ঢাকা , বুধবার, ০৪ জুন ২০২৫ , ২১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
ক্ষুধার্ত ও অভুক্ত মানুষের সংখ্যা বাড়বে বাজেট ব্যবসাবান্ধব গ্যাস কূপ খনন বাড়াতে কেনা হবে নতুন রিগ ঈদ উপলক্ষে সাপ্তাহিক ছুটি বাতিল করলো রেলওয়ে ঈদে অভ্যন্তরীণ রুটে অতিরিক্ত ফ্লাইট পরিচালনা করছে বিমান চাঁদাবাজি ও এক হাটের পশু অন্য হাটে নিলে কঠোর ব্যবস্থা- র‌্যাব শ্রমিক-পুলিশ সংঘর্ষে আহত ২৫ পুলিশভ্যানে কাভার্ডভ্যানের ধাক্কা ৪ গাড়ি খাদে ঋণের বোঝা কমাতে সঞ্চয়পত্র বিক্রির লক্ষ্য কমাল সরকার ঋণের বোঝা কমাতে সঞ্চয়পত্র বিক্রির লক্ষ্য কমাল সরকার এক টাকা আয় করতে আড়াই টাকা ব্যয় তামান্নার উজ্জ্বল ত্বকের গোপন টিপস এক সিনেমায় দুই ক্লাইম্যাক্স! পাকিস্তানে টিকটকারকে গুলি করে হত্যা এবার এক সিনেমাতেই সাতটি চরিত্রে দেখা যাবে ইধিকাকে সংকটাপন্ন অবস্থায় অভিনেত্রী তানিন সুবহা এবার ঈদে মুক্তি পাচ্ছে নতুন ৭ সিনেমা এবার ঈদে মুক্তি পাচ্ছে নতুন ৭ সিনেমা প্রকাশ পেলো ‘তাণ্ডব’ এর ২য় গান বিশেষ ভাতা পাবেন হাওর-চর দ্বীপ এলাকার শিক্ষকরা
৮০ ভাগ মালিক দোষ চাপাচ্ছেন বিদেশি ক্রেতাদের ওপর

তৈরি পোশাকের দাম বাড়াচ্ছেন না আমদানিকারকরা

  • আপলোড সময় : ১৬-০৫-২০২৪ ১১:৪২:৫৪ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১৬-০৫-২০২৪ ১১:৪২:৫৪ পূর্বাহ্ন
তৈরি পোশাকের দাম বাড়াচ্ছেন না আমদানিকারকরা তৈরি পোশাকের দাম বাড়াচ্ছেন না আমদানিকারকরা
দেশে রফতানিখাতের অন্যতম চালিকাশক্তি তৈরি পোশাকনানাবিধ কারণে বাড়তি তৈরি পোশাকের উৎপাদন খরচকিন্তু বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানিকারকরা দাম না বাড়িয়ে বরং কমিয়েছেনগত বছরের ডিসেম্বরে নতুন মজুরি কার্যকর হওয়ার পর তারা তৈরি পোশাকের দাম বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেনকিন্তু কারখানার আশি ভাগ মালিক বলেছেন-বিদেশি ক্রেতারা এখনো বাংলাদেশি পোশাকের দাম বাড়াননিজানা যায়, গত ডিসেম্বর মাস থেকে পোশাক খাতের নতুন মজুরি কার্যকর হয়সেখানে মূল মজুরি ৫৬ দশমিক ২৫ শতাংশ বাড়িয়ে নূন্যতম মজুরি সাড়ে ১২ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়মজুরি বৃদ্ধির সঙ্গে মিল রেখে বিদেশি ক্রেতারাও যেন পোশাকের মূল্য বাড়িয়ে দেন সেই দাবি ছিল মালিকদের পক্ষ থেকেবিজিএমইএর তৎকালীন সভাপতি ফারুক হাসান পণ্যের মজুরি বৃদ্ধির জন্য ক্রেতাদের বিভিন্ন সংগঠনের কাছে চিঠিও দিয়েছিলেনমজুরি বৃদ্ধির সময় শ্রমিকদের দাবি ছিল নূন্যতম মুজরি যেন মাসে ২০ হাজার টাকা থেকে ২৫ হাজার টাকার মধ্যে থাকেতবে মালিকরা সেই দাবিতে রাজি হননি, সরকার গঠিত মজুরি বোর্ডও মালিক শ্রমিকের দাবির মাঝামাঝি একটা জায়গায় এসে সিদ্ধান্ত নেয়সেই সময় এক হাজার পশ্চিমা ফ্যাশন ব্র্যান্ডের জোট আমেরিকান অ্যাপারেল অ্যান্ড ফুটওয়্যার অ্যাসোসিয়েশন গণমাধ্যমে ঘোষণা