ঢাকা , শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫ , ৩০ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
সরকার সংস্কার কমিশন করলেও নদীর ক্ষেত্রে প্রতিফলন নেই-আনু মুহাম্মদ বাড্ডায় কিশোর গ্যাংয়ের সংঘর্ষে নিহত ১ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় বিপুল খরচেও কমানো যাচ্ছে না নানামুখী আতঙ্ক রাজনৈতিক অঙ্গন উত্তপ্ত হওয়ার আশঙ্কা সেই শিশু আছিয়া না ফেরার দেশে ধর্ষণে আতঙ্ক -উদ্বেগ ভারতকে অযাচিত বিভ্রান্তিকর মন্তব্যের পুনরাবৃত্তি রোধ করতে বলল ঢাকা প্রধান উপদেষ্টা চীন সফরে যাচ্ছেন ২৬ মার্চ সালমান এফ রহমানসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা খরায় পুড়ছে চা-বাগান উৎপাদন নিয়ে শঙ্কা ইফতারিতে দই-চিড়ার জাদু একরাতে দু’জনকে কুপিয়ে হত্যা এলাকায় আতঙ্ক স্বাভাবিক নিত্যপণ্যের বাজার, সংকট সয়াবিনে মামলা থেকে স্বামীর নাম বাদ দেয়ার কথা বলে স্ত্রীকে ধর্ষণ ছেঁউড়িয়ায় শুরু লালন স্মরণোৎসব দোহাজারীতে বাসচাপায় ৩ জন নিহত হেনস্তার পর ছাত্রীকে ফেলে দিলো দুর্বৃত্তরা ৫৬০ মডেল মসজিদ নির্মাণে ব্যাপক অনিয়ম ভ্যাট দেয় না বেশিরভাগ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরনের কাপড় টিভি ফ্রিজ খাট টাকা সব পুড়ে শেষ বস্তিতে আগুন
দুর্ভোগে রাজধানীবাসী

অটোরিকশা চালকদের অবরোধে অচলাবস্থা

  • আপলোড সময় : ২২-১১-২০২৪ ১২:২৭:১৫ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ২২-১১-২০২৪ ১২:২৭:১৫ পূর্বাহ্ন
অটোরিকশা চালকদের অবরোধে অচলাবস্থা
* অটোরিকসা চালক-শিক্ষাথীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া  * ছয় ঘণ্টা পর মহাখালী রেললাইন-সড়ক ছেড়েছে আন্দোলনকারীরা * অলিগলিতে চলার অনুমতি চান অটোরিকশা চালকরা
 

সড়কে অটোরিকশা চালানোর দাবিতে রাজধানীর আগারগাঁও, কল্যাণপুর, গাবতলী, টেকনিক্যাল, মোহাম্মদপুর, পল্লবী, যাত্রাবাড়ি-ডেমরা, ধানমণ্ডি-বছিলা, মিরপুর ও মহাখালীতে সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করেছেন ব্যাটারিচালিত রিকশার চালকেরা। একইসঙ্গে আগারগাঁও ও বসিলায়সহ বেশ কয়েকটি সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার মতো ঘটনা ঘটেছে। তবে বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনার কারণে বিভিন্ন সময়ে ব্যাটারিচালিত রিকশা, অটোরিকশা বা ইজিবাইক বন্ধের ঘোষণা দিলেও তা কার্যকর করতে পারেনি সরকার। বরং রাজধানীতে ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধের ঘোষণার পর দু’দিন ধরে আন্দোলন চলছে রাজধানীর বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে। তাদের দাবি, মূল সড়কে না হলেও অলিগলিতে তাদের চলার অনুমতি দিতে হবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে রাজধানীর মহাখালী, মোহাম্মদপুর, মিরপুর, গাবতলী ও যাত্রাবাড়ি-ডেমরাসহ বেশ কিছু এলাকায় রিকশাচালকরা তর্ক-বির্তকে মেতে উঠে শিক্ষার্থী-অটোচালকরা। তবে রাজধানীর মিরপুর ও মহাখালীতে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে শিক্ষার্থীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে এসব এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। ভোগান্তিতে পড়েছেন মানুষ। এর আগে গত মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর এলাকায় তিন দিনের মধ্যে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল বন্ধের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। এ সংক্রান্ত বিষয়ে দায়ের করা রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্টের বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি মাহমুদুর রাজীর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
