ঢাকা , বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ , ৩০ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
এবারের অস্কারে চূড়ান্ত মনোনয়ন পেল যে সিনেমাগুলো অবশেষে নীরবতা ভাঙলেন এড শেরন দর্শকদের ওপর মেজাজ হারালেন সোনু নিগম বরুণের হাতে কি হয়েছে? ছবি দেখে চিন্তিত ভক্তরা আইসিইউতে শিল্পী প্রতুল মুখোপাধ্যায় সুস্থ হয়েই গানের মঞ্চে সাবিনা ইয়াসমিন ভালোবাসা দিবসে প্রকাশ পাবে ফাহিমের নতুন গান ভক্তদের জন্য কষ্টের গান গাইবেন আসিফ ডিবি পরিচয়ে ডাকাতি, যুবলীগ নেতাসহ গ্রেফতার ১২ ডিবি পরিচয়ে ডাকাতি, যুবলীগ নেতাসহ গ্রেফতার ১২ নিখোঁজের ৫৪ ঘণ্টা পর কামরাঙ্গীরচর থেকে উদ্ধার অন্তর খুবই দুঃখজনক মুক্তিযোদ্ধাকে অপমানিত করা হচ্ছে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদ বিলুপ্তির সুপারিশ ৫ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে এনআইডি তথ্য ফাঁসের প্রমাণ পেয়েছে ইসি ম্যাটস শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে দৃশ্যমান অগ্রগতি হবে-স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নির্বাচন নির্ভর করছে রাজনৈতিক দলগুলোর উপর : প্রেস সচিব বেনজীরকে ধরতে ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড এলার্ট জারির আদেশ ১০ দিনের জন্য আন্দোলন স্থগিত ক্ষতিগ্রস্ত প্রবাসীদের পুনরায় ট্রাকে টিসিবির পণ্য বিক্রি শুরু অপরিবর্তিত আছে বেসরকারি ঋণ ও নীতি সুদহার মুদ্রানীতি ঘোষণা
আওয়ামী লীগ নেতাদের বিএনপি

টাকা দেন-বাড়িতে নিরাপদে থাকেন

  • আপলোড সময় : ১০-১১-২০২৪ ১০:০৬:৩০ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১০-১১-২০২৪ ১০:০৬:৩০ অপরাহ্ন
টাকা দেন-বাড়িতে নিরাপদে থাকেন
* টাকা দিয়ে বাড়ি ফিরছেন আ’লীগ নেতারা, অস্বীকার করলেন বিএনপির নেতারা
* যুব মহিলা লীগ নেত্রীকে চার্জশিট থেকে নাম বাদ দেয়ার প্রতিশ্রুতি যুবদল নেতার

গত ৫ আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে সেনাবাহিনীর একটি হেলিকপ্টারে দেশ থেকে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। দলীয়প্রধানের হঠাৎ দেশত্যাগের খবরে বিএনপি-জামায়াতসহ আওয়ামী বিরোধী শিবির মুহূর্তেই উল্লাসে ফেটে পড়ে। কেউ কেউ রাস্তায় শুকরিয়া নামাজ আদায় করেন। তবে আওয়ামী বিরোধী শিবিরে আনন্দ-উল্লাস থাকলেও বিপাকে পড়েছেন দলটির নেতাকর্মীরা। যে যেভাবে পারেন, নেত্রীর মতো দেশ ছাড়েন। আবার কেউ কেউ জনগণের রোষানল থেকে বাঁচার জন্য আত্মগোপনে চলে যান।
সর্বশেষ ১০ নভেম্বর রাজধানীর গুলিস্তান জিরো পয়েন্ট এলাকায় মহীদ নূর হোসেন দিবসে বেশ কয়েকজন নেতাকর্মীদের মারধর করে পুলিশে দেয়া হয়। এরআগে মন্ত্রী-এমপি এবং দলটির উচ্চ পর্যায়ের কয়েকজন নেতাকর্মী হত্যা মামলা, বিভিন্ন সময় অন্যায়, অনিয়ম ও দুর্নীতি মামলায় ইতোমধ্যে গ্রেফতার হয়েছেন। তবে গত তিন মাসের  ও বেশি সময় পর পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয়ে আসায় তাদের অনেকে এখন নিজ এলাকায় ফিরতে শুরু করেছেন। তবে বাড়ি ফেরার জন্য তাদেরকে মোটা অঙ্কের টাকা দিতে হচ্ছে। যারা টাকা দিচ্ছেন না, তাদেরকে এলাকায় ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ রয়েছে। তবে নিরাপত্তার স্বার্থে তাদের কেউই নিজের পরিচয় প্রকাশ করতে রাজি হননি, এমনকি এলাকার নামও উল্লেখ না করার অনুরোধ জানিয়েছেন। এ নিয়ে বিবিসি বাংলাও একটি অনুসন্ধ্যানী প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়, এলাকায় ফিরতে কাকে কত টাকা দিতে হয়েছে এবং ফেরার পর কী অবস্থায় দিন পার করছেন, সেই অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিয়েছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। নাম প্রকাশ না করে তৃণমূলের এক আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, ঘর থেকে বের হতে পারছি না। সারাদিন ঘরেই থাকতে হচ্ছে। হামলার হাত থেকে বাঁচতে ?‘বিএনপিসহ এলাকার প্রভাবশালীদেরকে’ টাকা দিতে হচ্ছে বলে দাবি করেছেন বাড়িঘরে ফেরা আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। হঠাৎ এলাকায় ফিরলে যে হামলার শিকার হতে পারেন, সেই ভয় কাজ করছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে। সেজন্য এলাকায় এখন যারা প্রভাবশালী, তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন তারা। বিএনপি নেতারা অবশ্য অভিযোগটি অস্বীকার করেছে। তবে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা এলাকায় ফিরতে শুরু করলেও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় বেশিরভাগ নেতা এখনও ‘আত্মগোপন’ রয়েছেন। এর মধ্যে অনেকে দেশ ছেড়েছেন, দেশ ছাড়ার চেষ্টাকালে কেউ কেউ গ্রেফতার হয়েছেন। আওয়ামী লীগের ওয়ার্ড পর্যায়ের একজন নেতা বলেন, টাকা না দেয়া ছাড়া তো উপায় নাই। বউ-বাচ্চা ফেলে আর কতদিন পালাই পালাই বেড়াবো। চেয়েছিল তিন লাখ, পরে অনেক বলে-কয়ে এক লাখ টাকা দিয়ে ফিরছি। বেশিরভাগ এলাকায় বিএনপি এখন নিয়ন্ত্রণ নেয়ায় দলটির নেতাদের সঙ্গেই মূলত যোগাযোগ করছেন বলে ‘আত্মগোপনে’ থাকা আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের কাছ থেকে চাঁদাবাজি করার সঙ্গে বিএনপির জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন দলটির শীর্ষ নেতারা। কথা হয় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান এর সঙ্গে। তিনি বলেন, ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় গত দেড় দশকে আওয়ামী লীগ যেভাবে বিএনপি নেতাকর্মীদের উপর জুলুম-নির্যাতন চালিয়েছে, তারপরে আমাদের নেতাকর্মীরা এ ধরনের ঘটনার সঙ্গে জড়িত হবে বলে আমি মনে করি না। তবে বিএনপি নেতা শামা ওবায়েদ বলছেন, বিএনপি’র ভাবমূর্তি নষ্ট করতেই একটি পক্ষ দলটির নাম ব্যবহার করে চাঁদাবাজি করছে। শুরু থেকেই এ বিষয়ে আমাদের দলের অবস্থান অত্যন্ত কঠোর। দলের পক্ষ থেকে স্পষ্টভাবে নেতাকর্মী নির্দেশনা দেয়া হয়েছে যেন কেউ এসবের সঙ্গে যুক্ত না হয়। বিএনপির নাম ব্যবহার করে কেউ চাঁদা চাইলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। গত পাঁচই আগস্ট সরকার পতনের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে হামলা, লুটপাট ও চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠতে দেখা গেছে। এসব ঘটনায় গত দেড় মাসে পটুয়াখালী, নেত্রকোণা, খুলনাসহ বেশকিছু জেলায় শতাধিক নেতাকর্মীকে