ঢাকা , বুধবার, ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ , ২৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
সড়ক দুর্ঘটনায় প্রতিদিন ১৯ জনের মৃত্যু মহালছড়িতে ভাইয়ের বিরুদ্ধে সম্পদ আত্মসাতের অভিযোগ শ্রীপুরে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগে থানার এএসআই ক্লোজড সাঘাটার ভূমিদস্যু সুইট ও সহযোগীদের শাস্তির দাবি ফুলবাড়ীতে প্রতিপক্ষের গাড়ি ভাঙচুর ও মারপিট ৩১ শয্যার হাসপাতালে ২২ পদ শূন্য, ব্যাহত স্বাস্থ্যসেবা ভূমি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেননি ডিসি আসামি ছিনিয়ে নিল জনতা আসামি ছিনিয়ে নিল জনতা আসামি ছিনিয়ে নিল জনতা বান্দরবানে হত্যা মামলা তুলে নিতে হুমকি আমতলীতে ৫০ শয্যা হাসপাতালে ২২জন স্টাফদের মধ্যে১৬ জনের শুন্যপদ থাকায় চিকিৎসাসেবা ঝুঁকে পরছে হেরা ফেরি ৩-তে ফিরছেন টাবু বাশার-তিশার নতুন রোমান্সের গল্প ‘বসন্ত বৌরি’ ওজন কমাতে সার্জারি, প্রাণ গেল মেক্সিকান ইনফ্লুয়েন্সারের ‘স্কুইড গেম’ অভিনেত্রী লি জু-শিল আর নেই বিচ্ছেদের পর ফের নতুন প্রেম খুঁজছেন মালাইকা অরোরা? দেশের প্রেক্ষাগৃহে ‘বলী’ আসছে ৭ ফেব্রুয়ারি হামলার পর প্রথমবার জনসমক্ষে সাইফ আলী খান অবশেষে প্রকাশ্যে এলো চিত্রনায়িকা পপির স্বামী-সন্তানসহ ছবি

প্রতিবছর পানিতে ডুবে ১৭ হাজার শিশুর মৃত্যু

  • আপলোড সময় : ০৩-০২-২০২৫ ১২:৩২:২৭ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ০৩-০২-২০২৫ ১২:৩২:২৭ পূর্বাহ্ন
প্রতিবছর পানিতে ডুবে ১৭ হাজার শিশুর মৃত্যু

