ঢাকা , রবিবার, ০১ জুন ২০২৫ , ১৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
সুগন্ধি চাল রফতানির অনুমতি পেলো আরও ৫২ প্রতিষ্ঠান ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে ঈদযাত্রায় ভোগান্তির শঙ্কা আম উৎপাদনে উত্তম কৃষি চর্চা সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে হবে : কৃষি সচিব বনানীতে পেট্রোল ঢেলে প্রাইভেটকারে আগুন বনানীতে পেট্রোল ঢেলে প্রাইভেটকারে আগুন সেনাবাহিনীর হাতে এনসিপি নেতা গ্রেফতার সিরাজগঞ্জে ১৬ টন সরকারি চাল জব্দ আটক ৮ ঝিনাইদহ সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে আহত বাংলাদেশির মৃত্যু টাঙ্গাইলে স্ত্রীকে গলা কেটে হত্যা, স্বামী পলাতক যশোরের শার্শা সীমান্তে বিদেশি অস্ত্রসহ দুই ব্যবসায়ী আটক শৈশবের ক্লাবে ফিরে গেলেন ডি মারিয়া রোনালদোর সঙ্গে চুক্তি নবায়ন করতে চায় আল নাসর ব্রাজিল ফুটবল ফেডারেশনের বিরুদ্ধে উঠলো নিয়ম ভঙ্গের অভিযোগ উইন্ডিজের বিপক্ষে ইংলিশদের রানের পাহাড় ৯ বছর পর ফাইনালের টিকেট পেলো আরসিবি পাকিস্তানকে বিশ্বকাপ জেতাতে চান হাসান আলি সাবেক বিসিবি সভাপতি ফারুকের দেশ ছাড়ার গুজব বিসিবির নতুন সভাপতি হলেন বুলবুল হোটেলে কথা কাটাকাটির জের বালিশচাপা দিয়ে প্রেমিকাকে হত্যা বঙ্গোপসাগরে গভীর নিম্নচাপ ঝড়ো হাওয়া ভারী বৃষ্টি

