ঢাকা ০৩:৪৫:০৫ পিএম, বুধবার, ১৮ জুন ২০২৫ , ৪ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
সেনাপ্রধানের সঙ্গে ডব্লিউজিইআইডির ভাইস চেয়ারপারসনের সাক্ষাৎ উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের পদত্যাগ দাবি ইশরাকের লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচন হবে না-নুরুল হক নুর ভুয়া প্রেস বিজ্ঞপ্তির বিষয়ে নেতা-কর্মীদের বিভ্রান্ত না হওয়ার অনুরোধ রিজভীর রমজানের আগে নির্বাচনের ব্যাপারে জাতীয় ঐকমত্য আছে পর্যবেক্ষক নীতিমালা চূড়ান্ত ‘ভুয়া’ সংস্থাকে নিবন্ধন নয়-নির্বাচন কমিশন ঐকমত্য কমিশনের সংলাপে যাচ্ছে না জামায়াত ‘জুলাইয়ের মধ্যেই জাতীয় সনদ চূড়ান্ত করা সম্ভব’ যুদ্ধ পর্যবেক্ষণ করছে সরকার, এখনই বাড়ছে না জ্বালানি তেলের দাম-অর্থ উপদেষ্টা ভোটের রাজনীতিতে জটিল সমীকরণ বিএনপির প্রস্তাবের দিকে ‘হেলে গেছেন’ ড. ইউনূস -এনসিপি এনসিপির তুষার কাণ্ডে সমালোচনার ঝড় উৎসবমুখর ভোটের অপেক্ষায় জাতি লিবিয়া থেকে দেশে ফিরেছেন আরও ১৫৮ বাংলাদেশি তেহরানে বাংলাদেশিদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন সরকার খামেনিকে সাদ্দাম হোসেনের পরিণতির হুমকি ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রীর ইরানের নতুন শীর্ষ কমান্ডার নিহত দাবি ইসরায়েলের ইরানে ইসরায়েলি হামলার নিন্দা জানাল মিসরসহ ২১ মুসলিম দেশ ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের আগুনে ঘি ঢেলেছেন ট্রাম্প : চীন পরমাণু ইস্যুর স্থায়ী সমাধান চান ট্রাম্প

