ঢাকা , বুধবার, ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ , ২৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
মেধাস্বত্ব সংরক্ষণে সেল প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ ইউজিসির বিপুল আমদানিতেও ভোজ্যতেলের বাজার অস্থিতিশীল চিন্ময় দাসের জামিন প্রশ্নে হাইকোর্টের রুল মুক্তিযোদ্ধা তথ্যভাণ্ডার তৈরিতে অনিয়ম এ সরকারও কুমিল্লা থেকে খুনের ইতিহাস শুরু করেছে-শামসুজ্জামান দুদু যুব সমাজ দেশে জীবন ও জীবিকার নিশ্চয়তা পাচ্ছে না-জিএম কাদের ট্রাম্পের শুল্কনীতির অস্থিরতায় বিশ্ব অর্থনীতির ঝুঁকি বাড়ছে সাংবাদিকদের ওপর নির্যাতন বাড়ছে পাচার অর্থ ফেরাতে কানাডার সহযোগিতা চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা ২৩৯৯ কোটি টাকা ব্যয়ে ক্রয় কমিটিতে ১২ প্রস্তাব অনুমোদন প্রশাসন ক্যাডারের তরুণদের হতাশা-ক্ষোভ গুচ্ছে থাকছে ২০ বিশ্ববিদ্যালয় ৯ বছরেও ফেরেনি রিজার্ভ চুরির অর্থ কারাগার থেকে ফেসবুক চালানো সম্ভব নয় ৮ ফেব্রুয়ারি ছয় সংস্কার কমিশনের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশ-আসিফ নজরুল এক সপ্তাহ পর ক্লাসে ফিরলেন তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা কোটায় উত্তাল জাবি সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনব্যবস্থা সমর্থন করছি না-মান্না চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগের ৪৬ নেতাকর্মী গ্রেফতার বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় ধাপের আখেরি মোনাজাত আজ

ডিসেম্বর মাসে ১২ বার শৈত্যপ্রবাহের আশঙ্কা

  • আপলোড সময় : ০৫-১২-২০২৪ ০১:০১:৫২ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ০৫-১২-২০২৪ ০১:০১:৫২ পূর্বাহ্ন
ডিসেম্বর মাসে ১২ বার শৈত্যপ্রবাহের আশঙ্কা
গ্রামীণ জনপদের পাশাপাশি রাজধানীর চারপাশেও আক্ষরিক অর্থে পৌষ-মাঘ মাস আসে শীতের দাপট নিয়ে। কিন্তু এবার পৌষ মাসের ১০দিন আগেই উত্তরের বিভিন্ন জেলায় শীত জেঁকে বসেছে। বইছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। হাড়কাঁপানো শীতে গরিব মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে। তারা আক্রান্ত হচ্ছে সর্দি-কাশি, হাঁচি-জ্বর, হুপিং কাশিসহ শীতকালীন ডায়রিয়ায়। তবে শীত মোকাবিলায় আগাম প্রস্তুতি কোনো প্রস্তুতি যেন নেই কোথায়ও।
জানা গেছে, এবার নভেম্বরের শুরুতেই দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে শীতের আমেজ পাওয়া গেছে। নভেম্বরের মাঝামাঝি সময় থেকে উত্তরাঞ্চলে শীতের তীব্রতা বাড়তে থাকে। আর নভেম্বরের শেষ নাগাদ পঞ্চগড়ের তাপমাত্রা নেমে আসে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ঘরে। এরই মধ্যে দেশের অন্যান্য অঞ্চলেও শীত পড়তে শুরু করেছে। তবে চলতি ডিসেম্বর মাসে এই শীতের তীব্রতা আরও বাড়তে পারে। আর শেষার্ধে শিলাবৃষ্টি ও ঝড়ও হতে পারে। এতে দেশে চারটি তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করছে আবহাওয়া অফিস।