ছয় ঘণ্টা পর মহাখালী রেললাইন-সড়ক ছাড়ল আন্দোলনকারিরা: ছয় ঘণ্টা অবরোধের পর ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাচালকেরা মহাখালী রেললাইন ও পাশের সড়ক থেকে সরে গেছেন। ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলাচল বন্ধ ঘোষণার প্রতিবাদ ও সড়কে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলতে দেয়ার দাবিতে কয়েকশ চালক সকাল ৯টা থেকে বেলা সোয়া ৩টা পর্যন্ত অর্থাৎ ৬ ঘণ্টা ধরে মহাখালী রেলক্রসিং অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। এতে ঢাকার সঙ্গে সারা দেশের রেলযোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। তবে পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার মোহাম্মদ রুহুল কবীর খান বিকেলে বলেন, সেনাবাহিনী ও পুলিশ বুঝিয়ে বেলা সোয়া ৩টার দিকে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের সরিয়ে দিয়েছে। এর আগে ঢাকা জেলা রেলওয়ে পুলিশ সুপার মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, সকাল ৯টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত কমলাপুর থেকে কোনো ট্রেন ঢাকার বাইরে ছেড়ে যায়নি এবং ঢাকার বাইরে থেকে কোনো ট্রেন ঢাকার কমলাপুরে পৌঁছায়নি। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল নয়টা থেকে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার চালকেরা অবরোধ শুরু করেন। তারা মহাখালী, আগারগাঁও, বছিলা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। এতে আশপাশের সড়কগুলোতে যানজটের সৃষ্টি হয়। অবরোধের এক পর্যায়ে দুপুরের দিকে মহাখালীতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় চালকেরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর ইটপাটকেল ছোড়েন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। মহাখালী রেললাইনের পাশপাশিসংলগ্ন সড়ক অবরোধ করায় ঢাকার বাইরে ছেড়ে যাওয়া এবং বাইরে থেকে ঢাকায় আসা দূরপাল্লার বাসগুলো দীর্ঘ যানজটে আটকা পড়ে। এতে যাত্রীরা দুর্ভোগে পড়েন। এই অবরোধের প্রভাবে রাজধানীর গুলশান, খিলগাঁও, বাড্ডা ও মেরাদিয়া যেতে যাত্রীদের দুর্ভোগে পড়তে হয়। ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকেরা মহাখালী থেকে সরে যাওয়ায় বেলা সোয়া ৩টার পর যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
সড়ক থেকে রিকশাচালকদের সরিয়ে দিয়েছেন সেনাবাহিনী: রাজধানীর মহাখালী, রামপুরাসহ বিভিন্ন এলাকায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করা ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের সরিয়ে দিয়েছেন সেনাবাহিনীর সদস্যরা। ফলে রামপুরা-মালিবাগ ও রামপুরা-বাড্ডা সড়কের দুই পাশ দিয়েই যানচলাচল শুরু হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর ১টার পর সেনাবাহিনীর একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছালে রিকশাচালকরা সড়ক ছেড়ে পালিয়ে যায়। এসময় স্থানীয় মানুষ, দোকানি, পথচারীরা, সিএনজি, বাসের চালক ও হেলপাররাও সেনাবাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে রিকশাচালকদের ধাওয়া করেন। এতে সড়ক থেকে পালিয়ে বিভিন্ন অলিগলিতে অবস্থান নেন আন্দোলনরত রিকশাচালকরা।
অটোরিকসা চালকরা বলছেন অলিগলিতে চলতে দেয়া হোক: ব্যাটারিচালিত তিন চাকার বাহন বন্ধে উচ্চ আদালতের দেয়া নির্দেশের পর গতকাল বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় দিনের মত আন্দোলনে এসব বাহন চালিয়ে জীবিকানির্বাহ করা মানুষ। এদিন সকাল ১০টা থেকেই রাজধানীর মোড়ে মোড়ে অবস্থান নিয়ে নিজেদের দাবি নিয়ে স্লোগান দেন তারা। বিভিন্ন এলাকা থেকে এসে তাদের সঙ্গে যুক্ত হয় একের পর এক মিছিল। তবে ব্যাটারিচালিত অটো চালকদের দাবি, মহাসড়কে না হলেও অন্তত অলিগলিতে তাদের চলতে না দিলে পরিবারের খরচ মেটাতে না পারার সঙ্গে ঋণে জর্জরিত হয়ে পড়বেন তারা। প্রয়োজন পড়লে আগে এসব যানবাহন আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয়ারও দাবি তাদের। তবে এমন হঠাৎ সিদ্ধান্ত মানতে নারাজ তারা। যদিও পায়ে চালানো রিকশা চালকদের রয়েছে ভিন্ন মত। তারা চান সুষ্ঠু স্বাভাবিক জীবনযাপন। এদিন সকাল ৯টা থেকে বেলা সোয়া ৩টা পর্যন্ত রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল ও অবস্থা নেয় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাচালকেরা। প্রায় ছয় ঘণ্টা অবরোধের পর ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাচালকেরা রাস্তা থেকে সরে যান। জরুরি সেবার বাহনগুলোকে ছাড় দেয়া হলেও মহাখালী এলাকায় গাড়ি ভাঙচুর এবং ইট-পাটকেল ছোড়াছুড়ির মতো ঘটনাও ঘটে। এতে নিজেদের তৎপরতা বাড়ায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