দেশীয় মাছের অস্তিত্ব কমছে হাটবাজারে

  • আপলোড সময় : ২০-০১-২০২৫ ১১:৪০:৪২ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ২০-০১-২০২৫ ১১:৪০:৪২ অপরাহ্ন
দেশীয় মাছের অস্তিত্ব কমছে হাটবাজারে
সঞ্জয় ব্যানার্জী, দশমিনা (পটুয়াখালী)
পটুয়াখালী দশমিনায় দেশীয় প্রজাতির বিভিন্ন ছোট-বড় মাছ বিলুপ্ত হয়ে গেছে। সেই সাথে আশংকা করা হচ্ছে এখনই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নিলে এ এলাকায় এক সময় না হারানো অনেক মাছ সম্পূর্নভাবে বিলুপ্ত হয়ে যাবে। ক্রমশই খাল বিল, পুকুর ও নদ-নদীসহ মুক্ত জলাশয় গুলো মাছ শূন্য হয়ে পড়েছে। হারিয়ে যাওয়া ওইসব মাছের স্বাদ ভুলে যাচ্ছে পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার মানুষ। একদশক আগেও উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ছোট-বড় নদী-নালা, খাল-বিল, পুকুর-ডোবায় এবং ফসলী ক্ষেতে প্রচুর দেশীয় প্রজাতির মাছ পাওয়া যেতো। একশ্রেণীর মানুষ মাছ ধরাকে তাদের পেশা হিসেবে নিয়েছিল। কিন্তু যত্রতত্র মাছ আর পাওয়া না যাওয়ায় বর্তমানে তাদের পেশা বদল করতে বাধ্য হচ্ছেন।
জানা যায়, বর্তমানে আমাদের দেশে উৎপাদন হ্রাসের পাশাপাশি মিঠা পানির ২শ’ ৬০টি প্রজাতির মাছের মধ্যে ৬৪টি প্রজাতির মাছের অস্তিত্বই নেই হাট বাজারে। বিলুপ্ত হওয়া মাছের মধ্যে রয়েছে, ঢেলা, পাবদা, দাড়কানা, মোয়া, রয়না, গোরপে, তিন কাঁটা আইড়, তেলটুপি, গাড্ডু টাকি, ভেদা, মাগুড়, বড় শৈল প্রভৃতি। ইদানীং পুঁটি, জাতটাকি, তিতপুঁটি, টেংরা, শিং, বালিয়া, চান্দা, বাইম, টেংরা, চান্দা, কাকিলা, খৈইলসা, গজাল মাছগুলোও হাটবাজারে তেমন চোখে পড়ে না। মাঝেমধ্যে পাওয়া গেলেও দাম সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে। নদী-নালা, খাল-বিল, গর্ত-ডোবা ইত্যাদি ক্রমান্বয়ে ভরাট হয়ে যাওয়া, মাছের প্রজনন ক্ষেত্র সংকুচিত হওয়া, বৃষ্টিপাত কমে যাওয়া, ছোট বড় জলাশয় সেচে মাছ ধরা, ডিমওয়ালা ও পোনা মাছ নিধনের কারণে অনেক প্রজাতির মাছ হারিয়ে গেছে।
দশমিনা উপজেলার সদর ইউনিয়নের দশমিনা গ্রামের ৭৪বছর বয়সী এছাহাক মোল্লা বলেন, কিশোর বয়স থেকেই মাছ ধরা নেশা হিসেবে নিয়েছিলাম। খাল-বিল থেকে মাছ ধরে পরিবার পরিজন নিয়ে খাইতাম। এখন আমিও অসুস্থ্য আর কোলা কাতর খাল বিলে মাছের দেখাও মিলছেনা। 
দশমিনা উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের বাঁশবাড়িয়া গ্রামের লাল মিয়া বলেন, অনেক বছর থেকে মাছ ধরে হাট বাজারে বিক্রির করে সংসার চলতো। কয়েক বছর যাবৎ আগের মত আর মাছ পাওয়া যায় না বলেও জানায়। তার মতে কমপক্ষে ৫৫ থেকে ৬৫ প্রকারের দেশীয় প্রজাতির মিঠা পানির মাছ বিলুপ্ত হয়ে গেছে। বাজারগুলোতে এ প্রজাতির মাছের আমদানি একেবারেই কমে গেছে। উপজেলার বিভিন্ন হাট- বাজারে যাও কিছু মাছ আমদানি হয় তাও আবার চলে যায় বিত্তবানদের হাতে।
সাধারণ মানুষের কপালে এসব মাছ আর জোটে না। দেশীয় প্রজাতির প্রায় সব মাছের বংশ বৃদ্ধির হার আশঙ্কাজনকভাবে হ্রাস পেয়েছে। এসব স্থান দখল করে নিয়েছে বিদেশী বিভিন্ন প্রজাতির কার্প জাতীয় চাষ করা মাছ। জেলার হাট বাজারগুলোতেই দেশীয় প্রজাতির মাছে ব্যাপক সঙ্কট দেখা দিয়েছে। দশমিনা উপজেলার দশমিনা মাছ বাজারের বিভিন্ন মাছ ব্যবসায়ীদের সাথে কথা হলে তারা জানায় , বিগত এক যুগ আগেও দেশী প্রজাতির প্রাকৃতিক মাছের কোনো ঘাটতি ছিল না। এখন তো দেশীয় ছোট মাছ পাওয়াই যায় না। যাও অল্প কিছু মেলে, দাম অনেক বেশি। বড়গোপালদী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সিনিয়র সহকারী শিক্ষক মো. আহম্মেদ ইব্রাহিম অরবিল জানান, একটা সময় গ্রামের মানুষ ধর্মজাল ও বেড়াজালসহ বিভিন্ন জাল দিয়ে মাছ ধরত। মাছ খেতে খেতে বিমুখ হয়ে যেত গ্রামাঞ্চলের মানুষ। আর এখন এসব প্রাকৃতিক ছোট ছোট মাছের দেখা মেলাই ভাড়। তরা বিদ্যালয়ের বাড়ির আশপাশের খাল-বিল, ডোবা ও নদী থেকে সারা বছর মাছ ধরে বাজারে বিক্রি করতেন অনেকে।
এবিষয়ে দশমিনা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. মাহবুব আলম তালুকদাল জানান, জলাশয় ভরাট, নদ-নদী পনি শুণ্য, জনসংখ্যা বেড়ে যাওযায় মৎস্য আহরণের চাপ বেড়ে গেছে। অপরদিকে, সেচ দিয়ে মাছ মেরে ফেলা হয়। জমিতে কীটনাশক ব্যবহারের প্রভাবে দেশীয় প্রজাতির মাছ বিলুপ্তি হয়ে যাচ্ছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে ভাবিষ্যতে হয়তো দেশীয় প্রজাতির মাছ চিরতরে হারিয়ে যাবে বলে তিনি মন্তব্য করেছেন।
 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স
প্রতিবেদকের তথ্য

সর্বশেষ সংবাদ