ঢাকা , বুধবার, ১২ মার্চ ২০২৫ , ২৮ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে আফগানিস্তানকে নিষিদ্ধের আহ্বান রোহিঙ্গাদের সাথে ইফতার করবেন প্রধান উপদেষ্টা ও জাতিসংঘের মহাসচিব জনগণের সমস্যা সমাধানে রাজনীতিবিদদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে দেশে এখন যুদ্ধ পরিস্থিতি চলছে-তথ্য উপদেষ্টা সর্বনিম্ন ফিতরা ১১০ সর্বোচ্চ ২ হাজার ৮০৫ টাকা চলতি বছরের মধ্যে পাচারকৃত অর্থের কিছু অংশ ফিরিয়ে আনা সম্ভব-অর্থ উপদেষ্টা পদযাত্রায় সংঘর্ষে শিক্ষার্থী-পুলিশ আহত ধর্ষকের শাস্তি জনসম্মুখে করাসহ ৬ দাবি ঈদের পর এনসিপির চূড়ান্ত রাজনৈতিক এজেন্ডা শ্রমিকদের ওপর হামলার বিচার ও বেতনের দাবি ঝিমিয়ে পড়েছে বিদেশী বাজেট সহায়তার প্রতিশ্রুত অর্থছাড় প্রক্রিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কোচিং ক্লাস-প্রাইভেট পড়ানো যাবে না ন্যায়বিচার-মানবাধিকার নিশ্চিতের আহ্বান চার আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার প্রবাসীদের জন্য ‘প্রক্সি ভোট’ নিয়ে ভাবছে ইসি শেখ পরিবারের সদস্যদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা ট্রেনের যাত্রী জিম্মি উদ্ধারে গিয়ে ২০ সেনা নিহত ট্রেনে জঙ্গি হামলা জিম্মি ৫শ’ যাত্রী পল্লবী থানায় ঢুকে হামলা ওসিসহ আহত ৩ রাখাল রাহার ৪শ’ কোটি টাকা বাণিজ্যের তথ্য ভুয়া ব্যবসায়ী হত্যায় ৪ জনের যাবজ্জীবন
দুই মাসে ২৯৪ নারী ও শিশু নির্যাতনের শিকার

নিরাপত্তায় কঠোর হচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার

  • আপলোড সময় : ১১-০৩-২০২৫ ১২:২৩:৫৯ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১১-০৩-২০২৫ ১২:২৩:৫৯ অপরাহ্ন
নিরাপত্তায় কঠোর হচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার
অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়ার সাত মাস পরও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি, বরং দিনকে দিন চরম অবনতি হচ্ছে। শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর সবার প্রত্যাশা ছিল, অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীণ অন্তর্বর্তী সরকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষা তথা নাগরিকের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিতে কার্যকর পদক্ষেপ নেবে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে রাজধানী ঢাকাসহ দেশজুড়ে ডাকাতি, ধর্ষণ-ছিনতাই, চাঁদাবাজি, অপহরণের মতো অপরাধ বেড়েই যাচ্ছে। এতে নাগরিকদের মধ্যে একটা নিরাপত্তাহীনতা তৈরি হচ্ছে। তবে জনগণের জানমাল রক্ষা ও নিরাপত্তায় এবার কঠোর থেকে আরও কঠোর হচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার। ইতিমধ্যে জনগণের জানমালের নিরাপত্তা দিতে দৌড়-ঝাঁপ শুরু করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.)। সর্বশেষ গতকাল সোমবার ভোরে রাজধানীর চারটি থানায় পরিদর্শন করেছেন তিনি। পরিদর্শনকালে তিনি থানার অভ্যর্থনা কক্ষ, হাজতখানা এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা পরিদর্শন করেন। থানায় পরিদর্শনকালে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাদের প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেন। তিনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের আরও সজাগ, তৎপর এবং সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন। এছাড়া, রাস্তায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে স্থাপিত চেকপোস্ট ও তল্লাশি চৌকি পরিদর্শন করেন এবং দায়িত্বরত সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করেন। যৌথ বাহিনীর টহল দলের কার্যক্রমও মনিটরিং করেন তিনি। এ সময় উপস্থিত সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, রমজানে রাজধানীতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সরকার পুরোপুরি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। এর