ঢাকা , সোমবার, ১৮ অগাস্ট ২০২৫ , ৩ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
৩২ নম্বরে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে আসা সেই রিকশাচালকের জামিন ধানমন্ডিতে আটক রিকশাচালককে হত্যা মামলার আসামি করা হয়নি-ডিএমপি রিকশাচালক আজিজুর কিসের ভিত্তিতে আটক-জানতে চেয়েছে সরকার শেখ মুজিবের ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ লিখে টাকা-ফ্ল্যাট দেওয়ার ঘটনা তদন্তে দুদককে লিগ্যাল নোটিশ আইন উপদেষ্টার বক্তব্য চিকিৎসকদের পেশাদারিত্বের ওপর আঘাত-ডা. রফিকুল না ভোট রাখার প্রস্তাব দেয়নি বিএনপি-নজরুল ইসলাম খান জুলাই সনদ নিয়ে ২০ আগস্টের মধ্যে মত জানাবে বিএনপি সোশ্যাল মিডিয়ায় অপপ্রচার রোধে সক্রিয় হচ্ছে বিএনপি রোহিঙ্গা সমস্যার স্থায়ী সমাধান চায় বাংলাদেশ-নিরাপত্তা উপদেষ্টা পোরশায় উৎসবমুখর পরিবেশে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উদযাপিত ফরিদপুরে নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ পালিত ফেব্রুয়ারিতেই জাতীয় নির্বাচন -উপদেষ্টা রিজওয়ানা দেশ যেন চরমপন্থা ও মৌলবাদের অভয়ারণ্য হতে না পারে -তারেক রহমান কর্মকর্তারা কোনো দলের লেজুড়বৃত্তি করতে পারবে না-স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ব্যবসা-বাণিজ্যের বিরোধ মীমাংসায় পৃথক আদালতের প্রস্তাব প্রধান বিচারপতির একনেকে ১১ প্রকল্প অনুমোদন ব্যয় ৯৩৬১ কোটি টাকা যুক্তরাষ্ট্র-ভারত শুল্ক আলোচনা বাতিল বন্দরে বিদেশি অপারেটরের বিরোধিতা নয়, সমর্থন করা উচিত: বিকেএমইএ’র সভাপতি মশক নিধনের বাজেট বাড়লেও মশা কমছে না রাষ্ট্রপতির ছবি সরানো নিয়ে জল্পনা-কল্পনা

ভাঙা চোয়াল নিয়ে ৪০ কি.মি. বাস চালিয়ে থানায় চালক

  • আপলোড সময় : ০৬-০৪-২০২৫ ০২:৩০:৪৩ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ০৬-০৪-২০২৫ ০২:৩০:৪৩ অপরাহ্ন
ভাঙা চোয়াল নিয়ে ৪০ কি.মি. বাস চালিয়ে থানায় চালক
ঈদের দিন মধ্যরাতে চল্লিশজন যাত্রী নিয়ে ঢাকা থেকে নোয়াখালীর উদ্দেশ্যে রওনা হয় একুশে পরিবহনের একটি বাস। পথে কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট পার হলে প্রায় ৮ থেকে ১০টি মোটরসাইকেলে একদল যুবক বাসটিকে অনুসরণ করতে শুরু করে। প্রায় ৪০ থেকে ৪৫ কিলোমিটার পথ ধাওয়া করেও বাসটিকে ধরতে না পেরে লোকালয়ে আসার আগেই ফিরে যায় যুবকেরা। তবে তার আগে তাদের ছোড়া ইটের আঘাতে বাস চালকের চোয়াল ভেঙে যায়, মাথায় ও বুকে গুরুতর আঘাত পান বাস চালক মো. সোহেল। বাসটিকে ধরতে না পেরে যুবকেরা প্রথমে বিপুলাসার বাজারে অবস্থান নেয়। বাসের সামনের কাচে বড় ইট ছুঁড়ে মারেন। এতে বাসের কাচ ভেঙে গেলেও চালক আঘাত থেকে বেঁচে যান। মোটরসাইকেল নিয়ে ওই যুবকেরা পুনরায় তাড়া করে নোয়াখালীর সীমানা সেনবাগের ছাতারপাইয়ায় এসে আবারও ইট নিক্ষেপ করে। এতে চালক সোহেলের চোয়াল ভেঙে যায় এবং মাথায় ও বুকে প্রচণ্ড আঘাত পান। তবে যাত্রীদের নিরাপত্তার কথা ভেবে ওই অবস্থায় দ্রুত গতিতে বাস চালিয়ে তিনি নোয়াখালী জেলা