ঢাকা , বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫ , ১ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
নিবন্ধন চাওয়া ১৪৪ দলই প্রাথমিক বাছাইয়ে অনুত্তীর্ণ ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি আরও ৩৭৫ বাক্সবন্দি মেশিন এখন চায়ের টেবিল সংখ্যালঘু ঐক্য মোর্চার সংবাদ সম্মেলন নিয়ে পুলিশের ব্যাখ্যা ঐকমত্যে আসতে পারেনি রাজনৈতিক দলগুলো প্রাণনাশের হুমকি দিল প্রতারক ৪ দফা দাবি জোরপূর্বক প্রত্যাগত ওমান প্রবাসী ফোরামের পুলিশ কল্যাণ তহবিল থেকে দেড় কোটি টাকার অনুদান পাবে ৩৮৯ জন বিমানবন্দর থেকে ৯৬ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠালো মালয়েশিয়া নির্বাচন কমিশনের ৫১ কর্মকর্তাকে বদলি গেটে হাঁটুপানি, ভোগান্তিতে রোগী-স্বজনরা জিয়ার অনুকম্পায় রাজনীতি করে এখন তার পুত্রকে টার্গেট করছেÑ রিজভী চাঁদাবাজির অভিযোগে ওসিসহ ৬ পুলিশ প্রত্যাহার পঞ্চবেকি বয়া নদীর আয়রন ব্রিজ মৃত্যুফাঁদ ময়মনসিংহে মুক্তিপণ দিয়ে মিললো শিশুর লাশ ৪ লাখ টন চাল কিনবে সরকার, বেসরকারিভাবে ৫ লাখ টনের অনুমতি কে কাকে লাল কার্ড দেখাবে, তা ঠিক করবে জনগণ-ডা. জাহিদ বাংলাদেশিদের মিসরের ভিসা দিতে নিষেধাজ্ঞা নেই : দূতাবাস ইইউ’র প্রাক-নির্বাচনী অনুসন্ধানী দল ঢাকা আসছে সেপ্টেম্বরে সংরক্ষিত আসন বিলুপ্তির সুপারিশের প্রতিবাদ মহিলা পরিষদের