দিয়েছিল, মজুরি বৃদ্ধির কথা বিবেচনায় নিয়ে পোশাকের ক্রয়মূল্য ৫ থেকে ৬ শতাংশ বাড়াতে রাজি আছেন তাদের সদস্যরাঅবশ্য ২৫ হাজার টাকা নূন্যতম মজুরি নির্ধারণে শ্রমিকদের দাবি পূরণ করার পক্ষেও ছিল ক্রেতা জোটমজুরি বৃদ্ধির পর দুই একজন ক্রেতা পোশাক মূল্য সঠিকভাবে বাড়িয়েছেনবাকিদের কেউ কেউ ৫০ শতাংশ থেকে ৬০ শতাংশ বাড়তি ব্যয়টি সমন্বয় করেছেনআবার অনেকে আছেন দাম বাড়াবেন বলে আশ্বাস দিচ্ছেনকিন্তু মজুরি বৃদ্ধির পর অধিকাংশ ক্রেতাই এখনও পোশাকের দাম বাড়াননিএদিকে সাম্প্রতিক এক জরিপে দেখা যায়- দেরি ও অন্যান্য কারণে ২০২৩ সালে শুল্ক ও বন্ডের খরচ এর আগের বছরে তুলনায় ৪৭ দশমিক ৮৫ শতাংশ বেড়েছেএ ছাড়াও, করোনা মহামারি ও ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে পশ্চিমের ক্রেতারা উচ্চ মূল্যস্ফীতির চাপে থাকায় গত বছর দেশের পোশাক কারখানাগুলোর সক্ষমতার প্রায় সাড়ে ২৭ শতাংশ অব্যবহৃত ছিলআন্তর্জাতিক খুচরা বিক্রেতারা পোশাক শ্রমিকদের নতুন মজুরি বাস্তবায়নের পর পোশাকের দাম বাড়াননি বলেও জরিপে উঠে এসেছেগত বছরের ডিসেম্বরে শতাধিক পোশাক কারখানার মালিকদের নিয়ে এই জরিপ চালায় বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) একটি অংশজরিপের মতে, গত বছর গ্যাসের দাম দ্বিগুণ করা হলেও মালিকরা এখনো জ¦ালানি সংকটে ভুগছেনবৈশ্বিক চ্যালেঞ্জের কারণে ২০২২ সাল থেকে পোশাক খাতের প্রবৃদ্ধি কমতে শুরু করেশক্তিশালী আর্থিক অবস্থা না থাকায় ক্ষুদ্র ও মাঝারি পর্যায়ের কারখানাগুলো চলমান সংকটে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেজানা যায়, ২০২৩ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকে মাত্র নয় শতাংশ কারখানায় পূর্ণ কার্যাদেশ ছিল, ৮২ শতাংশ কারখানার সক্ষমতার চেয়ে কম কার্যাদেশ ছিল এবং ছয় শতাংশ কারখানায় কোনো কার্যাদেশ ছিল নাকানো কোনো কারখানার মালিক বাধ্যতামূলক ঋণের ঝুঁকিতে আছেনকেননা, অনেক ক্রেতা রপ্তানি পণ্যের ছয় থেকে সাত শতাংশ মূল্য এখনো পরিশোধ করতে পারেননিবিজিএমইএ সভাপতি এসএম মান্নান কচি বলেন, গত পাঁচ বছরে তৈরি পোশাক শিল্পকে নিরাপদ করতে উৎপাদন খরচ বেড়েছে ৫৭ শতাংশএসবের পাশাপাশি গ্যাস ও বিদ্যুৎসহ বিভিন্ন সেবার দামও বেড়েছে ধাপে ধাপেঋণের হার সিঙ্গেল ডিজিট থেকে বেড়ে ১৩-১৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছেকিন্তু বিশ্বব্যাপী তৈরি পোশাক শিল্পের ব্র্যান্ড ও খুচরা বিক্রেতারা পণ্যের দাম না বাড়িয়ে বরং কিছু ক্ষেত্রে কমিয়েছেফলে রপ্তানিকারকরা বিশ্ববাজারে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হিমশিম খাচ্ছেনবেশিরভাগ ক্ষেত্রে মাঝারি ও ছোট কারখানার মালিকরা বেঁচে থাকার লড়াই করছেনতৈরি পোশাক শিল্পের একজন উদ্যোক্তা ও নেতা হিসেবে আমার সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার হবে খুচরা বিক্রেতা এবং