ঢাকা , রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫ , ২৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
বিএনপি ক্ষমতার জন্য নয়, গণতন্ত্র উদ্ধারে পাগল-গয়েশ্বর ডেঙ্গু রোগী বেড়েছে সাড়ে ৬ গুণ, মৃত্যু বেড়েছে ৪ গুণ আরও ৩ জনের করোনা শনাক্ত ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি আরও ১৩৭ ইনুর ভয়েস রেকর্ড, ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার অভিযোগ টানা বৃষ্টিতে চড়া সবজির বাজার মাধ্যমিক স্তরে ‘ঝরে পড়া’র প্রবণতা বাড়ার ইঙ্গিত এসএসসির ফল পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন শুরু করবেন যেভাবে পরিবহন খাতে চাঁদাবাজি আগের মতোই চলছে প্রত্যাখ্যান হেফাজতের প্রতিহতের ঘোষণা অবৈধভাবে সমুদ্রপথে ইউরোপ প্রবেশে শীর্ষে বাংলাদেশ দেড় বছরে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে আরও দেড় লাখ রোহিঙ্গা-ইউএনএইচসিআর মালয়েশিয়ায় শ্রমবাজার উন্মুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা অনিশ্চত ধর্ষণ-গণপিটুনিতে হত্যা বেড়েছে জুনে, কমছে না অজ্ঞাত লাশের সংখ্যা-এমএসএফ খুনের পর লাশের ওপর লাফায় ঘাতকরা দেশজুড়ে রোমহর্ষক-বীভৎস হত্যাকাণ্ডে বাড়ছে উদ্বেগ সভ্যতার ইতিহাস আর সৌন্দর্যে মোড়া বিশ্বের সেরা ৭ দুর্গ ইউক্রেনকে অস্ত্র দেবে যুক্তরাষ্ট্র অর্থ দেবে ন্যাটো: ট্রাম্প ভুল স্বীকার করে ক্ষতিপূরণ দিলে আলোচনায় বসবে ইরান পাকিস্তানে ৯ বাসযাত্রীকে অপহরণের পর গুলি করে হত্যা
যুক্তরাষ্ট্র নির্বাচন-২০২৪

পোশাক রফতানিতে যেসব ঝুঁকি দেখছেন ব্যবসায়ীরা

  • আপলোড সময় : ০৪-১১-২০২৪ ০৫:২০:৫৪ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ০৪-১১-২০২৪ ০৫:২০:৫৪ অপরাহ্ন
পোশাক রফতানিতে যেসব ঝুঁকি দেখছেন ব্যবসায়ীরা
আগামী ৫ নভেম্বর যখন লাখ লাখ আমেরিকান ডেমোক্রেটিক ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস অথবা তার রিপাবলিকান প্রতিদ্বন্দ্বী ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ভোট দেবেন, তখন ওয়াশিংটন থেকে প্রায় ১৩ হাজার ১১৯ কিলোমিটার দূরে বাংলাদেশের পোশাক ব্যবসায়ীরা সেই নির্বাচনের ফলাফল নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করবেন।
কারণটি মূলত বাণিজ্যিক স্বার্থ।
যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে তৈরি পোশাকের একক বৃহত্তম ক্রেতা। চীনের পর বাংলাদেশ বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম পোশাক প্রস্তুতকারক।
দেশের পোশাক নির্মাতারা মনে করছেন, বৈশ্বিক পোশাক বাজারের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী চীনকে ঘিরে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যনীতি আগামীতে তাদের ব্যবসার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
এ ছাড়া, ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশের তালিকা আসার পর বাংলাদেশকে নিয়ে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (ডব্লিউটিও) ও অন্যান্য বৈশ্বিক বাণিজ্য সংস্থার ভূমিকাও গুরুত্বপূর্ণ।
দেশের পোশাক রফতানিকারকরা বলছেন, চীনের পণ্যে উচ্চ শুল্ক আরোপের বিষয়ে রিপাবলিকান প্রার্থী ট্রাম্পের পরিকল্পনা বাংলাদেশের পোশাক রফতানি বাড়িয়ে দিতে পারে।
তবে তাদের আশঙ্কা, ট্রাম্পের শাসনামলে ডব্লিউটিওর মতো বহুপাক্ষিক বাণিজ্য সংস্থা সংকটে পড়ার পাশাপাশি বৈশ্বিক রফতানি প্রতিযোগিতা আরও বাড়তে পারে।
গত বছর ১৫ দশমিক ৬২ শতাংশ শুল্ক দিয়ে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রে আট দশমিক ২৭ বিলিয়ন ডলারের পোশাক পণ্য রফতানি করেছে।
ডেমোক্রেটিক ও রিপাবলিকান উভয় প্রশাসনের অধীনে বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রফতানি তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল আছে।
বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) তথ্য অনুসারে, ২০১৭ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ট্রাম্পের শাসনামলে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের পোশাক রফতানির পরিমাণ ১৭ শতাংশ থেকে ১৮ দশমিক ৯০ শতাংশের মধ্যে ওঠানামা করেছিল।