শোকজ নোটিশ প্রদান, দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি, এমনকি বহিষ্কারও করেছে বিএনপি। আত্মগোপনে থাকা নেতারা যা বলছেন : ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের একজন সহ-সভাপতি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, এখনো ঢাকায় আছি। এলাকার স্থানীয় বিএনপি নেতারা আমাকে এমনিতেই পছন্দ করেন। আমি গত সাড়ে ১৫ বছরে কারো উপকার ছাড়া কোনো ক্ষতি করিনি। তাই তারা বলছেন, আপনি নিরাপদে থাকেন। আমরা আপনার কোনো ক্ষতি করব না। আপনি আমাদের বিপদের সময় আগলে রেখেছেন। এখন আমরা আপনার পাশে আছি। তাই আমার বাড়িতে থাকি না। কিন্তু এলাকায় আছি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের আমলে তাদেরকে আমরা আগলে রেখেছি। তাদের বিভিন্ন বিপদ আপদে সহযোগিতা করেছি। তাই তারা আমাকে ভালোবাসেন। তবে আমি যেহেতু বাইরে যাই না, তাদেরকে কিছু টাকা পয়সা দিই। তারাই আমার খাবার থেকে শুরু করে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনে নিয়ে আসেন। ভালো আছি। আর কিছু বলার নেই। একইকথা বলেছেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের অন্তর্গত থানা আওয়ামী লীগের একজন সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, আমি এলাকায় আছি। নিজ বাড়িতেই আছি। তবে প্রকাশ্যে আসছি না। স্থানীয় বিএনপি নেতাদের সঙ্গে কথা বলেই আছি। রাজনীতি যখন শুরু হবে তখন প্রকাশ্যে আসব। ঢাকা মহানগর দক্ষিণের অন্তর্গত স্বেচ্ছাসেবক লীগের এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে মিলে মিশে এবং কথা বলে অদ্যবধি এলাকায় আছি। তবে মাঝে মধ্যে তাদের অনুষ্ঠানের জন্য কিছু টাকা দেই। এটা দোষের কিছু না। একই অবস্থা সারাদেশের। তবে যারা টাকা দেন না, তাদের এখনো আত্মগোপনে থাকতে হচ্ছে বলে একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে।
চার্জশিট থেকে নাম কাইটে দিমুনি কল রেকর্ড ফাঁস : জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলা যুব মহিলা লীগের সভাপতি জহুরা বেগমের সঙ্গে উপজেলা যুবদলের সদস্যসচিব মাহবুবুর আলমের (লাভলু) মোবাইল ফোনে কথোপকথনের একটি অডিও কল রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে মহিলা লীগ নেত্রীর নাম মামলা থেকে বাদ দিতে যুবদল নেতাকে প্রতিশ্রুতি দিতে শোনা যায়। ৯ নভেম্বর বিকালে ওই দুজনের কথোপকথনের ২ মিনিট ৫৩ সেকেন্ডের একটি অডিও রেকর্ড ফেসবুক মেসেঞ্জারে ছড়িয়ে পড়ে। অডিওটি যাচাই করা এবং তাদের দুজনের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। তবে যুবদল নেতা মাহবুবুর আলম স্থানীয় সংবাদকর্মীদের জানিয়েছেন, একটি ছেলে তাকে ওই ফোন ধরিয়ে দিয়েছিল। তিনি সহজ-সরল মানুষ। তাকে কেউ ফাঁসানোর চেষ্টা করছেন। জহুরা বেগম বকশীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সদ্য অপসারিত মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান। গত ৪ আগস্ট বকশীগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার ওপর হামলার ঘটনায় ১ নভেম্বর ৩৩ জনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা করেন গোলাম মোস্তফা নামের এক বিএনপি নেতা। ওই