ঢাকা , শনিবার, ৩১ মে ২০২৫ , ১৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
আমতলীতে শহিদ রাষ্টপতি জিয়াউর রহমানের মৃত্যু বার্ষিকীতে সেচ্ছায় রক্তদান ও আলেচনা সভা মগবাজারে কুপিয়ে ব্যাগ ছিনতাইয়ের ঘটনায় গ্রেফতার ৩ ২ জুন বাজেট ঘোষণা স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা নিহত বাংলাদেশের জন্য জাপান গুরুত্বপূর্ণ শ্রমবাজার : প্রেস সচিব বাড়ছে নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা সরকারের আশ্বাসে প্রাথমিক শিক্ষকদের কর্মবিরতি স্থগিত ডিসেম্বরের আগেই জাতীয় নির্বাচন দেয়া সম্ভব -তারেক রহমান দেশে গণতন্ত্রের নিরাপদ যাত্রা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে : খালেদা জিয়া নির্বাচন ইস্যুতে এনসিপির সমালোচনায় ববি হাজ্জাজ আনু মুহাম্মদের স্ট্যাটাসে আসিফ নজরুলের বিস্ময় প্রকাশ জিয়াউর রহমানের ৪৪তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ উত্তাল নগর ভবনে পা রাখলেন ইশরাক আরও উজ্জীবিত আন্দোলনকারীরা সচিবালয়ে কর্মচারীদের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা প্রশাসনে ১০ মাসেও ফেরেনি শৃঙ্খলা ভারী বৃষ্টিতে বন্যার শঙ্কা শেখ হাসিনার আমলে ২৩৪ বিলিয়ন ডলার পাচার অবাধ-নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনে একসঙ্গে কাজ করবে সরকার, ইসি ও জাতিসংঘ মিডিয়ার হেডলাইন দেখে মন্তব্য করা যায় না-ইশরাক ইস্যুতে সিইসি নানামুখী চাপে দেশের অর্থনীতি
এবার চায় বাস্তবসম্মত লক্ষ্যমাত্রা

রাজস্ব আদায়ে ব্যর্থ এনবিআর

  • আপলোড সময় : ০৫-০৩-২০২৫ ১২:০৭:৫৬ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ০৫-০৩-২০২৫ ১২:০৭:৫৬ পূর্বাহ্ন
রাজস্ব আদায়ে ব্যর্থ এনবিআর
এক যুগেরও বেশি সময় ধরে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারেনি জাতীয় রাজস্ব বোর্ড -এনবিআর। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথমার্ধে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় প্রায় ৫৮ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আদায় কম হয়েছে। এটি গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায়ও প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা কম। এনবিআর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, জুলাই ও আগস্ট মাসে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, ডলারের বিনিময় হার বৃদ্ধিসহ নানা কারণে রাজস্ব আদায় কমে গেছে। তবে লক্ষ্যমাত্রা অনেক বেশি দেওয়ার কারণেও আদায় কমছে। ফলে রাজস্ব ঘাটতি বাড়ছে। এনবিআর সূত্রে জানা যায়, গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে মোট রাজস্ব সংগ্রহ হয়েছে তিন লাখ ৮২ হাজার ৫৬২ কোটি টাকা। এটি সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ২৭ হাজার ৪৩৮ কোটি টাকা কম। অর্থবছরের শুরুতে সরকার চার লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা কর আদায়ের লক্ষ্য নিলেও শেষ পর্যন্ত ২০ হাজার কোটি টাকা কমিয়ে আনে। এনবিআরের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২-২৩ অর্থবছরে ১০ শতাংশ প্রবৃদ্ধির বিপরীতে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে আদায়ে ১৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেও কর আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে এনবিআর। এর আগে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরেও এনবিআরকে চার লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের দায়িত্ব দেয় সরকার, সেটি পূরণেও ব্যর্থ হয় প্রতিষ্ঠানটি। এনবিআরের গবেষণা ও পরিসংখ্যানের হিসাব অনুযায়ী, চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছর এনবিআরকে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছে ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে ডিসেম্বর পর্যন্ত অর্থবছরের প্রথমার্ধের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ লাখ ১৪ হাজার ১৪৩ কোটি ১০ লাখ টাকা। বিপরীতে আদায় হয়েছে ১ লাখ ৫৬ হাজার ৪১৯ কোটি ৪৯ লাখ টাকা। অর্থাৎ ছয় মাসে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় রাজস্ব আদায় কম হয়েছে ৫৭ হাজার ৭২৩ কোটি ৬১ লাখ টাকা। গত অর্থবছরে একই