ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫ , ৯ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের নিয়ম উল্টে দিতে পারবেন ট্রাম্প? শেখ হাসিনাকে গ্রেফতারে রেড অ্যালার্ট জারি রোবট অলিম্পিয়াডে সোনাসহ ১০ পদক জিতলো বাংলাদেশ ভোমরা সীমান্তে যৌথ মাপ-জরিপ স্থগিত বিএসএফের কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ, বিজিবির বাধা মালয়েশিয়া পাচারের সময় ১৭ রোহিঙ্গাসহ আটক ২০ শিশুখাদ্যে ভ্যাট, ক্ষুব্ধ অভিভাবকরা শ্রীলঙ্কায় টেনিস টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের কাব্য সেমিতে জেলফেরত শীর্ষ সন্ত্রাসীরা জড়িয়ে পড়ছে অপরাধে বৈষম্যবিরোধীদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে মারামারি নারীসহ আহত ৭ আরএফএলর ২০ হাজার পণ্যের সমাহার পুলিশের সব ইউনিটে একই পোশাক থাকবে- ডিএমপি কমিশনার ঢেলে সাজানো হচ্ছে বিচার বিভাগ টিকা না পেয়ে সড়কে অবস্থান প্রবাসীদের কেন ভ্যাট বাড়ানো হলো কিছুদিন পর জানা যাবে কোটাবিরোধী সমালোচনায় আওয়ামী লীগ কোটায় বেকায়দায় সরকার জব্দ অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা উদ্ধারের প্রস্তুতি দুর্নীতি চুরি ব্যক্তিগত স্বার্থ ছাড়া আমলাদের কোনো চিন্তা নেই-মির্জা ফখরুল মঙ্গলে নভোচারী পাঠানো ও পানামা খাল দখলের ঘোষণা

স্বামীকে মৃত দেখিয়ে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলাকারী নারী গ্রেফতার

