ঢাকা , শনিবার, ৩১ মে ২০২৫ , ১৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
আমতলীতে শহিদ রাষ্টপতি জিয়াউর রহমানের মৃত্যু বার্ষিকীতে সেচ্ছায় রক্তদান ও আলেচনা সভা মগবাজারে কুপিয়ে ব্যাগ ছিনতাইয়ের ঘটনায় গ্রেফতার ৩ ২ জুন বাজেট ঘোষণা স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা নিহত বাংলাদেশের জন্য জাপান গুরুত্বপূর্ণ শ্রমবাজার : প্রেস সচিব বাড়ছে নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা সরকারের আশ্বাসে প্রাথমিক শিক্ষকদের কর্মবিরতি স্থগিত ডিসেম্বরের আগেই জাতীয় নির্বাচন দেয়া সম্ভব -তারেক রহমান দেশে গণতন্ত্রের নিরাপদ যাত্রা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে : খালেদা জিয়া নির্বাচন ইস্যুতে এনসিপির সমালোচনায় ববি হাজ্জাজ আনু মুহাম্মদের স্ট্যাটাসে আসিফ নজরুলের বিস্ময় প্রকাশ জিয়াউর রহমানের ৪৪তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ উত্তাল নগর ভবনে পা রাখলেন ইশরাক আরও উজ্জীবিত আন্দোলনকারীরা সচিবালয়ে কর্মচারীদের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা প্রশাসনে ১০ মাসেও ফেরেনি শৃঙ্খলা ভারী বৃষ্টিতে বন্যার শঙ্কা শেখ হাসিনার আমলে ২৩৪ বিলিয়ন ডলার পাচার অবাধ-নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনে একসঙ্গে কাজ করবে সরকার, ইসি ও জাতিসংঘ মিডিয়ার হেডলাইন দেখে মন্তব্য করা যায় না-ইশরাক ইস্যুতে সিইসি নানামুখী চাপে দেশের অর্থনীতি
* বিদ্রোহীদের দামেস্কে প্রবেশের পর, প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ একটি ব্যক্তিগত উড়োজাহাজে দামেস্ক ছাড়েন

দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন বাশার

  • আপলোড সময় : ০৮-১২-২০২৪ ১১:০৪:৪৪ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ০৮-১২-২০২৪ ১১:০৪:৪৪ অপরাহ্ন
দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন বাশার
সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে বিদ্রোহীদের প্রবেশের খবর আসার পরপরই সিরিয়ার দুই দশক ধরে শাসন করা প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন।
সিরিয়ার দুটি শীর্ষ সরকারি কর্মকর্তার বরাতে রয়টার্স জানায়, প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ একটি ব্যক্তিগত উড়োজাহাজে অজ্ঞাত গন্তব্যের উদ্দেশে দামেস্ক ত্যাগ করেছেন।
রয়টার্স ও সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস (এসওএইচআর)-এর প্রতিবেদনে জানা যায়, দামেস্ক বিমানবন্দর থেকে একটি ব্যক্তিগত উড়োজাহাজ উড়তে দেখা গেছে, যা বাশার আল-আসাদকে বহন করার সম্ভাবনা রয়েছে। এর পরপরই বিমানবন্দর থেকে সরকারি বাহিনী সরিয়ে নেয়া হয়, যা আসাদের শাসনের পতনের একটি বড় ইঙ্গিত।
কোনো ধরনের বাধার সম্মুখীন না হয়েই বিদ্রোহীরা দামেস্কে ঢুকে পড়েন। তারা দাবি করেছেন, সরকারি বাহিনী তাদের পথে কোনো প্রতিরোধ গড়ে না তুলে একে একে পালিয়ে গেছে। খবর রয়টার্স, সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস (এসওএইচআর), বিবিসির
দামেস্কের উপকণ্ঠে অবস্থিত সেদনায়া কারাগার থেকে হাজার হাজার বন্দিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। সেদনায়া কারাগারটি ছিল সিরিয়ার সবচেয়ে কুখ্যাত কারাগারগুলোর মধ্যে একটি, যেখানে বিরোধী রাজনৈতিক কর্মী এবং সাধারণ নাগরিকদের দীর্ঘকাল ধরে বন্দি রাখা হয়েছিল।
