ঢাকা , বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫ , ১ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
নিবন্ধন চাওয়া ১৪৪ দলই প্রাথমিক বাছাইয়ে অনুত্তীর্ণ ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি আরও ৩৭৫ বাক্সবন্দি মেশিন এখন চায়ের টেবিল সংখ্যালঘু ঐক্য মোর্চার সংবাদ সম্মেলন নিয়ে পুলিশের ব্যাখ্যা ঐকমত্যে আসতে পারেনি রাজনৈতিক দলগুলো প্রাণনাশের হুমকি দিল প্রতারক ৪ দফা দাবি জোরপূর্বক প্রত্যাগত ওমান প্রবাসী ফোরামের পুলিশ কল্যাণ তহবিল থেকে দেড় কোটি টাকার অনুদান পাবে ৩৮৯ জন বিমানবন্দর থেকে ৯৬ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠালো মালয়েশিয়া নির্বাচন কমিশনের ৫১ কর্মকর্তাকে বদলি গেটে হাঁটুপানি, ভোগান্তিতে রোগী-স্বজনরা জিয়ার অনুকম্পায় রাজনীতি করে এখন তার পুত্রকে টার্গেট করছেÑ রিজভী চাঁদাবাজির অভিযোগে ওসিসহ ৬ পুলিশ প্রত্যাহার পঞ্চবেকি বয়া নদীর আয়রন ব্রিজ মৃত্যুফাঁদ ময়মনসিংহে মুক্তিপণ দিয়ে মিললো শিশুর লাশ ৪ লাখ টন চাল কিনবে সরকার, বেসরকারিভাবে ৫ লাখ টনের অনুমতি কে কাকে লাল কার্ড দেখাবে, তা ঠিক করবে জনগণ-ডা. জাহিদ বাংলাদেশিদের মিসরের ভিসা দিতে নিষেধাজ্ঞা নেই : দূতাবাস ইইউ’র প্রাক-নির্বাচনী অনুসন্ধানী দল ঢাকা আসছে সেপ্টেম্বরে সংরক্ষিত আসন বিলুপ্তির সুপারিশের প্রতিবাদ মহিলা পরিষদের

বাড়ি ছেড়েছেন চৌদ্দগ্রামে লাঞ্ছিত সেই বীর মুক্তিযোদ্ধা

  • আপলোড সময় : ২৩-১২-২০২৪ ১০:০৫:৫৯ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ২৩-১২-২০২৪ ১০:০৫:৫৯ অপরাহ্ন
বাড়ি ছেড়েছেন চৌদ্দগ্রামে লাঞ্ছিত সেই বীর মুক্তিযোদ্ধা
কুমিল্লা প্রতিনিধি
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে লাঞ্ছিত বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই কানু নিরাপত্তাহীনতার কারণে এলাকা ছেড়েছেন বলে জানিয়েছেন। রোববার বিকেলে তিনি কুমিল্লা থেকে ফেনীতে চলে যান।
এ বিষয়ে সোমবার দুপুরে মোবাইল ফোনে আব্দুল হাই বলেন, তিনি বর্তমানে ফেনীতে তার ছেলের সঙ্গে অবস্থান করছেন এবং মারধরের পর চিকিৎসা নিচ্ছেন। তিনি আরও জানান, যদি পুলিশ ও প্রশাসন তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করে, তবে তিনি চৌদ্দগ্রামে ফিরে আসবেন।
ঘটনার বর্ণনায় আব্দুল হাই কানু জানান, রোববার দুপুরে তিনি ওষুধ কিনতে বাড়ির কাছের বাজারে গিয়েছিলেন। সেখানে স্থানীয় জামায়াত কর্মী আবুল হাসেমের নেতৃত্বে ১০-১২ জন তাকে ধরে জুতার মালা পরিয়ে দেয় এবং তাকে দ্রুত এলাকা ছেড়ে চলে যেতে বলে। এই লাঞ্ছনার ঘটনা পরে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।
আব্দুল হাইয়ের স্ত্রী রেহানা বেগম জানান, ওই ঘটনায় তার স্বামী আত্মসম্মানে আঘাত পেয়েছেন, ফলে তিনি এলাকা ছেড়ে ফেনী চলে গেছেন। তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর তাদের বাড়িতে হামলা হয়েছিল এবং হামলাকারীরা তাদের এলাকা ছেড়ে যাওয়ার হুমকি দিয়েছিল। তাদের অভিযোগ, আওয়ামী লীগ করার কারণে তাদের বাড়িতে হামলা করা হয়েছিল।