  • আপলোড সময় : ২৩-১১-২০২৪ ০১:০৬:৫৭ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ২৩-১১-২০২৪ ০১:০৬:৫৭ পূর্বাহ্ন
স্বামীকে মৃত দেখিয়ে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলাকারী নারী গ্রেফতার
সাভার প্রতিনিধি
সাভারের আশুলিয়ায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিজের জীবিত স্বামী আল আমিন মিয়াকে (২২) মৃত দেখিয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৩০ জনের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়েরকারী কুলসুম বেগম (২১) ও তার দুই সহযোগী শফিকুর এবং রুহুল আমীনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল শুক্রবার সকালে তাদের গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আশুলিয়া থানার ওসি আবু বকর। এর আগে গত বৃহস্পতিবার দুপুরে কক্সবাজারের আলেকজাহান এসএম পাড়ার মোস্তাক আহমেদের বাড়ি থেকে তাদেরকে গ্রেপ্তার করে রাতেই আশুলিয়া থানায় নিয়ে আসেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আশুলিয়া থানার এসআই রকিবুল ইসলাম। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- মিথ্যা মামলার কারিগর মানিকগঞ্জ জেলার শিবালয় থানার টেপড়া গ্রামের মেছের আলীর ছেলে রুহুল আমীন, একই জেলার ঘিওর থানার ফুলহারা গ্রামের মৃত মাসুম আলীর ছেলে শফিকুর রহমান ও ঘিওর থানার স্বল্পসিংজুরি বাঙলা এলাকার আব্দুল খালেকের মেয়ে কুলসুম বেগম। মিথ্যা মামলার বাদী কুলসুম বেগম জানান, চার বছরের সন্তানকে নিয়ে স্বামী আল-আমীনের সঙ্গে শ্বশুরবাড়ি সিলেটে থাকতেন তিনি। গত ২৮ আগস্ট দাম্পত্য কলহের জেরে সিলেট থেকে সাভারে বোনের কাছে চলে আসেন কুলসুম। আসার পথে গাড়িতে শফিকুর রহমানের সঙ্গে তার পরিচয় হয় এবং তিনি চাকরির জন্য সাভারে এসেছেন বলে জানান। এই সুযোগে শফিক কুলসুমকে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে রুহুল আমীনের কাছে নিয়ে যান। পরে রুহুল আমীন ও শফিকুর চাকরির জন্য জন্ম নিবন্ধন চেয়ে সাভারের সেনা শপিং কমপ্লেক্সে দেখা করেন। এ সময় তারা জন্ম নিবন্ধন দিয়ে আমার স্বামীকে মৃত দেখিয়ে মামলা প্রস্তুত করেছেন বলে আমাকে জানান। আমি রাজি না হলে তারা নানা রকম ভয়ভীতি দেখিয়ে আমাকে আদালতে নিয়ে উকিলের সামনে কাগজে স্বাক্ষর নেন। রুহুল আমীন ও শফিকুর রহমান ব্ল্যাকমেইল করে মামলা করতে বাধ্য করেছেন এবং আমাকে কক্সবাজারে বাসা ভাড়া করে দিয়ে থাকতে বলেন। কুলসুমের বোন ফাতেমা বলেন, আমার বোনকে রুহুল আমীন নানাভাবে ভয় দেখিয়েছেন। তিনি মামলা, ফাঁসি এমনকি সবসময় রুহুলের কাছে পিস্তল থাকে বলে ভয়ভীতি দেখান। রুহুল আমীন বেশ কয়েকজনের নাম মামলা থেকে কেটে দিয়েছেন। সে সময় আমার ছোটবোনকে আদালতে নিয়ে যান তারা। তারা বলতেন যে অজ্ঞাত ছেলেটা মারা গেছে তিনি যেন বিচার পান সেজন্য এই মামলা দায়ের করেছেন। পরে বুঝতে পারি তারা একটি চক্র ও মামলা বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত। আমার বোন আশুলিয়া কিংবা সাভারে থাকত না। সে থাকত সিলেটে। শফিক ও রুহুল আমার বোনকে ফাঁসিয়েছেন। অভিযুক্ত শফিকুর রহমান বলেন, কুলসুমের সঙ্গে আমার গাড়িতে পরিচয় হয়। পরে তাকে নিয়ে আমি রুহুল আমীনের কাছে যাই। তিনি মামলার সব কাজ করেছেন। অভিযুক্ত রুহুল আমীন বলেন, কুলসুমই আমার কাছে মামলা করার জন্য সহযোগিতা চেয়েছেন। টাকার বিনিময়ে আসামির নাম বাদ দেওয়ার বিষয়ে তিনি জানান, মনোয়ার মাস্টার, বাশার, ইলিয়াস শাহী ও সারোয়ার তালুকদারের নাম মামলা থেকে বাতিলের জন্য এভিডেভিড করা হয়েছে। তবে তাদের কাছে কোনো টাকা নেওয়া হয়নি। আশুলিয়া থানার এসআই রকিবুল ইসলাম বলেন, তদন্ত করে বাদীকে উদ্ধার করে দুইজনকে আটক করা হয়েছে। তারা জীবিত স্বামীকে মৃত দেখিয়ে ছাত্র-জনতা হত্যা মামলা দায়ের করেছিলেন। যে মামলায় আসামি করা হয়েছিল ১৩০ জনকে। অথচ বাদীর স্বামী এখনো বেঁচে আছেন এবং আদালতে উপস্থিত হয়ে আল-আমীন সব স্বীকার করেছেন। আশুলিয়া থানার ওসি আবু বকর বলেন, জীবিত স্বামীকে মৃত দেখিয়ে ছাত্র-জনতা হত্যা মামলা দায়েরের ঘটনায় শফিক, রুহুল আমীন ও কুলসুমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা মিথ্যা মামলার বিষয়টি স্বীকার করেছে। আজ শনিবার মামলার বাদী কুলসুমকে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদানের জন্য আদালতে পাঠানো হবে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গত ৫ আগস্ট আশুলিয়ায় ছাত্র-জনতাকে লক্ষ্য করে নির্বিচারে গুলি ছুড়া হলে অন্তত অর্ধশতাধিক লোক মারা যায়। তাদের মধ্যে বেওয়ারিশ হিসেবে একজনের লাশ দাফন করা হয়। সেই লাশটিকে নিজের স্বামী আল-আমিন দাবি করে ১৩০ জনের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করেন কুলসুম বেগম।

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স
প্রতিবেদকের তথ্য