ঢাকা , বুধবার, ১২ মার্চ ২০২৫ , ২৮ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
রোহিঙ্গাদের সাথে ইফতার করবেন প্রধান উপদেষ্টা ও জাতিসংঘের মহাসচিব জনগণের সমস্যা সমাধানে রাজনীতিবিদদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে দেশে এখন যুদ্ধ পরিস্থিতি চলছে-তথ্য উপদেষ্টা সর্বনিম্ন ফিতরা ১১০ সর্বোচ্চ ২ হাজার ৮০৫ টাকা চলতি বছরের মধ্যে পাচারকৃত অর্থের কিছু অংশ ফিরিয়ে আনা সম্ভব-অর্থ উপদেষ্টা পদযাত্রায় সংঘর্ষে শিক্ষার্থী-পুলিশ আহত ধর্ষকের শাস্তি জনসম্মুখে করাসহ ৬ দাবি ঈদের পর এনসিপির চূড়ান্ত রাজনৈতিক এজেন্ডা শ্রমিকদের ওপর হামলার বিচার ও বেতনের দাবি ঝিমিয়ে পড়েছে বিদেশী বাজেট সহায়তার প্রতিশ্রুত অর্থছাড় প্রক্রিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কোচিং ক্লাস-প্রাইভেট পড়ানো যাবে না ন্যায়বিচার-মানবাধিকার নিশ্চিতের আহ্বান চার আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার প্রবাসীদের জন্য ‘প্রক্সি ভোট’ নিয়ে ভাবছে ইসি শেখ পরিবারের সদস্যদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা ট্রেনের যাত্রী জিম্মি উদ্ধারে গিয়ে ২০ সেনা নিহত ট্রেনে জঙ্গি হামলা জিম্মি ৫শ’ যাত্রী পল্লবী থানায় ঢুকে হামলা ওসিসহ আহত ৩ রাখাল রাহার ৪শ’ কোটি টাকা বাণিজ্যের তথ্য ভুয়া ব্যবসায়ী হত্যায় ৪ জনের যাবজ্জীবন ডিএফপি কর্মচারী কল্যাণ সমিতির নতুন কমিটি

সরকারি কলেজের সম্পত্তি দখল

  • আপলোড সময় : ০৯-০২-২০২৫ ১০:১৮:২৩ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ০৯-০২-২০২৫ ১০:১৮:২৩ অপরাহ্ন
সরকারি কলেজের সম্পত্তি দখল
মফিজুর রহমান, ফেনী 
ফেনী সরকারি কলেজের কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি দখল করে রেখেছে একটি দুষ্টচক্র। বেআইনীভাবে স্থাপনা নির্মাণ করে উক্ত জায়গা থেকে লাখ লাখ টাকা ভাড়া আদায় করছে ওই চক্র।
কলেজ কর্তৃপক্ষ বার বার চেষ্টা করেও ওই জায়গা পুনরুদ্ধার করতে পারছে না। যুগ যুগ ধরে বেহাত এসব জায়গা উদ্ধারে এবার মরিয়া হয়ে মাঠে নেমেছেন বর্তমান অধ্যক্ষসহ সংশ্লিষ্ট ভূমি কমিটিতে থাকা শিক্ষকগণ। দীর্ঘদিন ঝুপড়ি ঘর আর টিনের ছাউনি থাকলেও ৫ আগস্টের পটপরিবর্তনের পর শহরের জনগুরুত্বপূর্ণ সদর হাসপাতালের পাশেই ইটের গাঁথুনি দিয়ে স্থাপনা তৈরি করা হচ্ছে। এ নিয়ে উভয়পক্ষকে সাময়িক স্থিতাবস্থা রক্ষার আদেশ দেয়া হলেও আদালতের নিষেধজ্ঞা অমান্য করে নির্মাণ কাজ অব্যাহত রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সম্প্রতি শহরের হাসপাতাল মোড় সংলগ্ন হাসপাতালের প্রধান ফটকের পাশে কলেজের জায়গায় স্থাপনা নির্মাণ করেন একটি চক্র। কলেজ কর্তৃপক্ষ বিষয়টি জেনে ঘটনাস্থলে গিয়ে নির্মাণ কাজে বাধা দেয়। একপর্যায়ে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে শহরের বারাহিপুর এলাকার বাসিন্দা সুমন মিয়া ও ছাগলনাইয়ার পাঠাননগর এলাকার বাসিন্দা মনির আহাম্মদের নাম উল্লেখ করে অভিযোগ দেয়া হয়। আদালত গত ২ ফেব্রুয়ারি স্থিতাবস্তার আদেশ দিয়ে সরেজমিন তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন জমা দিতে সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কে নির্দেশ দেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সদর হাসপাতালের ফটকের পাশে রয়েছে বিসমিল্লাহ মেডিসিন এন্ড সার্জারি শপ। তার পাশে কালো প্লাস্টিক টাঙিয়ে পেছনে নির্মাণ করা হচ্ছে ইটের গাঁথুনি দিয়ে পাকা দোকান ঘর। কয়েকজন শ্রমিক নির্মাণ কাজে ব্যস্ত। দিনে-রাতে সমানতালে নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। দোকানঘর নির্মাণ করছেন সৈয়দনগর এলাকার বাসিন্দা সাহাব উদ্দিন। তাছাড়া আগে থেকেই রয়েছে ছোট-বড় পাকা-আধাপাকা স্থাপনার বেশ কয়েকটি দোকানঘর। এসব দোকান থেকে লাখ লাখ টাকা আদায় করা হয়। কলেজ সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, ১৬৪১শতক ভূমি অধিগ্রহণ করে তৎকালীন সরকার ১৯৬২ সালের ২১ জুলাই ফেনী সরকারি কলেজকে হস্তান্তর করে। ১৯৭৯ সালের ১২ জুলাই শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুকূলে ৮৪২৭ নং দলিলে দান করা হয়।