প্রতিবছর পানিতে ডুবে অসংখ্য শিশুর মৃত্যু হচ্ছে, যা শিশুমৃত্যুর অন্যতম কারণ। বর্ষাকালে পানিতে ডুবে শিশুমৃত্যু বেড়ে যায়। চারদিকে পানি বাড়ে, সে সময় দুর্ঘটনাগুলো বেশি হয়। গতকাল পানিতে ডুবে যাওয়া তিন বন্ধুর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তারা সবাই নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থী। ইউনিসেফের তথ্য অনুযায়ী, প্রতি বছর বাংলাদেশে গড়ে ১৭ হাজার শিশু পানিতে ডুবে মারা যায়। এ মৃত্যুর সংখ্যা বিশ্বের মধ্যে সর্বোচ্চ। যা মোট শিশুমৃত্যুর ২৮ ভাগ। এই মৃত্যুর বেশির ভাগ খবর গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয় না।
বাংলাদেশের দ্বিতীয় স্বাস্থ্য ও তথ্য জরিপ ২০১৬ অনুযায়ী, বছরে ১ থেকে ১৭ বছর বয়সি ১৪ হাজার ৪৩৮ জন শিশু পানিতে ডুবে মারা যায়। শিশু ও কিশোরদের মৃত্যুর অন্যতম কারণ পানিতে ডুবে যাওয়া, যা বর্তমানে একটি অবহেলিত জাতীয় সংকট বলে জানান বিজ্ঞজনেরা।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২০১৭ সালের প্রতিবেদন হতে জানা যায়, বছরে ৩ লাখ ৬০ হাজার মানুষ পানিতে ডুবে মারা যায়, যার ৯০ শতাংশ ঘটে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২০১৭ সালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, মেয়ে শিশুদের তুলনায় দ্বিগুণ ছেলে শিশু পানিতে ডুবে মারা যায়। তারা বলেছেন, পানিতে ডুবে শিশুমৃত্যু নিবারণে সরকারি ছাড়াও এনজিও, কমিউনিটি অরগানাইজেশন ও বেসরকারি খাতের কার্যক্রম এখনো সীমিত। পানিতে ডুবে শিশুমৃত্যু নিবারণ কৌশল বাস্তবায়নে প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থার পাশাপাশি সমাজের সব স্তরের জনগণের অংশগ্রহণ ও অবদান জরুরি। বৈশ্বিক তথ্য অনুযায়ী, পানিতে ডুবে সবচেয়ে বেশি মারা যায় এক থেকে চার বছরের শিশুরা এবং দ্বিতীয় ঝুঁকিপূর্ণ বয়স হলো পাঁচ থেকে ৯ বছর।
পানিতে ডুবে মৃত্যু পরিহারযোগ্য। সরকার পানিতে ডুবে শিশুমৃত্যু রোধে প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে ‘সমাজভিত্তিক সমন্বিত শিশু যত্নকেন্দ্রের মাধ্যমে শিশুদের প্রারম্ভিক বিকাশ ও সুরক্ষা এবং শিশুর সাঁতার সুবিধা প্রদান’ নামে প্রকল্প নিয়েছে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়। তিন বছরমেয়াদি এ  প্রকল্পের আওতায় এক থেকে পাঁচ বছর বয়সি ২ লাখ শিশুর জন্য ৮ হাজার সমাজভিত্তিক শিশুযত্ন কেন্দ্র স্থাপন করার কথা। প্রতিটি কেন্দ্রে ২৫ জন শিশুকে ভর্তি করা হবে। সকাল ৯টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত শিশুরা ঐ কেন্দ্রে থাকবে। এতে কর্মসংস্থান হবে ১৬ হাজার গ্রামীণ নারীর। প্রকল্প অনুযায়ী, ১৬ জেলায় এর কাজ চলছে। আর এসব পরিচালনা করবে স্থানীয় এনজিওগুলো। কিন্তু প্রকল্পের ১৫ মাস পরেও কেবল ১৬ জেলায় ১৬ কর্মকর্তা নিয়োগ পেয়েছেন। এনজিওগুলোও কাজ শুরু করেনি। প্রকল্প পরিচালকও এখনো নিয়োগ হয়নি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) শিশুদের ডুবে মৃত্যু প্রতিরোধে ১০টি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেছে। এগুলো হলো শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র স্থাপন, সাঁতার শেখানো ও প্রাথমিক চিকিৎসা। ডব্লিউএইচওর তিন ধরনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা সিআইপিআরবির অভিজ্ঞতা থেকেই নেয়া।
গণমাধ্যম উন্নয়ন ও যোগাযোগবিষয়ক প্রতিষ্ঠান ‘সমষ্টি’। সংগঠনটি সংবাদপত্রে প্রকাশিত পানিতে ডুবে মৃত্যুর তথ্য-উপাত্ত সংরক্ষণ ও বিশ্লেষণ করে। সংগঠনটির হিসাবে, ২০২০ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত, এই তিন বছরে পানিতে ডুবে ৩ হাজার ২৮৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর ৮৭ শতাংশই শিশু। সংগঠনটির শুধু সংবাদপত্রের প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে এই তথ্য জানায়। তবে বাস্তবে এ সংখ্যা অনেক বেশি।
সেন্টার ফর ইনজুরি প্রিভেনশন অ্যান্ড রিসার্চের (সিআইপিআরবি) নির্বাহী পরিচালক এ কে এম ফজলুর রহমান বলেন, গবেষণায় দেখা যায়, প্রতি বছর পাঁচ বছর বয়সি অন্তত ১১ হাজার শিশুর মৃত্যু হয় পানিতে ডুবে। এই মৃত্যুর বড় অংশের খবর পত্রিকায় আসে না।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এ মৃত্যু প্রতিরোধে সচেতনতা বাড়াতে হবে। পাশাপাশি বয়স্কদের তত্ত্বাবধান বাড়াতে হবে। গ্রামে শিশু পরিচর্যাকেন্দ্র রাখতে হবে। অতি দারিদ্রতা, পুকুর-জলাধারে নিরাপত্তা বেষ্টনীর অভাব দূর করতে হবে, শিশুদের সাঁতার শেখাতে হবে।
 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স