ঢাকা , সোমবার, ০২ জুন ২০২৫ , ১৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বঞ্চনার গল্প যেন অরণ্যেরোদন চাকরি অধ্যাদেশ বাতিলে ৩ উপদেষ্টাকে স্মারকলিপি দিলেন কর্মচারীরা রাষ্ট্র সংস্কারে উপেক্ষিত নারী তারেক রহমানসহ সব আসামির খালাসের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি শেখ হাসিনার আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু-আইন উপদেষ্টা শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামানের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি প্রথমবারের মতো বিটিভির স্টুডিও থেকে হচ্ছে বাজেট ঘোষণা ঘাটতি কমানোর লক্ষ্য নিয়ে নতুন বাজেট আজ দুধ শুধু পণ্য নয় এটি সংস্কৃতির অংশÑ মৎস্য উপদেষ্টা রাঙামাটিতে টানা বৃষ্টি পাহাড় ধসের ঝুঁকি সিলেটে টিলা ধসে একই পরিবারের ৪ জনের মৃত্যু বিজিএমইএ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় পেয়েছে ‘ফোরাম’ প্যানেল বাংলাদেশি যুবককে গুলি করে লাশ নিয়ে গেছে বিএসএফ জাপা চেয়ারম্যানসহ ২৮০ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে হত্যা চেষ্টার মামলা ঝিনাইদহে বিএনপির দু’পক্ষের সংঘর্ষে একজন নিহত আহত ৪ কেএনএফের ইউনিফর্ম জব্দের ঘটনায় কারখানা মালিক রিমান্ডে মবের নামে নাশকতার সুযোগ নেই আরও ১১ জনকে পুশইন, মোট সংখ্যা হাজার ছাড়িয়েছে নয় অঞ্চলের ওপর দিয়ে ৬০ কিমি. বেগে ঝড়ের আভাস সিলেট-মৌলভীবাজারের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

নতুন রুটে ছদ্মনামে দেশে ঢুকছে মাদকদ্রব্য

  • আপলোড সময় : ১৪-১২-২০২৪ ১১:১৭:৩৭ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১৪-১২-২০২৪ ১১:১৭:৩৭ অপরাহ্ন
নতুন রুটে ছদ্মনামে দেশে ঢুকছে মাদকদ্রব্য

* মাদক কারবারিরা প্রতি মাসে কোটি কোটি টাকার বাণিজ্য করছে
* ছদ্মনামে অবাধে প্রবেশ করছে হেরোইন, কোকেন, ক্রিস্টাল মেথ, আইস ও ইয়াবা
* প্রকাশ্যে ইয়াবার কারবার চললেও বোকা বানানো হচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে
* আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানেও ধরাছোঁয়ার বাইরেই থেকে যাচ্ছেন মূল হোতারা

পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত থেকে বাংলাদেশের বিভিন্ন রুট হয়ে মাদকদ্রব্য প্রবেশ করছে। বেনাপোলের পুটখালী, শিকারপুর, রঘুনাথপুর, অভ্রভুলাট ও দৌলতপুর সীমান্ত, আখাউড়া ও সিলেটের জকিগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে অবাধে মাদকদ্রব্য প্রবেশ করছে। এসব মাদকদ্রব্যের মধ্যে ইয়াবাকে কেউ বলেন ‘বিচি’, কেউ ‘বোতাম’। আবার কেউ কেউ ‘মাল’ নামেও ডাকেন। বিচি, বোতাম ও মাল এ তিন নামেই ভারত থেকে সিলেটের জকিগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে অবাধে ঢুকছে ইয়াবা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিতে ইয়াবাকে এ তিনটি সাংকেতিক নামেই ডাকেন মাদক কারবারিরা। যে কারণে প্রকাশ্যে ইয়াবার কারবার চললেও ‘বোকা’ বানানো হচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে। প্রতিমাসে চোরাকারবারীরা নতুন নতুন রুট ব্যবহার করে কোটি কোটি টাকার মাদকদ্রব্য পাচার করছে।
জানা গেছে, মাদক চোরাকারবারীরা নতুন নতুন কৌশলে বিভিন্ন নতুন রুট ব্যবহার করে পাচারকারীচক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে। সীমান্ত এলাকায় বিকল্প পথ বেছে নেয়ার পাশাপাশি এখন ট্রেনেও তারা মাদক পাচার করছে, যা আগে সেভাবে ছিল না। মাদকদ্রব্যের মধ্যে ক্রিস্টাল মেথ ও আইসের পাশাপাশি বিপুল পরিমাণ হেরোইন ও কোকেন এবং ইয়াবা পাচার করছে তারা। মাদক কারবারিরা প্রতি মাসে কোটি কোটি টাকার বাণিজ্য করছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বাংলাদেশে মাদকদ্রব্য পাচারের অন্যতম রুট কক্সবাজার ও মায়ানমারের সীমান্তঘেঁষা টেকনাফ এবং সিলেটের জকিগঞ্জ সীমান্ত। বর্তমানে এইসব পথসহ আরো কয়েকটি পথে আন্তর্জাতিক মাদকচক্র বাংলাদেশকে করিডর হিসেবে ব্যবহার করছে। হেরোইন, কোকেন, ক্রিস্টাল মেথ, আইস ও ইয়াবা দেশে এনে অভ্যন্তরীণ বাজার তৈরি করছে তারা। অথচ এইসব মাদক পাচারকারী চক্রের সাথে শতাধিক শীর্ষ মাদক কারবারি এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছে।
অপরাধ বিশ্লেষকরা বলছেন, ইয়াবার পর কোকেন ও হেরোইন এখন দেশের তরুণ ও যুবসমাজের জন্য বিরাট হুমকি বলে মনে করছেন তারা। মাদকের বিরুদ্ধে সরকারের জিরো টলারেন্স থাকলেও দিন দিন এর ব্যবহার বাড়ছে। এই জায়গায় সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থা ও কিছু বেসরকারি সংস্থার আরো গুরুত্ব দেয়া উচিত। বাংলাদেশকে রুট হিসেবে ব্যবহার করছে আন্তর্জাতিক মাদক ব্যবসায়ীচক্র। তাদের সঙ্গে দেশের শীর্ষ মাদক কারবারিদের যোগসূত্র রয়েছে।
সম্প্রতি সিলেটের জকিগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে মাদক চোরাচালান অনুসন্ধান করতে গিয়ে ইয়াবার চালান উদ্ধার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। অত্যন্ত কৌশলে কয়েক হাত বদল করে জকিগঞ্জ থেকে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পৌঁছে দিচ্ছেন এসব মাদক। এতে ‘সাপ্লাইয়ার’ হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে অসহায় ও হতদরিদ্র কিছু যুবককে। বিনিময়ে তাদের দেয়া হয় চালানপ্রতি আর্থিক সুবিধা। ফলে মাদকবিরোধী অভিযানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ধরা পড়ছেন কেবল ‘সাপ্লাইয়াররা’। ধরাছোঁয়ার বাইরেই থেকে যাচ্ছেন মূল হোতারা।
এ বিষয়ে বিজিবি জকিগঞ্জ ব্যাটালিয়নের (১৯ বিজিবি) অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল খোন্দকার মো. আসাদুন্নবি বলেন, কিছু কিছু সময় জকিগঞ্জ সীমান্তে নদীপথে মাদক আনার চেষ্টা করে। আবার শেওলা পয়েন্ট দিয়েও চেষ্টা করা হয়। কিন্তু আমাদের নিয়মিত অভিযানের কারণে ব্যর্থ হয়। তিনি বলেন, গোয়েন্দা তথ্যের আলোকে আমাদের কাছে মাদক কারবারিদের তালিকা আছে। আমরা সেই আলোকে অভিযান পরিচালনা করি। মাঝে মধ্যে গভীর রাতে চেকপোস্ট বসিয়ে অভিযান পরিচালনা করি। অনেক সময় ডগ স্কোয়াডের মাধ্যমেও আমাদের অভিযান চলে। অভিযানে মাদকের বাহক ধরা পড়ার বিষয়ে বিজিবি অধিনায়ক বলেন, যখন অভিযান পরিচালনা করা হয় তখন মূলত বাহকই ধরা পড়ে। আমরা পরবর্তীতে ওই বাহককে মামলা দিয়ে থানায় হস্তান্তর করি। সে আলোকে মূল হোতাদের ধরার দায়িত্ব পুলিশের।
যশোর-৪৯ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল্লাহ সিদ্দিকী বলেন, গোয়েন্দা তথ্যে বেনাপোল রেলস্টেশনে খুলনা-মোংলা-বেনাপোল রুটে চলাচলকারী ‘বেতনা এক্সপ্রেস’ ট্রেন থেকে এই মাদকের চালান জব্দ করা হয়। বিজিবির উপস্থিতি টের পেয়ে ব্যাগটি ফেলে মাদক পাচারকারীরা পালিয়ে যায়। তিনি আরও বলেন, শুধু কোকেন নয়, হেরোইনও জব্দ করা হয়েছে। জব্দ করা কোকেন ও হেরোইনের বাজারমূল্য এক কোটি ৭১ লাখ ৮৪ হাজার টাকা। এর মধ্যে কোকেনের মূল্য এক কোটি ৩৮ লাখ টাকা ও হেরোইনের মূল্য ৩৩ লাখ ৮৪ হাজার টাকা।
 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স