সরেজমিনে দেখা গেছে, গত কয়েকদিন ধরে হালকা শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে তার নমুনা প্রতিদিন রাত ৯টার পর রাস্তায় নামলেই দেখা যায়। তবে ভোরের পর দিনের একটি বড় সময় কুয়াশায় আছন্ন থাকে ঢাকার রাস্তা। ঢাকায় যেসব ছিন্নমূল মানুষের বসবাস তাদের জন্য এই শীতের তীব্রতা আরও বেশি। রাজধানীর কারওয়ান বাজার এলাকায় অসংখ্য মানুষ ফুটপাথের উপরই খোলা আকাশের নিচে ঘুমিয়ে রাত কাটাচ্ছেন। এমনই একজন মোসাম্মৎ সায়রা খাতুন যিনি বললেন ঠাণ্ডায় তাদের কতটা কষ্ট হচ্ছে। এখনো পুরোপুরি শীত শুরু হয়নি তারপরও এই শীতের মধ্যে আমরা অনেক কষ্ট করছি। কোন কিছু পাই নাই। এভাবেই শীতের মধ্যে রাত কাটাচ্ছি। শীতের কোন কাপড়চোপড় নাই। কম্বলও পাচ্ছি না। একটা চাদর গায়ে দিয়ে থাকছি।
শীতে সবচেয়ে কষ্টে থাকেন ছিন্নমূল মানুষ : প্রতি বছরের মতো এবারও খোলা আকাশের নিচে বসবাসরত অসহায় ছিন্নমূল মানুষের কষ্টের সীমা থাকবে না। দু-একটি সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন পাশে দাঁড়ালেও বেশির ভাগ মানুষের দুঃখ-দুর্দশার শেষ নেই। তবে ঢাকার মার্কেট ও ফুটপাতগুলোতে গরম জামা কাপড় কেনার হিড়িক দেখে সেটি বোঝা যায়। মোহাম্মদপুর এলাকায় একটি মধ্যবিত্ত পরিবারে গিয়ে দেখা গেল তাদের ঠাণ্ডায় জড়সড় অবস্থা। সে বাসার গৃহকর্ত্রী ঝর্না ইয়াসমিন বললেন, আসতে আসতে শীতের তীব্রতা বাড়তে শুরু করেছে। রাতের বেলা জানালা বন্ধ করে এখনই ঘুমাতে হচ্ছে। তিন চারটা কাপড় পরি, মোজা পরে কম্বলের নিচে থাকি, তারপরও ঠাণ্ডা লাগছে। তবে ঢাকা শহরের উচ্চবিত্তদের জন্য তৈরী কিছু ভবন ছাড়া আর বাকিগুলোতে শীত কিংবা গরম আবহাওয়ার মোকাবেলার তেমন কোন ব্যবস্থা নেই। স্থপতি রবিউল হোসেন এমন আক্ষেপ করে বলেন, বাংলাদেশের আবহাওয়ার কারণে গরমকে খানিকটা গুরুত্বদেয়া হলেও, ভবন নির্মানের ক্ষেত্রে শীতকে মোটেও প্রাধান্য দেয়া হয়না।
শীতে সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে : শীতের কারণে কাহিল হয়ে পড়েছে গ্রাম-গঞ্জের দরিদ্র ও খেটে খাওয়া মানুষগুলো। শীত মোকাবিলায় স্থানীয় প্রশাসনের প্রস্তুতি খুব সামান্য। পর্যাপ্ত শীতবস্ত্র না থাকায় দুস্থ মানুষের দুর্ভোগ বেড়ে গেছে। তীব্র শীতের কারণে ডায়রিয়া, আমাশয়, সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। এদের মধ্যে শিশু ও বৃদ্ধের সংখ্যাই বেশি। অনেক স্থানে এখনই ১১টা পর্যন্ত সূর্যের মুখ দেখা যাচ্ছে না। কুড়িগ্রামে শৈত্যপ্রবাহে গরম কাপড়ের অভাবে শীতের কষ্টে ভুগছে শিশু, বৃদ্ধসহ নিম্ন আয়ের কর্মজীবী মানুষজন। শৈত্যপ্রবাহ ও কুয়াশার বিস্তার ঘটছে পার্শ্ববর্তী অঞ্চলেও। পার্বত্য জেলাগুলোসহ সিলেট বিভাগেও অনুভূত হচ্ছে শীতের তাণ্ডব। আকস্মিক তাপমাত্রার হ্রাস-বৃদ্ধিসহ শৈত্যপ্রবাহের জন্য অনেকাংশে দায়ী বৈশ্বিক আবহাওয়া ও জলবায়ুর পরিবর্তন। উপমহাদেশেও আবহাওয়ার ভাবগতি বিশেষ সুবিধার