মামলার ৩২ নম্বর আসামি জহুরা বেগম। ওই মামলা থেকে নাম বাদ দেয়া নিয়ে যুব মহিলা লীগ নেত্রী ও যুবদল নেতার মধ্যে মোবাইল ফোনে কথোপকথন ফাঁস হয়। এতে সালাম ও কুশলবিনিময়ের পর জহুরা বেগম বলেন, এখন এটা (তার নাম) কি চার্জশিট থেকে কাটা যাবে? উত্তরে মাহবুবুর আলম বলেন, চার্জশিট থেকে কাটা যাবে। তখন আপনি যোগাযোগ কইরেন, কাইটে দিমুনি। জহুরা বেগম আবারও বলেন, এখন কোনোকিছু করা যাবে না? উত্তরে মাহবুবুর আলম বলেন, এখন তো কিছু করা যাবে না। তবে মানিক ভাইয়ের (উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মানিক সওদাগর) সঙ্গে বসে কথা বলতে হবে। কথোপকথনের ব্যাপারে জানতে জহুরা বেগমের মোবাইল ফোন নম্বরে একাধিকবার কল করা হলেও বন্ধ পাওয়া যায়। অন্যদিকে যুবদল নেতা মাহবুবুর আলমকে একাধিকবার কল করলেও তিনি ধরেননি। তবে স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের মাহবুবুর আলম বলেছেন, একটি ছেলে আমাকে ফোন ধরিয়ে দিয়েছিল। আমি সহজ-সরল মানুষ। সে আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করেছে। এ বিষয়ে বিএনপি নেতা মানিক সওদাগর বলেন, ফোনালাপটি শুনেছি। আমার নামটি কেন বলেছেন, বিষয়টি জানি না। মামলা আমরা করছি। তারা (আসামিরা) পলাতক। তাদের সঙ্গে আবার কীসের আলাপ? যেটুকু শুনেছি, সেটা হলো, একটি কাজের বিষয়ে কথা বলছিল। তার এন্টি গ্রুপ (বিরোধীপক্ষ) কাজটি করছে। মাহবুবুর আলম নিজের ফোনে নয়, অন্য একজনের ফোনে কথা বলেছেন। তারপরও বিষয়টি জেলা যুবদলের আহ্বায়ককে জানানো হয়েছে। জানতে চাইলে জেলা যুবদলের আহ্বায়ক শফিকুল ইসলাম বলেন, আমি বিষয়টি কয়েকজন সাংবাদিকের কাছ থেকে শুনেছি। আমি ওই ফোনালাপ শুনিনি। বিষয়টি শুনবো এবং সত্যতা যাচাই করব। সত্যতা পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বিএনপি নেতার ১ লাখ টাকা দাবি : পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলা বিএন?পির সভাপ?তি আব্দুর রহমান ফরা?জি এ ঘোষণা দিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বিএন?পিতে আসার জন্য আহ্বান জানান। গত ৮ নভেম্বর বিকেল থেকে দুদিন আগের ৩? মি?নিট ২১? সেকেন্ডের এক?টি ভি?ডিও সামা?জিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওতে বিএনপির ওই নেতাকে বলতে শোনা যায়, রাঙ্গাবালীতে আওয়ামী লীগ নেতাদের আশ্রয় দিবে বিএনপি। আমি উপজেলা বিএন?পির সভাপতি আব্দুর রহমান ফরাজি আপনাদের পাশে আছি। তবে রাঙ্গাবালী উপজেলা বিএন?পির একা?ধিক নেতা নাম প্রকা?শ না করার শর্তে জানান, গত শ?নিবার রাঙ্গাবালী মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে উপজেলা বিএন?পির এক জনসভা রয়েছে। জনসভা উপলক্ষে গত বুধবার বিকেলে রাজার বাজার এলাকায় পথসভায় এ বক্তব্য দেন ফরা?