ঢাকা , মঙ্গলবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ , ১ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
বরিশালে তরুণীকে ধর্ষণের পর হত্যা ও লাশ গুমের দায়ে দুজনের মৃত্যুদণ্ড ছাগলকাণ্ডে আলোচিত মতিউরকে দুদকে জিজ্ঞাসাবাদ নিষিদ্ধ সংগঠনের অপতৎপরতা রোধে সজাগ থাকতে হবে-ডিএমপি কমিশনার বউ-শাশুড়ির মৃত্যু আহত ৮ ঢামেক হাসপাতালে জন্ম নেওয়া ছয় নবজাতকের ৫ জনের মৃত্যু ওসির পর গোয়ালন্দের ইউএনও বদলি দাওয়াত না দেওয়ায় মাদ্রাসার অনুষ্ঠানের সব খাবার খেয়ে গেলেন বিএনপির নেতাকর্মীরা উন্নত জীবনের নিশ্চয়তায় বাড়ছে বিদেশগামী শিক্ষার্থীর সংখ্যা বিএনপির ৩১ দফা বাস্তবায়নে আগামীর বাংলাদেশ হবে সকলের : কর্নেল আজাদ রামগতিতে ভুলুয়া নদীর ভাঙন রোধে মানববন্ধন সাতক্ষীরার তলুইগাছা সীমান্ত দিয়ে ১০ বাংলাদেশিকে হস্তান্তর করলো বিএসএফ নাটোর মহাসড়কে কাভার্ডভ্যান আটকিয়ে ১০ লাখ টাকার মালামাল লুট লালমনিরহাটে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় গোপালগঞ্জে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পরীক্ষা ফি নেয়ার অভিযোগ সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য ধ্বংস ও শামুক পাচারে নতুন আতঙ্ক চান্দিনায় খাল খনন প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ সিরাজদিখানে ৩ লাখ ৭০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিল প্রতারকচক্র বেনাপোলে মোটরসাইকেল-ট্রাক সংঘর্ষে যুবক নিহত, আহত ১ আমতলীতে যৌথবাহিনীর অভিযানে ৯ গাড়িতে মামলা ও ৩ গাড়ি আটক ৫ নভেম্বর পটিয়া অটো-টেম্পো সমিতির ত্রি-বার্ষিক নির্বাচন