অংশ হিসেবে, রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে শতাধিক চেকপোস্ট স্থাপন এবং অপরাধপ্রবণ এলাকায় টহল বাড়ানো হয়েছে। এই কার্যক্রম মনিটরিং করার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, যারা সংঘবদ্ধভাবে মব পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে, চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, ধর্ষণ এবং নারী ও শিশু নির্যাতনের মতো অপরাধ করছে, তাদের আইনের আওতায় আনা হবে এবং কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করা হবে। অপরাধমূলক কার্যক্রম রোধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আরও কঠোর হওয়ার নির্দেশ দেন তিনি। এরআগে গত ৮ ফেব্রুয়ারি রাতে দেশজুড়ে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ নামে বিশেষ অভিযান শুরু হয়। গত শনিবার (৮মার্চ) এই বিশেষ অভিযানের এক মাস পূর্ণ হয়েছে। নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, বিশেষ অভিযান স্বত্তেও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উল্লেখযোগ্য উন্নতি দেখা যাচ্ছে না। এখনও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে অস্বস্তি কাটেনি, বরং আতঙ্ক বেড়েছে। উল্টো দেশে নারী ও শিশু ধর্ষণ এবং নারীর প্রতি সহিংসতা বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে আতঙ্ক আর উদ্বেগ বাড়ছে অভিভাবকসহ নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের মধ্যে। নাগরিক সমাজের মতে, বেশির ভাগ ঘটনা রাতে ও ভোরে ঘটছে। ছিনতাইকারীরা ধারালো অস্ত্র বেশি ব্যবহার করছে। তারা দলবদ্ধ হয়ে এসব অপরাধ ঘটাচ্ছে। কিন্তু অভিযোগ দেয়ার পরও অনেক ঘটনায় অপরাধীরা ধরা পড়ছে না। রাতে ও ভোরে ঢাকার সড়কে পুলিশের উপস্থিতি থাকে কম। এ সুযোগ অপরাধীরা কাজে লাগাচ্ছে। ছিনতাই-চুরির মামলায় আসামিরা অনেক ক্ষেত্রে ধরা পড়ে না, সাজাও হয় না। এতে অপরাধও থামে না। তবে অভিজ্ঞজনেরা বলছেন, গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে অভিজ্ঞ ও চৌকস অনেক পুলিশ অফিসারকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। অনেককে থানা কিংবা ডিইউটিরত অবস্থায় গ্রেফতার করায় একধরনের আতঙ্ক ও অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। যার কারণে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলো বর্তমানে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে পারছে না। অনিশ্চিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে নতুন করে বিরূপ পরিস্থিতিতে পড়ার ভয়েও অনেক পুলিশ সদস্য তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। এসব কারণে আইনশৃঙ্খলার অবনতি হচ্ছে, যা জনজীবনে সীমাহীন উদ্বেগ তৈরি করছে। তারা এও বলছেন, পুলিশকে বিগত সরকার রাজনীতিকভাবে ব্যাবহার করেছে এটা সত্য। বর্তমান সরকারও চেষ্টা করলে তাদেরকে আরও বেশি কাজে লাগাতে পারতো। এতে আওয়ামী লীগ এবং তাদের দোসর হিসেবে পরিচিতদের দ্রুত গ্রেফতার করাও সম্ভব হতো। কারণ যখন যে সরকার ক্ষমতায় থাকে পুলিশ তাদের হয়েই কাজ করে। সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি দেশে নারী ও শিশু ধর্ষণ এবং নারীর প্রতি সহিংসতা বৃদ্ধি পেয়েছে। চলতি বছরের প্রথম দুই মাসে ২৯৪ জন নারী ও শিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ৯৬ জন, যার মধ্যে ৪৪ জন শিশুও রয়েছে। তবে মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র-আসক এর তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের জানুয়ারি মাসে সারাদেশে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ৩৯ জন নারী। এসব ঘটনায় অন্তর্বর্তী সরকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শতভাগ ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হক। তিনি বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নেয়ার ছয় মাসেও দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এবং রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে এখন পর্যন্ত স্থিতিশীল অবস্থায় ফিরে আসেনি। দেশের বিভিন্ন স্থানে অরাজকতা, বিশৃঙ্খলা, খুন, ধর্ষণ ও মব সন্ত্রাসে জনগণের জানমালের নিরাপত্তাকে দুর্বিষহ করে তুলেছে। এর দায় এই অন্তর্বর্তী সরকারকেই নিতে হবে। এ বিষয়ে কথা হয় বাংলাদেশ মহিলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট সালমা আলী এর সঙ্গে। তিনি বলেন, নির্বাচিত সরকারের সময় প্রতিকারের একটা চেষ্টা আমরা দেখতে পাই। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকারের মধ্যে সেই ধরনের কোনো চেষ্টাও নেই। বরং কখনও কখনও নিপীড়কদের পুনর্বাসন আমরা দেখতে পাচ্ছি। এমন পরিস্থিতিকে নারীর অধিকারের পথে প্রধান অন্তরায় বলে মনে করেন সালমা আলী। তিনি বলেন, আমি মনে করি, সরকারের দায়িত্বশীলদের মুখের কথা না, কাজের মধ্যে আমরা এর বাস্তবায়ন দেখতে চাই। দিন দিন দেশে নারীর অধিকার সংকুচিত হচ্ছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সম্প্রতি সময়ে শিশু, গর্ভবতী নারী, বিশেষভাবে সক্ষম নারী, যৌন নির্যাতন থেকে কেউই রেহাই পাননি। সর্বশেষ ৯ মার্চ নরসিংদীতে ৩ দিন আটকে রেখে এক গর্ভবতী নারীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ উঠে। একইদিন সীতাকুণ্ডে সৈকতে বন্ধুকে বেঁধে রেখে কলেজছাত্রীকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে মামলা হয়েছে। ৯ মার্চ এবার গাজীপুরে ৮ বছরের শিশুকে শুধু ধর্ষণ করে ভিডিও ধারণ করেছে ধর্ষকরা। ৮ মার্চ শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে সামাজিক সালিসে দেড় লাখ টাকা জরিমানা করে ধর্ষককে ছেড়ে দেয় স্থানীয় মাতাব্বররা। একইদিন ফরিদপুরে সাইকেলে ঘোরানোর কথা বলে একজন শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠে। এদিন খাবার ও বেলুনের লোভ দেখিয়ে দুই শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে এক বৃদ্ধকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ৭ মার্চ চিপস কিনে দিয়ে প্রতিবন্ধী তরুণীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করার অভিযোগ পাওয়া যায়। এরআগে গত ৬ মার্চ মাগুরায় বোনের বাড়ি বেড়াতে এসে ‘ধর্ষণের শিকার’ শিশুটি এখনো রাজধানীর সিএমএইচ চিকিৎসাধীণ। বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের সময় নারী নির্যাতনের মাত্রা কমলে আমরা খুব খুশি হতাম। কিন্তু এটা কমার কোনো লক্ষণ দেখছি না। বর্তমানে আমরা দেখতে পাচ্ছি, সমাজে নারী বিদ্বেষী মনোভাব বাড়ছে। নারীবিরোধী গোষ্ঠী আবার তৎপর হয়ে উঠেছে। তারা ধর্মকে নারীর বিরুদ্ধে ব্যবহার করছে, নারীর চলাচলে বাধা দিচ্ছে, নারীর পোশাকের প্রতি আঙুল তুলছে, ধর্মকে হিংসা?বিদ্বেষের কারণ হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। আবার যিনি নারীর দিকে আঙুল তুলছেন তাকে ফুলের মালা দিয়ে নিয়ে আসা হচ্ছে। এগুলো তো ভালো লক্ষণ না। ধর্ষণ ও নারী নিপীড়ন ঠেকাতে হিমশিম খাচ্ছে সরকার : ধর্ষণ ও নারী নিপীড়ন ঠেকাতে হিমশিম খাচ্ছে সরকার। মাগুরায় আট বছরের শিশু ধর্ষিত হওয়ার পর থেকে নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে দেশের নানা প্রান্তে আন্দোলনে মুখর হয়েছে ছাত্র-জনতা। মাগুরায় শিশু ধর্ষণের ঘটনার তিন দিন পর শনিবার চারজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এ মামলার শিশুটির ভগ্নিপতি সজিব হোসেন (১৮) ও বোনের শ্বশুর হিটু মিয়া (৪২), সজিব শেখের বড় ভাই রাতুল শেখ (২০) এবং তাদের মা জাবেদা বেগমকে (৪০) আসামি করা হয়েছে। তাদের চারজনকেই গ্রেফতার করা হয়েছে। বর্তমানে শিশুটি ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। উদ্ভূত পরিস্থিতে ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের মামলার ক্ষেত্রে বিদ্যমান আইন পরিবর্তন করার কথা জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। শিক্ষার্থীদের লাঠি মিছিল ও প্রতিবাদ : ধর্ষণ ও নারী নিপীড়নের বিরুদ্ধে উত্তাল সারাদেশ। বিভিন্নস্থানে মিছিল-সমাবেশ করে ধর্ষক ও নিপীড়কদের কঠোর শাস্তির দাবি জানানো হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে লাঠি মিছিল করেছে শিক্ষার্থীরা। ‘ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ’ প্ল্যাটফর্মের ব্যানারে গতকাল রোববার বেলা পৌনে তিনটার দিকে টিএসসির রাজু ভাস্কর্যের সামনে থেকে এই কর্মসূচি পালন করা হয়। বাঁশের ছোট ছোট লাঠি হাতে রাজু ভাস্কর্য থেকে শুরু করে ভিসি চত্বর, নীলক্ষেত, কাঁটাবন, শাহবাগ মোড় ঘুরে মিছিলটি আবার রাজু ভাস্কর্যে এসে শেষ হয়। এই কর্মসূচিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সদস্য ও শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। এই কর্মসূচি থেকে ধর্ষণসহ অব্যাহত নারী নিপীড়ন প্রতিরোধে ব্যর্থ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লে. জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর অপসারণ এবং দ্রুত ট্রাইব্যুনালে সব ধর্ষণ-কাণ্ডের বিচারসহ ৯ দফা দাবি তুলে ধরা হয়। ধর্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে রোববার ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। এর আগে রোববারের প্রথম প্রহরে সব হল থেকে বের হয়ে এসে প্রতিবাদ জানানোর পর সকাল থেকেই বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা ধর্ষকের বিচারের দাবিতে নিজ নিজ বিভাগের ব্যানারে বিক্ষোভ করছেন। এ বিক্ষোভে যোগ দিয়েছেন বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকরাও। এছাড়া সারাদেশে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়সহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রতিবাদ হয়েছে। এ বিষয়ে আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেন, ধর্ষণ মামলার তদন্ত ও বিচারকাজের সময় কমিয়ে অর্ধেক করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের মামলার ক্ষেত্রে বিদ্যমান আইন পরিবর্তন করে তদন্তের সময় ৩০ থেকে কমিয়ে ১৫ দিন করা হচ্ছে এবং ধর্ষণের মামলায় ৯০ দিনের মধ্যে বিচারকাজ সম্পন্ন করতে হবে। তিনি বলেন, আজকের পর থেকে আরও কঠোর হচ্ছে সরকার। অপরাধীদের জায়গা হবে না বাংলাদেশে। এ বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেন, রাষ্ট্রের অখণ্ডতা, নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা রক্ষার্থে আমাদের কঠোর হতে হবে। তিনি বলেন, তৌহিদী জনতা নামে আপনারা যারা নিজেদের পরিচয় দেন, তাদের আমি হুমকি দিইনি, সতর্ক করেছি। এখন থেকে যেকোনো ধরনের ‘মব জাস্টিসের’ বিরুদ্ধে সরকার কঠোর অবস্থানে যাবে। তিনি আরও বলেন, জনগণকে জানাতে চাই, যেখানেই মব জাস্টিস পরিস্থিতি হবে, সে যেই হোন না কেন, যে ধর্মের, লিঙ্গের, বর্ণের, জাতের হোন না কেন, আমরা এখন থেকে কঠোর ভূমিকায় অবতীর্ণ হব। এখানে-ওখানে গিয়ে ডাকাতি, সম্পত্তি দখল বা যতগুলো ঝামেলা আছে, যতগুলো জটিলতা, অস্থিরতা, নৈরাজ্য তৈরি হয়েছে, এসব বিষয়ে এখন থেকে জিরো টলারেন্স ভূমিকায় অবতীর্ণ হব। এ বিষয়ে মহিলা ও শিশু বিষয়ক উপদেষ্টা শারমিন এস মুরশিদ বলেন, আমি আগের সরকারের সময়ের সঙ্গে বর্তমান সময়ের তুলনা করতে চাই না। শুধু বলতে চাই, ১৫ বছরের জঞ্জাল ৫ মাসে সমাধান চাইলে হবে না। আমরা চেষ্টা করছি। পুরুষরূপী এই হায়েনাদের বিরুদ্ধে কিভাবে বিচার নিশ্চিত করা যায় সেই চেষ্টা চলছে। তবে নারী ও শিশুদের বিরুদ্ধে ক্রমবর্ধমান সহিংসতার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম বলেছেন, এই রিপোর্ট করা ঘটনাগুলো শুধু হিমশৈলের চূড়া মাত্র। ভয় ও সামাজিক চাপের কারণে অনেক বেশি ভুক্তভোগী নীরবে ভুগছে, অভিযোগ দায়ের করতে পারছে না। আমাদের বিচার ও সুরক্ষা ব্যবস্থা নারী ও শিশুদের রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে। এই ব্যর্থতা একেবারেই অগ্রহণযোগ্য।

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স