নয়। আফগানিস্তান, পাকিস্তান, হিমাচল প্রদেশসহ উত্তর খণ্ডে চলছে শীতের তাণ্ডব। হিন্দুকুশ ও হিমালয় পর্বতমালা থেকে ধেয়ে আসছে ঘন কুয়াশামালা, সুতীব্র হিমেল প্রবাহ। এ দেশেও শীতে যে কোনো দুর্যোগ দুর্বিপাকে দুস্থ ও ছিন্নমূল মানুষই বিপাকে পড়ে বেশি। তাদের পক্ষে একদিকে শীতবস্ত্র ও লেপ-কম্বল কিনে শীত নিবারণ করা যেমন দুরূহ, অন্যদিকে পুষ্টিহীনতার কারণে রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতাও তাদের কম। ফলে শীতজনিত বিভিন্ন রোগে তারাই আক্রান্ত হয় বেশি।
শীতের তীব্রতা নিয়ে যা বললে আবহাওয়া অধিদফতর : আবহাওয়া অধিদফতর বলছে, ডিসেম্বর মাসে দিন ও রাতের তাপমাত্রা ক্রমেই কমতে পারে। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে দেশজুড়ে জেঁকে বসতে পারে তীব্র শীত। মাসের দ্বিতীয় ভাগে দেশের পশ্চিম ও উত্তরাঞ্চলে দু-একটি মৃদু থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ?ও বয়ে যেতে পারে। এ ছাড়া বঙ্গোপসাগরে একটি ঘূর্ণিঝড় হওয়ার ক্ষীণ আশঙ্কার কথাও জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা। তবে চলতি মাস থেকে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত ১২টি শৈত্যপ্রবাহ মোকাবিলা করবে বাংলাদেশ। এর মধ্যে চরটি তীব্র শৈত্যপ্রবাহ নামতে পারে। আর শেষার্ধে শিলাবৃষ্টি ও ঝড়ও হতে পারে। গতকাল বুধবার আবহাওয়া অধিদফতরের পরিচালক মো. মমিনুল ইসলামের সই করা দীর্ঘ ৩ মাসের পূর্বভাসে এই তথ্য জানা গেছে। এতে বলা হয়েছে, এ সময়ে সামগ্রিকভাবে দেশে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। দিন ও রাতের তাপমাত্রা ক্রমান্বয়ে হ্রাস পেতে পারে তবে দিন ও রাতের তাপমাত্রা স্বাভাবিক থাকতে পারে। দেশে তিন থেকে আটটি মৃদু (০৮-১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস) থেকে মাঝারি (৬-৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস) ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে তবে এর মধ্যে উত্তরপশ্চিমাঞ্চল, উত্তরপূর্বাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলে তিন-চারটি তীব্র শৈত্যপ্রবাহ (৪-৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস) বয়ে যেতে পারে। তবে কুয়াশার বিষয়ে পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, শেষরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের উত্তর, উত্তরপশ্চিমাঞ্চল, মধ্যাঞ্চল ও নদ-নদী অববাহিকায় মাঝারি বা ঘন কুয়াশা এবং অন্যত্র হালকা কুয়াশা পড়তে পারে। মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। তবে কখনও কখনও উত্তরাঞ্চল, উত্তরপশ্চিমাঞ্চল ও উত্তরপূর্বাঞ্চলে কুয়াশা দুপুর পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে এবং শীতের অনুভূতি বৃদ্ধি পেতে পারে। ফেব্রুয়ারি মাসের শেষার্ধে দেশের কোথাও কোথাও দু-একদিন শিলাবৃষ্টিসহ বজ্রঝড় হতে পারে।
 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স