ঢাকা , বুধবার, ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ , ২৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
হেরা ফেরি ৩-তে ফিরছেন টাবু বাশার-তিশার নতুন রোমান্সের গল্প ‘বসন্ত বৌরি’ ওজন কমাতে সার্জারি, প্রাণ গেল মেক্সিকান ইনফ্লুয়েন্সারের ‘স্কুইড গেম’ অভিনেত্রী লি জু-শিল আর নেই বিচ্ছেদের পর ফের নতুন প্রেম খুঁজছেন মালাইকা অরোরা? দেশের প্রেক্ষাগৃহে ‘বলী’ আসছে ৭ ফেব্রুয়ারি হামলার পর প্রথমবার জনসমক্ষে সাইফ আলী খান অবশেষে প্রকাশ্যে এলো চিত্রনায়িকা পপির স্বামী-সন্তানসহ ছবি সমালোচনা সহ্য না হলে উপদেষ্টা পদ ছেড়ে রাজনৈতিক দল করেন-রিজভী লালমনিরহাটে বিয়ে করে ফেরার পথে বরের মৃত্যু পুঁজি রক্ষার আন্দোলনে বিনিয়োগকারীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা কমাতে, একীভূতকরণে নজর দেয়ার সুপারিশ বিদেশি বিনিয়োগ কমেছে আরও কমার আশঙ্কা বান্দরবান সীমান্তে মাইন বিস্ফোরণে কিশোরের পা বিচ্ছিন্ন ট্রেনের ধাক্কায় ট্রাকের চালক সহকারী নিহত জগন্নাথ হলে সরস্বতী পূজামণ্ডপ পরিদর্শনে দুই উপদেষ্টা রমজান মাসে গ্যাস বিদ্যুতের বড় সংকটের শঙ্কা বাংলাদেশকে সহায়তা করছে ব্রিটিশ সংস্থা তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের ধৈর্য ধরতে হবে-নাহিদ ইসলাম লোকজনকে অতিষ্ঠ করে ফেলছে তিতুমীরের শিক্ষার্থীরা-স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর

কুমিল্লা জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী নাসরুল্লাহ’র সম্পদের পাহাড়

  • আপলোড সময় : ৩০-০৯-২০২৪ ১২:৪১:৩০ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ৩০-০৯-২০২৪ ১২:৪১:৩০ পূর্বাহ্ন
কুমিল্লা জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী নাসরুল্লাহ’র সম্পদের পাহাড়
কুমিল্লা জেলার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ নাসরুল্লা’র বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি ও লুটপাট করে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন বলে একটি অভিযোগ দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এর অফিসে জামা পড়েছে। দুদকের কর্মকর্তারা তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছেন। এইতো মধ্যে দুদকের হাতে তার সম্পদের কিছু হিসাব চলে এসেছে। আরও তদন্ত চলছে দুদকের।
জানা গেছে, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিফতরের (ডিপিএইচই) কুমিল্লা শাখাও ছিল কামালের নিয়ন্ত্রণে। মো. তাজুল ইসলাম এলজিআরডি মন্ত্রী থাকাকালে সাড়ে পাঁচ বছর শুধু কুমিল্লায় ডিপিএইচইয়ের হাজার কোটি টাকার কাজ হয়েছে। প্রতিটি কাজের ঠিকাদার নিয়োগ দিতেন কামাল। প্রতিটি কাজ থেকে ১০% কমিশন নিতেন। আর এর সহযোগী ছিলেন ডিপিএইচই কুমিল্লার নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ নাসরুল্লাহ। তিনিও নামে-বেনামে প্লট, ফ্ল্যাটসহ কোটি কোটি টাকার মালিক বনে যান। অভিযোগ রয়েছে, ২০২২ সালের ২৬ জুলাই কার্যাদেশ দেয়া কাজ মাত্র চার দিনে অর্থাৎ ৩০ জুলাই শেষ হয়ে যায়। আড়াই কোটি টাকার এ কাজ স¤úিন্ন ও চূড়ান্ত বিল প্রদানের মতো হরিলুট করেছেন এ কর্মকর্তা ও মন্ত্রীর সহচর কামাল। জানা গেছে, প্রকল্পটি ছিল ২০২১-২২ অর্থবছরে পল্লী অঞ্চলে পানি সরবরাহের। এ কাজের দরপত্র আইডি-৭০৮৬৪২, প্যাকেজ নম্বর ছিল ভিডব্লিউএসপি-১৯৯৮/৫। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী কার্যাদেশ প্রদানের চার দিনের মাথায় কোনোরূপ কাজ সম্পাদন না করে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান মেসার্স রুদ্র কনস্ট্রাকশনের নামে চূড়ান্ত বিল প্রদান করা হয়। যে টাকা তিনি আত্মসাৎ করেছেন। ওই প্রকল্পের প্যাকেজে ১০০ গভীর নলকূপ ও ১০০ আয়রন রিমুভাল প্লান্ট স্থাপনকাজে কমপক্ষে ছয় মাস সময়ের প্রয়োজন। সেখানে মাত্র চার দিনে কাজ সম্পন্ন ও চূড়ান্ত বিল প্রদান নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। এ ছাড়া তিনি ঠিকাদারদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলামের নাম ভাঙিয়ে কার্যাদেশের ১০ শতাংশ টাকা গ্রহণ করতেন। জানা গেছে, সারা দেশে ১০ শতাংশ লেসে কাজ হয়। কিন্তু মন্ত্রীর পিএস কামাল হোসেন প্রভাব খাটিয়ে ওই কাজ ১০ শতাংশ ঊর্ধ্বদরে পাস করিয়ে নিতেন।
