ঢাকা , সোমবার, ১৭ মার্চ ২০২৫ , ৩ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
স্থিতিশীলতা রক্ষার্থে দ্রুত নির্বাচন দিয়ে ক্ষমতা হস্তান্তর করা উচিত-মির্জা ফখরুল এবার এসএসসি পরীক্ষার্থী ১৪ লাখ ৯০ হাজার প্রত্যাহার হচ্ছে ছয় সহস্রাধিক রাজনৈতিক মিথ্যা মামলা পুলিশ শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে আজ জরুরি বৈঠকে বসবেন প্রধান উপদেষ্টা চার দিনের সফর শেষে ঢাকা ছাড়লেন জাতিসংঘের মহাসচিব আনন্দ করার মেজাজে নাই, স্বাধীনতা দিবসে কুচকাওয়াজ হচ্ছে না : স্বরাষ্ট্রসচিব ২০ জনের মৃত্যুদণ্ড ও ৫ জনের যাবজ্জীবন বহাল শিক্ষার্থীদের জীবন নিয়ে শঙ্কা কবিরাজের কাছে গিয়ে ধর্ষণের শিকার গৃহবধূ দেশজুড়ে অপরাধ বাড়াচ্ছে পুলিশের লুট হওয়া অস্ত্র দখলদারদের লোভের শিকারে খুলনা বিভাগের ৩৭ নদী সংকটাপন্ন প্রবাসীর স্ত্রীসহ আটক শিবির সেক্রেটারিকে স্থায়ী বহিষ্কার চাঁদপুরে রঙিন সুতোয় জামদানি তৈরিতে সাড়া ফেলেছেন রনি চিলমারীর চরে স্বপ্ন বুনছেন হাজারও ভূমিহীন কৃষক লিচু বাগানে কুমড়া চাষে সফল স্কুল শিক্ষক জনি প্রশংসায় ভাসছেন গাংনীর ইউএনও প্রীতম সাহা কুমিল্লায় বিজিবি’র অভিযানে ভারতীয় বাসমতি চাউল জব্দ মতলবে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে সূর্যমুখী চাষ দুর্ভাগ্য কাটছেই না ম্যানসিটির বিশ্রাম ছাড়া ম্যাচ খেলবে না রিয়াল
ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু

ঈদযাত্রায় কঠোর নিরাপত্তা : যানজটের ১৫৯ স্পট চিহ্নিত

  • আপলোড সময় : ১৫-০৩-২০২৫ ০৬:৫০:০৬ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১৫-০৩-২০২৫ ০৬:৫০:০৬ অপরাহ্ন
ঈদযাত্রায় কঠোর নিরাপত্তা : যানজটের ১৫৯ স্পট চিহ্নিত
ঈদ মানেই নাড়ির টানে বাড়ি ফেরা। দীর্ঘ সময় পরিবার থেকে আলাদা থাকার পর ঈদে কাছের মানুষদের কাছে যাওয়া হয়, আনন্দে কাটানো হয় কয়েকটা দিন। তাই ঈদে সবারই থাকে বাড়ি ফেরার তাড়া। ঈদে নগরবাসীর গ্রামমুখী হওয়ার সামাজিক, পারিবারিক, সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক বেশ কিছু কারণও রয়েছে। মুসলমানের সবচেয়ে বড় উৎসব ঈদ। স্বাভাবিকভাবেই এ উৎসব ঘিরে থাকে আবেগ। সে আবেগের টানেই মানুষের ঘরে ফেরা।
তবে এবার বাড়ি ফেরা মানুষের দুর্ভোগ আরও বাড়তে পারে। সংশ্লিষ্টদের দাবি, সম্প্রতি চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি বেড়ে যাওয়ায় মহাসড়কে এবার নিরাপত্তার আশঙ্কা রয়েছে। তবে সরকারের পক্ষ থেকে কঠোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হচ্ছে।
এদিকে ঢাকার প্রবেশমুখগুলোতে এবার ভয়াবহ যানজটের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে আমিনবাজার, গুলিস্তান, যাত্রাবাড়ী, ধোলাইপাড়, বাবুবাজার এলাকায় দীর্ঘ সময় যানজটে আটকে থাকতে হতে পারে। শুধু ঢাকার এসব স্থানই নয়, ঢাকা-রংপুর, ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-সিলেট, ঢাকা-ময়মনসিংহ ও ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের ১৫৯ স্থানে যানজটের আশঙ্কা রয়েছে। ঈদুল ফিতর উপলক্ষে সড়ক ও মহাসড়ক, সেতু ও রেলপথের যাত্রীদের যাতায়াত নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন করতে আয়োজিত আন্তমন্ত্রণালয় সভা হয়। সভায় যানজট, সড়ক সংস্কার, চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি, অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধ, টোল আদায়ে ইটিসি বুথ চালুসহ কয়েকটি বিষয় আলোচনা হয়েছে।