ব্র্যান্ডের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে পোশাক প্রস্তুতকারকদের জন্য ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করারপ্তানি প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে ও বৈশ্বিক বাজারে প্রতিযোগিতামূলক জায়গায় থাকতে বৈশ্বিক ফ্যাশন ব্র্যান্ড এবং খুচরা বিক্রেতাদের কাছ থেকে ন্যায্যমূল্য পাওয়া পোশাকখাতের জন্য এই মুহূর্তে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জকারণ উৎপাদন খরচ বেড়েছেতিনি বলেন, তরি পোশাক পণ্যের ক্রেতাদের মধ্যে একটি সাধারণ প্রবণতা হলো তারা সর্বদা কম দাম প্রস্তাব করেআবার সব ক্ষেত্রে কমপ্লায়েন্স ও নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করতে বলেআমরা নিরাপত্তা মান ও কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত করার জন্য তাদের দাবি মেনে চলিকিন্তু তারা আমাদের পণ্যের মূল্যের প্রতি মনোযোগ দিচ্ছেন নাবাংলাদেশে সফররত ইউনাইটেড স্টেটস ট্রেড রিপ্রেজেনটেটিভ (ইউএসটিআর) দলের সঙ্গে সাম্প্রতিক বৈঠকে আমি দৃঢ়তার সঙ্গে আমাদের ন্যায্যমূল্যের দাবি ব্যক্ত করেছিতাদের ব্র্যান্ড ও খুচরা বিক্রেতাদের কাছে তা তুলে ধরার আহ্বান জানিয়েছিবিজিএমইএ থেকে আমরা পোশাক সামগ্রীর ন্যায্য নূন্যতম মূল্য ও সামাজিক নিরীক্ষার জন্য একটি ঐক্যবদ্ধ আচরণবিধি নিশ্চিত করতে মার্কিন সরকারের সমর্থন এবং সহযোগিতা চেয়েছিপর্যায়ক্রমে, আমরা বিভিন্ন স্টেকহোল্ডার ও ক্রেতার প্ল্যাটফর্মের সঙ্গে দেখা করবো, যেখানে ন্যায্যমূল্যের বিষয়টি উপস্থাপন করা হবেঅন্যদিকে, আমরা বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে আলোচনা করে বিষয়টি তাদের ক্রেতাদের কাছে তুলে ধরার জন্য আহ্বান জানাবোদাম না বাড়ালে এ খাতের পক্ষে টিকে থাকা খুবই কঠিন হবেসক্রিয় কারখানার সংখ্যা গত কয়েক বছরে পাঁচ হাজার থেকে ২২শ-এ নেমে এসেছেএ শিল্প টিকিয়ে রাখা সবার দায়িত্বআমি বিশ্বাস করি আমাদের অংশীদাররা এটি বিবেচনা করবে এবং নির্মাতাদের জন্য আরও ভালো দাম দেবেতিনি আরও বলেন, শ্রমিকদের জন্য নিরাপদ কর্মস্থল নিশ্চিত করতে নিরাপত্তার মানোন্নয়নে বাংলাদেশ দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেব্র্যান্ডের সহযোগিতা, সরকারি সহায়তা এবং উদ্যোগক্তাদের বিপুল বিনিয়োগের কারণে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্প এখন সবচেয়ে নিরাপদ শিল্পবাংলাদেশে ২১৫টি গ্রিন সার্টিফায়েড কারখানা রয়েছে, যা বিশ্বের সর্বোচ্চবাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের উৎপাদন প্রক্রিয়া প্রতিযোগী দেশের তুলনায় টেকসইফলে তৈরি পোশাক আমদানিকারকদের কাছে বাংলাদেশ নির্ভরযোগ্য গন্তব্যবাংলাদেশকে বিশ্বের কাছে তুলে ধরতে আমাদের এ বিষয়গুলো ইতিবাচকভাবে তুলে ধরতে হবে
 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স