
ঢাবিতে যুবকের ঝুলন্ত লাশ মৃত্যুর রহস্য উদ্ধার হয়নি
- আপলোড সময় : ২৬-০১-২০২৫ ০৫:১৩:২৭ অপরাহ্ন
- আপডেট সময় : ২৬-০১-২০২৫ ০৫:১৩:২৭ অপরাহ্ন


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শহীদ মিনার সংলগ্ন জিমনেসিয়াম এলাকা। গত বুধবার সকাল হতেই অন্য দিনের মতোই এদিক দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন পথচারী-শিক্ষার্থীরা।
এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের পাশের ফুটপাতে মেহগনি গাছের চূড়ায় গলায় ফাঁস লাগানো দেখতে পান তারা। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস সদস্যরা এসে লাশটি নামিয়ে আনেন।
প্রাথমিক তদন্ত এবং যুবকের স্বজনদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানিয়েছে, ওই যুবক মানসিকভাবে কিছুটা ভারসাম্যহীন ও মাদকাসক্ত ছিলেন। তবে এটি হত্যাকাণ্ড নাকি আত্মহত্যা; তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এদিকে এ ঘটনার পেছনে অন্য কোনও কারণ রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশের একটি সূত্র বলছে, বিষয়টি এখনও তদন্তাধীন। সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা চলছে। তদন্ত শেষ হলে ঘটনার প্রকৃত কারণ জানা যাবে। লাশ উদ্ধারের পর ওই যুবকের ফিঙ্গার প্রিন্ট নিয়ে তার পরিচয় শনাক্ত করে পুলিশের সিআইডির ফরেনসিক বিভাগ। পুলিশ জানায়, ওই ব্যক্তির নাম আবু সালেহ (৪৫)। তিনি ঢাকা কেরানীগঞ্জের বাসিন্দা। মৃত ওই যুবকের ছোট ভাই মোহাম্মদ আলী জানান, তারা চার ভাই। এর মধ্যে সবার বড় আবু সালেহ। তিনি অল্প বয়সেই বাড়ি থেকে বের হয়ে যান। বেশি দূর পড়ালেখাও করতে পারেননি। এলাকার একটি স্কুলে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেন। এর পর থেকে বাড়িতে অনিয়মিত। আবু সালেহ অবিবাহিত। বিভিন্ন সময় দেশের বিভিন্ন জায়গায় কাজ করেন। অস্বাভাবিক হওয়ার পর গত পাঁচ বছর আগে নিজেদের বসতঘরে আগুন ধরিয়ে দিয়েছিলেন। আবু সালেহ রাস্তাঘাটে থাকতেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, মাদকাসক্ত হয়েছেন বুঝতে পেরে আবু সালেহকে কয়েকবার রিহ্যাবে রাখা হয়। তাকে সুস্থ করতে যতকিছুই করা হয় না কেন, দেখা গেছে দিন দিন তার আসক্তি বাড়তে থাকে। গত তিন বছর ধরে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় রাস্তাঘাটে থাকা শুরু করেন। মাঝেমধ্যে বাড়িতে আসতেন। সবশেষ ঘটনার পাঁচ দিন আগে বাড়ি আসেন। তখন মায়ের কাছ থেকে ওষুধ কেনার কথা বলে ১ হাজার টাকা নেন। এরপর তার সঙ্গে পরিবারের আর কারও যোগাযোগ হয়নি। বুধবার শাহবাগ পুলিশের মাধ্যমে তার লাশ উদ্ধারের খবর পাই। তিনি জানান, মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার নগরকসবা গ্রামে তাদের বাড়ি। তার বাবার নাম আবদুর রব। তবে তারা পরিবার নিয়ে বহু বছর ধরে ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ কালীগঞ্জের নয়াবাড়ি এলাকায় থাকেন। এর আগে, বুধবার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের পাশের ফুটপাতে মেহগনি গাছে গলায় ফাঁস নেওয়া অবস্থায় একজনকে দেখতে পান পথচারীরা। পরে ফায়ার সার্ভিসে খবর দেওয়া হলে তারা গিয়ে লাশ উদ্ধার করে। পরে শাহবাগ থানা-পুলিশ লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। প্রথমে আবু সালেহর পরিচয় না পাওয়া গেলেও পরে সিআইডির ফরেনসিক বিভাগ ফিঙ্গার প্রিন্ট নিয়ে পরিচয় শনাক্ত করে। এ ঘটনায় ডিএমপির শাহবাগ থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা করা হয়। মামলাটি তদন্ত করছেন থানার এসআই মো. খাদিউজ্জান। এ প্রসঙ্গে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ খালিদ মনসুর বলেন, এ ঘটনা নিয়ে এখনও তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষ হলে পুরো বিষয়টি জানা যাবে। প্রাথমিকভাবে ওই যুবকের স্বজনদের কাছ থেকে জানতে পেরেছি, তিনি দীর্ঘদিন দিন ধরে বাড়ির বাইরের ছিলেন। মানসিকভাবে কিছুটা ভারসাম্যহীন ও মাদকাসক্ত ছিলেন। তিনি বলেন, রিকশাচালক-পথচারীরা আমাদের জানিয়েছেন, তাকে ওই গাছে উঠতে অনেকে দেখেছেন। ওই এলাকায় গাছটি সিসিটিভির আওতায় ছিল কিনা জানতে চাইলে ওসি বলেন, হ্যাঁ ছিল। তবে এত ওপর পর্যন্ত সিসিটিভি কাভারেজ পায়নি। যেটুকু পেয়েছে, এটুকু ফুটেজ পর্যালোচনা চলছে। ঘটনার দিন বিকালে ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মাসুদ আলম আবু সালেহর পরিচয় নিশ্চিত করে বলেছিলেন, ওই যুবক মানসিকভাবে কিছুটা ভারসাম্যহীন। তবে এটি হত্যাকাণ্ড নাকি আত্মহত্যা তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