এ ঘটনায় দেশজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনূস।
গতকাল সোমবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে জানানো হয়েছে যে, স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনকে ঘটনার তদন্ত শুরু করে দোষীদের আইনের আওতায় আনার জন্য বলা হয়েছে। সকলকে আইন নিজের হাতে তুলে নেয়া থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।
জানা গেছে, আব্দুল হাই কানু চৌদ্দগ্রাম উপজেলার বাতিসা ইউনিয়নের লুদিয়ারা গ্রামের বাসিন্দা এবং কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের সদস্য ছিলেন।
তার বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে হত্যাসহ ৯টি মামলা রয়েছে এবং একাধিকবার তিনি কারাগারে গিয়েছেন নানা অভিযোগে। একসময় তিনি বিএনপি-জামায়াত নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে নির্যাতন ও হয়রানির অভিযোগে পরিচিত ছিলেন।
চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ টি এম আক্তারুজ্জামান জানিয়েছেন, ঘটনার পর তাদের তদন্ত শুরু হয়েছে এবং আব্দুল হাই কানুর বিরুদ্ধে দুইটি হত্যামামলার তথ্য পাওয়া গেছে। তবে তিনি নিজেই ৯টি মামলার আসামি হওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
এদিকে, ঘটনার ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর পুলিশ প্রশাসন তৎপর হয়ে উঠেছে এবং সংশ্লিষ্টদের গ্রেফতারে অভিযান চালাচ্ছে। চৌদ্দগ্রাম থানার ওসি ঘটনার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন এবং গ্রেফতারি অভিযান চালানো হচ্ছে। তবে এখনও কেউ গ্রেফতার হয়নি।
ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, কয়েকজন যুবক আব্দুল হাই কানুকে ধরে নিয়ে আসেন এবং তার গলায় জুতার মালা পরান। সেখানে উপস্থিত একজন ব্যক্তির কাছে কানু ক্ষমা চেয়ে তার অপরাধ মেনে নিয়ে বের হয়ে যাওয়ার অনুরোধ করেন। ভিডিওতে দেখা যায়, ঘটনা নেতৃত্ব দিচ্ছেন হাশেম মজুমদার, যিনি বাতিসা ইউনিয়নের কুলিয়ারা গ্রামের বাসিন্দা এবং প্রবাসী। ঘটনাটি নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের আলোচনা রয়েছে, কেউ কেউ দাবি করছেন যে, জামায়াতের সমর্থকরা এই ঘটনা ঘটিয়েছে।
যদিও জামায়াতে ইসলামী চৌদ্দগ্রামের সেক্রেটারি মু. বেলাল হোসাইন বলেছেন, জামায়াতের কোনো নেতাকর্মী এ ঘটনায় জড়িত নয়। তিনি দাবি করেছেন, এটি ব্যক্তিগত বিরোধের কারণে ঘটেছে এবং জামায়াত এর সাথে সম্পৃক্ত নয়।
ঘটনার পর, চৌদ্দগ্রাম উপজেলা জামায়াতের আমীর মো. মাহফুজুর রহমানও সাংবাদিকদের কাছে একই বক্তব্য দেন, বলেন, ঘটনাস্থলে উপস্থিত আবুল হাসেম জামায়াতের সদস্য নয়, তবে তিনি জামায়াতের সমর্থক হতে পারেন।
এ ঘটনায় স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এবং প্রশাসনের কাছে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স
প্রতিবেদকের তথ্য