দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তারা জেলা প্রশাসক বা ডিসি হতে পারবেন না। কর্মজীবনে কোনো প্রকার শাস্তি হলে ডিসি হতে পারবেন না। বরং নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী দক্ষ ও যোগ্য কর্মকর্তাকে জেলা প্রশাসক বা ডিসি হিসেবে নিয়োগ করা হবে। এজন্য করা হচ্ছে নতুন নীতিমালাও। তাতে আর থাকছে না ডিসি ফিটলিস্ট। তবে পিএসসির মেধা তালিকা প্রাধান্য পাবে। কর্মজীবনে দক্ষরা অগ্রাধিকার পাবেন। রাজনৈতিক তদবির বন্ধ হবে। ওই লক্ষ্যে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় খসড়া নীতিমালা তৈরি করছে। সূত্র জানায়, ডিসি হতে সহকারী কমশিনার (এসিল্যান্ড), উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অথবা এডিসি হিসেবে কমপক্ষে ৩ বছর মাঠে কাজ করার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। কাজের অভিজ্ঞতা পর্যবেক্ষণ করা হবে। এর মধ্যে কর্মজীবনে কী পরিমাণ কাজ দ্রুত এবং সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করেছেন তার মূল্যায়ন করা হবে। কর্মজীবনে সৃজনশীল কাজ থাকলে তাও বিবেচনায় নেয়া হবে। সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ চিঠি তা কাজের নির্দেশনা কে কত দ্রুত এবং দক্ষতার সঙ্গে সম্পন্ন করেছেন তাও দেখা হবে। একই সঙ্গে কর্মজীবনে জনসাধারণ মোকাবিলার অভিজ্ঞতাও বিবেচনায় নেয়া হবে। পিএসসির মেধা তালিকার সঙ্গে এসব কিছু যুক্ত করে এবং এসিআর বিবেচনায় নিয়ে সম্পূর্ণ দক্ষ ও যোগ্য কর্মকর্তাদের ডিসি হিসেবে নিয়োগ দেয়া হবে। সূত্র আরো জানায়, নতুন নীতিমালা চূড়ান্ত হলে কাউকে ফিটলিস্টের জন্য পরীক্ষা দিতে আসতে হবে না। তাতে কর্মকর্তাদের সময়ের অপচয় বন্ধ হবে এবং সরকারের অর্থের সাশ্রয় হবে। এই পরীক্ষায় অংশ নিতে প্রতি বছর শতাধিক কর্মকর্তাকে টিএ, ডিএ প্রদান করতে হয়। এ ছাড়া মাঠ প্রশাসন থেকে কোনো কর্মকর্তা ঢাকায় পরীক্ষা দিতে আসতে ৩-৪ দিন অফিস করতে পারেন না। এতে কাজের অপচয় হয়। একই সঙ্গে ফিটলিস্ট পরীক্ষা নেয়া শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তাদেরও শ্রমঘণ্টা নষ্ট হয়। নতুন নীতিমালায় ডিসি নিয়োগের জন্য রাজনৈতিক তদবিরও থাকবে না। এদিকে একজন সাবেক সচিব জানান, আগে শুধু মৌখিক পরীক্ষার ভিত্তিতে তালিকা তৈরি করে প্রধানমন্ত্রীর কাছে সার-সংক্ষেপ পাঠানো হতো। প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের পর ওই তালিকা থেকে ডিসি নিয়োগ দেয়া হতো। কিন্তু ২০১৪ সালে তা পরিবর্তন করা হয়। জেলা প্রশাসকরা কেন্দ্রীয় সরকারের জেলার প্রতিনিধি। সেক্ষেত্রে স্মার্ট ও যোগ্য কর্মকর্তাদের ডিসি হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার লক্ষ্যে এই পদ্ধতি আধুনিকায়ন করা হয়। সেক্ষেত্রে চাকরি জীবনে অবশ্যই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ এডিসি পদে (সিনিয়র স্কেল পদে) কমপক্ষে দুই বছর দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতা থাকলে এবং এসিআর ভালো থাকলে, বিভাগীয় মামলা না থাকলে, কোনো দুর্নীতির অভিযোগ না থাকলে তিনি ডিসি ফিটলিস্টের পরীক্ষা দেওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেন। এর পর ডিসি ফিটলিস্টের পরীক্ষার পদ্ধতিতে আধাঘণ্টার কোনো একটা বিষয়ভিত্তিক প্রেজেনটেশন তৈরি করে তা উপস্থাপন করতে বলা হয়। এই প্রেজেনটেশনে উপস্থিত কর্মকর্তাবৃন্দ (অডিয়েন্স) বিভিন্ন প্রশ্ন করেন এবং তার জবাব দিতে হয়। ওই সময় প্রার্থীর গেটআপ, উচ্চারণ, শব্দ চয়ন ইত্যাদি বিষয়ের ওপর নম্বর প্রদান করা হয়। এর পর গ্রুপ ডিসকাশন। চারজনের একটি গ্রুপ করে এই আলোচনার ওপরও নম্বর প্রদান করা হয়। এর পর তাদের মৌখিক পরীক্ষা নেয়া হয়। মৌখিক পরীক্ষার পর গোয়েন্দা রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করে সার-সংক্ষেপ তৈরি করে প্রধানমন্ত্রীর (প্রধান উপদেষ্টা) কাছে পাঠানো হয়। প্রধানমন্ত্রী অনুমোদন এবং গোয়েন্দা রিপোর্ট সন্তোষজনক হলে তাদের মধ্যে থেকে ডিসি পদায়ন করা হয়।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

আসছে নতুন পরিকল্পনা
নিয়োগ পাবেন দক্ষ যোগ্য কর্মকর্তারা
- আপলোড সময় : ০৯-১০-২০২৪ ১২:৫০:২৫ পূর্বাহ্ন
- আপডেট সময় : ০৯-১০-২০২৪ ১২:৫০:২৫ পূর্বাহ্ন


কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