ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫ , ১২ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
২০২৬ সালের এইচএসসি পরীক্ষা পূর্ণাঙ্গ সিলেবাসে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে বিজয় উদযাপনে তেহরানে বিশাল র‌্যালি অন্তর্বর্তী সরকারের অগ্রগতি প্রতিবেদন প্রকাশ সচিবালয়ে কর্মচারীদের সংঘর্ষ, ক্যান্টিন বন্ধ আগামীকাল থেকে ৯ দিনব্যাপী রথযাত্রা মহোৎসব শুরু আলোচনার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান মার্চ টু এনবিআর ঘোষণা বাড়ছে অনিশ্চয়তা অসন্তোষ সাবেক সিইসি হাবিবুল আউয়াল গ্রেফতার নির্বাচন কমিশনকে পর্যবেক্ষণ করছি -জামায়াতে ইসলামী আজ এইচএসসি পরীক্ষা শুরু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে নির্যাতন ও মৃত্যু বন্ধ করতে হবে-মির্জা ফখরুল ভেবেছিলাম,বাবা ফিরে আসবেন আমরা বাবাকে ছুঁয়ে দেখব প্রধানমন্ত্রী পদে সর্বোচ্চ ১০ বছর শর্তসাপেক্ষে একমত বিএনপি প্লাস্টিক ব্যবস্থাপনা ঠিক না থাকায় জীববৈচিত্র্য ধ্বংসের মুখে বড় ধরনের প্রভাব পড়বে আঞ্চলিক ভারসাম্যে আরও ২৬ জনের করোনা শনাক্ত জাতীয় বৃক্ষ মেলায় হাজার প্রজাতির গাছের সমাহার নির্বাচনের আগেই শাপলা চত্বর ও জুলাই গণহত্যার বিচার চায় হেফাজত স্ত্রীসহ মৃণাল কান্তি ও বেনজীরের সম্পদ জব্দ ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ যশোরে পাচারকারীর জুতার ভেতরে ৮৭ লাখ টাকার স্বর্ণের বার

ভ্যাট শুল্ক গ্যাসের দাম বড়ানোর সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি- এফবিসিসিআই’র

  • আপলোড সময় : ১৫-০১-২০২৫ ১০:১৯:৪৫ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১৫-০১-২০২৫ ১০:১৯:৪৫ পূর্বাহ্ন
ভ্যাট শুল্ক গ্যাসের দাম বড়ানোর সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি- এফবিসিসিআই’র
শতাধিক পণ্যে নতুন করে শুল্ক ও ভ্যাট বৃদ্ধি এবং গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাবকে আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত উল্লেখ করে তা দ্রুত প্রত্যাহার করার আহ্বান জানিয়েছে দেশের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই’র বৈষম্যবিরোধী সংস্কার পরিষদ। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে এফবিসিসিআই’র বৈষম্যবিরোধী সংস্কার পরিষদ আয়োজিত ‘নিয়মবহির্ভূতভাবে পণ্য ও সেবার উপর মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধি এবং গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির প্রস্তাবের প্রতিবাদে’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে ব্যবসায়ী এবং নেতারা এসব কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বৈষম্যবিরোধী সংস্কার পরিষদের আহ্বায়ক জাকির হোসেন নয়ন। তিনি বলেছেন, অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই নেয়া এই সিদ্ধান্ত দেশের অর্থনীতির উপর প্রচণ্ডভাবে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির প্রস্তাব দেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রার গতিকে থমকে দেবে। ভ্যাটের বাড়তি চাপ সাধারণ মানুষের উপর পড়বে। ফলে দ্রুত এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা উচিত। এফবিসিসিআইয়ের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট আবুল কাসেম হায়দার