আজ শুক্রবার পহেলা ফাল্গুন ও বিশ্ব ভালোবাসা দিবস। দুই উৎসবকে ঘিরে জোড়া উৎসবের আমেজ। ঋতুরাজ বসন্ত এলেই বাঙালি সংস্কৃতি মেতে ওঠে ভিন্ন আঙ্গিকে। বাংলা বর্ষপঞ্জিতে পরিবর্তন আনায় পহেলা ফাল্গুন ও ভালবাসা দিবস একদিনেই উদযাপন করছেন উৎসবপ্রিয় বাঙালি।
এদিন অমর একুশে বাঙালির প্রাণের মেলা বইমেলা। যে মেলার সঙ্গে জড়িয়ে আছে একুশের চেতনা। তবে প্রতিবছরই এর সঙ্গে জড়িয়ে যায় ফাল্গুন। কারণ, এই ফেব্রুয়ারিতেই দেখা মেলে প্রিয় ঋতু বসন্তের। সঙ্গে ১৪ ফেব্রুয়ারি ‘বিশ্ব ভালোবাসা দিবস’। আর মূল চেতনা বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনে শহিদদের স্মরণে ২১ ফেব্রুযারি। এই সবকিছু নিয়ে পুরো ফেব্রুয়ারি মাসজুড়ে থাকে বইমেলা। একুশ, বসন্ত, ভালোবাসা ও বইমেলা। এই চার সংস্কৃতিই বাঙালির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে মিশে যায়।
আজ সেই কাক্সিক্ষত ঋতুরাজ বসন্ত। কিন্তু তার একদিন আগেই বইমেলায় ঘুরতে আসা দর্শনার্থীদের পোশাকে বসন্তের রং লেগেছে। বাসন্তী শাড়ি ও রক্তিম পাঞ্জাবিতে সাজসজ্জা করে অনেকেই বসন্তের আগাম দূত হয়ে এসেছেন মেলার মাঠে। এদিন মেলায় আগমনী বসন্তের রং ছড়াচ্ছেন স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শনার্থীরাও। বসন্ত উৎসব আর ভালোবাসা দিবসকে একাকার করে বাহারি সাজে মেলায় এসেছেন তরুণ-তরুণীরা।
গতকাল বৃহস্পতিবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দেখা গেছে, পাঠক-দর্শনার্থী ও সংস্কৃতিকর্মীদের ভিড়। বিকেল থেকেই উৎসবের আমেজে মেলায় আসতে থাকেন দর্শনার্থীরা। হলুদ শাড়ি আর খোঁপায় ফুল গুঁজে সেজেছেন তরুণীরা। মেলায় এসে কেউ বই দেখছেন, কেউ আড্ডা দিচ্ছেন প্রিয়জনদের সঙ্গে। কথা হয় মেলায় আসা কয়েকজনের সঙ্গে। তারা জানান, মেলায় আজ অন্যরকম আনন্দ। আজ শুক্রবার বসন্তের আগমন। সে কারণে একদিন আগেই বসন্তের সাজে সেজে এসেছেন। গল্প-আড্ডার সঙ্গে প্রিয়জনের জন্য বই কেনার কথাও জানান তারা। রাজধানীর পোস্তগোলা থেকে বইমেলায় এসেছেন পিংকি আক্তার। দুই সন্তান জারিন ও জায়ানকে নিয়ে বসন্তের সাজে সেজে মেলায় এসেছেন তিনি। পিংকি বলেন, মেলায় এবছর আজই প্রথম আসা। বাচ্চাদের স্কুল নিয়ে ব্যস্ত থাকতে হয়। ১৪ ফেব্রুয়ারি বসন্তকাল শুরু, তাই ওদের জন্য ফুল কিনেছি। একই সঙ্গে বইমেলার পরিবেশও খুব ভালো লাগছে। অন্যপ্রকাশ স্টলে হুমায়ূন আহমেদের বই দেখছিলেন আকাশ। তিনি বলেন, মেলা তো প্রতিদিনই জমজমাট হচ্ছে। কিছু বই কিনেছি, এখন হুমায়ূন আহমেদ স্যারের একটা বই কিনবো। উপহারের জন্যও দুইটা