মোহাম্মদপুরে শিক্ষার্থীদের ওপর অটোরিকশা চালকদের হামলা: গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে পুলিশের অনুপস্থিতিতে রাজধানীর সড়কের ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন শিক্ষার্থীরা। এরই ধারাবাহিকতায় শিক্ষার্থীদের ট্রাফিক পুলিশে যুক্ত করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ। চলতি মাসের শুরুতে রাজধানীর বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের চার শতাধিক শিক্ষার্থী ট্রাফিকে যুক্ত হয়। এই সময়ে তারা সড়কে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার পাশাপাশি অবৈধ গাড়ি জব্দে পুলিশকে সহযোগিতা করেন। আর এতেই শিক্ষার্থীদের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছেন ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকরা। তারা বলছেন, রাস্তায় শিক্ষার্থীরা অটোরিকশা ধরে ব্যাটারি খুলে রেখে দেয়। ব্যাটারির সঙ্গে সংযুক্ত তার ছিড়ে ফেলে। ফলে তারা ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। তবে রাজধানীর মহাখালীতে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ানোর পাশাপাশি বিভিন্ন স্থানে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় জড়িয়েছেন অটোরিকশা চালকরা। গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১টার দিকে মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধ তিন রাস্তা এলাকায় এক শিক্ষার্থীকে মারধর করেন অটোরিকশা চালকরা। তাদের অভিযোগ, ওই শিক্ষার্থী ট্রাফিক পুলিশের সঙ্গে মিলে তাদের গাড়ি ধরেছিলো। তাই তাকে একা পেয়ে মারধর করেন ক্ষুব্ধ অটোরিকশা চালকরা।  মারধর করার পর চলে যাওয়ায় আহত ওই শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলা যায় নি। এরপর আরও কয়েক দফা শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে ধাওয়া দেন ব্যাটারিচালিত রিকশার চালকরা। তবে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকদের অভিযোগ শিক্ষার্থীরা তাদের ওপর হামলা করেছে। শিক্ষার্থীদের হামলায় আহত হয়েছেন বলে দাবি করেন মো. মামুন (৩০) ও আলী মিয়া (৬৬) দুই অটোরিকশা চালক। তারা জানান, মোহাম্মদপুরের ময়ূর ভিলা ভবনের সামনে ২০/৩০ জন শিক্ষার্থী তাদের ওপর হামলা করেছেন। এতে তারা আহত হয়েছেন। আন্দোলনরত অটোরিকশা চালকদের ওপর হামলার খবরে কাদেরাবাদ হাউজিং এলাকায় মকবুল কলেজ ও আশেপাশে মহড়া দেয় আন্দোলনরতরা। পরে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ আন্দোলনকারীদের সরিয়ে দেয়। এদিন দুপুর আড়াইটার দিকে মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ড, বেড়িবাঁধ চার রাস্তার মোড়, ঢাকা উদ্যান, শিয়া মসজিদ, রিংরোড, শ্যামলী এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
সড়কে গাড়ি নেই, যানজট-যাত্রী ভোগান্তি: সড়কে ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধের প্রতিবাদে রাজধানীর প্রায় সব কয়টি সড়ক অবরোধ করেছে চালকরা। এতে সড়কে দেখা দিয়েছে তীব্র যানজট। আবার কিছু এলাকায় যানবাহন সংকট দেখা দিয়েছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারণ যাত্রীরা। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকে রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক ঘুরে এসব চিত্র দেখা যায়। এদিন সকাল থেকেই রাজধানীর মালিবাগ রেলগেট মোড় অবরোধ করে বিক্ষোভ করে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকরা। এতে কুড়িল বিশ্বরোড হয়ে গাজীপুরগামী যানবাহন আটকে যায়। ফলে অনেক যাত্রীকে পায়ে হেঁটে তাদের গন্তব্যে পৌঁছাতে দেখা গেছে। আবার রেলগেট না পার হতে পারায় মৌচাক মোড়ে শ্যামলী-গাবতলীগামী যাত্রীদের সড়কে অপেক্ষা করতে দেখা যায়। একইচিত্র মহাখালী রোডেও। কাকরাইল মোড় পার হতে না পারায় মগবাজার আউটার সার্কুলার রোড অনেকটা ফাঁকা দেখা যায়। ফলে মগবাজার মোড়ে অপক্ষেমান যাত্রীদের চাপ লক্ষ্য করা গেছে। আবার সড়কে রিকশা সংকট থাকায় বিকল্প উপায়েও গন্তব্যস্থলে পৌঁছাতে ভোগান্তী পোহাতে হচ্ছে।
তবে রাজধানীর মহাখালী রেলগেট এলাকায় রেলপথ অবরোধ করে আন্দোলন করেছেন ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকরা। একইসঙ্গে বন্ধ রয়েছে মহাখালী মোড়। ফলে গাজীপুর থেকে গুলিস্তানগামী বাস বন্ধ রয়েছে। এতে মগবাজার ওয়ারল্যাস মোড়ে অপেক্ষায় থাকা যাত্রীরা ভোগান্তিতে পড়েছেন। তবে ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় কমলাপুরের যাত্রীদের মধ্যে ট্রেন মিসের শঙ্কা না থাকলেও সঠিক সময়ে গন্তব্যে না পৌঁছাতে পারার দুশ্চিন্তা লক্ষ্য করা গেছে। কমালাপুরগামী আরিফুল ইসলাম বলেন, ২০ মিনিট ধরে ওয়ারলেস মোড়ে দাঁড়িয়ে আছি। দেড়টাই আমার ট্রেন কিন্তু কোনো গাড়িই পাচ্ছি না। সড়কে রিকশাও তেমন নেই। যেগুলো আছে তারা অনেক বেশি ভাড়া চাচ্ছে। এর মাঝে দুই একটা গাড়ি এসেছে তবে সেগুলোতে উঠার অবস্থা নেই। অপেক্ষা করছি কি অবস্থা হয়। এদিকে ট্রেনও চলছে না। ফলে চাপ না নিয়ে ধীরে ধীরে সামনে এগিয়ে যাবো। বনানীগামী যাত্রী হাসেম মিয়া বলেন, প্রায় প্রতিদিনই কোনো না কোনো আন্দোলন হচ্ছে। আর বিপত্তিতে আমরা। বাসা থেকে বের হওয়ার আগে দুইবার ভাবতে হয়, বাসা থেকে যে বের হবো আজকে আবার কোন দিক দিয়ে কোন আন্দোলন চলছে। কয়েকদিন আগে মহাখালী বন্ধ করে রাখলো ছাত্ররা, গতকাল বৃহস্পতিবার আবার রিকশাচালকরা। এগুলো বন্ধ হওয়া উচিত। একইসুরে কথা বলেছেন আরও ১২জন যাত্রী। তারা চান অতিদ্রুত ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা বন্ধ করা হোক।
যে কারণে ৬ ঘন্টা পর ট্রেন চলাচল শুরু: যাত্রী ও ট্রেনের নিরাপত্তার কারণে প্রায় সোয়া ছয় ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর ঢাকা থেকে দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে এবং বিভিন্ন স্টেশনে আটকে থাকা ঢাকামুখী ট্রেনগুলো আসতে শুরু করেছে। সকাল ১০টার পর থেকে বন্ধ থাকা ট্রেন চলাচল বিকেল ৪টা ১০ মিনিটে শুরু হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে করেছেন কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশন মাস্টার মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন। তিনি জানান, বিকেল ৪টা ১০ মিনিটে ঢাকা থেকে ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। বিলম্বে থাকা জামালপুর এক্সপ্রেস ট্রেন প্রথম ছেড়ে যায়। এ ছাড়া বিলম্ব রয়েছে একতা, কিশোরগঞ্জ, জয়ন্তীকা ও অগ্নিবীণা এক্সপ্রেস। এর আগে সকালে তিনি জানান, অটোরিকশা চালকেরা রেললাইনের ওপর অবরোধ করে আন্দোলন করছে। ফলে নিরাপত্তার স্বার্থে সকাল ১০টা থেকে ট্রেন চলাচল বন্ধ আছে। সকাল ১০টার পরে কোনো ট্রেন ঢাকা স্টেশন থেকে ছেড়ে যায়নি এবং আসেওনি। ঢাকামুখী ট্রেনগুলো কাছাকাছি স্টেশনে অবস্থান করছে।
এদিকে সরেজমিনে দেখা যায়, দুপুর ২টার পর থেকে আন্দোলনকারীদের সংখ্যা মহাখালী এলাকায় ধীরে ধীরে কমতে থাকে। একপর্যায়ে পৌনে ৩টার দিকে মহাখালী এলাকায় প্রায় ১০০-র মতো আন্দোলনকারী অটোরিকশা চালক ছিলেন। পরে তাদেরকে পুলিশ ও সেনাবাহিনী রাস্তা থেকে সরিয়ে দেয়। পুলিশ ও সেনাবাহিনীর বাধার মুখে রাস্তা থেকে সরে যায় আন্দোলনরত অটোরিকশা চালকেরা। তারা রাস্তা থেকে সরে গেলে একদিকে যেমন মহাখালী রেল লাইনের অবরোধ শেষ হয়, তেমনি রাস্তার অবরোধ শেষ হয়। পরে বিকেল ৩টা থেকে মহাখালীর সব রাস্তায় যানচলাচল শুরু হয়।
 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স