ঢাকা , মঙ্গলবার, ০৮ জুলাই ২০২৫ , ২৪ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
গণঅভ্যুত্থানের ভুয়া মামলা বাণিজ্য গণপিটুনিতে থামছে না হত্যাকাণ্ড ওয়ালটনের প্যাসেঞ্জার কার ব্যাটারি গ্রাভিটন উদ্বোধন করলেন কন্ঠশিল্পী তাহসান জুলুমের প্রতিবাদ করায় যাত্রী ফারুক এর উপর বাস স্টাফদের হামলা পুষ্টি কর্মসূচি শিশুস্বাস্থ্যে পরিবর্তন আনতে পারে যশোরে ১১ আ’লীগ নেতার আদালতে আত্মসমর্পণ ময়মনসিংহে ডাম্পট্রাক-অটোরিকশা সংঘর্ষে চালকসহ নিহত ২ হবিগঞ্জে ১৪৪ ধারা ভেঙে সংঘর্ষ, ভাঙচুর-লুটপাট স্মার্ট পর্যটন ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য কাজ করছে আটাব-আরেফ মালয়েশিয়ায় আটকদের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য চেয়েছে সরকার প্রেসিডেন্ট গার্ড রেজিমেন্টের সুবর্ণজয়ন্তী উদ্বোধন করলেন রাষ্ট্রপতি উৎপাদনশীলতার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে ইলেকট্রনিক্স শিল্পখাত আ’লীগ সরকারের সুবিধাভোগী জসিম মোল্লা এখন বিএনপি নেতা ঢাকার রাস্তায় দেশীয় প্রযুক্তির ট্রাফিক সিগন্যাল বাতি বসানোর উদ্যোগ ঝিকরগাছা উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয়ের হিসাবরক্ষকের খুটির জোর কোথায় ? দেশ গঠনে কোনও আপস করবো না -নাহিদ এবার অস্ত্র মামলায় রিমান্ডে সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সাংবাদিকের প্রতি অসম্মানজনক আচরণের প্রতিবাদ বিশিষ্ট নাগরিকদের মালয়েশিয়ায় শ্রমবাজার হারানোর শঙ্কা পোরশায় ইসলামী আন্দোলনের গণসমাবেশ

সমুদ্রবন্দরগুলোর জন্য ড্রেজিংয়েই হবে বিপুল ব্যয়

  • আপলোড সময় : ১০-১১-২০২৪ ০৪:২৮:০০ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১০-১১-২০২৪ ০৪:২৮:০০ অপরাহ্ন
সমুদ্রবন্দরগুলোর জন্য ড্রেজিংয়েই হবে বিপুল ব্যয়
সম্প্রতি ওই প্রকল্পের জন্য ৬৫ কোটি ডলার ঋণ অনুমোদন দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দরের নির্মাণকাজ জাপানকে দিয়ে করানোর নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার


দেশের সমুদ্রবন্দরের চ্যানেলের গভীরতা রক্ষায় ড্রেজিংয়ে বিপুল টাকা ব্যয় হচ্ছে। বর্তমানে মোংলা ও পায়রার ব্যয়বহুল ড্রেজিংয়ের মধ্যেই দেশে আরো দুটি সমুদ্রবন্দর গড়ে তোলা হচ্ছে। এর একটি চট্টগ্রামের বে-টার্মিনাল। সম্প্রতি ওই প্রকল্পের জন্য ৬৫ কোটি ডলার ঋণ অনুমোদন দিয়েছে বিশ্বব্যাংক।  মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দরের নির্মাণকাজ জাপানকে দিয়ে করানোর নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, দেশের দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক সমুদ্রবন্দর মোংলায় ২০২৩-২৪ অর্থবছর ৮৪৬টি জাহাজ হ্যান্ডলিং হয়েছে। সেখান থেকে রাজস্ব আয় হয়েছে ৩১৯ কোটি টাকা। কিন্তু মোংলা বন্দরের পশুর চ্যানেল খননকাজে প্রায় ১ হাজার কোটি টাকার একটি প্রকল্প চলমান রয়েছে। ড্রেজিংয়ের পর পলি জমে দু-এক বছরের মধ্যে কমে আসে মোংলা বন্দর চ্যানেলের গভীরতা। ফলে গভীরতা ধরে রাখতে প্রতি তিন থেকে পাঁচ বছর পর পর ব্যয়বহুল ড্রেজিং প্রকল্পের দরকার হচ্ছে। তাছাড়া দেশের আরেক সমুদ্রবন্দর পায়রা। মোংলার মতোই পায়রায় বার্ষিক রাজস্ব আয় হয় কমবেশি ৩০০ কোটি টাকা। এক বছর আগে পায়রা বন্দরের রাবনাবাদ চ্যানেল ড্রেজিং করা হয়েছে। খরচ হয়েছে সাড়ে ৬ হাজার কোটি টাকার বেশি। কিন্তু ড্রেজিং স্কিম শেষ হওয়ার এক বছরের মধ্যে চ্যানেলটির নাব্য আবার কমে গিয়ে বড় জাহাজ চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। বন্দরসংশ্লিষ্টরা এখন পুনরায় ড্রেজিং প্রকল্পের প্রয়োজনীয়তার কথা বলছেন। কারণ এ চ্যানেলে দিয়ে প্রতিনিয়ত বিপুল পরিমাণ পলি এসে জমে। নাব্য ধরে রাখতে হলে রাবনাবাদে নিয়মিত ড্রেজিং চালিয়ে যেতে হবে। সূত্র জানায়, মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দরের জন্য এরই মধ্যে ১৪ দশমিক ৩ কিলোমিটার দীর্ঘ নৌ-চ্যানেল গড়ে তোলা হয়েছে। চ্যানেলটি তৈরি করেছে রাষ্ট্রায়ত্ত কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেড (সিপিজিসিবিএল)। বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য কয়লাবাহী জাহাজ ওই চ্যানেল ব্যবহার করবে। একই চ্যানেল ব্যবহার করবে মাতারবাড়ী বন্দর ব্যবহারকারী জাহাজও। সাড়ে ১৮ মিটার গভীর ও ৩৫০ মিটার প্রশস্ত চ্যানেলটি নির্মাণ করতে ব্যয় হয়েছে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা। চ্যানেলটির গভীরতা ধরে রাখতে নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ ড্রেজিংয়ের প্রয়োজন হবে। জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থার (জাইকা) করা এক জরিপে বলা হয়েছে, মাতারবাড়ী বন্দর চ্যানেলে প্রতি বছর ৫০ লাখ ঘনমিটার ড্রেজিংয়ের প্রয়োজন হবে। প্রতি ঘনমিটার ড্রেজিংয়ের সর্বনিম্ন ব্যয় ৫ ডলার। ওই হিসাবে প্রতি বছর চ্যানেলটি ড্রেজিং করতে খরচ হবে আড়াই কোটি ডলার (বর্তমান বিনিময় হার অনুযায়ী প্রায় ৩০০ কোটি টাকা)। তবে ওই ড্রেজিং ব্যয় মাতারবাড়ী বন্দর ও কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র যৌথভাবে নির্বাহ করবে। সূত্র আরো জানায়, চট্টগ্রাম বন্দরকেন্দ্রিক বাংলাদেশের আমদানি-রফতানি কার্যক্রমের সিংহভাগ। সমুদ্রপথে বাণিজ্যের ৯২ শতাংশই ওই বন্দর দিয়ে হয়। সর্বশেষ ২০২৩-২৪ অর্থবছর ওই বন্দর থেকে রাজস্ব আয় হয়েছে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা। চট্টগ্রাম বন্দরের ওপর চাপ কমাতে নির্মাণ করা হয়েছে বে-টার্মিনাল ও মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর। তবে চালুর পর নিজস্ব আয় দিয়ে পরিচালন ব্যয় মিটিয়ে বন্দর কর্তৃপক্ষ ব্যয়বহুল ড্রেজিংয়ের কাজ কতটা