বই নিয়েছি। অফিস শেষ করে সোজা মেলায় এসেছেন আলতামাস। তিনি বলেন, ছুটির দিনগুলোতে অনেক সময় আসা হয় না। আজ অফিস শেষ করেই ফার্মগেট থেকে মেলায় চলে আসলাম। বসন্তের আগমনকে কেন্দ্র করে উচ্ছ্বসিত বিক্রয়কর্মীরাও। শিশুবেলা প্রকাশনীর বিক্রয়কর্মী মোজাম্মেল হোসেন বলেন, এবছর প্রতিদিনই দর্শনার্থীর ভালো সমাগম হচ্ছে। বেচাকেনাও মোটামুটি। ১৪ ফেব্রুয়ারি (ভালোবাসা দিবস) ও বসন্ত উৎসব। সবমিলিয়ে মেলায় দর্শনার্থী ও পাঠকের আগমন বাড়বে। আশা করছি বেচাকেনাও ভালো হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাবরিনা প্রিয়ন্তী, লাল ও হলুদ রংয়ের শাড়ি পরনে। খোপায় গাঁদা ফুলের মালা। গলায় ও কানে পরেছে সোনালী রংয়ের গহনা। হাতে লাল-হলুদ ও সোনালী রংয়ের রেশমি চুড়ি। প্রিয়ন্তী বলেন, ফেব্রুয়ারি মাস এলেই মনে হয় যেন বসন্ত চলে এসেছে। তাই এই মাসে একুশে ফেব্রুয়ারি শহিদ দিবস বাদে বেশির ভাগ আয়োজনেই বাসন্তী সাজে সাজা হয়। আর বই মেলাতো আমাদের বাঙালির একটি কৃষ্টিতে পরিণত হয়েছে। সেই বইমেলায় বাঙালি সাজে আসতেই ভালো লাগে। নতুন বইয়ের মোড়কেও কেমন যেন বসন্তের ফুলের মতো ঘ্রাণ পাওয়া যায়। তাই যতবারই বই মেলায় আসি, এভাবে বাসন্তী ও বাঙালিয়ানা সাজেই আসি। প্রিয়ন্তীর সঙ্গেই ছিল তার সহপাঠী মৌটুসি। মৌটুসি কাঁচা হলুদ ও কালো রংয়ের শাড়ি পরেছেন। গলায় কানে মাটির গহনা। হাতে কাঠের লাল হলুদ বালা। চুলে বেণী কেটে গুঁজেছেন গোলাপ। মৌটুসি বলেন, আসলে আমরা সব সময়তো একই রকম সাজেই থাকি। বসন্ত এমন একটা ঋতু, যে ঋতুর সঙ্গে মিলিয়ে নিজেকে সাজানো যায়। আর প্রকৃতির সঙ্গে নিজেকে সাজাতে কার না ভালো লাগে বলেন? বইমেলা এমন একটা জায়গা, যেখানে নতুন সাজে সেজে মিলন মেলায় মেতে উঠতে পারি। তাই বসন্ত ১৪ ফেব্রুয়ারি হলেও, যতবার মেলায় বই কিনতে আসব ততবারই বসন্তের সাজেই আসব। একই কথা হয় এক দম্পতির সঙ্গে। রাসেল আহমেদ ও তার স্ত্রী শান্তা আহমেদ। সঙ্গে তাদের একবছর বয়সী ছেলে। তারা তিন জনই বাসন্তী রংয়ের কাপড়ে সেজেছেন। শান্তা বলেন, আসলে আমরা পহেলা ফাল্গুন উপলক্ষ্যে তিনজন একই কাপড়ের ম্যাচিং পোশাক কিনেছি। কিন্তু হঠাৎ করেই একটা কাজ পড়ে যাওয়ায় আমরা বসন্তের দিন ঢাকার বাইরে থাকব। আজ যেহেতু বইমেলায় আসা, তাই বসন্তের পোশাক পরেই এলাম। কারণ, বসন্ত ও বইমেলা কোনোটাই মিস করতে চাই না। ফুল ফুটুক আর না-ই ফুটুক, বসন্ত তো আসবেই। তার আবহ আগে থেকেই জানান দিচ্ছে বাঙালি। বইমেলায় নানা রংয়ের নতুন মলাটে মোড়ানো বই, সেইসঙ্গে আছে বইপ্রেমী পাঠক। সবমিলিয়ে প্রাণের মিলন মেলায় পরিণত অমর একুশে বইমেলা।