বন্দিদের মুক্তির পর, রাস্তায় হাজার হাজার মানুষ উল্লাস করতে শুরু করে। তারা চিৎকার করে বলেন, ‘আসাদ চলে গেছে, হোমস এখন মুক্ত!’ এবং ‘সিরিয়া দীর্ঘজীবী হোক, বাশার আল-আসাদ নিপাত যাক।’
এদিকে, সিরিয়ার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ শহর হোমসও বিদ্রোহীরা একদিনের লড়াইয়ের পর দখল করে নেয়। হোমস ছিল সিরিয়ার শাসন ব্যবস্থার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি দামেস্কের সঙ্গে সরকারের মূল শক্তির যোগাযোগ স্থাপন করতে সহায়তা করত। হোমসের পতনের পর, সিরিয়ার সরকার কার্যত তাদের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে এবং বাশার আল-আসাদের শাসন টিকে থাকার মতো কোনো শক্তি আর অবশিষ্ট ছিল না। হোমসের পতনকে বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শামের নেতা আবু মোহাম্মদ আল-জাওলানি ‘ঐতিহাসিক মুহূর্ত’ হিসেবে অভিহিত করেছেন।
হায়াত তাহরির আল-শাম তাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে জানিয়েছেন, এই বিজয়ের মাধ্যমে সিরিয়ার জনগণের জন্য একটি নতুন যুগের সূচনা হয়েছে, যেখানে স্বৈরশাসন ও নিপীড়নের অন্ধকার যুগের অবসান ঘটেছে। তাদের নেতা আল-জাওলানি বিদ্রোহী যোদ্ধাদেরকে অহেতুক রক্তপাত থেকে বিরত থাকতে এবং যারা অস্ত্রত্যাগ করেছে তাদের প্রতি কোনো ধরনের আঘাত না করার নির্দেশ দিয়েছেন। বিদ্রোহী বাহিনীর বিজয়ের পর, সিরিয়ার বিভিন্ন শহরে মানুষের মধ্যে আনন্দের ঢেউ বয়ে যায় এবং সরকারি বাহিনী একে একে পিছু হটে।
হোমসের পতনের পর, সিরিয়ার বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ শহর থেকে সরকারি বাহিনী পালিয়ে যেতে শুরু করে এবং সড়কে হাজার হাজার মানুষ মুক্তির আনন্দে ভেসে ওঠে। বিশেষভাবে দামেস্কের আকাশে বিদ্রোহীরা গুলি ছুঁড়ে তাদের বিজয়ের আনন্দ প্রকাশ করে। তরুণ-তরুণীরা প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের পোস্টার ছিঁড়ে ফেলে, আর বিভিন্ন এলাকায় সরকারি অফিসে হামলা চালায়। এই দৃশ্যগুলি ছিল সিরিয়ায় আসাদ বিরোধী আন্দোলনের একটি নতুন দিক, যেখানে জনগণ তাদের স্বাধীনতার জন্য একত্রিত হয়েছিল।
বিদ্রোহীদের দ্রুত এগিয়ে আসা এবং আসাদের সেনাদের পালিয়ে যাওয়ার পর, সিরিয়ার প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রক্রিয়ায় সহায়তা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তবে এই প্রক্রিয়া বিদ্রোহীদের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হতে পারে, কারণ দেশটির ভবিষ্যৎ এখনো অনিশ্চিত। যদিও বিদ্রোহী বাহিনী দাবি করেছে তারা সিরিয়ার জনগণের ইচ্ছার প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকবে, তবে তাদের শাসন ব্যবস্থার স্থিতিশীলতা এখনো পরীক্ষিত হয়নি।
বিশ্লেষকরা বলছেন, সিরিয়ার এই পরিস্থিতি দেশের জন্য একটি বড় রাজনৈতিক পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয়। যদিও একনায়কতন্ত্রের অবসান ঘটেছে, বিদ্রোহী বাহিনীর অভ্যন্তরীণ ঐক্য ও দেশ পরিচালনার ক্ষেত্রে তাদের সক্ষমতা একটি বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে, সিরিয়ার জনগণের আশা, এই নতুন পরিবর্তন তাদের জীবনে শান্তি ও স্বাধীনতার পথ খুলে দেবে।
বিদ্রোহী বাহিনীর বিজয়ের পর, দেশজুড়ে মানুষের মধ্যে আনন্দ এবং আতঙ্কের মিশ্রিত অনুভূতি ছড়িয়ে পড়েছে। তবে একথা নিশ্চিত যে, সিরিয়ার জন্য একটি নতুন রাজনৈতিক যুগ শুরু হয়েছে, যেখানে জনগণ আর কোনো একনায়কতন্ত্র বা স্বৈরশাসন মেনে নেবে না।
 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স