সাজা শেষেও কারাগারে ১৫৪ বিদেশি বন্দি

  • আপলোড সময় : ১৭-০৪-২০২৫ ১১:১২:৪৯ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১৭-০৪-২০২৫ ১১:১২:৪৯ পূর্বাহ্ন
সাজা শেষেও কারাগারে ১৫৪ বিদেশি বন্দি
* বর্তমানে দেশের বিভিন্ন কারাগারে বিদেশি বন্দি ৩৬৪ জন * সাজা শেষেও বন্দি ১৫৪ জন, ফেরত নেয়ায় আগ্রহ নেই সংশ্লিষ্ট দেশের * মাদক, স্বর্ণপাচার, পাসপোর্ট জটিলতা ও মানবপাচারের অভিযোগে সাজাপ্রাপ্ত * ভারতীয় বন্দি সর্বোচ্চ, বাংলাভাষী হলে ফেরত নিতে চায় দেশটি দেশের বিভিন্ন কারাগারে মুক্তির অপেক্ষায় ১৫৪ জন বিদেশি বন্দি। দীর্ঘদিন সাজার মেয়াদ শেষ হলেও প্রকৃত অভিভাবক না পাওয়ায় তাদের মুক্তি দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। পাশাপাশি ওই বন্দিদের দূতাবাসগুলোও তাদের গ্রহণ করছে না। এ নিয়ে দফায় দফায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে চিঠি দিলেও তাতে মিলছে না সাড়া। এমন পরিস্থিতিতে ওই বন্দিদের নিয়ে বিপাকে কারা কর্তৃপক্ষ। বিদেশি বন্দিদের ভাষা বুঝতে পারা নিয়েও রয়েছে জটিলতা। পাশাপাশি তাদের জন্য অতিরিক্ত ব্যয় হচ্ছে সরকারের। কারা সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে দেশের বিভিন্ন কারাগারে বিদেশি বন্দি ৩৬৪ জন। এদের মধ্যে হাজতি ১৪২ জন ও কয়েদি ৬৮ জন। এছাড়া ১৫৪ বিদেশি বন্দি মুক্তির অপেক্ষায়। কারা ভাষায় তাদের আরপি (রিলিজ প্রিজন) বন্দি বলা হয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সূত্র জানায়, মাদক চোরাচালান, অবৈধ উপায়ে স্বর্ণপাচার, প্রতারণা, জাল ডলার ব্যবসা, পাসপোর্ট জটিলতা, অবৈধ ভিওআইপির ব্যবসা ও মানবপাচারের অভিযোগে গ্রেফতার হয়ে কারাগারে রয়েছেন এসব বিদেশি বন্দি। মুক্তির অপেক্ষায় থাকা এসব বন্দি-ভারত, মিয়ানমার, পাকিস্তান ও নাইজেরিয়ার নাগরিক। এর আগে থাইল্যান্ড, ফিলিপাইন, তানজানিয়াসহ পূর্ব আফ্রিকার কিছু দেশের নাগরিক মুক্তিপ্রাপ্ত ছিলেন, দেরিতে হলেও সংশ্লিষ্ট দেশ তাদের ফিরিয়ে নিয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রমতে, সাজা শেষ হওয়ার পরও বিদেশি নাগরিকরা নিজ দেশে ফিরতে পারছেন না। ফিরিয়ে নিতে বন্দিদের নাম-ঠিকানাসহ সব তথ্য সংবলিত কাগজ ঢাকায় সংশ্লিষ্ট দেশের দূতাবাসকে দেয়া হয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ওইসব দূতাবাস/হাইকমিশনে চিঠি পাঠানো হয়। এরপরও আশানুরূপ সাড়া মিলছে না। এমন পরিস্থিতিতে বিষয়টি সমাধানে কূটনৈতিক তৎপরতা চালানো হচ্ছে। সংশ্লিষ্টদের দেয়া তথ্যমতে, ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারসহ দেশের ৬৯ কারাগারের ধারণক্ষমতা ৪২ হাজার ৮৭৭ জন। অথচ বর্তমানে কারাগারগুলোতে মোট বন্দির সংখ্যা ৭০ হাজারের বেশি। কারা সূত্র জানায়, এমনিতেই দেশের কারাগারে বন্দির ধারণক্ষমতা কম। সাম্প্রতিক প্রেক্ষাপটে বন্দির সংখ্যা আরও বেড়েছে। তাদেরই স্থান সংকুলানে সমস্যা হচ্ছে। এর মধ্যে ১৫৪ জন বন্দি কারা কর্তৃপক্ষের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভারতের সর্বোচ্চ ২১৬ জন (মুক্তিপ্রাপ্ত ১৪৬ জন), মিয়ানমারের ১২২ জন (মুক্তিপ্রাপ্ত ছয়জন), পাকিস্তানের ছয়জন (মুক্তিপ্রাপ্ত একজন), চীনের তিনজন, মালয়েশিয়ার পাঁচজন, নাইজেরিয়ার চারজন (মুক্তিপ্রাপ্ত একজন), বতসোয়ানার একজন (মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত), তানজিয়ার একজন, জর্জিয়ার একজন, বেলারুশের একজন, পেরুর দু’জন এবং বাহামার একজন কারাগারে বন্দি অবস্থায় আছেন। কারা অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, কারাগারে নিরাপত্তার জন্য বিদেশি নাগরিকদের আলাদা সেলে রাখা হয়। ওইসব সেলের বাইরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ করা হয় সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে। তবে বিদেশি বন্দিরা কারাগারের অন্য হাজতিদের মতোই একই রকম খাবার পান। ভালো খাবার না পেলে তারা কারারক্ষীদের সঙ্গে মারমুখী আচরণ করেন। এ কারণে তাদের খাবারের দিকেও আলাদা নজর দেয়া লাগে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের একটি সূত্র বলছে, কারাবন্দি বিদেশি নাগরিকদের অধিকাংশেরই বৈধ কাগজ নেই। তারা নিজের দেশের নাম বললেও সংশ্লিষ্ট দেশের দূতাবাস তাদের নাগরিক হিসেবে মানতে নারাজ। বন্দিদের পরিচয় সম্পর্কে জানতে চেয়ে সংশ্লিষ্ট দেশের দূতাবাসে চিঠি দিয়ে যোগাযোগ করা হলেও সময়মতো উত্তর পায় না মন্ত্রণালয়। এতে সরকারের বাড়তি টাকাও ব্যয় হয়। পাশাপাশি এসব বন্দি বেশিরভাগ সময়ই উগ্র আচরণ করেন। বিশেষ করে আফ্রিকা অঞ্চলের নাগরিকদের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ বেশি। এ কারণে তাদের সামলাতেও বাড়তি কারারক্ষী মোতায়েন করতে হয়। কারা অধিদফতরের একটি সূত্র জানায়, কক্সবাজার ও চট্টগ্রামে আটক বেশিরভাগ বন্দি-ই মিয়ানমারের নাগরিক। এদের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দূতাবাসে যোগাযোগ করলে ওইসব বন্দি তাদের দেশের নাগরিক না বলে সাফ জানিয়ে দিচ্ছে। এ বিষয়ে সহকারী কারা মহাপরিদর্শক (মিডিয়া) মো. জান্নাত-উল ফরহাদ বলেন, দেশের বিভিন্ন কারাগারে মোট বন্দি ৩৬৪ জন। এদের মধ্যে ১৫৪ বিদেশি বন্দি রয়েছেন মুক্তির অপেক্ষায়। কিন্তু সংশ্লিষ্ট দেশ তাদের নিচ্ছে না। কিছু বন্দি আছেন মুক্তির প্রক্রিয়ায়। এসব বিদেশি বন্দি কেন এখনো কারাগারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সংশ্লিষ্ট দেশের ক্লিয়ারেন্স আসে না, বন্দিরা সঠিক ঠিকানা বলতে পারে না, বন্দিরা বাংলায় কথা বললে ভারতীয়রা অনেক সময় তাদের নিতে চায় না ফলে তারা ফিরে যেতে পারছে না। তবে কারা কর্তৃপক্ষ নিয়মমাফিক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অবহিত করছে বিষয়টি।

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স