রফতানিকারক এবং বন্দর কর্তৃপক্ষের তথ্য
* রফতানিকারকরা প্রতিদিন পোর্ট ড্যামারেজ গুনার অভিযোগ করেছে
* সার্ভার জটিলতা তৈরি হওয়ায় অনলাইনে জাহাজ আসার ঘোষণা প্রদান, নিবন্ধনে জটিলতা তৈরি হয়
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সার্ভার জটিলতায় চট্টগ্রাম বন্দরের জেটিতে জাহাজ প্রবেশ ও পণ্য খালাসে জটিলতা দেখা দিয়েছে। রফতানিকারকরা প্রতিদিন পোর্ট ড্যামারেজ গুনার অভিযোগ করেছে। জানা যায়- গত ২০ সেপ্টেম্বর আপগ্রেড করা হয় আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের আন্তর্জাতিক সফটওয়্যার অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড। এর পর থেকেই এনবিআরের সার্ভারে জটিলতা দেখা দিচ্ছে। আপগ্রেডেশনের ১০ দিনেও ধীরগতি হওয়ায় অনলাইনে জাহাজ আসার ঘোষণা প্রদান, নিবন্ধন এবং চট্টগ্রাম বন্দরের জেটিতে জাহাজ প্রবেশ ও পণ্য খালাসে জটিলতা তৈরি হয়েছে। রফতানিকারক এবং বন্দর সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, এনবিআরের সার্ভারের জটিলতা না কমলে চট্টগ্রাম বন্দরে আবারো জাহাজ ও কনটেইনারজটের আশঙ্কা রয়েছে। আর ছাত্র-জনতার আন্দোলনের কারণে জুলাই-আগস্ট মাসজুড়ে বন্দরের ইয়ার্ডগুলোতে ৪০ হাজারের ওপরে কনটেইনার থাকায় বন্দরে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছিলো। এক মাসেরও বেশি সময় পর চট্টগ্রাম বন্দরে কমতে শুরু করেছিল জাহাজ ও কনটেইনারজট। এখন বহির্নোঙরে চার-পাঁচ দিন অপেক্ষার পরই একটি জাহাজ বন্দরে ভিড়তে পারছে। যদিও এক মাস আগে একটি জাহাজ সপ্তাহেও জেটিতে ভিড়তে পারতো না। কিন্তু এখন সার্ভার সমস্যা আবারো জাহাজ ও কনটেননারজট বাড়ার দিকে নিয়ে যাচ্ছে। সূত্র জানায়, অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ডের মাধ্যমে অনলাইনে কাস্টমস বিভাগ সারাদেশে আমদানি পণ্যের তথ্য নিয়ে কাজ হয়ে থাকে। এই ওয়ার্ল্ডে বিদেশ থেকে আমদানি পণ্য কিসে আসছে, কী পরিমাণ আসছে, কোন জাহাজে আসছে, কোন কনটেইনারে আসছে, এর ট্যাক্স কত হবে, রাজস্ব বোর্ডের পাওনা পরিশোধ করা হয়েছে কি না সব ধরনের তথ্য থাকে। ফলে এক জায়গায় তথ্যের অমিল হলে সব জায়গায় ব্যবসায়ীদের ভোগান্তির শিকার হতে হয়। এর ব্যবহারকারী শিপিং এজেন্ট, আমদানিকারক, বাংলাদেশ ফ্রেইট ফরওয়ার্ডার (বাফা), কাস্টম ও বন্দরের সবাই। ১৯৯৫ সালে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য গতিশীল করার লক্ষ্যে অটোমেশনের যাত্রা শুরু হয়। আর ২০১৩ সাল থেকে কাস্টমে অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড পদ্ধতি চালু হয়।
সূত্র জানায়, শিপিং এজেন্ট আইজিএ (ইমপোর্ট জেনারেল ম্যানিফেস্টো) দাখিলের পর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসাইকুডা সিস্টেমে অনলাইনে বিল অব এন্ট্রি দাখিল করে। অনলাইনে দাখিল করা তথ্যের সঙ্গে কাগুজে নথি যাচাই-বাছাই শেষে রাজস্ব কর্মকর্তা আমদানি-রপ্তানি চালানের শুল্কায়ন করেন। যদিও সার্ভারের সমস্যার কারণে গত ১০ দিন ধরেই খুব সীমিত কাজ হয়েছে। লগইন করে বিল অব এন্ট্রিতে ক্লিক করলে রেড এরর আসছে। অনেক ক্ষেত্রে আমদানির গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সিস্টেম থেকে গায়েব হয়ে যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে নিবন্ধন না হওয়ায় বহির্নোঙরে রয়েছে খাদ্যশস্য, সার ও এলপিজিবোঝাই বেশ কয়েকটি জাহাজ। চট্টগ্রাম বন্দরের জেটিতে জাহাজ প্রবেশে ও কার্গো জাহাজ থেকে পণ্য খালাস নিয়ে শিপিং এজেন্ট ও আমদানিকারকরা উৎকণ্ঠায় আছেন। শুল্কায়ন কার্যক্রম বিঘ্নিত হওয়ায় বন্দর থেকে পণ্য ডেলিভারি নিতে না পারায় আমদানিকারকদের লোকসান গুনতে হচ্ছে। এদিকে বাংলাদেশ ফ্রেইট ফরোয়ার্ডার অ্যাসোসিয়েশনের (বাফা) ভাইস প্রেসিডেন্ট খায়রুল আলম সুজন জানান, অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড সফটওয়্যারটি আপগ্রেডের পর থেকেই তা ধীর হয়ে গেছে। ফলে এখন আমদানিকারকরা সঠিক সময়ে পণ্য খালাস করতে না পারলে বন্দরের ড্যামারেজ গুনতে হবে। তারা ক্ষতির মুখে পড়বে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্য খালাসে ধীরগতি লোকশানে আমদানিকারকা
- আপলোড সময় : ০৮-১০-২০২৪ ০২:২৯:৫৪ অপরাহ্ন
- আপডেট সময় : ০৮-১০-২০২৪ ০২:২৯:৫৪ অপরাহ্ন


কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