ঢাকা , শনিবার, ৩১ মে ২০২৫ , ১৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
আমতলীতে শহিদ রাষ্টপতি জিয়াউর রহমানের মৃত্যু বার্ষিকীতে সেচ্ছায় রক্তদান ও আলেচনা সভা মগবাজারে কুপিয়ে ব্যাগ ছিনতাইয়ের ঘটনায় গ্রেফতার ৩ ২ জুন বাজেট ঘোষণা স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা নিহত বাংলাদেশের জন্য জাপান গুরুত্বপূর্ণ শ্রমবাজার : প্রেস সচিব বাড়ছে নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা সরকারের আশ্বাসে প্রাথমিক শিক্ষকদের কর্মবিরতি স্থগিত ডিসেম্বরের আগেই জাতীয় নির্বাচন দেয়া সম্ভব -তারেক রহমান দেশে গণতন্ত্রের নিরাপদ যাত্রা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে : খালেদা জিয়া নির্বাচন ইস্যুতে এনসিপির সমালোচনায় ববি হাজ্জাজ আনু মুহাম্মদের স্ট্যাটাসে আসিফ নজরুলের বিস্ময় প্রকাশ জিয়াউর রহমানের ৪৪তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ উত্তাল নগর ভবনে পা রাখলেন ইশরাক আরও উজ্জীবিত আন্দোলনকারীরা সচিবালয়ে কর্মচারীদের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা প্রশাসনে ১০ মাসেও ফেরেনি শৃঙ্খলা ভারী বৃষ্টিতে বন্যার শঙ্কা শেখ হাসিনার আমলে ২৩৪ বিলিয়ন ডলার পাচার অবাধ-নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনে একসঙ্গে কাজ করবে সরকার, ইসি ও জাতিসংঘ মিডিয়ার হেডলাইন দেখে মন্তব্য করা যায় না-ইশরাক ইস্যুতে সিইসি নানামুখী চাপে দেশের অর্থনীতি
বিপাকে আওয়ামী লীগ

জিরো পয়েণ্টে ‘জিরো পারফরম্যান্স’

  • আপলোড সময় : ১৪-১১-২০২৪ ১২:২৩:২৭ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১৪-১১-২০২৪ ১২:২৩:২৭ পূর্বাহ্ন
জিরো পয়েণ্টে ‘জিরো পারফরম্যান্স’
* ১০ নভেম্বর কর্মসূচি ঘোষণা দিয়ে ব্যর্থ * পালিয়ে বেড়াচ্ছেন নেতাকর্মীরা * সাংগঠনিকভাবে বিধ্বস্ত তৃণমূল
মাসখানেক ধরে আমরা এলাকায় অবস্থান করছিলাম। নীরব ছিলাম, তবে এলাকায় ছিলাম। হুট করে এই কর্মসূচি দিয়ে সবাইকে বিপদে ফেলা হয়েছে। আবার সবাই এলাকা ছাড়া


ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্টে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে আশ্রয় নেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এরপর দলটির নেতাদের বাড়ি-ঘরে হামলা, ভাঙ্চুর ও আগুন দিয়ে জ¦ালিয়ে দেয়া হয়। প্রাণ বাঁচাতে আত্মগোপনে চলে যায় দলটির বেশিরভাগ নেতাকর্মী। গত ৩ মাস প্রকাশ্যে নিজেদের চেহারা দেখাতে চাননি। গত তিন মাস পর পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হতে থাকায় অনেকেই ফিরছিলেন নিজ নিজ এলাকায়। সর্বশেষ ১০ নভেম্বর শহীদ নূর হোসেন দিবসকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ কর্মসূচির ঘোষণা দিয়ে তা পালনে ব্যর্থ হওয়ায় দলটির তৃণমূলের নেতাকর্মীরা নতুন করে বিপাকে পড়েছেন। একদিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ধরপাকড় বেড়েছে, অন্যদিকে বিএনপিসহ অন্যান্য দলগুলোর নেতাকর্মীদের নিশানায়ও পড়ছেন তারা। যদিও আওয়ামী লীগের মাঠ পর্যায়ের নেতারা ১৫ বছর ধরে মাঠ দখলে রেখেছিলেন কিন্তু নানা কারণ যারা সরকার পতনের পর দেশ ছেড়ে পালাতে পারেননি, তারা এখন মহাবিপদে।
সম্প্রতি প্রকাশিত একটি অডিও কল রেকর্ডে শোনা যায়, আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা এক কর্মীকে কিছু নির্দেশনা দিচ্ছেন। সেখানে ১০ নভেম্বর নূর হোসেন দিবসে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মাঠে নামার নির্দেশ দেয়া হয়। শহীদ নূর হোসেনের পাশাপাশি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ছবিও সঙ্গে নিয়ে আসতে বলা হয়। শেখ হাসিনা জানান, ট্রাম্পের ছবি নিয়ে মিছিলে বাধা দিলে সেই ছবি যেন ভালো করে তুলে রাখা হয়। তিনি সেই ছবি ট্রাম্পের কাছে পাঠাবেন। কারণ তার ট্রাম্পের সঙ্গে লিঙ্ক আছে। এই সময়ে এমন কর্মসূচি দেয়াটা সঠিক হয়নি। গত আগস্টের পর আমরা দীর্ঘদিন এলাকার বাইরে ছিলাম। আমাদের লোকজন এলাকায় ঢুকতে পারেনি। কিছুদিন ধরে আমরা এলাকায় ঢুকছি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক ছিল। এখন আবার সব ঘোলাটে।
আওয়ামী লীগ সভাপতির সেই নির্দেশনা দলীয় নেতাকর্মীদের কাছে পৌঁছে যায়। একই সঙ্গে ওই কল রেকর্ড ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও। এতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ আওয়ামীবিরোধী দলগুলো মাঠে সক্রিয় হয়ে ওঠে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও কড়া অবস্থান নেয়। ফলে ১০ নভেম্বর জিরো পয়েন্টের কাছেই ভিড়তে পারেনি আওয়ামী লীগ। দলটির পক্ষ থেকে লাখ লাখ লোকের জমায়েতের কথা বলা হলেও একসঙ্গে দুই-চার-পাঁচজনও আসতে পারেনি। বিক্ষিপ্তভাবে এদিন এক-দুজন কর্মী গুলিস্তানে এসে মারধরের শিকার হয়েছেন। অনেকে আওয়ামী লীগের এই কর্মসূচিকে ‘জিরো পয়েন্টে জিরো পারফরম্যান্স’ হিসেবে আখ্যায়িত করছেন।
জানা গেছে, ১০ নভেম্বর আওয়ামী লীগের কর্মসূচি ঘোষণার পর থেকেই বিএনপির নেতাকর্মীরা বিভিন্ন এলাকায় মোটরসাইকেল যোগে মহড়া দিচ্ছেন। এমনকি সাধারণ মানুষও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের খুঁজে বেড়াচ্ছেন। এতে তীব্র আতঙ্ক কাজ করছে আওয়ামী লীগের স্থানীয় পর্যায়ের নেতাকর্মীদের মাঝে। ১০ নভেম্বর থেকে রাজধানীর প্রায় প্রতিটি থানা এলাকা ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ শূন্য হয়ে পড়েছে। নেতাকর্মীরা কেউ আশ্রয় নিয়েছেন আত্মীয়-স্বজনের বাসায়, কেউ গা ঢাকা দিয়েছেন অন্য কোথাও। আওয়ামী লীগের একটি সহযোগী সংগঠনের একজন শীর্ষ নেতা সঙ্গে আলাপকালে বলেন, কোনো নেতৃত্ব নাই, দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা নাই। আমরা কেন নামব? আমি নিজেও যাইনি, কর্মীদেরও পাঠাইনি। আগে কেন্দ্রীয় নেতারা আসুক। তারা নেতৃত্ব দিক। তারপর আমরা নামবো।
আওয়ামী লীগের দাবি, ১০ নভেম্বর বিকেলে গুলিস্তান বক চত্বর এলাকায় শতাধিক নেতাকর্মী নিয়ে মিছিল করেছেন তারা। তবে যে ছবি ও ভিডিও দলটির পক্ষ থেকে প্রকাশ করা হয়েছে, তাতে স্পষ্ট হয়- ওই মিছিলে ২০ জন মানুষ ছিলেন না। প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য, গুটি কয়েক নেতাকর্মী এক মিনিটেরও কম সময় একটি মিছিল করেন। পরে ধাওয়া খেয়ে পালিয়ে যান।
এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর উত্তর যুবলীগের একজন কর্মী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আওয়ামী লীগ অনেক বড় একটা দল। ওই গুলিস্তানে কি আমরা কম প্রোগ্রাম করেছি? একটা ইউনিটে যে কজন লোক থাকে, সেই কয়জন লোকও ওই প্রোগ্রামে যায়নি। এই সময়ে এমন কর্মসূচি দেয়াটা সঠিক হয়নি। ৫ আগস্টের পর আমরা দীর্ঘদিন এলাকার বাইরে ছিলাম। আমাদের লোকজন এলাকায় ঢুকতে পারেনি। কিছুদিন ধরে আমরা এলাকায় ঢুকছি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক ছিল। এখন আবার সব ঘোলাটে। তার মতে, কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত না থেকে কেবল তৃণমূল নেতাকর্মীদের মাঠে নামানোর প্রবণতা আওয়ামী লীগকে সাংগঠনিকভাবে বিধ্বস্ত প্রমাণ করেছে। স্থানীয় নেতাকর্মীদের অনুপস্থিতি দলটিকে শীর্ষ পর্যায়ের সঙ্গে মতের অমিলের প্রমাণ দিয়েছে। তিনি বলেন, তৃণমূল কেন, নগর পর্যায়ের নেতারাও এই কর্মসূচিতে এগিয়ে আসেননি। এতে বোঝা যায়, নেতাকর্মীরা এই কর্মসূচি মোটেও ভালোভাবে নেয়নি। আমার মনে হয়, এর মাধ্যমে কেন্দ্রের সঙ্গে তৃণমূলের দূরত্ব আরও বেড়ে গেল। একই কথা জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর উত্তর যুবলীগের ওয়ার্ড পর্যায়ের একজন পদধারী নেতা। নাম না প্রকাশের শর্তের তিনি বলেন, মাসখানেক ধরে আমরা এলাকায় অবস্থান করছিলাম। নীরব ছিলাম, তবে এলাকায় ছিলাম। হুট করে এই কর্মসূচি দিয়ে সবাইকে বিপদে ফেলা হয়েছে। আবার সবাই এলাকা ছাড়া।
 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স