এর প্রেক্ষিতে হাসপাতাল মোড়ের পাশে রয়েছে সি.এস ৮১ খতিয়ানের সাবেক ৪০ দাগের ২৫ শতক জায়গা। দীর্ঘদিন ওই জায়গা স্থানীয় একটি চক্র দখলে নেয়। ভুয়া কাগজ তৈরি করে বিভিন্ন সময় বেচাকেনার নামে হাতবদল হয়। ইতিপূর্বে ওই জায়গার উপর পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের কতিপয় নেতাদের লোলুপ দৃষ্টি পড়ে। বহুতল ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হলেও দখলদার ও কতিপয় নেতারা বিরোধে জড়ানোয় সেই স্বপ্ন পূরণ হয়নি।
কলেজ সূত্র জানায়, রসায়ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান নুরুল আজিম ভূঞার নেতৃত্বে ভূমি রক্ষায় একটি কমিটি রয়েছে। ওই কমিটিতে শিক্ষক পরিষদ সম্পাদক ও সমাজকর্মের সহযোগী অধ্যাপক ফরিদ আলম ভূঞা, গনিতের সহযোগী অধ্যাপক জহির উদ্দিন, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক জয়নাল আবেদীন, একই বিভাগের শিক্ষক মামুনুর রশিদ রয়েছেন।
কমিটির সদস্যরা জানান, কলেজের ১৬৪১ শতক জায়গা উদ্ধারে বারবার উদ্যোগ নেয়া হলেও সেটি বাস্তবায়ন হয়নি। ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর প্রশাসনের সহযোগিতায় বর্তমান অধ্যক্ষ প্রফেসর মোহাম্মদ এনামুল হক খোন্দকার বেহাত হওয়া জায়গা উদ্ধারে সক্রিয় রয়েছেন।
হাসপাতাল মোড়ের দখল হওয়া ২৫ শতকসহ কলেজের জায়গায় অবৈধভাবে নির্মিত দোকানঘরের সম্পত্তি বুঝে পেতে চান অধ্যক্ষ। সম্পদের মালিকানার যাবতীয় কাগজপত্র কলেজের পক্ষে থাকলেও দুষ্টচক্র ভুয়া কাগজপত্র সৃজন করে নাজোহাল করেন। অতীতেও তারা ভুয়া কাগজ দিয়ে দীর্ঘসূত্রতা তৈরি করতে আদালতে সময় চেয়ে বছরের পর বছর ঝুলিয়ে রেখেছে। যার ফলে কলেজের অধ্যক্ষসহ শিক্ষকরা হাল ছেড়ে দিতে বাধ্য হন। এবার কোনমতে সেই সুযোগ পাবে না। বরং দখলদারদের কেউ অসাধু প্রক্রিয়ায় পুনরায় দীর্ঘসূত্রতা তৈরি করলে দখলের পুরো সময়ের জায়গার ভাড়া পরিশোধে বাধ্য করা হবে বলেও একাধিক সদস্য হুঁশিয়ারী দেন। দোকানঘর নির্মাণকারী সাহাব উদ্দিনের দাবী, কাগজপত্রের ভিত্তিতে দীর্ঘদিন জায়গাটি তার দখলে রয়েছে। ওই সূত্রে সেখানে দোকান পুনর্নির্মাণ করা হচ্ছে।
সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সজীব তালুকদার জানান, স্থিতিবস্তা আদেশের বিষয়টি তিনি জেনেছেন। দ্রুতসময়ের মধ্যে সরেজমিন তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেয়া হবে।
ফেনী মডেল থানার ওসি মর্ম সিংহ জানান, আদালতের আদেশের কপি পাইনি। আদালতের আদেশের পরও নির্মাণ কাজ চলার বিষয়টি জানা নেই। এ ধরনের কোনো বিষয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষ কিছু জানায়নি। খোঁজখবর নিয়ে আইনগত প্রদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর মোহাম্মদ এনামুল হক খোন্দকার দৈনিক জানতাকে জানান, শতবর্ষী প্রাচীন এ কলেজের সম্পত্তি রক্ষায় আদালত ও প্রশাসনিক প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। কাগজপত্র অনুযায়ী হাসপাতাল মোড়ের বিশাল অংশে কলেজের সম্পত্তি রয়েছে। শুনেছি, দখলদাররা ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করেছে। শুধু ২৫ শতক নয়, শিগগিরই ১৬৪১ শতক জায়গা বুঝে নেয়া হবে।
তিনি আরো জানান, ইতোমধ্যে দুইবার ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের বাধা দেয়া হয়েছে। তারা বাধা অমান্য করে কলেজের জায়গা জোরপূর্বক দখল করে নির্মাণ কাজ অব্যাহত রেখেছে। এক্ষেত্রে তিনি প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেন।
 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স
প্রতিবেদকের তথ্য