জি। তবে একাধিকবার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। ৭ নভেম্বর নওগাঁর বদলগাছী উপজেলা বিএনপির সহ-যুব সম্পাদক বেলাল হোসেন সৌখিনের বিরুদ্ধে মামলার আসামির তালিকা থেকে নাম বাদ দিতে এক আওয়ামী লীগ নেতার কাছ থেকে এক লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠেছে। উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক অর্থ সম্পাদক শামসুল আলম খানের কাছে তিনি এই চাঁদা দাবি করেন বলে অভিযোগ। টাকা দাবি করা কথোপকথনের ১ মিনিট ৩০ সেকেন্ডের একটি অডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ৫ নভেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় উপজেলার গোবরচাপা এলাকায় ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। রাতে বিস্ফোরক আইনে বেলাল হোসেন বাদী হয়ে বদলগাছী থানায় একটি মামলা করেন। মামলায় উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শামসুল আলম খান, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুস সালাম, মথুরাপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মাসুদ রানা, মিঠাপুর ইউপির চেয়ারম্যান ফিরোজ হোসেন, বদলগাছী সদর ইউপির চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন, কোলা ইউপির চেয়ারম্যান শাহিনুর ইসলামসহ ৪০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এছাড়া আসামি করা হয়েছে অজ্ঞাতনামা আরও ১২০ জনকে। এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রাত ১০টার দিকে প্রথমে সুমন হোসেন ও নয়ন হোসেন নামের দুটি ফেসবুক আইডি থেকে বেলাল হোসেন ও শামসুল আলমের কথোপকথনের ওই অডিও পোস্ট করা হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া কথোপকথনে শোনা যায়-সৌখিন : হ্যালো, সালামালেকুম। ভাই আমি সৌখিন, চাংলার সৌখিন। শামসুল : হ্যাঁ ভাই, ভালো। সৌখিন : চিনতে পারছেন। শামসুল : হ্যাঁ ভাই পারছি। সৌখিন : আপনি ওই ম্যানকাক (বিএনপি নেতা মানিক) বলে ২ লাখ টাকা দিছেন। শামসুল : না না না ভাই। সৌখিন : ম্যানকা আপনাক বাঁচাতে পারবে ? শামসুল : বাঁচা-মরা এখন আল্লাহর হাতে। সৌখিন : আল্লার হাতে ঠিক আছে, কিন্তু আল্লাহ যে আমার হাতে লিখে রাখছে আপনাক। তা আপনি ম্যানকার সঙ্গে যোগাযোগ করে বাঁচতে পারবেন ? আমরা কি ... ফেলাব। ভাগ মিলতেছে না। আমার এই নম্বরে বিকাশ, নগদ সব আছে। আপনি ১ লাখ টাকা এখানে পাঠায়ে দেন। তাইলে আপনি ম্যানকাকে টাকা দেবেন মানে আমরা কে ? টাকা দিতে হবে। তবে এ বিষয়ে শামসুল আলম বলেন, ৬ নভেম্বর বেলা ১১টার দিকে নওগাঁয় আদালতে একটা কাজে গিয়েছিলাম। ওই সময় একটা অপরিচিত নম্বর থেকে কল আসে। নিজেকে চাংলার সৌখিন পরিচয় দিয়ে আমার কাছ থেকে টাকা দাবি করা হয়। শুনতেছি, মামলায় অভিযুক্ত অন্যদের কাছ থেকেও এভাবে ফোন করে চাঁদা দাবি করা হচ্ছে। অভিযোগের বিষয়ে বিএনপি নেতা বেলাল হোসেন সৌখিন বলেন, শামসুল চেয়ারম্যানের সঙ্গে আমার কথাই হয়নি। যেটা ছড়াচ্ছে এটা সম্পূর্ণ ভুয়া। আমি মামলার বাদী। আমাকে ফাঁসানোর জন্য কেউ কম্পিউটারে এডিট করে ফেসবুকে ছাড়ছে। গত ৬ সেপ্টেম্বর মামলা থেকে নাম বাদ দেয়া ও নতুন নাম অন্তর্ভুক্ত করা নিয়ে সিরাজগঞ্জের বিএনপি নেতাদের সঙ্গে গোপন বৈঠক করেছেন আওয়ামী লীগ নেতারা। গত ২৭ আগস্ট করা গোপন ওই বৈঠকের ভিডিও সম্প্রতি ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। সলঙ্গা থানার রামারচর এলাকার রয়েল রূপালী হোটেলে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন সলঙ্গা থানা বিএনপির সভাপতি ও জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মতিয়ার রহমান সরকারসহ অন্যান্য