ন্যাশনাল হাসপাতালের ক্ষতি ১০ কোটি টাকা

  • আপলোড সময় : ২৭-১১-২০২৪ ১১:০০:৪৫ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ২৭-১১-২০২৪ ১১:০০:৪৫ পূর্বাহ্ন
ন্যাশনাল হাসপাতালের ক্ষতি ১০ কোটি টাকা
যে চিকিৎসালয়ে সতীর্থের মৃত্যুর জের ধরে অর্ধশত প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা সংঘর্ষে জড়াল, সেই ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল ইনস্টিটিউট হাসপাতালের চিকিৎসকসহ তিনজনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। গতকার মঙ্গলবার দুপুরে হাসপাতালে সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানান প্রতিষ্ঠানটির উপপরিচালক (প্রশাসন) ডা. মোহাম্মদ রেজাউল হক। তিনি বলেছেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের নিয়ে ১১ সদস্যদের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। তদন্তের স্বার্থে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের (আইসিইউ) একজন চিকিৎসক ও দুজন নার্সকে বরখাস্ত করা হয়েছে। বরখাস্তদের মধ্যে আছেন- আইসিইউয়ের মেডিকেল অফিসার মহিমা আক্তার শিফা এবং সিনিয়র স্টাফ নার্স আসমা নিলা ও সুজন কুমার সাহা। ডা. রেজাউল বলেন, চিকিৎসকের অবহেলায় রোগী মারা গেছেন-এই অভিযোগ করে হাসপাতালের ওপর মিথ্যা দায়ভার চাপানো হচ্ছে। তবে তদন্ত চলমান। তদন্ত কমিটি রিপোর্ট প্রকাশ করলে জানা যাবে হাসপাতালের কোনো দুর্বলতা ছিল কি না। চিকিৎসকের গাফিলতি ছিল কি না, এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে কমিটিতে অভিযোগকারীদের পক্ষ থেকে একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককেও চাওয়া হয়েছে। গত ১৮ নভেম্বর ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মাহাবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের (ডিএমআরসি) শিক্ষার্থী অভিজিৎ মারা যায়। ডেঙ্গু আক্রান্ত অভিজিতের প্লেইটলেট কমে গেলে আগের দিন তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজে নিতে চেয়েছিল তার পরিবার। কিন্তু ন্যাশনাল মেডিকেল কর্তৃপক্ষ তাকে নিতে দেয়নি বলে অভিজিতের সহপাঠীদের অভিযোগ। সংবাদ সম্মেলনে হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ইফফাত আরা লিখিত বক্তব্যে বলেন, কোনো কোনো কুচক্রী মহল হাসপাতালের ওপর মিথ্যা দায়ভার চাপানোর ঐকান্তিক চেষ্টায় লিপ্ত। রোগীর মৃত্যু হলেই ভুল চিকিৎসা, দায়িত্বে অবহেলা বলে চিকিৎসক ও চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিতদের লাঞ্ছিত করা যেন নিয়মে পরিণত হয়েছে। সত্যি কথা বলতে একজন চিকিৎসকের কাছে তার রোগীর চিকিৎসা সেবা এবাদত বা প্রার্থনার সমান। অভিজিতের ক্ষেত্রেও তার ব্যত্যয় ঘটেনি। ডাক্তারগণ তাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছেন। কিন্তু এতো কিছুর পরও দিন শেষে ডাক্তারদের কপালে জুটেছে মিথ্যা অপবাদ, যা কোনোক্রমেই কাম্য নয়। সহপাঠীদের অভিযোগ, ‘চিকিৎসায় অবহেলার কারণে’ অভিজিতের মৃত্যু হয়েছে। তার মৃত্যুর পর টাকার জন্য লাশ আটকে রাখে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কলেজের শিক্ষার্থীরা লাশ নিতে এলেও কোনো সমাধান না হওয়ায় তারা বিক্ষোভ শুরু করে। পরে পুলিশ লাঠিপেটা করে শিক্ষার্থীদের সরিয়ে দেয়। লাশ আটকে রাখার অভিযোগের বিষয়ে ডা. রেজাউল বলেন, রোগীর মরদেহ বাড়ি নেওয়ার জন্য ১০ হাজার টাকা অ্যাম্বুলেন্সের ভাড়া পরিশোধ করার জন্য আটকে রাখা হয়- এমন অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। রোগীর পরিবার গরিব ছিল। তাদের আইসিইউ বিলই ছিল ৩৬ হাজার ৪০০ টাকা, যা মানবিক বিবেচনায় তখনই মওকুফ করে দেওয়া হয়। ১০ হাজার টাকা দিয়ে কি মৃত্যু ধামাচাপা দেয়া যায়? মূলত ওই টাকাটা আমরা অ্যাম্বুলেন্স খরচ হিসাবে তাদেরকে দিতে বলেছিলাম, তারা যেন লাশটি নিয়ে যাতে পারে। কারণ রোগীর পরিবারের সামর্থ্যের কথা বিবেচনা করে আমরা এটা প্রস্তাব করেছি, এই জিনিসটাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করা হয়েছে। অবহেলাজনিত কারণে অভিজিতের মৃত্যুর অভিযোগ তুলে ২০ নভেম্বর ন্যাশনাল মেডিকেলে অবস্থান নেন মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থীরা। পরদিন ফের তারা একই কর্মসূচি শুরু করলে সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও কবি নজরুল কলেজ ছাত্রদল নেতাকর্মীরা তাদের ওপর হামলা করে। তাতে অনেক শিক্ষার্থী আহত হন। চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগের বিষয়ে অধ্যাপক ইফফাত বলেন, গঠিত কমিটির তদন্ত কার্য সম্পন্ন হয়নি ডিএমআরসির (মোল্লা কলেজ) ছাত্র প্রতিনিধির অসহযোগিতার কারণে। এক্ষেত্রে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কোনোরূপ গাফিলতি বা সদিচ্ছার অভাব না থাকলেও ভুল চিকিৎসা বা বিলম্বিত ব্যবস্হা গ্রহণের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। ২১ নভেম্বরের ঘটনার জের ধরে রোববার ঘেরাও কর্মসূচি দেওয়া হয়েছিল। পূর্বঘোষিত সেই ‘সুপার সানডে’ কর্মসূচির মধ্যে ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল ও পাশের সোহরাওয়ার্দী কলেজে ব্যাপক ভাঙচুর চালায় মোল্লা কলেজসহ কয়েকটি কলেজের শিক্ষার্থীরা। ওই সময় সোহরাওয়ার্দী কলেজ কেন্দ্রে অনার্স প্রথম বর্ষের পরীক্ষা দিচ্ছিলেন নজরুল কলেজের শিক্ষার্থীরা। গণ্ডগোলের মধ্যে নিরাপত্তার কারণে মাঝপথে পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। হাসপাতালের ক্ষয়ক্ষতির চিত্র তুলে ধরতে গিয়ে পরিচালক ইফফাত আরা বলেন, ২৪ নভেম্বর বেলা আনুমানিক ১টার দিকে ডা. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে বিভিন্ন কলেজের প্রায় ১০০০ থেকে ১৫০০ শিক্ষার্থী হাসপাতালের প্রশাসনিক কার্যালয়, বহির্বিভাগ, জরুরি বিভাগ, দন্ত বিভাগ ও প্যাথলজি বিভাগে ব্যাপক ভাংচুর করে। এছাড়া ক্যাশ কাউন্টারে ভাংচুর করে নগদ টাকা লুট করে নিয়ে যায়। হাসপাতালের অভ্যন্তরে দেশি- বিদেশি ছাত্র-ছাত্রী, সাধারণ রোগী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আর্থিক সেবায় নিয়োজিত পূবালী ব্যাংকের শাখাতেও ব্যাপক ভাংচুর করে। ওই হামলায় প্রায় ১০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। এই হামলার প্রতিবাদে সোমবার ‘মেগা মানডে’ কর্মসূচির ডাক দেন সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও কবি নজরুল সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরা। এর অংশ হিসেবে তারা ডেমরা সড়ক সংলগ্ন মোল্লা কলেজে গেলে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। প্রায় দুই ঘণ্টার সংঘর্ষে শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়। মোল্লা কলেজে ভাঙচুরের পাশাপাশি লুটপাটও হয়। প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ ওবায়দুল্লাহ নয়নের ভাষ্য, প্রাথমিক হিসাবে তাদের ৫০ কোটি টাকার সম্পদের ক্ষতি হয়েছে। এ নিয়ে মঙ্গলবারই তারা মামলা করবেন।

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স