গতকাল বৃহস্পতিবার ১৩তম দিনে অমর একুশে বইমেলা নতুন বই এসেছে ৮৫টি। তারমধ্যে গল্প-৮টি, উপন্যাস-১৪টি, প্রবন্ধ-২টি, কবিতা-২৮টি, গবেষণা-৪টি, ছড়া-৪টি, গণ-অভ্যুত্থান-৩টি এবং অন্যান্য-২২টি।
আলোচনা অনুষ্ঠান: গতকাল বিকেল চারটায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় ‘ছাত্র-জনতার জুলাই অভ্যুত্থান : প্রেক্ষাপট ও অভিমুখ’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সারোয়ার তুষার। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন যোবায়ের আল মাহমুদ এবং নুসরাত সাবিনা চৌধুরী। এতে সভাপতিত্ব করেন মাহবুব মোর্শেদ।
প্রাবন্ধিক বলেন, এ অঞ্চলের প্রত্যেকটি ঐতিহাসিক পর্বে ছাত্রসমাজ এগিয়ে এসেছে এবং রাজনৈতিক পরিণতির অভিমুখ নির্ধারণ করেছে। বৃহত্তর জনগণ ছাত্রশক্তির ডাকে সাড়া দিয়েছে এবং গণঅভ্যুত্থান সৃষ্টি করেছে। রাজনৈতিক দলগুলো বরাবরই ছাত্র-শ্রমিক-জনতার পদাঙ্ক অনুসরণে বাধ্য হয়েছে। ২৪-এর জুলাই গণঅভ্যুত্থানেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। অতীতে অভ্যুত্থানের পর রাজনৈতিক দলগুলো ছাত্র-জনতার আত্মদান ও বিসর্জনের মর্যাদা রক্ষা করতে পারেনি। জুলাই অভ্যুত্থানের বিজয়ী ছাত্রশক্তি এ ইতিহাস সম্পর্কে সচেতন। তাই এবার তারা রাষ্ট্র ও সাংবিধানিক ব্যবস্থার গণতান্ত্রিক পুনর্গঠন করতে চায়। ছাত্র-জনতার সফলতা/ব্যর্থতার ওপর রাজনৈতিক জনগোষ্ঠী হিসেবে আমাদের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে।
আলোচকদ্বয় বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে যত গণ-অভ্যুত্থান হয়েছে তার মধ্যে সবচেয়ে তীব্রতর হয়েছে ২৪-এর গণঅভ্যুত্থান। ফ্যাসিবাদী শক্তি দীর্ঘদিন এদেশের জনগণকে অবদমিত করে রেখেছিল। জুলাই অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে জনগণের অবদমিত আকাক্সক্ষার বিস্ফোরণ ঘটেছে। জনগণ ফ্যাসিবাদী কাঠামো বিলোপ করে জনগণের সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠার জন্যই এই অভ্যুত্থানে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নিয়েছে।
সভাপতির বক্তব্যে মাহবুব মোর্শেদ বলেন, ২৪-এর অভ্যুত্থানে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার বিভিন্ন মতাদর্শে বিশ্বাসী মানুষের অংশগ্রহণ ছিল। এর তাৎক্ষণিকতা, এর আকস্মিকতা সবকিছু মিলিয়ে এটি ছিল একটি সফল গণ-অভ্যুত্থান।
