ঢাকা , সোমবার, ০২ জুন ২০২৫ , ১৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বঞ্চনার গল্প যেন অরণ্যেরোদন চাকরি অধ্যাদেশ বাতিলে ৩ উপদেষ্টাকে স্মারকলিপি দিলেন কর্মচারীরা রাষ্ট্র সংস্কারে উপেক্ষিত নারী তারেক রহমানসহ সব আসামির খালাসের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি শেখ হাসিনার আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু-আইন উপদেষ্টা শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামানের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি প্রথমবারের মতো বিটিভির স্টুডিও থেকে হচ্ছে বাজেট ঘোষণা ঘাটতি কমানোর লক্ষ্য নিয়ে নতুন বাজেট আজ দুধ শুধু পণ্য নয় এটি সংস্কৃতির অংশÑ মৎস্য উপদেষ্টা রাঙামাটিতে টানা বৃষ্টি পাহাড় ধসের ঝুঁকি সিলেটে টিলা ধসে একই পরিবারের ৪ জনের মৃত্যু বিজিএমইএ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় পেয়েছে ‘ফোরাম’ প্যানেল বাংলাদেশি যুবককে গুলি করে লাশ নিয়ে গেছে বিএসএফ জাপা চেয়ারম্যানসহ ২৮০ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে হত্যা চেষ্টার মামলা ঝিনাইদহে বিএনপির দু’পক্ষের সংঘর্ষে একজন নিহত আহত ৪ কেএনএফের ইউনিফর্ম জব্দের ঘটনায় কারখানা মালিক রিমান্ডে মবের নামে নাশকতার সুযোগ নেই আরও ১১ জনকে পুশইন, মোট সংখ্যা হাজার ছাড়িয়েছে নয় অঞ্চলের ওপর দিয়ে ৬০ কিমি. বেগে ঝড়ের আভাস সিলেট-মৌলভীবাজারের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

