ঢাকা , শনিবার, ৩১ মে ২০২৫ , ১৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
আমতলীতে শহিদ রাষ্টপতি জিয়াউর রহমানের মৃত্যু বার্ষিকীতে সেচ্ছায় রক্তদান ও আলেচনা সভা মগবাজারে কুপিয়ে ব্যাগ ছিনতাইয়ের ঘটনায় গ্রেফতার ৩ ২ জুন বাজেট ঘোষণা স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা নিহত বাংলাদেশের জন্য জাপান গুরুত্বপূর্ণ শ্রমবাজার : প্রেস সচিব বাড়ছে নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা সরকারের আশ্বাসে প্রাথমিক শিক্ষকদের কর্মবিরতি স্থগিত ডিসেম্বরের আগেই জাতীয় নির্বাচন দেয়া সম্ভব -তারেক রহমান দেশে গণতন্ত্রের নিরাপদ যাত্রা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে : খালেদা জিয়া নির্বাচন ইস্যুতে এনসিপির সমালোচনায় ববি হাজ্জাজ আনু মুহাম্মদের স্ট্যাটাসে আসিফ নজরুলের বিস্ময় প্রকাশ জিয়াউর রহমানের ৪৪তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ উত্তাল নগর ভবনে পা রাখলেন ইশরাক আরও উজ্জীবিত আন্দোলনকারীরা সচিবালয়ে কর্মচারীদের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা প্রশাসনে ১০ মাসেও ফেরেনি শৃঙ্খলা ভারী বৃষ্টিতে বন্যার শঙ্কা শেখ হাসিনার আমলে ২৩৪ বিলিয়ন ডলার পাচার অবাধ-নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনে একসঙ্গে কাজ করবে সরকার, ইসি ও জাতিসংঘ মিডিয়ার হেডলাইন দেখে মন্তব্য করা যায় না-ইশরাক ইস্যুতে সিইসি নানামুখী চাপে দেশের অর্থনীতি

রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত চেয়েছে ঐকমত্য কমিশন

  • আপলোড সময় : ১১-০৩-২০২৫ ০২:২১:০৯ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১১-০৩-২০২৫ ০২:২১:০৯ অপরাহ্ন
রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত চেয়েছে ঐকমত্য কমিশন
দেশের ৩৪টি রাজনৈতিক দলের কাছে দ্রুততম সময়ের মতামত চেয়েছে ঐকমত্য কমিশন। গতকাল সোমবার সংসদ ভবনের এলডি হল মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেছেন ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি আলী রীয়াজ। তিনি বলেন, যখন যে দলের মতামত পাওয়া যাবে, সেই সময় থেকেই আলোচনার শুরু হবে। সংস্কার কমিশনের সুপারিশের বিষয়ে ৩৪টি দল ও জোটের কাছে মতামত চেয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। তিনি বলেন, দলগুলোর কাছ থেকে তাদের মতামত প্রাপ্তি সাপেক্ষে আমরা দলগুলোর প্রতিনিধিদের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা শুরু করবো। এজন্য এখনও পর্যন্ত আমরা কোনও সুনির্দিষ্ট দিনক্ষণ নির্ধারন করিনি। যখন যে দলের মতামত পাওয়া যাবে, সেই সময় থেকেই আলোচনার শুরু হবে। রাজনৈতিক দল এবং জোটগুলোর প্রতি যত দ্রুত সম্ভব মতামত জানাতে সনির্বন্ধ অনুরোধ জানান আলী রীয়াজ। আলী রিয়াজ বলেন, এই প্রক্রিয়ার পরের ধাপ রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর নির্ভর করছে। আমরা চাই দ্রুত আলোচনা করতে এবং স্বল্প সময়ের মধ্যেই ঐকমত্যে পৌঁছে একটি ‘জাতীয় সনদ’ তৈরি করতে। তিনি জানান, গত ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে এই কমিশন কাজ শুরু করে। কমিশনের উদ্বোধন উপলক্ষে ওইদিন প্রধান উপদেষ্টা ও কমিশনের সভাপতি অধ্যাপক ইউনূসের সভাপতিত্বে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সৌজন্য সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় ৩৪টি দলের মোট ১০৪ জন প্রতিনিধি অংশ নেন। সভায় উপস্থিত সব রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা সংস্কার প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে তাদের সংকল্পের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন। সভায় রাজনৈতিক দলগুলোর অনুরোধের প্রেক্ষিতে ৩৪টি রাজনৈতিক দলের কাছে ছয়টি কমিশনের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদনের হার্ড কপি ২২ ফেব্রুয়ারির মধ্যে পৌঁছে দেওয়া হয়। ইতোপূর্বে সব দলকে প্রতিবেদনগুলোর সফট কপিও পাঠানো হয়। আলী রীয়াজ বলেন, এরপরে ঐকমত্য কমিশনের সদস্যরা তিন দফা বৈঠকে মিলিত হন এবং সংশ্লিষ্ট কমিশনগুলোর প্রতিবেদনগুলো থেকে গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশগুলোকে চিহ্নিত করেন। পাঁচটি কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশগুলোকে ছকের আকারে বিন্যস্ত করা হয়। এসব ছকে পুলিশ সংস্কার কমিশনের সুপারিশগুলোকে যুক্ত করা হয়নি। পুলিশ সংস্কার কমিশন মনে করে যে, তাদের সুপারিশগুলো প্রশাসনিক ব্যবস্থার মাধ্যমে বাস্তবায়ন সম্ভব। তিনি বলেন, এই ছকগুলো ৬ মার্চ ৩৪টি রাজনৈতিক দল ও জোটের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। এতে মোট সুপারিশের সংখ্যা হচ্ছে ১৬৬টি। এর মধ্যে সংবিধান সংস্কার সংক্রান্ত সুপারিশ ৭০টি; নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার বিষয়ে সুপারিশ ২৭টি; বিচার বিভাগ সংক্রান্ত সুপারিশ ২৩টি; জনপ্রশাসন সংক্রান্ত সুপারিশ ২৬টি; এবং দুর্নীতি দমন কমিশন সংক্রান্ত সুপারিশ ২০টি। তিনি বলেন, প্রতিটি সুপারিশের ক্ষেত্রে দুটি বিষয়ে মতামত চাওয়া হয়েছে। প্রথমটি হলো— সংশ্লিষ্ট সুপারিশের বিষয়ে একমত কিনা। এতে তিনটি বিকল্প রাখা হয়েছে। সেগুলো হলো ‘একমত’, ‘একমত নই’ এবং ‘আংশিকভাবে একমত’। এ তিনটি বিকল্পের যেকোনও একটিতে টিক চিহ্ন দিয়ে মতামত জানাতে অনুরোধ করা হয়েছে। তিনি জানান, দ্বিতীয়টি হলো- প্রতিটি সুপারিশের বিষয়ে সংস্কারের সময়কাল ও বাস্তবায়নের উপায়। এই ক্ষেত্রে ছয়টি বিকল্প আছে। সেগুলো হলো ‘নির্বাচনের আগে অধ্যাদেশের মাধ্যমে’, ‘নির্বাচনের আগে গণভোটের মাধ্যমে’, ‘নির্বাচনের সময় গণভোটের মাধ্যমে’, ‘গণপরিষদের মাধ্যমে’, ‘নির্বাচনের পরে সাংবিধানিক সংস্কারের মাধ্যমে’ এবং ‘গণপরিষদ ও আইনসভা হিসেবে নির্বাচিত সংসদের মাধ্যমে’। এসব ঘরের যেকোনও একটিতে টিক চিহ্ন দিয়ে মতামত দিতে বলা হয়েছে। এর বাইরে প্রতিটি সুপারিশের পাশে দলগুলোর ‘মন্তব্য’ দেওয়ার একটি জায়গা রাখা হয়েছে। আমরা আশা করছি যে, আগামী ১৩ মার্চের মধ্যে রাজনৈতিক দল এবং জোটগুলো তাদের মতামত আমাদেরকে জানাবেন। ইতোমধ্যে যদি কোনও প্রশ্ন থাকে বা ব্যাখ্যার দরকার হয়, তবে কমিশন সেসব প্রশ্নের উত্তর দেওয়া এবং এসব বিষয়ে আলোচনা করতে সব সময় প্রস্তত আছে। লিখিত বক্তব্যে আলী রীয়াজ জানান, রাজনৈতিক দলগুলোর পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশগুলোর ব্যাপারে নাগরিকদের মতামত জানার জন্যে খুব শিগগিরই ওয়েব সাইটের মাধ্যমে ব্যবস্থা করা হবে। সংবিধান এবং রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সংস্কারের লক্ষ্যে সংস্কার কমিশনগুলো তাদের কার্যক্রমে রাজনৈতিক দলগুলো, নাগরিক সমাজ এবং গণমাধ্যমের সহযোগিতা পেয়ে আসছে ঐকমত্য কমিশন। ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুথানের পর অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার রাষ্ট্র সংস্কারের লক্ষ্যে ১১টি সংস্কার কমিশন গঠন করে। এর মধ্যে সংবিধান, নির্বাচন ব্যবস্থা, বিচার বিভাগ, জনপ্রশাসন, দুর্নীতি দমন কমিশন এবং পুলিশ সংস্কারের জন্যে গঠিত ছয়টি কমিশন ফেব্রুয়ারি ২০২৫ তাদের সুপারিশ সম্বলিত প্রতিবেদনগুলো সরকারের কাছে জমা দেয়। আগামী নির্বাচন সামনে রেখে এই ছয়টি কমিশনের সুপারিশ বিবেচনা ও গ্রহণের লক্ষ্যে জাতীয় ঐকমত্য গঠনের জন্য রাজনৈতিক দল ও শক্তিগুলোর সঙ্গে আলোচনা এবং পদক্ষেপ সুপারিশের উদ্দেশ্যে ১২ ফেব্রুয়ারি সাত সদস্যের জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠন করা হয়। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস এই কমিশনের সভাপতি। কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ ছাড়া অন্য সদস্যরা হলেন— বদিউল আলম মজুমদার, আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী, সফররাজ হোসেন, বিচারপতি এমদাদুল হক এবং ইফতেখারুজ্জামান। এই কমিশনের মেয়াদ ছয় মাস। কমিশনের কাজে সহযোগিতা করার উদ্দেশ্যে গত ৬ ফেব্রুয়ারি প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হিসেবে সাংবাদিক মনির হায়দারকে নিয়োগ করা হয়। তিনি ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে যুক্ত আছেন এবং রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ এবং সমন্বয়ের দায়িত্ব পালন করছেন।

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স