ঢাকা , বুধবার, ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ , ২৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
মেধাস্বত্ব সংরক্ষণে সেল প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ ইউজিসির বিপুল আমদানিতেও ভোজ্যতেলের বাজার অস্থিতিশীল চিন্ময় দাসের জামিন প্রশ্নে হাইকোর্টের রুল মুক্তিযোদ্ধা তথ্যভাণ্ডার তৈরিতে অনিয়ম এ সরকারও কুমিল্লা থেকে খুনের ইতিহাস শুরু করেছে-শামসুজ্জামান দুদু যুব সমাজ দেশে জীবন ও জীবিকার নিশ্চয়তা পাচ্ছে না-জিএম কাদের ট্রাম্পের শুল্কনীতির অস্থিরতায় বিশ্ব অর্থনীতির ঝুঁকি বাড়ছে সাংবাদিকদের ওপর নির্যাতন বাড়ছে পাচার অর্থ ফেরাতে কানাডার সহযোগিতা চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা ২৩৯৯ কোটি টাকা ব্যয়ে ক্রয় কমিটিতে ১২ প্রস্তাব অনুমোদন প্রশাসন ক্যাডারের তরুণদের হতাশা-ক্ষোভ গুচ্ছে থাকছে ২০ বিশ্ববিদ্যালয় ৯ বছরেও ফেরেনি রিজার্ভ চুরির অর্থ কারাগার থেকে ফেসবুক চালানো সম্ভব নয় ৮ ফেব্রুয়ারি ছয় সংস্কার কমিশনের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশ-আসিফ নজরুল এক সপ্তাহ পর ক্লাসে ফিরলেন তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা কোটায় উত্তাল জাবি সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনব্যবস্থা সমর্থন করছি না-মান্না চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগের ৪৬ নেতাকর্মী গ্রেফতার বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় ধাপের আখেরি মোনাজাত আজ

কচুক্ষেত রণক্ষেত্র

  • আপলোড সময় : ৩১-১০-২০২৪ ০৯:৪৮:৫৪ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ৩১-১০-২০২৪ ০৯:৪৮:৫৪ অপরাহ্ন
কচুক্ষেত রণক্ষেত্র রাজধানীর মিরপুর-১৪ নম্বর কচুক্ষেতে গতকাল বৃহস্পতিবার যৌথ বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষ এক পর্যায়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর ২টি গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয় পোশাকশ্রমিকরা
* পুলিশ ও সেনাবাহিনীর গাড়িতে অগ্নিসংযোগ
* গুলিবিদ্ধ দুই পোশাক শ্রমিক ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি
* সংঘর্ষের পর কচুক্ষেত এলাকায় পরিস্থিতি থমথমে

