ঢাকা , মঙ্গলবার, ০৮ এপ্রিল ২০২৫ , ২৪ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
ইসরায়েলি গণহত্যার প্রতিবাদে উত্তাল দেশ ওয়ালটন প্লাজা থেকে ৫০ হাজার টাকা সহায়তা পেলেন নাটোরের গৃহিণী কমেছে ইন্টারনেট ও ফোনের ব্যবহার গাজায় গণহত্যা মানবাধিকার লঙ্ঘনের নিন্দা বাংলাদেশের প্রতিবাদ না করলে মানবতার দুঃসময় কাটানো সম্ভব হবে না-ইলিয়াস কাঞ্চন গ্যাস সঙ্কটে ত্রাহি অবস্থায় দেশের শিল্প উৎপাদন বিনিয়োগ আকর্ষণে সরকারের উদ্যোগ ইতিবাচক লাঠিচার্জ ও সাউন্ড গ্রেনেডে ছত্রভঙ্গ বিডিআরের চাকরিচ্যুত সদস্যরা : আহত ৭ প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে অন্নপূর্ণা-১ শিখরে বাবর আলী রাজনীতির ময়দানে টিকে থাকতে জাপা’র পরিকল্পনা গাজায় গণহত্যা : চার জেলায় বাটা-কেএফসিতে হামলা-ভাঙচুর হাছান মাহমুদ ও তার স্ত্রীর নামে মামলা করবে দুদক যমুনা সেতুতে ২৪ ঘণ্টায় ২ কোটি ৬৬ লাখ টাকা টোল আদায় ভাড়া বেশি নেয়ার প্রতিবাদ করায় বাসের ভেতরেই যাত্রীকে ছুরিকাঘাত বাংলাদেশে ব্যবসা করার অনুমোদন পেল স্টারলিংক ভোটের প্রস্তুতিতে সংস্কার প্রস্তাবে গুরুত্ব কম ওয়াকফ আইন পুনর্বিবেচনা করতে ভারতকে আহ্বান বিএনপি’র কক্সবাজারে জমি নিয়ে বিরোধে সংঘর্ষ, মসজিদের খতিবসহ নিহত ৩ ছুটির পর শিক্ষার্থীদের পদচারণায় আবারও মুখর ঢাবি ক্যাম্পাস অবশেষে লম্বা ছুটি কাটিয়ে খুলছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

জলবায়ু পরিবর্তনে উপকূলীয় অধিবাসীরা হচ্ছে অভিবাসী

  • আপলোড সময় : ০৭-০৪-২০২৫ ০২:৪২:৩৬ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ০৭-০৪-২০২৫ ০২:৪২:৩৬ অপরাহ্ন
জলবায়ু পরিবর্তনে উপকূলীয় অধিবাসীরা হচ্ছে অভিবাসী
* ১৫ বছরে ৯২ শতাংশ পরিবারের বসতবাড়িসহ সম্পদ ধ্বংস * ৭০ শতাংশ পরিবার নদীভাঙনে বসতভিটাসহ সব হারিয়েছে * ৭২ শতাংশ পরিবার ভূগর্ভস্থ মাটি ও লবণাক্ততার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত * ৪০ শতাংশ পরিবার উচ্চ তাপমাত্রা ও তাপপ্রবাহের কারণে বিপর্যস্ত * অসংখ্য মানুষ কর্মহীন হয়ে পাড়ি জমাচ্ছেন বিদেশে * নিজ ভূমি ছেড়ে স্থানান্তরিত হচ্ছেন অন্য জেলায় * ভিটেমাটি ছেড়ে কাটাচ্ছেন অভিবাসী জীবন জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে উপকূলীয় অঞ্চলের অধিবাসীরা হচ্ছেন অভিবাসী। গত ১৫ বছরে এ অঞ্চলের ৯২ শতাংশ পরিবারের বসতবাড়ি, ফসল ও অন্য সম্পদ ঘূর্ণিঝড়ে ধ্বংস হয়েছে এবং ৮৮ শতাংশ পরিবার বন্যার কারণে একই ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন। নদীভাঙনের ফলে ৭০ শতাংশ পরিবার তাদের বসতভিটা, কৃষিজমি বা উভয়ই হারিয়েছে। ৭২ শতাংশ পরিবার ভূগর্ভস্থ মাটি ও পানিতে তীব্র লবণাক্ততার কারণে গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত, ৬২ শতাংশ পরিবার অনিয়মিত বৃষ্টিপাতের কারণে এবং ৪০ শতাংশ পরিবার উচ্চ তাপমাত্রা ও তাপপ্রবাহের কারণে বিপর্যস্ত। এ অঞ্চলের ৫৯ শতাংশ পরিবারের অন্তত একজন সদস্য জীবিকার সন্ধানে গ্রাম ছেড়েছেন। এর মধ্যে ১৪ শতাংশ অভিবাসী জীবিকার সন্ধানে আন্তর্জাতিক অভিবাসনের পথ বেছে নিয়েছেন। বাকি ৮৬ শতাংশ বাংলাদেশেই অভ্যন্তরীণভাবে বিভিন্ন জেলায় পাড়ি জমিয়েছেন। জানা যায়, দেশের অধিকাংশ উপকূলীয় অঞ্চল জলোচ্ছ্বাস, লবণাক্ততা, নদীভাঙন ও ঘূর্ণিঝড়ের মতো জলবায়ুজনিত ঝুঁকির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত। মানুষের আয় ও কর্মসংস্থানের সুযোগ প্রায় শেষ করে দিচ্ছে এসব প্রাকৃতিক দুর্যোগ। ফলে এ অঞ্চলের বহু পরিবার ঋণের ফাঁদে আটকা। এক পর্যায়ে জীবিকার সন্ধানে তারা নিজ গ্রাম ছাড়তেও বাধ্য হয়। কেউ কেউ অন্য জেলা, শহর বা নগরে চলে যায়, আবার অনেকে টিকে থাকার জন্য বিদেশে কর্মসংস্থানের চেষ্টা করেন। বিদেশ ফেরত এসব অভিবাসী শ্রমিকদের অভিজ্ঞতা ও সাক্ষ্য অনুযায়ী, ৮১ শতাংশ শ্রমিক গন্তব্য দেশে পৌঁছানোর পর কোনো ওয়ার্ক পারমিট পাননি। ৯০ শতাংশের বেশি প্রত্যাবর্তিত অভিবাসী সরকার নির্ধারিত ফির তুলনায় কয়েক গুণ বেশি অর্থ দিয়ে অভিবাসন ব্যয় মিটিয়েছেন। ৮০ শতাংশ অভিবাসী শ্রমিক পুলিশের হাতে আটক হয়ে সরাসরি কারাগার থেকে দেশে ফিরেছেন। জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) সবশেষ তথ্য অনুসারে, ২০২১ সালে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা থেকে কাজের উদ্দেশ্যে বিদেশ যাওয়া কর্মীর সংখ্যা দুই হাজার ২২১ জন। ২০২২ সালে যান ছয় হাজার ৫৭৮ জন, ২০২৩ সালে ১১ হাজার ৩৯৫ জন ও সবশেষ ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৯৬৩ জন। বিশ্লেষকরা বলছেন, বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের জন্য বিশেষ কর্মসংস্থান কিংবা পুনর্বাসন নীতির ঘাটতি রয়েছে। সরকার কিছু সহায়তা দিলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় কম। বিদেশে যেতে বাধ্য হওয়া বা দেশেই দারিদ্র্যের কষাঘাতে ভুগতে থাকা এসব মানুষ রাষ্ট্রের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারছে না। সাতক্ষীরার শ্যামনগরের গাবুরা ইউনিয়নের মো. শাহিন আলম বলেন, ১০ কাঠা জমি ছিল। তরমুজের চাষাবাদ করতাম। ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের সময় পানি আটকে অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়। প্রতিনিয়ত নদীভাঙন, অতিবৃষ্টিতে দিশেহারা আমরা। এক পর্যায়ে কৃষিকাজ ছেড়ে দেই। এলাকার বহু মানুষ ঢাকাসহ বিভিন্ন অঞ্চলে গিয়ে ইটভাটার কাজ করে। পরে ব্যাংক লোন নিয়ে দুবাই যাই। সেখানে কোম্পানির ভিসা বলে নিয়ে কাজ দিতে পারেনি। পরে অবৈধ হয়ে দেশে চলে আসি। শ্যামনগরের লক্ষ্মীখালীর বাসিন্দা মাসুম বিল্লাহ (৫০)। গত চার বছর নিজ এলাকা ছেড়ে মৌসুমি শ্রমিক হিসেবে কাজ করছেন বিভিন্ন জেলায়। অন্য এলাকায় স্থানান্তরিত কেন হলেন জানতে চাইলে বলেন, ২০০৭ সালের পর থেকে কৃষিকাজ শুরু করি। ঘূর্ণিঝড়, নদীভাঙন লবণাক্ততার কারণে সব ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে পারিনি। এরপর বাগদা চিংড়ি চাষ শুরু করি, কিন্তু ঋণের বোঝা আর অর্থনৈতিক দুর্দশায় সেটায় ভালো কিছু হয়নি। বিদেশ যাওয়ার মতো টাকা নেই। এখন মাদারীপুরে ইটভাটায় কাজ করি। পরিবার-পরিজন ছেড়ে থাকতে অনেক কষ্ট হয়। লোকাল এনভায়রনমেন্ট ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড এগ্রিকালচারাল রিচার্স সোসাইটি-লিডারসের নির্বাহী পরিচালক মোহন কুমার মন্ডল বলেন, এ অঞ্চলের দুঃখ-দুর্দশা দীর্ঘদিনের। যার কোনো স্থায়ী প্রতিকার হচ্ছে না। কাজের অভাবে প্রতিবছর প্রায় ২০ হাজার মানুষ এলাকা ছাড়েন। এদের ৯০ শতাংশ ইটভাটায় কাজ করেন। যারা ছয় থেকে আট মাস কিংবা এক বছর পর আবার গ্রামে ফিরে আসেন। আমাদের বাস্তব অভিজ্ঞতায় দেখেছি, যারা মৌসুমি শ্রমিক হিসেবে এক জেলা থেকে অন্য জেলায় অভিবাসী হয়ে যায়, এদের পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে। অনেকে পরিবার নিয়েও স্থায়ীভাবে চলে যায়। একটা মানুষ যখন দেখে সুপেয় পানির সংকট, চাষাবাদ করার সুযোগ কম, কর্মসংস্থান নেই, বছরে তিন-চারবার বড় দুর্যোগের শিকার হতে হয়, তখন মানুষ কেন এখানে থাকবে। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষগুলো স্থায়ীভাবে বিভাগীয় শহর কিংবা ঢাকায় চলে আসে। অন্তত তারা দুর্যোগ থেকে রক্ষা পাবে। যোগ করেন মোহন কুমার মন্ডল। সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার অধিবাসী আমজাদ গাইন (৪২)। একসময় নিজ জমিতে চাষাবাদ করতেন। কিন্তু লবণাক্ত পানিতে ফসল ফলানো কঠিন হয়ে পড়ে। কাজের জন্য অন্য জেলায় পাড়ি জমান। তাতেও সমস্যা না মেটায় এক পর্যায়ে ধারদেনা করে পাড়ি জমান মালয়েশিয়ায়। সেখানেও প্রতারণার শিকার হয়ে ঋণের বোঝা নিয়ে দেশে ফিরে এখন তিনি কর্মহীন। আমজাদ গায়েন বলেন, আমি প্রায় ছয় লাখ টাকা ঋণ করে বিদেশে যাই। হোটেলে কাজের ভিসা দেবে বলে দালাল অন্য কোম্পানিতে ঢুকিয়ে দেয়। কাজ করলেও বেতন দিতো না। পরে ভিসার মেয়াদ না বাড়ানোর কারণে আমি