রেলের জায়গা দখল করে অবৈধ বাজার ও স্ট্যান্ড
মফিজুর রহমান, ফেনী
আওয়ামী দুঃশাসনমলে ফেনীতে রেলের অধিকাংশ জায়গা স্থানীয় প্রভাবশালী ও রাজনৈতিক নেতাদের দখলে চলে যায়। সেইসাথে রেল লাইনের পাশে স্বৈরাচারের দোসররা গড়ে তুলে সিএনজিচালিত গাড়ির স্ট্যান্ড, অবৈধ দোকানঘর ও খোলা বাজার। এসব অবৈধ স্থাপনার কারণে বাড়ছে ভয়াবহ দুর্ঘটনার ঝুঁকি। রেল কর্তৃপক্ষ এসবের বিরুদ্ধে নিচ্ছে না কোন ব্যবস্থা।
সরেজমিনে দেখা যায়, ফেনী রেলস্টেশন সংলগ্ন সহদেবপুর রেলগেটে লাইনের পাশে অবৈধ সিএনজি গাড়ির স্ট্যান্ড গড়ে উঠেছে। যা অধিক ঝুঁকিপূর্ণ। প্রতিদিন সেখানে রেললাইনের পাশ ঘেঁষে সিএনজি গাড়ি নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে গাড়ির চালকরা। গাড়িতে যাত্রী ওঠলে টান দেয় গন্তব্যে। এভাবে যাত্রী সাধারণ তাদের জীবনের মায়া না করে ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন গাড়িতে ওঠানামা করছে।
লস্করহাটগামী সিএনজির যাত্রীরা বলেন, তাদের সকলের বাড়ি মোটবী ইউনিয়নের লস্করহাটে। তারা প্রায় সহদেবপুর হয়ে আলোকদিয়া সড়ক দিয়ে যাতায়াত করেন। তারা বলেন, রেললাইনের পাশে সিএনজি দাঁড় করিয়ে যাত্রী ওঠানামা করা মোটেও ঠিক না। যেকোন মুহুর্তে ঘটতে পারে ভয়াবহ দুর্ঘটনা। তাদের দাবি হচ্ছে সিএনজি স্ট্যান্ড এখান থেকে সরিয়ে নিয়ে নিরাপদ জায়গায় করলে ভালো হয়। তারা এ বিষয়ে চালকদেরকে সচেতন হওয়ার জন্য বলেন এবং রেলওয়ের কর্মকর্তাদেরকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার পরামর্শ দেন। সহদেবপুরের এই অবৈধ সিএনজি স্ট্যান্ডের লাইনম্যান রুবেল জানান, রেললাইনের পাশে ১৫ বছর ধরে গাড়ির এ স্ট্যান্ডটি রয়েছে। এ স্ট্যান্ড নিয়ন্ত্রণ করতেন পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর কোহিনুর আলম রানা ভাই। তিনি চলে যাওয়ার পর স্ট্যান্ডটি নিয়ন্ত্রণের বাহিরে চলে যায়। গত ৪ মাস আগে আমরা সিএনজির চালকরা সবাই মিলে দুজন লাইনম্যান ঠিক করে স্ট্যান্ড পরিচালনা করে আসছি। এখানে প্রতি সিএনজি থেকে দৈনিক ২০ টাকা করে তোলা হয়। এসব টাকা আমি এবং লাইনম্যান সোহেল দুজনে নিই। বর্তমানে ফেনী-লস্করহাট ও ভূ.ারহাট লাইনে মোট ৬০টি সিএনজি গাড়ি চলাচলা করে। সব গাড়ি রেললাইনের পাশে স্ট্যান্ডে অবস্থান করে। সে আরো জানায়, কোহিনুর নেতার দখলে সিএনজি স্ট্যান্ড ছাড়াও রেলওয়ের অনেক জায়গা দখলে রয়েছে। এসব দখলকৃত স্থাপনা থেকে সে মাসিক দুই লক্ষ টাকা করে চাঁদা আদায় করতেন। বর্তমানে কোহিনুর পলাতক থাকলেও তার লোকেরা এখনো রেলওয়ের জায়গায় অবৈধ ঘরগুলো থেকে মাসিক চাঁদা আদায় করে। ফেনী রেলওয়ের ভূ-সম্পত্তি বিভাগের কর্মকর্তা (সার্ভেয়ার) মো.সলিম উল্লাহ চৌধুরী বলেন, রেললাইনের পাশে গাড়ির স্ট্যান্ড করা বে-আইনী। তবে আমরা বাঁধা দিলে তারা শুনবে না, তারাতো ভাসমান। তাদেরকে উচ্ছেদ করলে পরে আবার এসে বসে যায়। এসব অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে দাপ্তরিকভাবে ব্যবস্থা নিতে হবে। আমি এসেছি ৬ মাস হয় এর মধ্যে কোন উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়নি। এছাড়াও গুদামকোয়াটার রেলক্রসিং এলাকায় রেললাইনের কাছাকাছিতে অবৈধ স্হাপনা দোকান পাট নির্মান করে ভাড়া আদায় করছেন জবরদখলকারি সহ রাজনৈতিক দলের নেতা কর্মীরা। অবৈধভাবে দখলকারীদের উচ্ছেদ করে দুর্ঘটনায় রোধ করা সম্ভব বলে জনগনের দাবি।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