিন্ন দেশ তৎপরতা বাড়াচ্ছে এবং চাইছে যেন নির্বাচিত সরকার আসে।
 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স