
ছাত্রদের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে উত্তাল কুয়েট
- আপলোড সময় : ১৯-০২-২০২৫ ০১:৩২:০৫ অপরাহ্ন
- আপডেট সময় : ১৯-০২-২০২৫ ০১:৩২:০৫ অপরাহ্ন


* ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ইট-পাটকেল নিক্ষেপে আহত অর্ধশত শিক্ষার্থী
* পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে মোতায়েন করা হয়েছে সেনাবাহিনী ও বিজিবি
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) ছাত্র রাজনীতি বন্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় অর্ধশত শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে কুয়েট ক্যাম্পাসে এ ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে ক্যাম্পাসের ভেতরে ও বাইরে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সেনাবাহিনীর পাশাপাশি দুই প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, গত ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকার পতনের পর থেকে কুয়েটে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ আছে। কুয়েটে ছাত্ররাজনীতি যাতে আবার শুরু হতে পারে, সে জন্য ছাত্রদলের কর্মীরা গত সোমবার ক্যাম্পাসে লিফলেট বিতরণ করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে দুপুরে শিক্ষার্থীরা ‘ছাত্র রাজনীতি ঠিকানা, এই কুয়েটে হবে না’, ‘দাবি মোদের একটায়, রাজনীতি মুক্ত ক্যাম্পাস চাই’, ‘এই ক্যাম্পাসে হবে না, ছাত্র রাজনীতির ঠিকানা’-সহ বিভিন্ন স্লোগান দিতে দিতে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র হলগুলো প্রদক্ষিণ করে।
পরে কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের সামনে ছাত্রদের দুই গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। পরে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া কুয়েটের বাইরেও ছড়িয়ে পড়ে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পকেট গেট থেকে বহিরাগতরা একটি গ্রুপের পক্ষ নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে কয়েকজন আহত হয়েছেন। সংঘর্ষে আহতদের কুয়েটের অ্যাম্বুলেন্সে করে একের পর এক হাসপাতালে নিয়ে যেতে দেখা গেছে। এ পর্যন্ত চারটি অ্যাম্বুলেন্সে করে আহতদের হাসপাতালে নিয়ে গেছে। দুপুর আনুমানিক দুইটার দিকে কুয়েট পকেট গেটের বাইরে বিএনপি সমর্থিত বহিরাগতরা একজন ছাত্রকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে ক্যাম্পাসের ভেতর ফেলে রাখে। এরপর থেকে সাধারণ ছাত্রদের মধ্যে চরম উত্তেজনা দেখা দেয়। ছাত্রদল, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, ছাত্রশিবির ও বহিরাগতদের মধ্যে ত্রিমুখী সংঘর্ষ রূপ নিয়েছে। বহিরাগতরা কুয়েটের একটি গাড়ি ভাঙচুর করে। কুয়েট প্রধান ফটকের সামনে শিক্ষার্থীরা কয়েকটি বাড়িতে হামলা চালায়।
শিক্ষার্থীরা জানান, ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি পুরোপুরি নিষিদ্ধ করার দাবিতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা গতকাল মঙ্গলবার সকালে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেন। এ ছাড়া তারা উপাচার্যের বাসভবন ঘেরাও করেন। এ নিয়ে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। এর জেরে বিকেল পৌনে চারটার দিকে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়। এতে উভয় পক্ষের ১৫ জন আহত হন।
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে সংঘর্ষের ঘটনায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দাবি করছে, কুয়েট শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা হামলা করেছেন। এর প্রতিবাদে গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে সমাবেশ ও বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা।
খানজাহান আলী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কবির হোসেন সংঘর্ষের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, কুয়েটে ছাত্রদের দুই গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। পরে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আমরা কাজ করছি।
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের (কেএমপি) উপ-পুলিশ কমিশনার আবুল বাশার মোহাম্মদ মোহাম্মদ আতিকুর রহমান বলেন, ‘কুয়েটে ছাত্রদের দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করেছে পুলিশ।’
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