ঢাকার বাস টার্মিনাল ও স্ট্যান্ডে পকেটমার, চোর, মলম পার্টি নিয়েও আলোচনা হয়েছে। যাত্রীদের নিরাপত্তার কথা ভেবে সড়ক পরিবহন উপদেষ্টা গাবতলী, মহাখালী, গুলিস্তান, ফুলবাড়িয়া ও সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল এলাকা সিসিটিভির আওতায় আনার নির্দেশ দেন। এজন্য ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন থেকে একজন করে প্রতিনিধি, বিআরটিএর একজন প্রতিনিধি ও ডিএমপির একজন প্রতিনিধি নিয়ে মোট চারজনের একটি কমিটি করে দেয়া হয়।
সভায় আলোচনা হয়েছে মহাসড়কে গাছ ফেলে ডাকাতি প্রসঙ্গেও। সবচেয়ে বেশি ডাকাতি হয় ঢাকা-রংপুর, ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-আরিচা, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে। বিশেষ করে প্রবাসীদের গাড়িগুলো বেশি ডাকাতির কবলে পড়ে। এ ছাড়া বাসে ভাড়া বেশি রাখা হয় ঈদের আগে। এ বিষয়ে সড়ক পরিবহন উপদেষ্টা বলেন, মহাসড়কে অন্ধকার ও ডাকাতপ্রবণ এলাকাগুলো পুলিশ মনিটরিংয়ে রাখবে এবং টহল জোরদার করবে।
সভায় সড়ক পরিবহন ও মহাসড়কের পক্ষ থেকে জানানো হয়, জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে সারা দেশে যানজটের জন্য ১৫৯ স্পট চিহ্নিত করা হয়েছে। তার মধ্যে ঢাকা-রংপুর মহাসড়কে আছে সবচেয়ে বেশি ৫৪ স্পট। এর পরই রয়েছে ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের ৪৯ স্পট। এ ছাড়া ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে আছে ৪২ স্পট। ঢাকা-পাটুরিয়া-আরিচা মহাসড়কে আছে আটটি গুরুত্বপূর্ণ স্পট এবং ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে আছে ছয়টি স্পট।
ঢাকা-রংপুর ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে যানজটের আশঙ্কা করা হয়। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের অনেক জায়গায় খানাখন্দ আছে। এ ছাড়া ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশে বাজার বসায় যানজট সৃষ্টি হয়।
মহাসড়ক যানজটমুক্ত রাখার বিষয়ে আলোচনা উঠলে হাইওয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে প্রায় ৭০০ পুলিশ সদস্য কাজ করবেন। তবে আমরা দেখেছি ৩৮ থেকে ৩৯টি সড়কের অবস্থা খুবই খারাপ। যেগুলো দ্রুত মেরামত করা দরকার। আর কিছু জায়গায় যানজট হতে পারে, সেগুলো আমরা দেখব।
লালমনিরহাট-বুড়িমারী দুই লেনের সড়কের অবস্থা খুবই শোচনীয়। ঈদের আগে মেরামত না করলে যান চলাচল থমকে যেতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেন লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক।
সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ মঈনুল হাসান বলেন, কাঞ্চন ব্রিজ থেকে ভুলতা পর্যন্ত সড়কের দুই পাশে সার্ভিস লেন ২৫ মার্চের মধ্যে সম্পন্ন করার আপ্রাণ চেষ্টা করছি। এ ছাড়া সড়কের যেসব জায়গায় খানাখন্দ বা খারাপ আছে সেগুলো ঈদের আগেই মেরামত কাজ শেষ হয়ে যাবে। ঈদের আগে সড়ক ঠিক হয়ে যাবে। ২০ মার্চের মধ্যেই এলেঙ্গা-রংপুর ফোর লেন খুলে দেয়া হবে। সভায় সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান ১৫ রোজার মধ্যে সব রাস্তার সংস্কার শেষ করার নির্দেশ দেন।