শহরে পৌঁছান এবং সুধারাম মডেল থানার সামনে বাস দাঁড় করান। এতে বড় ধরনের দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পান যাত্রীরা। খবর পেয়ে বাসের মালিক দ্রুত চালককে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। চালক সোহেল বলেন, তারা প্রথমে অনুসরণ শুরু করে কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট পার হওয়ার পর। কিন্তু আমি বুঝতে পারিনি। লালমাই আসার পর তারা যখন আমাকে থামার জন্য সিগন্যাল দিচ্ছিল, তখন যাত্রীরা দেখে মোটরসাইকেলগুলো নাম্বারবিহীন। এরপর গাড়ির গতি বাড়িয়ে দিই। তারাও বাসের সাথে পাল্লা দিয়ে ওভারটেক করে সামনে আসার চেষ্টা করে। লাকসাম এসে আমাকে গাড়ি থামানোর জন্য আবারও সিগন্যাল দেয়। কিন্তু গাড়ি থামাইনি। কারণ, আমার গাড়ির ভিতরে চল্লিশজন যাত্রী। গাড়ি না থামানোর কারণে প্রথমে বিপুলাসার এসে তারা আমাকে সামনের গ্লাসে দিয়ে ইট মেরে আমাকে আঘাত করে। পুনরায় ছাতাপাইয়ায় আবারও ইট মারলে আমার চোয়াল ভেঙে যায়। তারপরও ঘাবড়ে না গিয়ে রক্তক্ষরণরত অবস্থায় আমি গাড়ি চালিয়ে গন্তব্যে চলে আসি। মো. হামিম নামে একজন যাত্রী বলেন, যুবকদের প্রত্যেকের বয়স ২৫ থেকে ৩০ এর মধ্যে। তারা খুব আক্রমণাত্মক ছিল। খুব সম্ভবত কোনো অপরাধ ঘটনোর জন্য তারা বাসটিকে আটকাতে চাচ্ছিল। চালক আঘাতপ্রাপ্ত হয়েও অত্যন্ত দক্ষতার সাথে চল্লিশ জন যাত্রীকে নিরাপদে নিয়ে আসলেন। আমরা চালকের প্রতি কৃতজ্ঞ। বাসের মালিক জহিরুল ইসলাম তারেক বলেন, কয়েকটি মোটরসাইকেল গাড়ি থামানোর জন্য সিগন্যাল দিচ্ছিল। কিন্তু চালক গাড়ি না থামিয়ে দ্রুত গতিতে নোয়াখালীর দিকে আসছিল। তারাও বাসের পিছু নিয়ে তাড়া করছিল। একট পর্যায়ে বিপুলাসার এসে প্রথমে চালককে লক্ষ্য করে আক্রমণ করে। এতে চালকের কিছু না হওয়ায় দ্বিতীয় বারের অঘাতে চালকের চোয়াল ভেঙে যায়। ঘটনা শোনার পর আমি বাসের সুপারভাইজারকে বলি দ্রুত গাড়ি চালিয়ে আনার জন্য। কোথাও যেন না দাঁড়ায়। জেলা শহরে আসার পর যাত্রীরা থানার ভিতরে আশ্রয় নেন, আমি চালককে নিয়ে হাসপাতালে যাই। আমি যথাসাধ্য চেষ্টা করছি তার চিকিৎসার জন্য। বাসের মালিক আরো বলেন, ঘটনার পর নোয়াখালীর সুধারাম মডেল থানায় যাই ডায়েরি করার জন্য। সেখান থেকে বলা হয় সোনাইমুড়ি থানায় যেতে। সোনাইমুড়ি থানায় গেলে বলা হয় লাকসাম থানায় যেতে। এদিকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. রাজিব আহমেদ চৌধুরী বলেন, ১ তারিখ রাত আড়াইটর দিকে চালক আঘাত নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। পরে পরীক্ষার মাধ্যমে জানা যায় তার মুখমণ্ডলে ফ্রাকচার হয়েছে। সে অনুযায়ী তার চিকিৎসা চলছে। শনিবার বিশেষজ্ঞ ডাক্তার এসেছেন এবং পরবর্তী নির্দেশনা দিয়েছেন। বর্তমানে রোগী মোটামুটি ভালো আছেন। তবে মুখমণ্ডলের আঘাত সারতে সময় লাগবে। নোয়াখালী পুলিশ সুপার আবদুল্লাহ আল ফারুক বলেন, গাড়ির মালিক আমার কাছে এসেছিলেন। এখনো এ বিষয়ে অভিযোগ দেননি। অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