এদিন লেখক বলছি মঞ্চে নিজেদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেনÑ কবি ফাতিমা তামান্না এবং কবি মুহাম্মদ আবদুল বাতেন।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান: আবৃত্তি পরিবেশন করেন আবৃত্তিশিল্পী রবিউল আলম এবং নাসিম আহমেদ। গতকাল বৃহস্পতিবার ছিল শাকিল আহমেদের পরিচালনায় ‘আবৃত্তি সংসদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়’ এবং সারমিন ইসলাম জুঁইয়ের পরিচালনায় আবৃত্তি সংগঠন ‘ঋদ্ধস্বর আবৃত্তি একাডেমি’-এর পরিবেশনা। সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী ফেরদৌস আরা, অনন্যা আচার্য, ফাহমি ফেরদৌস, ফারহানা শিরিন, সঞ্জয় কবিরাজ, নিপা ভট্টাচার্য, ইন্দিরা রুদ্র এবং কাজী মুয়ীদ শাহরিয়ার সিরাজ জয়। যন্ত্রাণুষঙ্গে ছিলেন কাজী মো. ইমতিয়াজ সুলতান (তবলা), এ বি এম তানবীর আলম সজীব (কী-বোর্ড), মো. মামুনুর রশিদ (বাঁশি) শেখ ফয়েজ পুলক (অক্টোপ্যাড) এবং রিচার্ড কিশোর (গীটার)।
আজকের অনুষ্ঠান: আজ শুক্রবার অমর একুশে বইমেলার ১৪তম দিন মেলা শুরু হবে সকাল ১১ টায় এবং পবিত্র শবে-বরাত উপলক্ষ্যে রাত ৯ টার পরিবর্তে মেলা চলবে চলবে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা পর্যন্ত। এদিন বিকেল চারটায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে ‘স্মরণ : আহমদ ছফা’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন তাহমিদাল জামি। আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন নূরুল আনোয়ার এবং সাজ্জাদ শরিফ। সভাপতিত্ব করবেন সলিমুল্লাহ খান।
পহেলা ফাল্গুন ও বিশ্ব ভালোবাসা দিবস: আজ শুক্রবার পহেলা ফাল্গুন ও বিশ্ব ভালোবাসা দিবস। দুই উৎসবকে ঘিরে জোড়া উৎসবের আমেজ। ঋতুরাজ বসন্ত এলেই বাঙালি সংস্কৃতি মেতে ওঠে ভিন্ন আঙ্গিকে। বাংলা বর্ষপঞ্জিতে পরিবর্তন আনায় পহেলা ফাল্গুন ও ভালবাসা দিবস একদিনেই উদযাপন করছেন উৎসবপ্রিয় বাঙালি। প্রকৃতিতে বসন্ত আর ভালোবাসা যেন একে-অন্যের পরিপূরক। পহেলা ফাল্গুনে বসন্ত উৎসবের রঙে মেতে ওঠে তরুণ হৃদয়; নতুন করে প্রাণ পায় প্রবীণরা। বসন্তে শুধু প্রকৃতিই নয়, হৃদয়ও রঙিন হয়ে ওঠে। তাই তো বসন্ত আমাদের কাছে ‘প্রেমের ঋতু’। এ উৎসবটির একটি ঐতিহ্যময় ইতিহাস আছে। ১৫৮৫ সালে মোগল সম্রাট আকবর ১৪টি উৎসবের প্রবর্তন করেছিলেন। এর মধ্যে অন্যতম ছিল ‘বসন্ত উৎসব’।
কী নেই বসন্তের! আছে রং, রূপ, রস ও লাবণ্য। আছে মাতাল দখিনা সমীরণ। ঋতুরাজের আগমনে খুলে গেছে দখিনা দুয়ার। মানব-মানবীর চিরন্তন ভালোবাসা উড়ছে রঙিন প্রজাপতি হয়ে। ফুলে ফুলে আছে মৌমাছির গুঞ্জন। নতুন প্রাণের পত্রপল্লবে জেগে উঠেছে বৃক্ষ-লতাগুল্ম। নদীর কিনার থেকে আদিগন্ত প্রান্তর, কুঞ্জবন, অরণ্য-পর্বতে ডেকেছে নবযৌবনের বান। প্রকৃতির এ রূপতরঙ্গ দেখেই কবিগুরু লিখেছিলেন, ‘ওরে ভাই, ফাগুন লেগেছে বনে বনে।