এ ছাড়া জাতীয়, মহাসড়ক ও গুরুত্বপূর্ণ করিডরগুলোর সড়ক ঈদের সাত দিন আগেই মেরামত বা সংস্কার করতে বলা হয়েছে। এসব সড়কের মধ্যে রয়েছে ঢাকা বাইপাস (মদনপুর-ভুলতা-ভোগড়া-এন-১০৫), নবীনগর-চন্দ্রা (এন-৪৫০), ঢাকা-জয়দেবপুর-ময়মনসিংহ (এন-৩), ঢাকা-জয়দেবপুর (এন-৩), ঢাকা (ভোগড়া)-চন্দ্রা-এলেঙ্গা, এলেঙ্গা-হাটিকুমরুল-বগুড়া-রংপুর, ঢাকা-সিলেট, ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-গোপালগঞ্জ-খুলনা, ভাঙ্গা-বরিশাল। এ ছাড়া ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর সিটি করপোরেশনের আওতায় থাকা সড়কগুলো।
সভায় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ যাত্রীকল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক। সভায় কী কী বিষয়ে আলোচনা হয়েছে-জানতে চাইলে তিনি বলেন, কিছু জায়গায় যানজটের দুর্ভোগ হবে সেটা নিয়ে আমরা পুলিশকে তৎপর হতে বলেছি। সড়ক সংস্কারের বিষয় এবং অতিরিক্ত ভাড়া আদায় প্রসঙ্গে যাত্রীকল্যাণ সমিতি থেকে জোর দাবি তোলা হয়েছে যেন সেগুলো কঠোরভাবে মনিটরিং করা হয়। একই সঙ্গে সারা দেশে চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি বেড়েছে। ঈদ উপলক্ষে সড়ক ও মহাসড়কে এসবের প্রবণতা বাড়তে পারে। সেজন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে কঠোরভাবে দায়িত্ব পালন করতে যাত্রীকল্যাণ সমিতির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে। তবে পুলিশ প্রশাসন যদি সক্রিয় ভূমিকা পালন করে তাহলে ঈদযাত্রা স্বস্তিদায়ক হবে বলে আশা করছি।
এদিকে পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ট্রেনের আসনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। প্রতিদিন দুপুর ২টা থেকে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগের যাত্রীরা (পূর্বাঞ্চলের আন্তঃনগর ট্রেন) অনলাইনে টিকিট কাটতে পারবেন। এছাড়া পশ্চিমাঞ্চলে চলাচল করা সব আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট মিলবে সকাল ৮টা থেকে।
এ বছর সম্পূর্ণ টিকিট অনলাইনে বিক্রি করা হবে, যা পাওয়া যাবে বাংলাদেশ রেলওয়ের ওয়েবসাইট (যঃঃঢ়ং://বঃরপশবঃ.ৎধরষধিু.মড়া.নফ/) ও মোবাইল অ্যাপে।
রেলওয়ের নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী, আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট বিক্রি হবে যাত্রার তারিখের ১০ দিন আগে। অর্থাৎ, ১৪ মার্চ বিক্রি হবে ২৪ মার্চের টিকিট। ১৫ মার্চ বিক্রি হবে ২৫ মার্চের টিকিট। এভাবে ১৬ থেকে ২০ মার্চ পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে ২৬, ২৭, ২৮, ২৯ ও ৩০ মার্চের টিকিট পাওয়া যাবে।
ঈদের ছুটির পর ফিরতি যাত্রার জন্য ২৪ মার্চ থেকে অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হবে। ৩ এপ্রিলের টিকিট মিলবে ২৪ মার্চ, ৪ এপ্রিলের টিকিট ২৫ মার্চে, এবং এভাবে ৯ এপ্রিল পর্যন্ত প্রতিদিনের টিকিট একদিন আগে পাওয়া যাবে।
যাত্রীদের বাড়তি চাপ সামলাতে, রেলওয়ে নির্ধারিত আসনসংখ্যার বাইরে আরও ২৫ শতাংশ স্ট্যান্ডিং টিকিট দেবে, যা ট্রেন ছাড়ার আগে প্রারম্ভিক স্টেশন থেকে সংগ্রহ করা যাবে। একজন যাত্রী সর্বোচ্চ চারটি ফিরতি টিকিট কাটতে পারবেন এবং ক্রয়কৃত টিকিট ফেরতযোগ্য হবে না।
ঈদ উপলক্ষে ‘চাঁদপুর ঈদ স্পেশাল ১ ও ২’ নামের বিশেষ ট্রেন চালানো হবে চট্টগ্রাম-চাঁদপুর রুটে। এছাড়া, ২৮টি মিটারগেজ কোচ ও ১৪টি মিটারগেজ লোকোমোটিভ যুক্ত করা হবে ট্রেনের বহরে।
২৭ মার্চ থেকে ঈদের আগের দিন পর্যন্ত সব আন্তঃনগর ট্রেনের সাপ্তাহিক বন্ধ বাতিল করা হয়েছে, তবে ঈদের পর নিয়মিত বন্ধ পুনরায় কার্যকর হবে। ঈদের দিন কোনো আন্তঃনগর ট্রেন চলবে না।
 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স