ঘূর্ণিঝড় ফিনজালের প্রভাবে বঙ্গোপসাগর উত্তাল থাকায় তিন দিন মাছ ধরতে পারেননি সুন্দরবনের দুবলার চরের শুঁটকি পল্লির জেলেরা। মাছ সংকটে ডিসেম্বর মাসে শুঁটকি উৎপাদন প্রায় ৫০০ মণ কম হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এর মূল্য প্রায় কোটি টাকা। ফলে সরকার রাজস্ব হারাবে কমপক্ষে ৩০ লাখ টাকা। সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জের দুবলা বিশেষ টহল ফাঁড়ি সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপ ও ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সাগর উত্তাল হয়ে ওঠে। ফলে গত ২৮, ২৯ ও ৩০ নভেম্বর টানা তিন দিন শুঁটকি পল্লির কোনও জেলে সাগরে যেতে পারেনি। এতে আলোরকোল, মাঝের কিল্লা, নারকেলবাড়িয়া ও শ্যালার চরসহ দুবলার প্রত্যেকটি চরেই শুঁটকি তৈরির মাছের সংকট দেখা দেয়। যে কারণে চলতি মাসে রাজস্ব আয়ের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হওয়ার শঙ্কা বাড়ছে। আলোরকোল শুঁটকি পল্লীর ব্যবসায়ী পঙ্কজ বিশ্বাস ও জেলে স্বপন বিশ্বাস জানান, আবহাওয়া খারাপ থাকায় তিন দিন মাছ ধরা বন্ধ ছিল। এতে তাদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। আবহাওয়া স্বাভাবিক হওয়ার পর ১ ডিসেম্বর সকাল থেকে জেলেরা আবার সাগরে নামেন। তবে দুর্যোগে প্রত্যেকটি চরের সব ব্যবসায়ী ক্ষতির মুখে পড়েছেন। সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জর দুবলা বিশেষ টহল ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফরেস্ট রেঞ্জার মো. খলিলুর রহমান জানান, মাসে দুইটি গোনে ১৪ দিন মাছ ধরতে পারেন জেলেরা। কিন্তু আবহাওয়া খারাপ থাকায় গত গোনে তিন দিন সাগরে নামতে পারেননি। তিন দিনে প্রায় এক কোটি টাকার শুঁটকি উৎপাদন ক্ষতি হবে। তিনি জানান, ডিসেম্বর মাসে তাদের দুই কোটি টাকা রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। কিন্তু মাছ মাছ কম হওয়ায় ডিসেম্বর মাসে প্রায় ৩০ লাখ টাকা রাজস্ব আয় কম হবে বলে শঙ্কা রয়েছে। নভেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত পাঁচ মাসে দুবলার শুঁটকি পল্লীর চরগুলোতে উৎপাদিত শুঁটকি খাত থেকে ৮ কোটি টাকার রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। গত বছর আয় হয়েছিল ৭ কোটি ২৩ লাখ টাকা। কিন্তু এ বছর সাগরে মাছের পরিমাণ কম। আবার প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রভাব ঘন ঘন কাজ করছে। তাই এবার মৌসুমে রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা পূরণেও আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata