* বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত ও সারজিস নেতৃত্ব দিচ্ছেন
* চট্টগ্রামে আইনজীবীকে হত্যায় রাতভর যৌথ বাহিনীর অভিযানে ৩৩ জন আটক
* আইনজীবী হত্যায় জড়িতদের মধ্যে ৭ জন শনাক্ত : সিএমপি কমিশনার
ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি ফর কৃষ্ণ কনশাসনেস (ইসকন) নিষিদ্ধের দাবিতে গতকাল বুধবার রাজধানী ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ সারাদেশে ব্যাপক বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ হয়েছে। বিক্ষোভে বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠে সারাদেশ। এতে নেতৃত্ব দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ এবং জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম। চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন নামঞ্জুরের পর আদালত প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ, সংঘর্ষ, ভাঙচুর ও আইনজীবীকে হত্যার ঘটনায় গত মঙ্গলবার রাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিশেষ অভিযান চালিয়ে ৩৩ জনকে আটক করে। ভিডিও ফুটেজ দেখে আটককৃত ৩৩ জনের মধ্যে থেকে ৬ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে। তারা এখন পুলিশ হেফাজতে।
গতকাল বুধবার দুপুরে নগরের টাইগার পাস মোড়ে হত্যাকাণ্ডের শিকার অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফের জানাজা শেষে শোক ও সম্প্রীতি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এরপর শুরু হয় ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ। গতকাল বিকেল ৩টার দিকে টাইগারপাস এলাকা ছাত্র-জনতার স্লোগানে উত্তাল হয়ে উঠে চট্টগ্রাম। সেখানে বিক্ষোভকারীরা মিছিল নিয়ে বহদ্দারহাট এলাকায় যান।
এর আগে সম্প্রীতি সমাবেশে দেয়া বক্তব্যে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, আওয়ামী লীগের সহায়তায় ইসকন গত ১৬ বছর রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় বেড়ে উঠেছে। এখন জঙ্গি সংগঠন হিসেবে বাংলাদেশে অশান্তি সৃষ্টি করছে। আমরা স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, ভারতের বুবু, ভারতের হাসিনা এই বাংলাদেশে তোমার আর ঠাঁই হবে না। ভারতে বসে যতই ষড়যন্ত্র করার চেষ্টা করা হোক আমরা বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষ সেই ষড়যন্ত্র রুখে দেব। আমাদের দেশে সব ধর্মের সহাবস্থান থাকবে। কিন্তু ধর্মের দোহাই দিয়ে উগ্রবাদী সংগঠন পরিচালনা করবে, সেসব উগ্রবাদী সংগঠনকে বাংলাদেশে কোনো জায়গা দেয়া হবে না। সারজিস আলম বলেন, যে রক্তের বন্যা বইয়ে শেখ হাসিনা এই দেশ ছেড়ে পালিয়েছে, যে রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে নতুন বাংলাদেশ এসেছে, সেই রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে এই চিন্ময়রা উসকানি দেয়; সেই রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে খুনি হাসিনা উসকানি দেয়; সেই রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে জঙ্গি ইসকনরা উসকানি দেয়; সেই রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে ভারতের কিছু প্রেতাত্মা উসকানি দেয়। আমরা স্পষ্ট করে সব প্রেতাত্মাদের বলে দিতে চাই, আমরা ১৬ বছরের স্বৈরাচার খুনি হাসিনাকে দেশ ছাড়া করেছি। ছোটোখাটো কিছু জঙ্গি ইসকনকে দেশছাড়া করা আমাদের জন্য হাতের ময়লা। সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চট্টগ্রামের সমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদ রাফি বলেন, আমরা পরিষ্কারভাবে বলতে চাই প্রশাসনের যেসব জায়গায় স্বৈরাচারের দোসররা বিরাজমান তাদের নির্মূল করতে হবে। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, ভারতীয় প্রেসক্রিপশনে বাংলাদেশ চলবে না; ভারতীয় কোনো আগ্রাসন বাংলাদেশে চলবে না; ভারতীয় কোনো দাদাগিরি বাংলাদেশে চলবে না। আমরা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নিশ্চিত করতে এক ও ঐক্যবদ্ধ। কিন্তু যদি কেউ ধর্মের দোহাই দিয়ে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে, তাহলে আমরা বাংলাদেশের ছাত্রজনতা তাদের প্রতিহত করতে একবারও ভাবব না।