বলেন, নির্বাচিত সরকার শুল্ক বা গ্যাসের দাম বাড়াবে। কিন্তু এই সরকারকে সেই ক্ষমতা দেয়া হয়নি। এ ধরনের সিদ্ধান্ত শিল্পকে বিপর্যয়ের মুখে ঠেলে দিয়েছে। এই সরকার দিন দিন দুর্বল সরকারে পরিণত হচ্ছে। দিন দিন মানুষের ক্রয়ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। সেখানে গ্যাসের দাম বাড়ানোর কোনো অধিকার তাদের দেয়া হয়নি। নির্বাচিত সরকার আসলে সেটি চিন্তা করবে। ঘুষ ও দুর্নীতির মাত্রা আগের চেয়ে বেড়ে গেছে মন্তব্য করে ব্যবসায়ী এই নেতা বলেন, ঘুষ ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে দেশে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন হয়েছে। কিন্তু এখন ঘুষের মাত্রা আরও বেড়ে গেছে। সচিব থেকে শুরু করে নিচের লেভেল পর্যন্ত অহরহ ঘুষের বাণিজ্য চলছে। কিন্তু এটি বন্ধ করার জন্য সরকারের কোনো উদ্যোগ নেই। দুই একজন উপদেষ্টা ঘুষ যদি না খান, কিন্তু ঘুষ যে বন্ধ করছেন না, এটিও ঘুষের চেয়ে কম না। ঘুষে সহযোগিতা করছেন, এটিও অন্যায়। বাংলাদেশ রিকন্ডিশন্ড ভেহিকেলস ইমপোর্টার্স অ্যান্ড ডিলারস অ্যাসোসিয়েশনের (বারভিডা) সভাপতি আবদুল হক বলেন, ফেডারেশন চেম্বারে এখন কোনো নির্বাচিত প্রতিনিধিত্ব নেই। ফলে আমরা এখানে আসতে বাধ্য হয়েছি। সুদের হার কোনোভাবেই সহনীয় নয়। এটি আমাদের ব্যবসা বাণিজ্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। ১৬ শতাংশ সুদের হারে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে টিকিয়ে রাখা যাবে না। ১৬ শতাংশ সুদের হার ব্যবসা বান্ধব নয়, সুদের হার সিঙ্গেল ডিজিটে নিয়ে আসতে হবে। লিখিত বক্তব্যে জাকির হোসেন নয়ন বলেন, অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা না করেই মূসক ও সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধি করায় ব্যবসায়ী সমাজের পক্ষ থেকে আমরা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি। গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির জন্যও সরকার উদ্যোগ নিয়েছে। হঠাৎ এ কর আরোপ এবং গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির প্রস্তাব দেশের সার্বিক জাতীয় অর্থনীতির উপর প্রচণ্ডভাবে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। তিনি বলেন, দেশের অর্থনৈতিক কার্যক্রমকে স্বাভাবিক অবস্থায় এগিয়ে নিতে যে মুহূর্তে সরকার, ব্যবসায়ী সমাজসহ সকলেই সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি-সে সময়েই অস্বাভাবিক হারে মূসক ও সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধির পাশাপাশি গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির প্রস্তাব দেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রার গতিকে থমকে দিবে। ভ্যাটের বাড়তি চাপ সাধারণ মানুষের উপর পড়বে। দেশে বর্তমানে উচ্চ মূল্যস্ফীতি বিরাজ করছে। ভ্যাট বৃদ্ধির ফলে দৈনন্দিন জীবন-যাত্রার খরচ স্বাভাবিকভাবে আরেক দফা বেড়ে যাবে। তিনি বলেন, বৈদেশিক মুদ্রার উচ্চ বিনিময় হার, আমদানি খরচ বৃদ্ধি, উচ্চ জ্বালানি ব্যয়, উচ্চ সুদের হার ও বৈশ্বিক প্রভাব দেশের বিনিয়োগের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। সরকার যেখানে বিনিয়োগ বৃদ্ধির মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে মূল্যস্ফীতির চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় কাজ করে যাচ্ছে সে মুহূর্তে অংশীজনদের সাথে কোনো মতবিনিময় ছাড়াই মূসক ও সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত দেশের অর্থনীতির জন্য আত্মঘাতী হবে বলে আমরা মনে করি। তিনি আরও বলেন, সব ধরনের রেস্তোরাঁর বিলের উপর ১০ শতাংশ হারে ভ্যাট বৃদ্ধি করার পাশাপাশি দোকান ও সুপার মার্কেটে বিক্রয়ের উপরও ভ্যাট বৃদ্ধি করা হয়েছে। এতে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণি সকলেই ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। তাছাড়াও আমদানিকৃত ফল, মুঠোফোন সেবা, ইন্টারনেট, টিস্যু, এলপিজি গ্যাস, পোশাক প্রভৃতির ক্ষেত্রেও বিভিন্ন হারে মূসক বাড়ানো হয়েছে। যেহেতু এসব পণ্য ও সেবা জীবন-যাত্রারই সার্বক্ষণিক অনুষঙ্গ সেজন্য অতিরিক্ত কর বৃদ্ধির ফলে সকল আয়ের মানুষের উপর এর চাপ পড়বে। জীবনরক্ষাকারী ওষুধের উপরও ভ্যাট বৃদ্ধি করা হয়েছে যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। বর্তমানে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ৫০ লাখ টাকা থেকে ৩ কোটি টাকা পর্যন্ত বার্ষিক লেনদেন হলে টার্নওভার কর দিতে হতো। কিন্তু ঘোষিত গেজেট অনুযায়ী বার্ষিক টার্নওভার কর প্রদানের সীমা ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত করা হয়েছে। এতে ক্ষুদ্র, মাঝারি ও প্রান্তিক ব্যবসায়ীগণ ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। জাকির হোসেন নয়ন বলেন, দেশের সাধারণ মানুষের কথা বিবেচনায় নিয়ে এবং দেশের স্বাভাবিক অর্থনৈতিক কার্যক্রমকে ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে মূসক ও সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধির সিদ্ধান্তকে পুনর্বিবেচনার জন্য সরকারের প্রতি ব্যবসায়ী সমাজের পক্ষ থেকে আহ্বান জানাচ্ছি। সাধারণ মানুষের উপর হঠাৎ করের বোঝা না চাপিয়ে বিকল্প উপায়ে সরকার রাজস্ব বৃদ্ধির উদ্যোগ নিতে পারে। করের হার না বাড়িয়ে করের আওতা বৃদ্ধি করা জরুরি যাতে সবসময় একই করদাতাকে করের জন্য চাপ প্রয়োগ না করা হয়। তাছাড়া সরকারের অনুৎপাদনশীল খাতে ব্যয় সংকোচন এবং স্বচ্ছতা ও সততা নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে সরকারের রাজস্ব বৃদ্ধির প্রচেষ্টা গ্রহণ করা জরুরি। তিনি বলেন, সরকার আবারও শিল্পখাতে গ্যাসের দাম বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে। এমনিতে দেশের শিল্পখাত বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন তদুপরি গ্যাসের দাম বাড়ানো হলে উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পাবে এবং স্থানীয় শিল্প প্রতিযোগিতা সক্ষমতা হারাবে। স্থানীয় শিল্পের স্বার্থে গ্যাসের দাম বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার আহ্বান জানাচ্ছি। সুদের হার কমানো, বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার স্থিতিশীল রাখা, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য ও বাজার সরবরাহ স্থিতিশীল রাখা, নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহ, যানযট নিরসন, বন্দরসমূহের সক্ষমতা বৃদ্ধি প্রভৃতিসহ ট্রেড ফ্যাসিলিটেশন কার্যক্রম জোরদার করার জন্য বৈষম্যবিরোধী সংস্কার পরিষদের পক্ষ থেকে সরকারের প্রতি আকুল আবেদন জানাচ্ছি।

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স