ঢাকা , মঙ্গলবার, ০৮ জুলাই ২০২৫ , ২৪ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
গণপিটুনিতে থামছে না হত্যাকাণ্ড ওয়ালটনের প্যাসেঞ্জার কার ব্যাটারি গ্রাভিটন উদ্বোধন করলেন কন্ঠশিল্পী তাহসান জুলুমের প্রতিবাদ করায় যাত্রী ফারুক এর উপর বাস স্টাফদের হামলা পুষ্টি কর্মসূচি শিশুস্বাস্থ্যে পরিবর্তন আনতে পারে যশোরে ১১ আ’লীগ নেতার আদালতে আত্মসমর্পণ ময়মনসিংহে ডাম্পট্রাক-অটোরিকশা সংঘর্ষে চালকসহ নিহত ২ হবিগঞ্জে ১৪৪ ধারা ভেঙে সংঘর্ষ, ভাঙচুর-লুটপাট স্মার্ট পর্যটন ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য কাজ করছে আটাব-আরেফ মালয়েশিয়ায় আটকদের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য চেয়েছে সরকার প্রেসিডেন্ট গার্ড রেজিমেন্টের সুবর্ণজয়ন্তী উদ্বোধন করলেন রাষ্ট্রপতি উৎপাদনশীলতার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে ইলেকট্রনিক্স শিল্পখাত আ’লীগ সরকারের সুবিধাভোগী জসিম মোল্লা এখন বিএনপি নেতা ঢাকার রাস্তায় দেশীয় প্রযুক্তির ট্রাফিক সিগন্যাল বাতি বসানোর উদ্যোগ ঝিকরগাছা উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয়ের হিসাবরক্ষকের খুটির জোর কোথায় ? দেশ গঠনে কোনও আপস করবো না -নাহিদ এবার অস্ত্র মামলায় রিমান্ডে সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সাংবাদিকের প্রতি অসম্মানজনক আচরণের প্রতিবাদ বিশিষ্ট নাগরিকদের মালয়েশিয়ায় শ্রমবাজার হারানোর শঙ্কা পোরশায় ইসলামী আন্দোলনের গণসমাবেশ বাংলাদেশী ইব্রাহিমের লাশ তিনদিন পর ফেরত দিল বিএসএফ

শ্রমিক অসন্তোষে হুমকিতে উৎপাদনমুখী শিল্প

  • আপলোড সময় : ০৪-১০-২০২৪ ০৬:৩৫:৩৪ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ০৪-১০-২০২৪ ০৬:৩৫:৩৪ অপরাহ্ন
শ্রমিক অসন্তোষে হুমকিতে উৎপাদনমুখী শিল্প

* অপরাধী দমনে পদক্ষেপের অভাব দেশের সামগ্রিক ব্যবসায়িক পরিবেশ বিপর্যস্ত করবে
* পরিস্থিতি আরও খারাপ হলে বাজারে পণ্য সরবরাহ ঠিক থাকবে না
* শ্রমিকরা সহিংস হয়ে ওঠায় আতঙ্কিত কারখানা মালিকরা