সময়ে রাজস্ব আদায় হয়েছিল ১ লাখ ৫৭ হাজার ৯৮৮ কোটি ৯০ লাখ টাকা। সেই হিসেবে গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় আদায় কম হয়েছে ১ হাজার ৫৬৯ কোটি ৪১ লাখ টাকা। এদিকে, দীর্ঘ সময় ধরে রাজস্ব আদায়ে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে না পারার বাস্তবতায় এনবিআর আগামী তিন অর্থবছরের জন্য আরও বাস্তবসম্মত রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করতে অর্থ মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করেছে। সমপ্রতি অর্থ বিভাগের সচিবকে পাঠানো এক চিঠিতে এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান সতর্ক করে বলেন, যথাযথ পর্যালোচনা ও গবেষণা ব্যতীত লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলে অর্থবছর শেষে তা বরাবরের মতো ব্যর্থতায় পর্যবসিত হবে। দেশের উৎপাদন ও ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রবৃদ্ধির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ এবং বিগত বছরের মতো ধারাবাহিক রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যর্থতার দায় থেকে বেরিয়ে আসা প্রয়োজন বলে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড মনে করে। চিঠিতে বলা হয়, অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগে অনুষ্ঠিত বাজেট ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় উপস্থাপিত তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, ২০২৫-২৬, ২০২৬-২৭ ও ২০২৭-২৮ অর্থবছরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ও এর অধীন সব দপ্তরের রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে যথাক্রমে ৫,৬৪,৪১১.৯২ কোটি, ৬,৪৯,০৭৩.৭১ কোটি ও ৭,৪৬,৪৩৪.৭৬ কোটি টাকা। এতে বলা হয়, প্রাক্কলন ও প্রক্ষেপণ বিগত বছরসমূহের রাজস্ব আদায়ের সার্বিক প্রবৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে নির্ধারিত হওয়া সমীচীন। উল্লিখিত রাজস্ব প্রাপ্তির প্রাক্কলন ও প্রক্ষেপণ আপাতদৃষ্টে বাস্তবতাবিমুখ এবং যথাযথ গবেষণা উদ্ভূত নয় মর্মে প্রতীয়মান। লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে না পারায় এনবিআরের কার্যক্রম প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে জানিয়ে চিঠিতে বলা হয়, স্ফিত অঙ্কে বাজেট নির্ধারণ করা এবং বছর শেষে নির্ধারণ করা বাজেট লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হওয়া-এরূপ চিত্র ধারাবাহিকভাবে চলমান থাকায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের গ্রহণযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও হবে। দেশের সিংহভাগ রাজস্ব আদায়কারী প্রতিষ্ঠান জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের জন্য যা মোটেও কাম্য নয়। এতে আরও বলা হয়, রাজস্ব প্রাপ্তির প্রাক্কলন ও প্রক্ষেপণ নির্ধারণে বিগত বছরসমূহের প্রকৃত রাজস্ব আদায়ের ওপর সামপ্রতিক/বিগত বছরসমূহের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ১৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ধরে লক্ষ্যমাত্রা স্থির করা হলে তা রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের পাশাপাশি বাস্তবসম্মত ব্যয় প্রাক্কলন করা সম্ভব হবে। একই সঙ্গে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের মাঠপর্যায়ের অফিসসমূহে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দৃঢ় মনোবল ও উৎসাহের সঙ্গে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারবে, যা তাদের ভবিষ্যতে আরও কর্ম উদ্যমী করবে। এমতাবস্থায়, উপর্যুক্ত বিষয়সমূহ বিবেচনায় নিয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবসম্মতভাবে নির্ধারণের জন্য অনুরোধ করা হলো। এ নিয়ে এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আবদুল মজিদ বলেন, রাজস্ব আহরণ জিডিপির তুলনায় কম। রাজস্ব বৃদ্ধির যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। তবে তা পুরোপুরি কাজে লাগানো যাচ্ছে না। এনবিআরের উচিত নিজস্ব সক্ষমতা বাড়ানো। দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য বিনিয়োগ করা এবং অপ্রয়োজনীয় কর ছাড় কমানোর ব্যবস্থা করা।
 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স