দুর্নীতি চুরি ব্যক্তিগত স্বার্থ ছাড়া আমলাদের কোনো চিন্তা নেই-মির্জা ফখরুল
- আপলোড সময় : ২২-০১-২০২৫ ০৪:৩১:৩২ অপরাহ্ন
- আপডেট সময় : ২২-০১-২০২৫ ০৪:৩১:৩২ অপরাহ্ন
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এই পরিবর্তনের পরে যখন আমরা দুই-একটা জায়গায় খোঁজ-খবর নিই, অফিস আদালতে খোঁজ-খবর নিই-ভয়াবহ কাণ্ড, ভয়াবহ দুর্নীতি, চুরি, ব্যক্তিগত স্বার্থ ছাড়া সরকারি আমলাদের মধ্যে আর কোনও চিন্তা নেই। এটা বলতে আমি বাধ্য হলাম। গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে জিয়া স্মৃতি পাঠাগারের উদ্যোগে ‘শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৮৯তম জন্মবার্ষিকী ও জিয়া স্মৃতি পাঠাগারের ১২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী’ উপলক্ষে আয়োজিত গ্রন্থ আড্ডায় তিনি এসব কথা বলেন। সাম্প্রতিক সময়ে সড়কে যান চলাচল বন্ধ করে আন্দোলন ও বিভিন্ন দাবিদাওয়া প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘কখনও ধৈর্য হারাবেন না, আশা হারাবেন না। কেন জানি না, আমাদের প্রত্যাশা অনেক কিন্তু ধৈর্য একেবারেই কম। এই তো মাত্র কয়েকটা মাস হয়েছে। এর মধ্যেই আমরা পাগল হয়ে গেছি সব। আমাদের সরকার অনেক ভুলত্রুটি করছে। ভুল তো করবেই, তারা তো আর সরকারে ছিল না, রাজনীতি করেনি, রাজনীতি বিষয়টা তারা জানে না, করেনি, ঠিক না? তাদের তো সে সময়টা দিতে হবে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ আমলে তো কেউ একটা কথা বলারও সুযোগ পায়নি, সাহসও কেউ পায়নি। আর এখন যেহেতু একটা অবস্থা তৈরি হয়েছে, সবাই ঝাঁপিয়ে পড়ছে।’
সরকারের সমালোচনা প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এটাতে লাভটা কার? এটাতে এই দেশের, এই সমাজের, এই মানুষের কোনও লাভ হবে না। ধৈর্য ধরে সামনের দিকে যাই, অনেক ত্রুটি আছে, ত্রুটি তো তারা নিয়েই এসেছে, একেবারে ধ্বংসপ্রাপ্ত জঞ্জাল। আমার চিন্তায়ও ছিল না এটা এত খারাপ হয়ে যাবে। তিনি বলেন, এটার পরিবর্তন তো আপনার একদিনে হবে না, এত দ্রুত হবে না। ধৈর্য ধরেন, একটা গণতান্ত্রিক স্ট্রাকচার খাড়া হোক, সেই স্ট্রাকচার হলে নিশ্চয় আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পারবো। তিনি বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মধ্যে ধৈর্য ব্যাপারটা ছিল। দূরদৃষ্টিসম্পন্ন চিন্তাভাবনাগুলো তিনি কীভাবে বাস্তবায়ন করবেন, প্রথমেই তিনি যুদ্ধ শুরু করে দেননি। প্রথমে শুনেছেন, সব বিজ্ঞ বিজ্ঞ মানুষদের নিয়ে বসেছেন।
বিএনপির শীর্ষস্থানীয় এই নেতা বলেন, একটা কথা মনে রাখতে হবে সবসময়, হঠকারিতা করা যাবে না। অতি বিপ্লবী কোনও চিন্তাভাবনা নিয়ে সমাজে আরও অস্থিরতা, চরম একটা অবস্থা সৃষ্টি করা হয়তো কোনোভাবেই কাম্য হবে না। নৈরাজ্য সৃষ্টি করাটা বোধহয় ঠিক হবে না, এই কথাটা আমাদের মাথায় রাখতে হবে। মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের মাহবুব উল্লাহ (অধ্যাপক মাহবুবউল্লাহ) ভাইয়েরা থিওরি পড়াতেন, তার মধ্যে একটা কথা ছিল রোমান্টিসিজম। রোমান্টিসিজম মানে শুধু প্রেম নয়, বিপ্লবের প্রতি প্রেম। অর্থাৎ এই মুহূর্তে আমি সব পালটে দেবো, এই মুহূর্তে আমি সব দখল করবো, অন্যায় রোধ করবো, এটা হয় না। আপনাকে ধাপে ধাপে করতে হবে।
সবাইকে ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমাদের এখানে এখন যে অস্থিরতা চলছে, এই অবস্থা যদি নিয়ন্ত্রণ করতে চাই, আমাদের ধৈর্য ধরে পা ফেলতে হবে। এমন কিছু আমরা করবো না, যাতে নৈরাজ্য সৃষ্টি করে আরও বিপদ যেন আমরা ডেকে না আনি। এই বিষয়গুলো আমাদের মনে রাখতে হবে। তিনি আরও বলেন, একটা কথা আমি আবারও বলি, আমাকে কেউ ভুল বুঝবেন না। ‘আপনি এত নির্বাচন নির্বাচন করেন কেন?’ বিশেষ করে ছাত্ররা তো বলেনই। নির্বাচন বলার কারণটা হচ্ছে একটাই, আমি বিশ্বাস করি, আমি জানি না আমার বিশ্বাসটা ভুল কিনা, যেকোনও নির্বাচিত সরকার কিন্তু একটা অনির্বাচিত সরকারের চেয়ে ভালো। আমার অ্যাক্সেস থাকে, আমি যেতে পারি, কথা বলতে পারি। বাংলাদেশের প্রধান সমস্যা আমাদের পড়ালেখা উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, একদম শেষ হয়ে গেছে। শিক্ষা ব্যবস্থা একদম শেষ। সেটির মধ্যে কোনও কিছু অবশিষ্ট আছে বলে মনে হয় না। প্রাইমারি স্কুল থেকে শুরু করে একদম ইউনিভার্সিটি পর্যন্ত সব জায়গায় দেখবেন যে এত নিচে চলে গেছে তার মান, এটা বলে বোঝানো যাবে না। একেবারে কুড়িগ্রামের চরের মধ্যে যে প্রাইমারি স্কুল বা হাইস্কুলে কী শিক্ষা পাচ্ছে, সেটির খবর আমরা অনেকেই রাখি না। জিয়া স্মৃতি পাঠাগারের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আবদুস সালামের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক জহির দিপ্তীর সঞ্চালনায় এসময় আরও বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক ড. মাহবুবউল্লাহ, নরসিংদী জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মনজুরে এলাহী, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মাহদী আমিন প্রমুখ।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