অবৈধ হয়ে যাই। জেলে বন্দি থেকে ১১ মাসের কষ্টের জীবন শেষ দেশে ফিরি। আজাদ গাইনের স্ত্রী নাজমা আক্তার বলেন, তিন সন্তান নিয়ে খুব কষ্টে দিন যাচ্ছে। আমাদের জমিও অল্প। মাছের ঘের করার সামর্থ্যও নেই। এলাকায় কাজের সংকট। লবণ পানি ও দুর্যোগের কারণে কৃষিকাজ করার অবস্থা নেই। বিভিন্ন জেলায় গিয়ে কখনো ইটভাটা কখনো রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। সুখের আশায় বিদেশ যান। এখন আবার তাকে অন্য কোথাও গিয়ে কাজ খুঁজতে হবে। শুধু আমজাদ গাইন নন, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলের অসংখ্য মানুষ কর্মহীন হয়ে বিদেশে পাড়ি জমাচ্ছেন। নিজ ভূমি ছেড়ে স্থানান্তরিত হচ্ছেন অন্য জেলায়। ভিটেমাটি ছেড়ে কাটাচ্ছেন অভিবাসী জীবন। সাতক্ষীরা জেলার সহকারী কৃষি বিপণন কর্মকর্তা সালেহ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ বলেন, লবণাক্ততা দূর করা সম্ভব নয়। তবে আমরা লবণ সহনশীল ফসল চাষ করার অন্য সব সহযোগিতা করি। প্রশিক্ষণও দেই। জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে কৃষকরা কীভাবে মানিয়ে নেবে সে বিষয়ে নিয়মিত প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। জলোচ্ছ্বাস নিয়ন্ত্রণ ও বাঁধ নির্মাণ কিংবা খাল খনন-সব কাজেই কৃষকদের পরামর্শ নেই। আমরা চাই না কৃষির ওপর নির্ভর কোনো মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে এলাকা ছাড়ুক। জলবায়ু অর্থায়ন বিশেষজ্ঞ ও চেঞ্জ ইনিশিয়েটিভের প্রধান নির্বাহী এম জাকির হোসেন খান বলেন, আমাদের দেশে আসলে ক্লাইমেট মাইগ্রেন্টসের কোনো সঠিক সংজ্ঞা করা হয়নি। আমরা যা করি তা হলো ক্লেইম। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে যারা ক্ষতিগ্রস্ত কিংবা ঘরছাড়া হন, তাদের রিকগনিশন (স্বীকৃতি) থাকলে আন্তর্জাতিকভাবে একটা রাইটস (অধিকার) প্রতিষ্ঠা হয়। তখন তাদের ক্ষতিপূরণ দেয়া হয়। এই ক্ষতিপূরণ দিতে প্রশাসনও বাধ্য থাকে। তিনি বলেন, আমাদের পরিবেশ অধিদফতর কিংবা দুর্যোগ অধিদফতর থেকে ক্লাইমেট মাইগ্রেন্টসদের জন্য কোনো আইডেন্টিফিকেশন নেই। লস অ্যান্ড ড্যামেজ নিয়ে অনেক কথা হয়, কিন্তু কাজ হয় না। আমাদের প্রস্তুতি আর পলিসি মেকিংয়ের জায়গা কম। দুর্যোগের কারণে যারা দেশে বাস্তুচ্যুত হয়ে এক জেলা থেকে আরেক জেলায় চলে যায়, তাদের জন্য সামাজিক সুরক্ষা নীতিও মানা হয় না। এম জাকির হোসেন খান বলেন, দুর্যোগের কারণে যেসব লোক বাধ্য হয়ে বেকারত্বের কারণে বিদেশ চলে যাচ্ছে, বিশেষত এই লোকগুলোর কর্মসংস্থানের জন্য সরকারের কোনো উল্লেখযোগ্য কাজ এখনো চোখে পড়েনি। এই কর্মহীন অভিবাসীদের নিয়ে তাদের