তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ে নেয়া হয়েছিল ছয় প্রকল্প আর এইসব প্রকল্পের ব্যায় ধরা হয়েছিল সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা। অভিযোগ উঠেছে এসব প্রকল্পের অর্থ লুটপাটের জন্য সঠিক খরচ ও কেনাকাটা নিয়ে কাউকে কোনো প্রশ্ন না করতে কঠোরভাবে নির্দেশ দিয়েছিলেন সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। একারণে ভয়ে এ নিয়ে কেউ কোনো প্রশ্ন করেননি। ওই সব হরিলুটের প্রকল্পের কাজ এখন আটকে দেয়া হয়েছে। এ নিয়ে তদন্ত চলছে।
অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় এসে ডাক, টেলিযোগাযোগ এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতের প্রকল্পের অনিয়ম ও দুর্নীতি খতিয়ে দেখতে একজন অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে উচ্চ পর্যায়ের সাত সদস্যের তদন্ত দল গঠন করে। ওই কমিটি এখন কাজ করছে।
আলোচিত ছয় প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে ২৭১ কোটি টাকার উদ্ভাবন ও উদ্যোক্তা উন্নয়ন একাডেমি প্রতিষ্ঠাকরণ প্রকল্প, ১৫৯ কোটি টাকার গবেষণা ও উন্নয়নের মাধ্যমে তথ্যপ্রযুক্তিতে বাংলা ভাষা সমৃদ্ধকরণ প্রকল্প, ৫০৪ কোটি টাকার কানেকটেড বাংলাদেশ প্রকল্প, ২ হাজার ১৪১ কোটি টাকার বিজিডি ই-গভ. সার্ট প্রকল্প, ৪৭ কোটি টাকার সরকারের ভিডিও কনফারেন্সিং প্ল্যাটফর্ম শক্তিশালীকরণ প্রকল্প ও ২ হাজার ৫৪১ কোটি টাকার ডিজিটাল সরকার ও অর্থনীতি শক্তিশালীকরণ প্রকল্প। প্রকল্পসংশ্লিষ্টরা জানান, তদন্ত কমিটির কাছে তারা জবাবদিহি করছেন। কমিটির পক্ষ থেকে কোনো কোনো প্রকল্পের বাজেট কাটছাঁট করার নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে। এসব প্রকল্পের কেনাকাটা নিয়ে তারা প্রশ্ন তুলছেন। পাশাপাশি যাদের বিভিন্ন কাজ দেয়া হয়েছে তাদের বিষয়েও বিস্তারিত খোঁজখবর নিচ্ছেন। এ প্রসঙ্গে গবেষণা ও উন্নয়নের মাধ্যমে তথ্যপ্রযুক্তিতে বাংলা ভাষা সমৃদ্ধকরণ প্রকল্পের পরিচালক মোহাম্মদ মাহবুব করিম বলেন, তদন্ত কমিটি প্রকল্পের বাজেট কমানোর কথা বলেছে। পাশাপাশি প্রকল্পের কিছু কেনাকাটা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। আমরা আমাদের বক্তব্য তুলে ধরেছি। একই প্রসঙ্গে বিসিসির নির্বাহী পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ড. মুহম্মদ মেহেদী হাসান বলেন, অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে কাজ করছি। এসব প্রকল্পের অনিয়ম নিয়ে একটি তদন্ত কমিটি কাজ করছে। তাদের প্রতিবেদন পেলেই আসল চিত্র জানা যাবে। লুটপাট করার উদ্দেশ্যে এসব প্রকল্প নেয়া হয়েছিল কি না-জানতে চাইলে তথ্য ও প্রযুক্তি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী এর আগে বলেছিলেন, এসব প্রকল্প নিয়ে নানা প্রশ্ন রয়েছে। তাই বর্তমান সরকারের শুরুর সময়ই ওই সব প্রকল্পের কেনাকাটা একেবারে বন্ধ রাখা হয়েছে। প্রকল্পগুলোয় যে পর্যন্ত কাজ হয়েছে সেখানেই বন্ধ রাখা হয়েছে। নতুন করে কোনো কাজ করা হচ্ছে না। তদন্তসংশ্লিষ্টরা জানান, বেশির ভাগ প্রকল্পের বাজেট করা হয়েছে খরচের তুলনায় অতিরিক্ত। ইচ্ছামতো এসব বাজেট বাড়ানো হয়েছে। প্রকল্পগুলোর কাজ দেয়া হয়েছে পছন্দের ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে। তাদের মাধ্যমে আসলে বিপুল অঙ্কের টাকা লুটপাট করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির অন্যতম কাজ হচ্ছে এসব লুটপাটের চিত্র জনসাধারণের সামনে আনা। পাশাপাশি যারা লুটপাটের সঙ্গে জড়িত তাদেরও খুঁজে বের করা হবে। প্রয়োজনে আইনের মাধ্যমে শাস্তি নিশ্চিত করার সুপারিশ করা হবে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata
তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়
ছয় প্রকল্পের নামে ৫ হাজার কোটি টাকা লুটপাটের অভিযোগ
- আপলোড সময় : ২২-১১-২০২৪ ১২:৩০:৫৪ পূর্বাহ্ন
- আপডেট সময় : ২২-১১-২০২৪ ১২:৩০:৫৪ পূর্বাহ্ন
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