ঢাকা , বুধবার, ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ , ২৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
৮ ফেব্রুয়ারি ছয় সংস্কার কমিশনের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশ-আসিফ নজরুল এক সপ্তাহ পর ক্লাসে ফিরলেন তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা কোটায় উত্তাল জাবি সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনব্যবস্থা সমর্থন করছি নাÑ মান্না চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগের ৪৬ নেতাকর্মী গ্রেফতার বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় ধাপের আখেরি মোনাজাত আজ শুক্রবার সকালেও মেট্রোরেল চালুর পরিকল্পনা থানা স্থানান্তরের দাবিতে সড়ক অবরোধ, যানজট তিতাসের অভিযানে ৮শ অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন আড়ালে সবাই আওয়ামী লীগকে কাছে চায় : নুর শেরপুরে গরু চোর সন্দেহে দু’জনকে পিটিয়ে হত্যা লক্ষ্মীপুর ও রাঙামাটিতে ২ লাশ উদ্ধার ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জমি নিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষে নিহত ২ গণতান্ত্রিক সরকার নেই বলেই বিনিয়োগ হচ্ছে নাÑ রিজভী ঢাকায় চলবে গোলাপি বাস, চড়তে লাগবে টিকেট ফেনীতে মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ৩ যুবক নিহত সড়ক দুর্ঘটনায় প্রতিদিন ১৯ জনের মৃত্যু মহালছড়িতে ভাইয়ের বিরুদ্ধে সম্পদ আত্মসাতের অভিযোগ শ্রীপুরে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগে থানার এএসআই ক্লোজড সাঘাটার ভূমিদস্যু সুইট ও সহযোগীদের শাস্তির দাবি

আগামী বছর পুরোপুরি প্রস্তুত হবে সরকারি ৫টি অর্থনৈতিক অঞ্চল

  • আপলোড সময় : ০১-০২-২০২৫ ১১:৪৭:০২ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ০১-০২-২০২৫ ১১:৪৭:০২ পূর্বাহ্ন
আগামী বছর পুরোপুরি প্রস্তুত হবে সরকারি ৫টি অর্থনৈতিক অঞ্চল
পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের পরিকল্পিত ১০০ অর্থনৈতিক অঞ্চল নয়, বরং ১০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনে কাজ করবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এর মধ্যে প্রথম দফায় পাঁচটি অর্থনৈতিক অঞ্চলে পুরোপুরি গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানি সংযোগ ও রাস্তা নির্মাণ সম্পন্ন হওয়ার পর বাকিগুলো নিয়ে কাজ শুরু করবে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা)। এই ১০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল হচ্ছে- জাতীয় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল (এনএসইজেড), শ্রীহট্ট অর্থনৈতিক অঞ্চল (এসইজেড), জাপানিজ অর্থনৈতিক অঞ্চল, মহেশখালী অর্থনৈতিক অঞ্চল, জামালপুর অর্থনৈতিক অঞ্চল, আনোয়ারা অর্থনৈতিক অঞ্চল, সাবরাং ট্যুরিজম পার্ক, চাঁদপুর অর্থনৈতিক অঞ্চল, কুষ্টিয়া অর্থনৈতিক অঞ্চল ও কুড়িগ্রামে ভুটানিজ অর্থনৈতিক অঞ্চল। এর মধ্যে আগামী বছরের (২০২৬ সালের) মধ্যে সরকারি ৫টি অর্থনৈতিক অঞ্চলে গ্যাস, পানি, বিদ্যুৎ, যোগাযোগসহ সব ধরনের সুযোগ সুবিধা মিলবে। আগামী বছর যেসব অর্থনৈতিক অঞ্চল পুরোপুরি প্রস্তুত হবে সেগুলো হলো- জাতীয় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল, শ্রীহট্ট (সিলেট) অর্থনৈতিক অঞ্চল, জামালপুর অর্থনৈতিক অঞ্চল, মহেশখালীর অর্থনৈতিক অঞ্চল ও জাপানিজ অর্থনৈতিক অঞ্চল। এসব অর্থনৈতিক অঞ্চলে কমপক্ষে ২ লাখ ৩৮ হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে বলে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) সূত্রে জানা গেছে। এদিকে উল্লেখিত পাঁচটির বাইরে আরও পাঁচটি ইজেডকে মূল্যায়নের অধীনে রাখা হয়েছে। যা বিভিন্ন জরিপের পর পর্যায়ক্রমে বিকাশ করা হবে। এই পাঁচটি জোন হলো সাবরাং ট্যুরিজম পার্ক, চাইনিজ ইকোনমিক জোন, চাদপুর ইকোনমিক জোন, কুড়িগ্রাম ইকোনমিক জোন এবং কুষ্টিয়া ইকোনমিক জোন। বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন জানান, প্রথম ধাপের ৫টি অর্থনৈতিক অঞ্চলে গ্যাস, পানি, বিদ্যুৎ, যোগাযোগসহ সব ধরনের সুযোগ সুবিধা মিলবে। বিনিয়োগকারীদের আস্থা অর্জনে বেজা বাস্তবসম্মত প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে উল্লেখ্য করে তিনি বলেন, বেজাকে সত্যিকারের বিনিয়োগসবান্ধব কর্তৃপক্ষে রূপান্তর করতে চাই। যাতে বিনিয়োগকারীরা সময়মতো এর বিনিয়োগ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারে। বেজা যদি আগামী দুই বছরের মধ্যে পাঁচটি অর্থনৈতিক অঞ্চলের পরিকল্পনা সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করতে পারে, তাহলে এই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে ভবিষ্যতে আরও ভালো উদ্যোগ নিতে পারবো। বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার মূল বিষয়গুলো চিহ্নিত করতে ব্যবসায়ী, দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারী, ডেভেলপার, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান, উন্নয়ন সংস্থা এবং সাংবাদিকসহ সবশ্রেণীর স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে- উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের সঙ্গে বসে এসব সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছি। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান বলেন, বর্তমানে ১৯টি অর্থনৈতিক অঞ্চলে কাজ চলছে। ১২২টি প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু করেছে, ৭ হাজার ২০০ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। ৪৫ হাজার কর্মসংস্থান তৈরি হয়েছে। বিনিয়োগকারী আছেন ২১২ জন। তবে যেসব বিনিয়োগকারী জমি নিয়েছেন কিন্তু কোনো কারণে কার্যক্রম শুরু করতে পারেননি, তাদের শিল্প স্থাপনে উৎসাহিত করা হচ্ছে এবং তাদের বিনিয়োগ পরিকল্পনা বেজাকে জানাতে অনুরোধ করা হচ্ছে। আমাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী যদি এই বিনিয়োগকারীরা শিল্প প্রতিষ্ঠান নির্মাণের জন্য উন্নয়ন কাজ শুরু করতে না পারেন, তবে তাদের জমি বেজাকে ফেরত দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। তিনি আরও বলেন, অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোর অব্যবহৃত জায়গায় সোলার পার্ক করার পরিকল্পনা রয়েছে। মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলে পিপিপি মডেলে সোলার প্যানেল করার চেষ্টা করছি। পাশাপাশি সরকারের যেসব মিল ও কারখানা লোকসানে আছে বা বন্ধ রয়েছে- সেগুলোতে অর্থনৈতিক অঞ্চল করার পরিকল্পনা রয়েছে। বেজার একজন ঊধ্বর্তন কর্মকর্তা জানান, নির্ধারিত ১০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন প্রকল্পের বাইরে সিরাজগঞ্জসহ দেশের আরও বিভিন্ন স্থানে অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনে যেসব কার্যক্রম চলমান রয়েছে, অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে সেগুলোর কাজ পুরোপুরি বন্ধ থাকবে। অন্যান্য পরিকল্পিত অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোর জন্য অধিগ্রহণ করা জমির ভাগ্য নির্ধারণ করবে পরবর্তী রাজনৈতিক সরকার। এর আগে গত ডিসেম্বরে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস বলেছিলেন, প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষ হওয়ার পর ২০২৫ সালের শেষ থেকে ২০২৬ সালের প্রথমার্ধের মধ্যে অনুষ্ঠিত হতে পারে পরবর্তী সাধারণ নির্বাচন। মীরসরাইয়ে ভারতীয় অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন হবে কি না, সেই সিদ্ধান্তও নেবে পরবর্তী রাজনৈতিক সরকার। বর্তমান সরকারের আমলে এই প্রকল্পের কোনো অগ্রগতি হবে না বলে নির্দেশনা পেয়েছে বেজা। বেজার একজন ঊধ্বর্তন কর্মকর্তা বলেন, ভারতীয় লাইন অব ক্রেডিট-এর (এলওসি) আওতায় মীরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছিল। ২০১৫ সালে এই প্রকল্পের জন্য ১০০ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি ঋণচুক্তি স্বাক্ষর হলেও এখন পর্যন্ত ৫ মিলিয়ন ডলারও ছাড় হয়নি। ভারতীয় ঠিকাদারের মাধ্যমে প্রকল্পের ভূমি উন্নয়নের কাজ বাস্তবায়নের শর্ত থাকলেও ভারতীয় কোম্পানিগুলো এতে অংশগ্রহণ করছে না। ফলে এই প্রকল্পের অগ্রগতি সামান্য। ওই কর্মকর্তা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ভারতীয় অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনে এসব অসুবিধার কথা তুলে ধরে প্রকল্পটি নিয়ে বেজার করণীয় সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের মতামত চাওয়া হয়েছিল। সেখান থেকে বলা হয়েছে, প্রকল্পটি বেজার অগ্রাধিকার তালিকায় থাকবে না। তবে এটি বাতিলও করা হবে না। প্রতিবেশী দেশটির অর্থায়নে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে কি না, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নেবে না। উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সরকারিভাবে ৬৮টি এবং বেসরকারি পর্যায়ে ২৯টি অর্থনৈতিক অঞ্চলসহ মোট ৯৭টি অর্থনৈতিক অঞ্চলের অনুমোদন দেয় বেজা। সরকারি, বেসরকারি, সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্ব (পিপিপি) এবং সরকারি পর্যায়-সহ (জিটুজি) ছয় ধরনের অর্থনৈতিক অঞ্চল রয়েছে।
 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স