সামলাতে পারবে, তা নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। তাছাড়া ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম বন্দরে ‘বে-টার্মিনাল মেরিন ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট’ প্রকল্পে ৬৫ কোটি ডলার ঋণ অনুমোদন করেছে বিশ্বব্যাংক। ওই ঋণের সিংহভাগই নির্মাণাধীন টার্মিনালের ক্যাপিটাল ড্রেজিংয়ের কাজে ব্যয় হবে। প্রকল্পটি নিয়ে বিশ্বব্যাংকের এক মূল্যায়ন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বে-টার্মিনালের মূল বেসিনের জন্য সাড়ে ১৫ মিটার গভীরতায় ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ ও ৬০০ মিটার প্রশস্ত ড্রেজিং প্রয়োজন হবে। এর বাইরে চ্যানেলে প্রবেশের জন্য ১ দশমিক ৬ কিলোমিটার দীর্ঘ ও ৫০০ মিটার প্রশস্ত ড্রেজিং করতে হবে। বে-টার্মিনাল প্রকল্পে এখন পর্যন্ত কেবল ক্যাপিটাল ড্রেজিংয়ের বিষয়টিই আলোচনায় এসেছে। রক্ষণাবেক্ষণ ড্রেজিং নিয়ে এখনো পর্যন্ত কোনো জরিপ হয়নি। তাই ওই বন্দর চ্যানেল রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বছরে কী পরিমাণ ড্রেজিং করতে হবে, সে সম্পর্কে কোনো তথ্য চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে নেই। এদিকে পানিসম্পদ বিশেষজ্ঞদের মতে, বন্দর চ্যানেলে যদি নদী থাকে এবং ওই নদী দিয়ে যদি প্রচুর পরিমাণ সেডিমেন্ট (পলি) প্রবাহিত হয়, তাহলে ওই চ্যানেলে নিয়মিত ড্রেজিংয়ের দরকার হবে। বিদেশের বন্দরগুলোয় দেখা যায় স্বচ্ছ নীল পানি। এর মানে সেগুলোয় কোনো সেডিমেন্ট জমা হয় না। এখানে মোংলা, পায়রা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার—সব জায়গায়ই প্রচুর পরিমাণ সেডিমেন্ট জমে। তবে মাতারবাড়ী বন্দর চ্যানেলে খুব বেশি ড্রেজিং প্রয়োজন হবে না। মাতারবাড়ীতে গভীরতা বেশি। ৪০-৫০ ফুটের মতো গভীরতা আছে। সেখানে সেডিমেন্টের বেশি প্রভাব নেই। তবে মাতারবাড়ী ছাড়া অন্য সমুদ্রবন্দরগুলো দেশের জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়াতে পারে। অন্যদিকে এ বিষয়ে চট্টগ্রাম বন্দর সচিব মো. ওমর ফারুক জানান, বে-টার্মিনালের ক্যাপিটাল ড্রেজিংয়ের জন্য বিশ্বব্যাংক লোন দেবে । তবে বন্দর কর্তৃপক্ষ চায় এখানে যেন মেইনটেন্যান্স ড্রেজিং অন্তর্ভুক্ত হয়। তাতে খরচ কেমন হবে এখনই বলা মুশকিল। কারণ তা নির্ভর করবে রেইট অব সিলটেশন বা পলি জমার মাত্রার ওপর। পলি বেশি হলে এক রকম আর কম হলে আরেক রকম। তাছাড়া মাতারবাড়ীতে ১৬ মিটার চ্যানেল আছে। যদিও এখন পর্যন্ত সেখানে ১৬ মিটারের জাহাজ যায়নি। জাহাজ আসছে ১২ মিটার পর্যন্ত। আর মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দরের ক্ষেত্রেও মেইনটেন্যান্স ড্রেজিংয়ের বিষয়টি নিয়ে পলি জমার মাত্রা দেখে ও সমীক্ষা চালিয়ে পরিকল্পনা করা হবে।

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স