এর আগে, গত মঙ্গলবার বিকেলে একদল ইসকন অনুসারীর হাতে নির্মমভাবে খুন হন আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ। গতকাল বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তার প্রথম জানাজা চট্টগ্রাম আদালত এলাকায় অনুষ্ঠিত হয়। এরপর দ্বিতীয় জানাজা দুপুর ১২টার দিকে নগরের জমিয়তুল ফালাহ মাঠে অনুষ্ঠিত হয়। এতে সর্বস্তরের জনগণের ঢল নামে।
গত ২৫ নভেম্বর বিকেলে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে যাওয়ার সময় শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে পুলিশের বিশেষায়িত গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সদস্যরা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেফতার করে। পরদিন মঙ্গলবার কোতোয়ালি থানায় দায়ের হওয়া রাষ্ট্রদোহ মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে মহানগর ষষ্ঠ কাজী শরীফুল ইসলামের আদালতে হাজির করা হয়। আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এ নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন ইসকন অনুসারীরা। তারা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ান। পুলিশের লাঠিচার্জে বিক্ষোভকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে আদালত এলাকায় মসজিদ-দোকানসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে হামলা চালান। বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করেন। এক পর্যায়ে আদালতের কাছাকাছি একটি জায়গায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে কুপিয়ে হত্যা করে কয়েকজন বিক্ষোভকারী।
উক্ত ঘটনায় চট্টগ্রামের পাথরঘাটা মাথার পট্টি, আন্দরকিল্লা, হাজারী গলি, ফিরিঙ্গি বাজার এলাকায় গত মঙ্গলবার রাতে যৌথ বাহিনী অভিযান চালিয়ে ৩৩ জনকে আটক করে। আটক ব্যক্তিদের যাচাইবাছাই করছে পুলিশ। তবে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) কমিশনার হাসিব আজিজ বলেছেন, আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যার ঘটনায় আটকদের মধ্যে ৭ জনের বিরুদ্ধে অপরাধের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে।
অপরদিকে চট্টগ্রামে মসজিদ ভাঙচুর, আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যা ও ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে নড়াইলের লোহাগড়ায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ইসকনকে নিষিদ্ধের দাবিতে গতকাল বুধবার দুপুরে ‘সংগ্রামী মুসলিম জনতা’র ব্যানারে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি লোহাগড়া কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের সামনে থেকে বের হয়ে পৌর শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে লোহাগড়া সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে এসে শেষ হয়। বক্তারা এ সময় ঘটনায় জড়িত চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের অনুসারীদের গ্রেফতার ও আন্তর্জাতিক কৃষ্ণ ভাবনামৃত সংঘকে (ইসকন) বাংলাদেশ থেকে নিষিদ্ধ করার দাবি জানান। তারা এই হত্যাকাণ্ডের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন-লোহাগড়া কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ইমাম হাফেজ মাওলানা মাসুম বিল্লাহ, লোহাগড়া উপজেলা ওলামা পরিষদের সভাপতি মাওলানা শাফায়াত হোসাইন, সাধারণ সম্পাদক মাওলানা তাওহীদুর রহমান, মাওলানা মোস্তাফিজুর রহমান, মাওলানা নুরুল্লাহ, মো. আরিফুজ্জামান হেলালী, হাফেজ মো. শরিফুল ইসলাম, মো. শাহীন আহমেদ, এস কে মিন্টু প্রমুখ।
চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে হত্যার প্রতিবাদে ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে শুরু হয়েছে শোকসভা ও সম্প্রীতি সমাবেশ। গতকাল বুধবার বিকাল পৌনে ৩টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে এই কর্মসূচি শুরু হয়। এতে বিভিন্ন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ অংশ নেয়। শোকসভা ও সম্প্রীতি সমাবেশে অংশগ্রহণকারীরা বলছেন, আইনজীবী সাইফুল ইসলামকে নৃশংসভাবে হত্যার বিচার দাবি করছি। অতি দ্রুত হত্যাকারীদের গ্রেফতার করে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।