পশ্চিমের ভ্যালেনটাইন্স ডে বা ভালোবাসা দিবসের ধারণা এসে মিলেছে আমাদের বসন্তে। বাংলা একাডেমি পঞ্জিকা সংশোধনের পর এখন পহেলা ফাল্গুন আর ভালোবাসা দিবস একই দিনে উদযাপিত হয়। ভালোবাসার মানুষকে আরো কাছে পাওয়ার সময় এ বসন্ত। বসন্ত আসে তরুণের পোশাকে, মননে, সংগীতে। বাঁধনহারা মন এ সময় গেয়ে ওঠে, ‘মধুর বসন্ত এসেছে মধুর মিলন ঘটাতে।’ তবে বসন্ত শুধু প্রেমের ঋতু নয়। এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে বাঙালির দ্রোহের ইতিহাসও। এমনই এক বসন্তে বাঙালি ভাষার জন্য আন্দোলন করেছিল।
১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি দিনটি ছিল ৮ ফাল্গুন। সেদিন মাতৃভাষার মর্যাদা রাখতে জীবন দিয়েছিলেন সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার, শফিউর। ঋতুরাজ বসন্ত তাই প্রেম, আনন্দ, ভালোবাসা, প্রতিবাদ আর তারুণ্যের প্রতীক। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের হাত ধরে বাঙালি করেছে বাষট্টির শিক্ষা আন্দোলন, উনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান, একাত্তরের অসহযোগ আন্দোলন আর ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধ। সেদিক থেকে দেখতে গেলে বসন্তে রোপিত হয়েছিল বাংলাদেশের জন্মের বীজ। তেমনি আশির দশকে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন এক চূড়ান্ত রূপ নিয়েছিল এমনই এক বসন্তে।
১৯৮৩ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি প্রাণ দিয়েছিলেন জাফর, জয়নাল, মোজাম্মেল, আইয়ুব, কাঞ্চন, দিপালীরা। সেই আন্দোলনের পথ বেয়ে নব্বইয়ে বাংলাদেশ পেয়েছিল গণতন্ত্রের স্বাদ। দ্রোহ হোক বা প্রেম, বসন্ত আমাদের জীবনে বয়ে নিয়ে আসে নতুন আশা। রুক্ষ শীত শেষে বসন্তের আগমনে প্রকৃতিতে জাগে নতুন আনন্দ। অথচ সময়টা মলিন। করোনা মহামারির একের পর এক ঢেউ আমাদের শঙ্কিত মনকে বিবর্ণ করে তুলেছে। বসন্তকে তাই আরো বেশি প্রয়োজন এখন। এবারের বসন্ত নতুন জীবনীশক্তিতে প্রকৃতি ও প্রাণকে ভরিয়ে তুলুক। বসন্তের দোলা লাগুক বনে, মনে। উল্লসিত মন গেয়ে উঠুক, ‘আহা কী আনন্দ আকাশে বাতাসে।’
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

বসন্ত-ভালোবাসার আমেজে থাকবে একুশের চেতনা
আজ বিশ্ব ভালোবাসা দিবস ও পহেলা ফাল্গুন
- আপলোড সময় : ১৪-০২-২০২৫ ০৮:২৯:২৯ অপরাহ্ন
- আপডেট সময় : ১৪-০২-২০২৫ ০৮:২৯:২৯ অপরাহ্ন


কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