সাজা শেষেও কারাগারে ১৫৪ বিদেশি বন্দি

  • আপলোড সময় : ১৭-০৪-২০২৫ ১১:১২:৪৯ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১৭-০৪-২০২৫ ১১:১২:৪৯ পূর্বাহ্ন
সাজা শেষেও কারাগারে ১৫৪ বিদেশি বন্দি
* বর্তমানে দেশের বিভিন্ন কারাগারে বিদেশি বন্দি ৩৬৪ জন * সাজা শেষেও বন্দি ১৫৪ জন, ফেরত নেয়ায় আগ্রহ নেই সংশ্লিষ্ট দেশের * মাদক, স্বর্ণপাচার, পাসপোর্ট জটিলতা ও মানবপাচারের অভিযোগে সাজাপ্রাপ্ত * ভারতীয় বন্দি সর্বোচ্চ, বাংলাভাষী হলে ফেরত নিতে চায় দেশটি দেশের বিভিন্ন কারাগারে মুক্তির অপেক্ষায় ১৫৪ জন বিদেশি বন্দি। দীর্ঘদিন সাজার মেয়াদ শেষ হলেও প্রকৃত অভিভাবক না পাওয়ায় তাদের মুক্তি দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। পাশাপাশি ওই বন্দিদের দূতাবাসগুলোও তাদের গ্রহণ করছে না। এ নিয়ে দফায় দফায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে চিঠি দিলেও তাতে মিলছে না সাড়া। এমন পরিস্থিতিতে ওই বন্দিদের নিয়ে বিপাকে কারা কর্তৃপক্ষ। বিদেশি বন্দিদের ভাষা বুঝতে পারা নিয়েও রয়েছে জটিলতা। পাশাপাশি তাদের জন্য অতিরিক্ত ব্যয় হচ্ছে সরকারের। কারা সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে দেশের বিভিন্ন কারাগারে বিদেশি বন্দি ৩৬৪ জন। এদের মধ্যে হাজতি ১৪২ জন ও কয়েদি ৬৮ জন। এছাড়া ১৫৪ বিদেশি বন্দি মুক্তির অপেক্ষায়। কারা ভাষায় তাদের আরপি (রিলিজ প্রিজন) বন্দি বলা হয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সূত্র জানায়, মাদক চোরাচালান, অবৈধ উপায়ে স্বর্ণপাচার, প্রতারণা, জাল ডলার ব্যবসা, পাসপোর্ট জটিলতা, অবৈধ ভিওআইপির ব্যবসা ও মানবপাচারের অভিযোগে গ্রেফতার হয়ে কারাগারে রয়েছেন এসব বিদেশি বন্দি। মুক্তির অপেক্ষায় থাকা এসব বন্দি-ভারত, মিয়ানমার, পাকিস্তান ও নাইজেরিয়ার নাগরিক। এর আগে থাইল্যান্ড, ফিলিপাইন, তানজানিয়াসহ পূর্ব আফ্রিকার কিছু দেশের নাগরিক মুক্তিপ্রাপ্ত ছিলেন, দেরিতে হলেও সংশ্লিষ্ট দেশ তাদের ফিরিয়ে নিয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রমতে, সাজা শেষ হওয়ার পরও বিদেশি নাগরিকরা নিজ দেশে ফিরতে পারছেন না। ফিরিয়ে নিতে বন্দিদের নাম-ঠিকানাসহ সব তথ্য সংবলিত কাগজ ঢাকায় সংশ্লিষ্ট দেশের দূতাবাসকে দেয়া হয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ওইসব দূতাবাস/হাইকমিশনে চিঠি পাঠানো হয়। এরপরও আশানুরূপ সাড়া মিলছে না। এমন পরিস্থিতিতে বিষয়টি সমাধানে কূটনৈতিক তৎপরতা চালানো হচ্ছে। সংশ্লিষ্টদের দেয়া তথ্যমতে, ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারসহ দেশের ৬৯ কারাগারের ধারণক্ষমতা ৪২ হাজার ৮৭৭ জন। অথচ বর্তমানে কারাগারগুলোতে মোট বন্দির সংখ্যা ৭০ হাজারের বেশি। কারা সূত্র জানায়, এমনিতেই দেশের কারাগারে বন্দির ধারণক্ষমতা কম। সাম্প্রতিক প্রেক্ষাপটে বন্দির সংখ্যা আরও বেড়েছে। তাদেরই স্থান সংকুলানে সমস্যা হচ্ছে। এর মধ্যে ১৫৪ জন বন্দি কারা কর্তৃপক্ষের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভারতের সর্বোচ্চ ২১৬ জন (মুক্তিপ্রাপ্ত ১৪৬ জন), মিয়ানমারের ১২২ জন (মুক্তিপ্রাপ্ত ছয়জন), পাকিস্তানের ছয়জন (মুক্তিপ্রাপ্ত একজন), চীনের তিনজন, মালয়েশিয়ার পাঁচজন, নাইজেরিয়ার চারজন (মুক্তিপ্রাপ্ত একজন), বতসোয়ানার একজন (মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত), তানজিয়ার একজন, জর্জিয়ার একজন, বেলারুশের একজন, পেরুর দু’জন এবং বাহামার একজন কারাগারে বন্দি অবস্থায় আছেন। কারা অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, কারাগারে নিরাপত্তার জন্য বিদেশি নাগরিকদের আলাদা সেলে রাখা হয়। ওইসব সেলের বাইরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ করা হয় সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে। তবে বিদেশি বন্দিরা কারাগারের অন্য হাজতিদের মতোই একই রকম খাবার পান। ভালো খাবার না পেলে তারা কারারক্ষীদের সঙ্গে মারমুখী আচরণ করেন। এ কারণে তাদের খাবারের দিকেও আলাদা নজর দেয়া লাগে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের একটি সূত্র বলছে, কারাবন্দি বিদেশি নাগরিকদের অধিকাংশেরই বৈধ কাগজ নেই। তারা নিজের দেশের নাম বললেও সংশ্লিষ্ট দেশের দূতাবাস তাদের নাগরিক হিসেবে মানতে নারাজ। বন্দিদের পরিচয় সম্পর্কে জানতে চেয়ে সংশ্লিষ্ট দেশের দূতাবাসে চিঠি দিয়ে যোগাযোগ করা হলেও সময়মতো উত্তর পায় না মন্ত্রণালয়। এতে সরকারের বাড়তি টাকাও ব্যয় হয়। পাশাপাশি এসব বন্দি বেশিরভাগ সময়ই উগ্র আচরণ করেন। বিশেষ করে আফ্রিকা অঞ্চলের নাগরিকদের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ বেশি। এ কারণে তাদের সামলাতেও বাড়তি কারারক্ষী মোতায়েন করতে হয়। কারা অধিদফতরের একটি সূত্র জানায়, কক্সবাজার ও চট্টগ্রামে আটক বেশিরভাগ বন্দি-ই মিয়ানমারের নাগরিক। এদের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দূতাবাসে যোগাযোগ করলে ওইসব বন্দি তাদের দেশের নাগরিক না বলে সাফ জানিয়ে দিচ্ছে। এ বিষয়ে সহকারী কারা মহাপরিদর্শক (মিডিয়া) মো. জান্নাত-উল ফরহাদ বলেন, দেশের বিভিন্ন কারাগারে মোট বন্দি ৩৬৪ জন। এদের মধ্যে ১৫৪ বিদেশি বন্দি রয়েছেন মুক্তির অপেক্ষায়। কিন্তু সংশ্লিষ্ট দেশ তাদের নিচ্ছে না। কিছু বন্দি আছেন মুক্তির প্রক্রিয়ায়। এসব বিদেশি বন্দি কেন এখনো কারাগারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সংশ্লিষ্ট দেশের ক্লিয়ারেন্স আসে না, বন্দিরা সঠিক ঠিকানা বলতে পারে না, বন্দিরা বাংলায় কথা বললে ভারতীয়রা অনেক সময় তাদের নিতে চায় না ফলে তারা ফিরে যেতে পারছে না। তবে কারা কর্তৃপক্ষ নিয়মমাফিক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অবহিত করছে বিষয়টি।

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স