সমাবেশে উপস্থিত হওয়া বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক মাহীন সরকার বলেন, বাংলাদেশের মানুষ সম্প্রীতি বজায় রেখে আবহমানকাল থেকে একত্রে বসবাস করে আসছে। এই সম্প্রীতির বন্ধনকে নষ্ট করার জন্য বিভিন্ন মহল চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। দেশের বাইরে বসে আওয়ামী লীগের পতিত নেতারা ষড়যন্ত্র করছে। তারই অংশ হিসেবে ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। সম্মিলিতভাবে এসব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করা হবে। এ সময় সাইফুল ইসলাম আলিফের হত্যার বিচারের দাবিতে উপস্থিত ছাত্র-জনতাকে বিভিন্ন স্লোগান দিতে শোনা যায়। এছাড়াও রাজধানীর পল্টন ও উত্তরায় ছাত্রশিবির বিক্ষোভ মিছিল করেছে।
এদিকে জুলাই গণহত্যার বিচারের দাবিতে খুলনায় ছাত্রশিবিরের বিক্ষোভ মিছিল পরবর্তী সমাবেশে নেতারা বলেন, অভ্যুত্থানের তিন মাস পার হলেও আওয়ামী লীগ ও তাদের দোসরদের ষড়যন্ত্র থেমে নেই। চব্বিশের আন্দোলনে আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসংগঠনের সন্ত্রাসীরা যে বর্বর হামলা চালিয়েছে, তাতে হাজারো প্রাণ ঝরে গেছে, যা ইতিহাসে নজিরবিহীন। শহীদ আবু সাঈদ ও শহীদ মুগ্ধসহ অসংখ্য ছাত্র-জনতা ও ছাত্রশিবির কর্মীকে শহীদ করা হয়েছে। এ গণহত্যায় রাষ্ট্রের সব শক্তি প্রয়োগ করে ছাত্র-জনতার ওপর নিপীড়ন চালানো হয়েছে। নেতারা বলেন, তাদের পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের কারণে জাতি আজ চরম ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। এখনো তারা দেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে। কিন্তু দেশের জনগণ তাদের আর বরদাশত করবে না। নেতারা চব্বিশে যারা এ গণহত্যার সঙ্গে জড়িত, তাদের দ্রুত বিচারের আওতায় এনে বাংলার মাটিতে বিচার করতে হবে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন। তা না হলে ছাত্র-জনতারাই বিচার করবে। নেতারা বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানে হিন্দু-মুসলমানসহ সব ধর্মের ভেদাভেদ ভুলে আন্দোলন করেছিলেন ছাত্র-জনতা। কিন্তু পতিত সরকারের দোসর ও দিল্লির ষড়যন্ত্রে দেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগানোর ষড়যন্ত্র চলছে। সেই উদ্দেশেই চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।
গতকাল বুধবার বিকেলে নগরীর প্রাণকেন্দ্র ডাকবাংলো মোড়ে ‘জুলাই গণহত্যার বিচারের দাবিতে’ জাতীয় ছাত্র সংহতি সপ্তাহের অংশ হিসেবে খুলনা বিভাগীয় শহরে ‘বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ’ কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির খুলনা মহানগরী শাখার উদ্যোগে অনুষ্ঠিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদের সদস্য ও মহানগরী সভাপতি আরাফাত হোসেন মিলন। মহানগরী সেক্রেটারি এস এম নূরুল্লাহ’র পরিচালনায় সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় ছাত্রকল্যাণ ও ফাউন্ডেশন সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন।
বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় ছাত্র আন্দোলন সম্পাদক মো. আমিরুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় সাবেক তথ্য সম্পাদক মহানগরীর সাবেক সভাপতি আজিজুল ইসলাম ফারাজী ও কেন্দ্রীয় সাবেক স্কুল কার্যক্রম সম্পাদক মহানগরীর সাবেক সভাপতি মোশাররফ হোসেন আনসারী, খুলনা উত্তর জেলা সভাপতি হাফেজ বেলাল হোসাইন রিয়াদ, দক্ষিণ জেলা সভাপতি আবু জর গিফারী, বাগেরহাট জেলা সভাপতি সাঈফ হাসান, সেক্রেটারি মোশেদুল ইসলাম, উত্তরের সেক্রেটারি ইউসুফ ফকির, দক্ষিণের সেক্রেটারি মো. ওয়ায়েজকুরুনী। এতে অন্যান্যের মধ্যে বেলাল হোসেন, তারেক রহমান, হাবিবুল্লাহ রাজু, তৈয়েবুর রহমান, ইসরাফিল হোসেন, সাঈদুর রহমান, ইমরানুল হক, আসিফ বিল্লাহ, সোলায়মান