রাজধানীর মিরপুর ১৪ নম্বরের কচুক্ষেত রোডে গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে বিভিন্ন দাবি নিয়ে রাস্তায় নামে ডাইনা গার্মেন্টসের শ্রমিকরা। এ সময় আন্দোলনরত গার্মেন্টস শ্রমিকরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। আত্মরক্ষার্থে আন্দোলনকারীদের ওপর পুলিশ লাঠিচার্জ করে। সংঘর্ষে দুই পোশাক শ্রমিক আল আমিন ও ঝুমা আক্তার গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তাদের ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ সময় শ্রমিকরা সেনাবাহিনী ও পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেয়। ওই এলাকায় যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে গার্মেন্ট শ্রমিকদের দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, গুলি ও টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপে কচুক্ষেত এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন কাফরুল থানার ওসি কাজী গোলাম মোস্তফা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গতকাল বৃহস্পতিবার ডায়না গার্মেন্টসের শ্রমিকরা বিভিন্ন দাবিতে মিরপুর ১৪ নম্বরের কচুক্ষেত সড়কে রাস্তা গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৮টায় অবরোধের চেষ্টা করে বিক্ষোভ করে। এ সময় পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা শ্রমিকদের শান্ত করতে গেলে তাদের ওপর ইট পাটকেল ছুড়তে থাকে আন্দোলনকারীরা। আত্মরক্ষার্থে আন্দোলনকারীদের ওপর পুলিশ গুলি ও লাঠিচার্জ করে। এসময় কচুক্ষেতের মিলি সুপার মার্কেট এলাকায় আন্দোলনরত দুই পোশাক শ্রমিক গুলিবিদ্ধ হয়। তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গুলিবিদ্ধ দুই শ্রমিক হলো আল-আমিন (১৭) ও রুমা আক্তার (১৫)। রুমা আক্তারের ডান পায়ে এবং আল-আমিনের কাঁধে গুলি লেগেছে।
 এ সময় শ্রমিকরা সেনাবাহিনী ও পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সাথে গার্মেন্টস শ্রমিকদের দফায় দফায় গুলি, টিয়ারশেল ও লাঠিচার্জে কচুক্ষেত এলাকায় রণক্ষেত্র পরিণত হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সেনাবাহিনী পুরো এলাকায় যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়। পরে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ১৪ নম্বর থেকে সেনানিবাসমুখী সড়কে যান চলাচল শুরু করা হয়। এ সময় পুলিশ ও সেনাবাহিনীর দুটি রেকার এসে পুড়ে যাওয়া গাড়ি দুটি সরিয়ে নেয়া হয়। গুলিবিদ্ধ আল-আমিনের বাবা আব্দুর রহমান বলেন, আমার ছেলে ক্রিয়েটিভ ডিজাইনার পোশাক কারখানার শ্রমিক।  বৃহস্পতিবার সকালে পোশাক শ্রমিকরা বকেয়া বেতনের দাবিতে আন্দোলন করলে তা তীব্র হয়। পরে একসময় দুজন গুলিবিদ্ধ হয়। তাদের উদ্ধার করে ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে আসার পর চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. ফারুক জানান, রাজধানীর মিরপুর-১৪ এলাকা থেকে দুজন পোশাক শ্রমিক গুলিবিদ্ধ হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এসেছেন। তাদের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
ফায়ার সার্ভিস নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ডিউটি অফিসার লিমা খানম বলেন, কচুক্ষেত এলাকায় সেনাবাহিনীর একটি গাড়ি এবং পুলিশের একটি লেগুনায় আগুনের খবর পেয়ে আমাদের দুটি ইউনিট আগুন নির্বাপণ করে।
কাফরুল থানার ওসি কাজী গোলাম মোস্তফা বলেন, বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা পুলিশ ও সেনাবাহিনীকে লক্ষ্য করে ইট পাটকেল ছুড়ে মারে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে লাঠিপেটা ও কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়া হয়েছে। একপর্যায়ে পোশাক শ্রমিকেরা সেনাবাহিনী ও পুলিশের গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক।  সেনাবাহিনী ও পুলিশ ঘটনাস্থলে রয়েছে। 
ভাষানটেক থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ মোহাম্মদ ফয়সাল বলেন, কচুক্ষেত এলাকায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই রাস্তায় ছিল। পোশাক শ্রমিকরা হঠাৎ করে তাদের আন্দোলন থেকে পুলিশ ও সেনাবাহিনীকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। এক পর্যায়ে তারা সেনাবাহিনী ও পুলিশের গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয়। এখন পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। সেনাবাহিনী ও পুলিশ স্পটে রয়েছে।
পুলিশের মিরপুর বিভাগের উপ-কমিশনার মাকসুদুর রহমান বলেন, কচুক্ষেত্র এলাকায় কয়েকটি গার্মেন্টেসের শ্রমিকরা কর্মবিরতি পালন করছিল। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই তারা রাস্তায় নেমে আসে। তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট পাটকেল ছোড়ে। এই অবস্থায় তাদের নিয়ন্ত্রণ করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও শক্তি প্রয়োগ করে। এই গাড়ি দুটি এখানেই ছিল, যতদূর জেনেছি আমরা-শ্রমিকরাই আগুন দিয়েছে। তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। কোনো সংশ্লিষ্টতা না থাকলে ছেড়ে দেয়া হবে।
 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স