আইডেন্টিফিকেশন থেকে শুরু করে ক্যাপাসিটি বিল্ডআপ, কর্মসংস্থান, সেফ মাইগ্রেশন ও পরিবারের রেজিলিয়েন্স সৃষ্টি-প্রতিটি জায়গায় পদক্ষেপ নিতে হবে। না হলে এই জনগোষ্ঠীর সংখ্যা বাড়বে, তারা সমাজের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী হিসেবে থেকে যাবে। ঢাকার সুইডেন দূতাবাসের ন্যাশনাল প্রোগ্রাম অফিসার (পরিবেশ ও জলবায়ু) নাজমুল হাসান বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে নানা ক্ষতির শিকার হয়ে মানুষ ক্রমশ বাধ্য হচ্ছে এলাকা ছাড়তে। যারা অভিবাসী হয়, এটা তাদের জন্য খুবই ভয়ংকর অভিজ্ঞতা হিসেবে থাকে। কাজ কিংবা উন্নত জীবনের আশায় কোনো মানুষ যখন জন্মস্থান ছেড়ে হঠাৎ ঢাকায় আসে, তারা আসলে কিছুই জানে না কী করবে সেখানে গিয়ে। যাওয়ার পর নানান সমস্যার সম্মুখীন হয়। নতুন সমাজে গিয়ে তারা খাপ খাওয়াতে পারছে না। দেশে-বিদেশে মানবেতর জীবনযাপন করছে। অভিবাসী কর্মী উন্নয়ন প্রোগ্রামের (ওকাপের) চেয়ারম্যান শাকিরুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে অভিবাসন ও মডার্ন সøাভেরি ক্রমশ বাড়ছে। উপকূলীয় অঞ্চলে দুর্যোগের কারণে বারবার ঘরবাড়ি নষ্ট, ফসলি জমির ক্ষতি ও জীবিকার মাধ্যমগুলো নষ্ট হওয়ায় এখানকার বহু মানুষকে কর্মহীন এক অনিশ্চিত জীবনের মুখোমুখি করে দিচ্ছে। এই মানুষগুলো আবার মানবপাচারের শিকার হয়ে বিদেশ গিয়েও প্রতারণার শিকার হয়। ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে দেশেও তারা কাজের আশায় উদ্বাস্তু হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। জলবায়ু বিপর্যয়ে ক্ষতিগ্রস্ত জনগণের জন্য সরকার যে সহায়তা দেয়, এটা বাস্তব চাহিদা মেটানোর জন্য যথেষ্ট নয়। সাতক্ষীরায় অনেক ঘটনা আমরা দেখেছি। সেখানে ২০০৭ সালে সিডরের পর ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক এখনো সেই ঋণের বোঝা মাথায় বয়ে বেড়াচ্ছেন। অভিবাসী কর্মী উন্নয়ন প্রোগ্রামের (ওকাপের) রিসার্চ অফিসার ঊর্মি জাহান তান্নি বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে অভিবাসন অনেক বড় একটা ফ্যাক্টর এখন। আমরা সাতক্ষীরা অঞ্চলের গবেষণায় দেখেছি, দেশে অভিবাসীদের মধ্যে ৯৩ শতাংশ মৌসুমি অভিবাসন করছেন। দীর্ঘমেয়াদি অভিবাসন করেছেন ৭ শতাংশ। মৌসুমি অভিবাসীদের মধ্যে ৬৬ শতাংশ ফসল কাটার মৌসুমে চুক্তিভিত্তিক শ্রমিক হিসেবে কৃষিখাতে কাজ করেছেন। ২২ শতাংশ শীতকালে ছয় মাসের জন্য ইটভাটায় কাজ করেন। বাকি ১২ শতাংশ অন্য ঋতুতে শহরে গিয়ে রিকশাচালক, নির্মাণশ্রমিক, কুলির মতো দিনমজুরের কাজ করেন।

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স