আবিদ, আবুল হাসান, মারুফ বিল্লাহ, খায়রুল বাশার, হযরত আলী, মিলন হোসেন রাজ, ইমরান খান, মুহতারাম বিল্লাহ, মো. মহিবুল্লাহ, আব্দুর রশিদ, শিবলুর রহমান, কামরুল হাসান, আল আমিন, সেলিম হোসেন, মিরাজুল ইসলাম, আল আমিন, নাঈমুল ইসলাম, লিমন হোসেন জিহাদ উপস্থিত ছিলেন। মিছিলটি নগরীর ডাকবাংলো থেকে শুরু করে নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে শিববাড়িস্থ শহীদ মীর মুগ্ধ চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। বিক্ষোভ মিছিলে ‘ভারতীয় আগ্রাসন রুখে দাও রুখে দাও’, ‘উগ্রবাদের ঠিকানা এ বাংলায় হবে না’, ‘দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা’, ‘হিন্দু মুসলিম ভাই ভাই, ‘সন্ত্রাসীদের ঠিকানা এ বাংলায় হবে না’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
প্রধান অতিথি আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘আওয়ামী লীগ আমাদের হিন্দু ভাইদের কাজে লাগিয়ে দেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগানোর চেষ্টা করছে। চট্টগ্রামে প্রকাশ্যে আইনজীবী আলিফ ভাইকে ইসকনের সদস্যরা কুপিয়ে হত্যা করেছে। হিন্দুদের বলতে চাই, আপনাদের সঙ্গে আমাদের কোনো বিরোধ নেই। হিন্দু-মুসলিম ভাই ভাই। জুলাই বিপ্লবে রক্ত দিয়ে দেশ স্বাধীন হয়েছে। হিন্দু ভাইদের অনুরোধ, আপনারা ষড়যন্ত্রে পা দেবেন না। আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে একসঙ্গে অসাম্প্রদায়িক দেশ গড়ব ইনশাআল্লাহ। বিশেষ অতিথি আমিরুল ইসলাম বলেন, পরাজিত ফ্যাসিস্ট এখনো আমাদের সঙ্গে শত্রুতার নীলনকশা তৈরি করছে। তারা দফায় দফায় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগাতে চেয়েছে। চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলামকে হত্যা করে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে। সভাপতি আরাফাত হোসেন মিলন বলেন, শিক্ষার্থীরা যে স্বপ্ন ও আকাক্সক্ষা নিয়ে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ছিল, তা তখনই পূর্ণ হবে, যখন এ হত্যাযজ্ঞের নায়কদের বিচারের মুখোমুখি করা হবে। আমরা দেশের বিচারব্যবস্থা ও সামগ্রিক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদেরও বিচার দাবি করছি।
এছাড়াও দীর্ঘ ১৫ বছর পর সিলেটে বিশাল বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে ছাত্রশিবির। গতকাল বুধবার দুপুর ২টা ৪০ মিনিটে জুলাই গণহত্যার বিচারের দাবিতে জাতীয় ছাত্রসংহতি সপ্তাহ পালন উপলক্ষে এ কর্মসূচি পালন করে দলটি। সিলেট মহানগর ছাত্রশিবিরের আয়োজনে নগরীর রেজিস্ট্রারি মাঠ থেকে মিছিলটি বের করা হয়। পরে বন্দরবাজার, জিন্দাবাজার ও চৌহাট্টা হয়ে আম্বরখানা পয়েন্টে গিয়ে শেষ হয়। মিছিলে বিভিন্ন ধরনের প্রতিবাদী স্লোগান দেন নেতাকর্মীরা।
সিলেট মহানগর ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি শাহীন আহমদের সঞ্চালনায় ও সভাপতি শরীফ মাহমুদের সভাপতিত্বে মিছিল পরবর্তী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণ সম্পাদক আব্দুর রহিম। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় স্কুল কার্যক্রম সম্পাদক সিদ্দিক আহমদ, শাবিপ্রবি শাখার সভাপতি তারেক মনওয়ার। সমাবেশে বক্তারা বলেন, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার দোসররা এখনো দেশে চক্রান্ত চালিয়ে যাচ্ছেন। তারা মাথাচাড়া দেয়ার চেষ্টা করছেন। তাদের ইন্ধনে ইসকনের হাতে একজন আইনজীবীকে প্রাণ দিতে হয়েছে। এভাবে আর একটা ঘটনা ঘটতে দেয়া হবে না। যেকোনো মূলে তা প্রতিহত করা হবে। তারা আরও বলেন, অবিলম্বে জুলাই হতাকাণ্ডে জড়িতদের বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। তাদের প্রত্যেককে ফাঁসির দড়িতে ঝোলাতে হবে। তা নাহলে শহীদদের আত্মা শান্তি পাবে না।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata
ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে উত্তাল দেশ
- আপলোড সময় : ২৮-১১-২০২৪ ১২:১৪:১৮ পূর্বাহ্ন
- আপডেট সময় : ২৮-১১-২০২৪ ১২:১৪:১৮ পূর্বাহ্ন
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