ডেমোক্র্যাটিক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের অধীনে তা খুব বেশি বাড়েনি। রফতানির হার ১৮ দশমিক ১২ শতাংশ থেকে ২১ দশমিক ১৫ শতাংশের মধ্যে থেকেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে এক শীর্ষ পোশাক রফতানিকারক মনে করেন, ট্রাম্পের চীনবিরোধী উদ্যোগে শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশই লাভবান হবে।
তার মতে, চীনা পণ্যে আরও শুল্ক ধরা হলে বাংলাদেশে কার্যাদেশ বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে।
বিজিএমইএর বর্তমান সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলাম বলেন, চীনা পণ্যের ওপর ট্রাম্পের অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের কারণে ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অনেক ক্রেতা বাংলাদেশ ও ভিয়েতনামের মতো দেশ থেকে পণ্য কিনছে।
তিনি আরও বলেন, কমলা নির্বাচিত হলে চীনের জন্য বিদ্যমান মার্কিন শুল্ক বহাল থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশের ব্যবসায় নেতিবাচক প্রভাব না পড়লেও রফতানি খুব বেশি বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ।
তবে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্টের (র‌্যাপিড) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক মনে করেন, ট্রাম্প ও কমলার দৃষ্টিভঙ্গিতে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আসতে পারে।
ট্রাম্প নির্বাচিত হলে বহুপক্ষীয় প্রতিষ্ঠান ও ডব্লিউটিওর মতো সংস্থাগুলো চ্যালেঞ্জে পড়তে পারে।
আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ট্রাম্প হয়তো আরও চীনবিরোধী নীতি নিতে পারেন। যুক্তরাষ্ট্র চীনা পণের ওপর আরও শুল্ক আরোপ করতে পারে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ পরোক্ষভাবে লাভবান হতে পারে। চীন থেকে কার্যাদেশ বাংলাদেশে আসার সম্ভাবনা আছে।
তবে ভূ-রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও মৌলিক বহুপাক্ষিক বাণিজ্য ব্যবস্থাকে দুর্বল করার ফলে চাহিদা কমে যেতে পারে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
র‌্যাপিড চেয়ারম্যানের ভাষ্য, গত তিন-চার বছর ধরে পোশাক পণ্যের চাহিদা কমছে। যুক্তরাষ্ট্রসহ বেশিরভাগ জি-২০ দেশ সংরক্ষণবাদী বাণিজ্যনীতি গ্রহণ করেছে।
তার আশঙ্কা, ২০২৬ সালে বাংলাদেশ যখন স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় আসবে তখন চ্যালেঞ্জ আরও বাড়তে পারে। নিয়মতান্ত্রিক বাণিজ্য প্রভাবিত হতে পারে।
তার মতে, একটি গণতান্ত্রিক দেশ চরম ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা কমিয়ে দিতে পারে। সম্ভবত বহুপাক্ষিক বাণিজ্য ব্যবস্থা রক্ষণাবেক্ষণের মাধ্যমে বাংলাদেশ উপকৃত হবে।
তবে তিনি মনে করিয়ে দেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান স্বার্থ চীনকে নিয়ন্ত্রণ।
আব্দুর রাজ্জাকের মতের সঙ্গে একমত পোষণ করেন পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান মাসরুর রিয়াজ।
তিনি বলেন, ট্রাম্প আগের মেয়াদে চীনা পণ্যের ওপর প্রচুর শুল্ক আরোপ করেছিলেন। পুনর্নির্বাচিত হলে তিনি বেইজিংয়ের বিরুদ্ধে আরও কঠোর ব্যবস্থা নিতে পারেন।
দুই দেশের সম্পর্কের উন্নতি হওয়ায় জেনারেলাইজড সিস্টেম অব প্রেফারেন্সেস (জিএসপি) পুনরুজ্জীবিত করতে বাংলাদেশের উচিত যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা আবার শুরু করা।
২০০৪ সালে মাল্টি-ফাইবার অ্যারেঞ্জমেন্টের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর থেকে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রফতানিতে কোনো শুল্ক অগ্রাধিকার পায়নি।
২০১৮ সালের জানুয়ারিতে ট্রাম্প প্রশাসন চীনা পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করার আগে চীনা রফতানিকারকদের পোশাক রফতানিতে তিন দশমিক শূন্য আট শতাংশ শুল্ক দিতে হতো।
বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) হংকংয়ে মন্ত্রী পর্যায়ের ঘোষণায় বলা হয়েছে, স্বল্পোন্নত দেশগুলোর সব পণ্যের শুল্কমুক্ত বাজার সুবিধা দেওয়ার কথা যুক্তরাষ্ট্রের। অথচ দেশটি মাত্র ৯৭ শতাংশ পণ্যে শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার দিয়েছে।
স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে বাংলাদেশের পোশাক রফতানি ৯৭ শতাংশ শুল্কমুক্ত ক্যাটাগরিতে অন্তর্ভুক্ত করার কথা থাকলেও তা করা হয়নি।
 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স