সংকটের শঙ্কা বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থাপনায়

  • আপলোড সময় : ২৭-০১-২০২৫ ০৯:৫২:৪৮ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ২৭-০১-২০২৫ ০৯:৫২:৪৮ পূর্বাহ্ন
সংকটের শঙ্কা বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থাপনায়
* বিপিডিবি’র কাছে বিদ্যুৎ সরবরাহ বাবদ বেসরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের (আইপিপি) ৮ হাজার কোটি টাকা পাওনা * অন্তত আড়াই হাজার কোটি টাকা বকেয়া দ্রুত পরিশোধ না করা হলে সেচ, রমজান ও গ্রীষ্ম মৌসুমে বিদ্যুৎ সরবরাহ ঠিক রাখা যাবে না বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থাপনায় বড় ধরনের সঙ্কটের শঙ্কা রয়েছে। কারণ ফার্নেস অয়েলচালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর ওপর দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যবস্থা এখনো বড় আকারে নির্ভরশীল। আর ওসব বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বেশিরভাগই বেসরকারি মালিকানাধীন। বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) কাছে বিদ্যুৎ সরবরাহ বাবদ বেসরকারি মালিকানাধীন ওসব বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের (আইপিপি) ৮ হাজার কোটি টাকা পাওনা বকেয়া আটকে রয়েছে। তার মধ্যে ফার্নেস অয়েল বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর পাওনা বকেয়ার পরিমাণ ৫ হাজার কোটি টাকারও বেশি। তার অন্তত আড়াই হাজার কোটি টাকা বকেয়া পাওনা দ্রুত পরিশোধ না করা হলে আসন্ন সেচ, রমজান ও গ্রীষ্ম মৌসুমে ফার্নেস অয়েলচালিত ওসব বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে সরবরাহ ঠিক রাখা যাবে না বলে জানানো হয়েছে। বাংলাদেশ ইনডিপেনডেন্ট পাওয়ার প্রডিউসারস অ্যাসোসিয়েশন (বিআইপিপিএ) এবং বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি) সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, গত বছরের গ্রীষ্ম, রমজান ও সেচ মৌসুমে দেশে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ চাহিদা সাড়ে ১৬ হাজার মেগাওয়াটের কাছাকাছি উঠেছিল। এর মধ্যে ফার্নেস অয়েল কেন্দ্রগুলো থেকে সরবরাহকৃত বিদ্যুতের ব্যবহার সাড়ে পাঁচ হাজার মেগাওয়াট পর্যন্ত উঠেছিলো। দেশে ফার্নেস অয়েল কেন্দ্রগুলোর এখন মোট বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ৬ হাজার ৮৮৫ মেগাওয়াটে দাঁড়িয়েছে। এগুলো শীতে খুব বেশি ব্যবহার না হলেও বিপিডিবি গ্রীষ্ম, রমজান ও সেচ মৌসুমে ব্যবহার করে। সূত্র জানায়, ফার্নেস অয়েল বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো থেকে আসন্ন সেচ, রমজান ও গ্রীষ্ম মৌসুমে বিদ্যুৎ সরবরাহ ঠিক রাখতে অন্তত আড়াই হাজার কোটি টাকা প্রয়োজন। সেজন্য এখনই ঋণপত্র (এলসি) খোলা জরুরি। কারণ এলসি খোলা সাপেক্ষে দেশে ওই ধরনের সব বিদ্যুৎ কেন্দ্রে প্রয়োজনীয় জ্বালানি তেল পৌঁছতে অন্তত ৪০-৪৫ দিন সময় লাগে। সেক্ষেত্রে এখন এলসি খোলা হলে ওই জ্বালানি তেল আসতে মার্চের প্রথম সপ্তাহ লেগে যেতে পারে। আর মার্চের প্রথম দিকে রমজানও শুরু হবে। এর আগে সেচের ভরা মৌসুম। এর মধ্যে যদি অন্যান্য ক্ষেত্রেও বিদ্যুতের চাহিদা বেড়ে যায় তাহলে বিপাকে পড়তে হবে। আর বিপিডিবিও কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর জন্য পর্যাপ্ত জ্বালানি সংস্থানের নিশ্চয়তা দিতে পারছে না। ফলে জ্বালানি তেল আমদানি করা না গেলে বিদ্যুৎ চাহিদার ভরা মৌসুমে দেশে লোডশেডিং ব্যাপক হারে বেড়ে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে। সূত্র আরো জানায়, আইপিপিগুলো তাদের বকেয়া যে পরিমাণ অর্থ চাচ্ছে ওই পরিমাণ অর্থ এখন বিপিডিবির কাছে নেই। যদিও অর্থ বিভাগের কাছে ভর্তুকির টাকা চাওয়া হয়েছে। ওই অর্থ পাওয়া গেলে সেখান থেকে কিছু অর্থ পরিশোধ করা হবে। তবে ঠিক কী পরিমাণ ওই বিষয়ে এখনই নিশ্চয়তা দেয়া যাচ্ছে না। দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ২৭ হাজার ৮২০ মেগাওয়াট। এর মধ্যে গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর সবচেয়ে বেশি সক্ষমতা। তবে গ্যাস সংকটের কারণে অন্তত সাড়ে সাত হাজার মেগাওয়াট বছরের বেশির ভাগ সময় বসিয়ে রাখতে হয়। আর কয়লাভিত্তিক কেন্দ্রগুলোও জ্বালানি সংকটের কারণে পূর্ণ সক্ষমতায় চালানো যাচ্ছে না। এদিকে বাংলাদেশ ইনডিপেনডেন্ট পাওয়ার প্রডিউসারস অ্যাসোসিয়েশনের (বিআইপিপিএ) পক্ষ থেকে ৮ জানুয়ারি বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব বরাবর চিঠি দেয়া হয়। ওই চিঠিতে ১০ দিনের মধ্যে বিদ্যুতের বকেয়া বিল পরিশোধ করা না হলে দেশের বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থাপনায় বড় ধরনের সংকটের আশঙ্কার কথা জানানো হয়। বিশেষত সেচ, শিল্প-কারখানা, বাসাবাড়ি এমনকি খাদ্যনিরাপত্তায়ও হুমকি তৈরি হতে পারে বলে উল্লেখ করা হয়। এবার দেশের বেজলোড-ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর সর্বোচ্চ ব্যবহার করতে চায় বিপিডিবি। তাছাড়া জ্বালানি তেলভিত্তিক ব্যয়বহুল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের খরচ কমিয়ে বিদ্যুতের উৎপাদন খরচ কমানোরও পরিকল্পনা সংস্থাটির রয়েছে। বকেয়া অর্থ দ্রুত পরিশোধের তাগাদা দিয়ে বিআইপিপিএ প্রতিনিধিরা বিপিডিবির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করেছেন। একই সঙ্গে জ্বালানি তেল আমদানি ও বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালু রাখার বিষয়টি নিয়েও বিপিডিবি চেয়ারম্যান বরাবর চিঠি দেয়া হবে বলেও জানিয়েছে তারা। সেক্ষেত্রে সংগঠনটির পক্ষ থেকে বকেয়া পাওনা পরিশোধের তাগাদা দিয়ে বিপিডিবিকে দেয়া এটি হবে চতুর্থ চিঠি। অন্যদিকে এ প্রসঙ্গে বিআইপিপিএ সভাপতি ও মিডল্যান্ড পাওয়ারের চেয়ারম্যান কেএম রেজাউল হাসানাত জানান, বকেয়ার বিষয়টি জানিয়ে বিপিডিবির কাছে সর্বোচ্চ অনুরোধ জানানো হয়েছে। সেচ, রমজান ও গ্রীষ্ম মৌসুমে বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা ঠিক রাখতে ফার্নেস অয়েলচালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর জ্বালানি আমদানিতে জরুরি ভিত্তিতে আড়াই হাজার কোটি টাকা চাওয়া হয়েছে। কিন্তু ওই পরিমাণ টাকার বিষয়ে কোনো সাড়া মেলেনি। বিপিডিবি অর্থ বিভাগের টাকা ছাড়ের অপেক্ষার কথা জানিয়েছে। কিন্তু তাদের কাছ থেকে আশান্বিত হওয়ার মতো কোনো খবর পাওয়া যাচ্ছে না। এ বিষয়ে বিপিডিবির চেয়ারম্যান মো. রেজাউল করিম জানান, অনেক আগে থেকেই বিপিডিবির আর্থিক সংকট রয়েছে। তারপরও সবার বকেয়া পরিশোধ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে একবারেই পরিশোধ করা যাবে, বিষয়টি এমন নয়। এবারের মৌসুমে বিপিডিবির পরিকল্পনা হলো ব্যয়সাশ্রয়ী বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো চালু করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা। সেভাবেই পরিকল্পনা করা হয়েছে।

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স