নেতা ও আওয়ামী লীগের নেতারা। গত ৩০ আগস্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মহসিন আহমেদ ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে মামলার আসামি তালিকা থেকে নাম বাদ দিতে এক আওয়ামী লীগ নেতার কাছ থেকে চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার পত্তন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য হৃদয় আহমেদ ওরফে জালালের কাছে তিনি এই চাঁদা দাবি করেন বলে অভিযোগ। এ বিষয়ে দুই নেতার কথোপকথনের ২ মিনিট ৪১ সেকেন্ডের একটি অডিও রেকর্ডিং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এরপর ৩১ আগস্ট দুপুরে মহসিন আহমদের বিরুদ্ধে উপজেলার চম্পকনগর বাজারে মামলার ভয় দেখিয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগে তার গ্রেফতারের দাবিতে মানববন্ধন করা হয়। উপজেলার সব ছাত্র-জনতার ব্যানারে এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। তবে এ বিষয়ে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মহসিন আহমেদ ভূঁইয়া  কোনো বক্তব্যে পাওয়া যায়নি। গত ৫ সেপ্টেম্বর খুলনা-৩ সংসদীয় আসনের নগরীর ৭নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও কাউন্সিলর শেখ খালিদ আহমেদকে রাজনৈতিক সুবিধা দেয়ার আশ্বাসে ২ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়েছে। খুলনা মহানগর বিএনপির ১৩নং যুগ্ম আহ্বায়ক চৌধুরী শফিকুল ইসলাম হোসেন ও ৭নং ওয়ার্ড বিএনপির আহ্বায়ক রিয়াজ শাহেদের একটি অডিও ক্লিপে চাঁদা চাওয়ার বিষয়টি ভাইরাল হয়েছে। কাউন্সিলর খালিদ খুলনা-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য, শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ানের নিকটাত্মীয় হিসেবে পরিচিতি। তবে বিএনপির দুই নেতা অডিও ক্লিপটি ভুয়া বলে আখ্যায়িত করেছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া অডিও এবং ভিডিও ক্লিপে শোনা যায়-কাউন্সিলর শেখ খালিদ আহমেদের কাছে রাজনৈতিক সুবিধা দিতে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়েছে। নগর বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক চৌধুরী শফিকুল ইসলাম হোসেনকে বলতে শোনা যায়, রিয়াজ শাহেদের সঙ্গে যোগাযোগ করো, বোঝো তো, ওর দিকে একটু খেয়াল রাখো। অপর প্রান্ত থেকে আওয়ামী লীগ নেতা কাউন্সিলর শেখ খালিদ আহমেদকে বলতে শোনা যায়, অবশ্যই, কিভাবে খেয়াল রাখতে পারি বলেন ভাইজান। তখন নগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক চৌধুরী শফিকুল ইসলামকে বলতে শোনা যায়, ‘লাখ দুই টাকা ম্যানেজ করে দিয়ে দিও’। এরপর খালিদ আহমেদের সঙ্গে বিএনপি নেতা রিয়াজ শাহেদের সরাসরি দেখা করার কথা হয়। ৭নং ওয়ার্ড বিএনপির আহ্বায়ক রিয়াজ শাহেদ বলেন, যারা আমাকে হত্যার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছে। তারাই এখন আমার রাজনৈতিক ইমেজ নষ্ট করতে বেনামে অপপ্রচারে পোস্টারিং করছে। তাতেও ক্ষান্ত না হয়ে অডিও ক্লিপ বানিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা লোটার চেষ্টা করছে। তবে কাউন্সিলর শেখ খালিদ আহমেদকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স