দেশের উৎপাদনমুখী বিভিন্ন শিল্প-কারখানায় শ্রমিক অসন্তোষ মারাত্মক আকার ধারণা করেছে। হামলা ও ভাঙচুরের কারণে ব্যাহত হচ্ছে উৎপাদন। দাবি মেনেও মিলছে না নিস্তার। অচল হয়ে পড়েছে অনেক কারখানা। ফলে রফতানিকারক ও স্থানীয় পণ্য উৎপাদকরা সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে হিমশিম খাচ্ছেন।
কারখানা মালিকরা বলছেন, উৎপাদন বাধাগ্রস্ত হওয়ায় ভোগ্যপণ্যের সরবরাহে ঘাটতি দেখা দিতে পারে। আমদানিকারক দেশগুলোতে সময়মতো পণ্য সরবরাহ করতে সমস্যায় পড়বেন রফতানিকারকরা। শুধু তাই নয়, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা ও অগ্নিসংযোগের কারণে ব্যবসায়ীরা কারখানা বন্ধ করে দেয়ায় শ্রমিকরাও চাকরি হারাতে পারেন। দীর্ঘস্থায়ী অস্থিরতা ও অপরাধীদের দমনে যথাযথ পদক্ষেপের অভাব দেশের সামগ্রিক ব্যবসায়িক পরিবেশকে বিপর্যস্ত করে তুলবে বলে মনে করেন ব্যবসায়ীরা।
শেখ হাসিনার পলায়ন ও আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর পুলিশের অনুপস্থিতিতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটে। পরবর্তী সময়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়ার পরও সার্বিক অবস্থার খুব বেশি উন্নতি হয়নি। আগস্টের শেষ দিকে পুনরায় অস্থির হয়ে ওঠে শিল্পাঞ্চল। শ্রমিকরা বিভিন্ন দাবি নিয়ে রাস্তায় নেমে আসে। শিল্প মালিকরা শ্রমিকদের অধিকাংশ যৌক্তিক দাবি পূরণে সম্মত হলেও থামেনি সহিংস অস্থিরতা। বিশেষ করে তৈরি পোশাক শিল্প এবং কিছু কিছু ভোগ্যপণ্যের কারখানায়।
শিল্পের মালিকরা বলছেন, কোনো যৌক্তিক কারণ ছাড়াই শ্রমিকরা সহিংস হয়ে ওঠায় আমরা আতঙ্কিত। গত মাসে আমরা শ্রমিকদের বিক্ষোভের মুখোমুখি হয়েছিলাম, যা উৎপাদন ব্যাহত করেছিল।
ভোগ্যপণ্য প্রস্তুতকারকদের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন উদ্যোক্তা বলেন, বর্তমান পরিস্থিতি আরও খারাপ হলে বাজারে পণ্য সরবরাহ করা আমাদের পক্ষে খুব কঠিন হবে। রফতানিমুখী উৎপাদকরা চরম উদ্বেগের মধ্যে আছেন। কারণ তাদের নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে পণ্য পাঠাতে হবে। যদি শ্রমিকদের অস্থিরতা অব্যাহত থাকে এবং এটি উৎপাদন ব্যাহত করে তাহলে ক্রেতারা ছাড় চাইবেন কিংবা উড়োজাহাজের মাধ্যমে তাদের পণ্য পাঠাতে হবে। এতে তাদের আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে বলে দাবি করেন এ ব্যবসায়ী।
একটি কোম্পানি হিসেবে আমরা অন্যদের চেয়ে বেশি বেতন দেই এবং কোনো বকেয়া নেই। হঠাৎ শ্রমিকরা ১২ দফা দাবি পেশ করলে ১১ দফাই পূরণ করি। তা সত্ত্বেও তারা বিক্ষোভ করে। বহিরাগতদের উসকানিতে কিছু শ্রমিক কারখানা ভাঙচুর করে। ফলে উৎপাদন বন্ধ করে দেয়া হয়। ভাঙচুর ও লুটপাটের কারণে প্রায় ছয় কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। বলছিলেন কোকোলা ফুড প্রোডাক্টস লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক (স্পেশাল অ্যাফেয়ার্স) মো. মহসিন। বেতন বাড়ানোর দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বলেছি জানুয়ারিতে মজুরি বাড়িয়েছে এবং প্রতিশ্রুতি দিয়েছি আগামী জানুয়ারিতে আবার বাড়ানো হবে। বলছিলেন এই ব্যবসায়ী। তিনি বলেন, শ্রমিকদের অসন্তোষের কারণে আমাদের উৎপাদন ১০-১২ দিনের জন্য বন্ধ ছিল। প্রতিদিন কয়েক কোটি টাকার উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। যদি অস্থিরতা নিয়ন্ত্রণ করা না হয়, তাহলে আমরা সরবরাহ নিশ্চিত করতে পারবো না। কারণ এটি উৎপাদন বাধাগ্রস্ত করে।
৫ আগস্টের পর শিল্পাঞ্চলের বিভিন্ন অংশে অস্থিরতা দেখা দিলেও আমরা তা নিয়ন্ত্রণ করেছি। তবে আরও অস্থিরতা বন্ধে পদক্ষেপ না নিলে স্থানীয় বাজারে খাদ্যসামগ্রীর সরবরাহ নিশ্চিত করা খুবই কঠিন হবে বলে জানান বাংলাদেশ অ্যাগ্রো-প্রসেসরস অ্যাসোসিয়েশনের (বাপা) সাধারণ সম্পাদক মো. ইকতাদুল হক। শিল্প ও অর্থনীতির স্বার্থে সরকারের উচিত ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করা, তা না হলে রফতানি ও স্থানীয় বাজারে মারাত্মক প্রভাব পড়বে বলেও জানান তিনি।
সময়সীমার মধ্যে ক্রেতাদের কাছে পণ্য পাঠাতে হয় বলে ভোগ্যপণ্য রফতানিকারকরা গভীর উদ্বেগের মধ্যে আছেন। একজন রফতানিকারক দাবি করেছেন, যদি নতুন করে অস্থিরতা দেখা দেয় তাহলে উৎপাদন বাধাগ্রস্ত হবে এবং নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে পণ্য রফতানি করতে সমস্যায় পড়তে হবে। বিশ্বব্যাপী ক্রেতারা আমাদের ওপর আস্থা হারাবে। তাই কঠোর পদক্ষেপ নিয়ে অস্থিরতা নিয়ন্ত্রণের এখনই সময়।
 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স