দুদক সূত্র আরও জানায়, সাবেক স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলামের উন্নয়ন সমন্বয়ক মো. কামাল হোসেনকে ৫০ লাখ টাকার বিনিময়ে কুমিল্লাতে বদলি হন মোহাম্মদ নাসরুল্লাহ। তিনি একজন ৯ম গ্রেডের কর্মকর্তা হওয়া সত্ত্বেও মন্ত্রীর প্রভাব খাটিয়ে ৫ম গ্রেডে নির্বাহী প্রকৌশলী পদে জনস্বাস্থ্যে চাকরি করতেছেন। বর্তমানে তার মূল বেতন প্রায় ৪০ হাজার টাকা অর্থাৎ সরকারি চাকুরি সময় থেকে অদ্যবধি তার মোট বৈধ আয় প্রায় ২০.০০ লক্ষ টাকা। কুমিল্লাতে আসার পর প্রায় পাঁচ শতাধিক টেন্ডারের মাধ্যমে শত কোটি টাকার বেশি কমিশন বানিজ্য করেন। নিম্নে নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নাসরুল্লাহ কার্যাদেশ প্রদানের মাত্র ৪ দিনের মধ্যে আড়াই কোটি টাকার কাজ সম্পন্ন ও চূড়ান্ত বিল প্রদানের মাধ্যমে হরিলুট করেছেন। আশ্চর্য ও অসম্ভবের বিষয় হলেও তিনি সেটি করেছেন লুটপাটের স্বার্থে। কুমিল্লা জেলার ২০২১-২০২২ অর্থ বছরে পল্লী অঞ্চলে পানি সরবরাহ প্রকল্পের একটি কাজে কার্যাদেশ প্রদানের ৪ দিনের মাথায় কোনরুপ কাজ সম্পাদন না করে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স রুদ্র কনস্ট্রাকশন এর নামে চূড়ান্ত বিল প্রদান করে সরকারের সম্পূর্ণ টাকা তিনি আত্মসাৎ করেছেন। যেখানে উক্ত প্যাকেজে ১০০টি গভীর নলকূপ ও ১০০টি আয়রন রিমুভাল প্লান্ট স্থাপন কাজে কমপক্ষে ৬ মাস সময়ের প্রয়োজন সেখানে তিনি কিভাবে মাত্র চার দিনে কাজ সম্পন্ন ও চূড়ান্ত বিল প্রদান করেন। এতে করে বুঝা যাচ্ছে যে, তিনি উক্ত প্রকল্পে কেমন ভয়াবহ দুর্নীতি করেছেন। অপর এই চারটি প্যাকেজ বাবদ অবশ্য তিনি ঠিকাদারদের অগ্রিম পানি পরীক্ষার চালান জমা ও মালামাল পরীক্ষা করান যা আদৌ কাজ হয় নাই। দরপত্রেও অনিয়মে দরপত্র আইডি ৭০৮৬৪২ এর প্রাক্কলিত মূল্য প্রায় ২.৫০ কোটি এবং অপর চারটি দরপত্র আইডি (৭০৮৬৩৭,৭০৮৬৩৮, ৭০৮৬৩৯, ৭০৮৬৪১) এর প্রাক্কলিত মূল্য প্রায় ১ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। অথচ ঠিকাদারের আনুকূল্য প্রদান ও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের নাম ব্যবহার করে বিল উত্তোলন করে আত্মসাতের উদ্দেশ্যে ৭০৮৬৪২-এ একক কাজের অভিজ্ঞতা চাওয়া হয় মাত্র ১ কোটি ৪০ লাখ, যেখানে অন্য চারটি আইডিতে অভিজ্ঞতা চাওয়া হয় ১ কোটি ৭৫ লক্ষ। এতে করে তিনি পিপিআর-২০০৮ বিধির প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করেছেন। আরো উল্লেখ্য এই যে, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স রুদ্র কনস্ট্রাকশন এর সনদ অনুযায়ী একক কাজের অভিজ্ঞতা চাওয়া হয়।
জানা গেছে, উক্ত সনদও কাজ চূড়ান্ত হওয়ার পূর্বেই প্রদান করেন। প্রাক্কলিত মূল্য ১ কোটি ৯৫ লক্ষ এর অভিজ্ঞতার সনদ চাওয়া হয় ১ কোটি ৭৫ লক্ষ এবং প্রাক্কলিত মূল্য ২ কোটি ৫০ লক্ষ এর অভিজ্ঞতার সনদ চাওয়া হয় ১ কোটি ৪০ লক্ষ, যা মেসার্স রুদ্র কনস্ট্রাকশন এর একক কাজের সনদ। এতে করে বুঝা যাচ্ছে যে, সরকারি অর্থ আত্মসাতের উদ্দেশ্যে তিনি পছন্দের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের নাম ব্যবহার করে বিল উত্তোলন করেছেন। তাছাড়াও উক্ত কাজে (দরপত্র আইডি ৭০৮৬৪২) টার্ণওভার ৫ বছরে ১১ কোটি চাওয়া হয়েছে, যা মেসার্স রুদ্র কনস্ট্রাকশন এর রয়েছে ৭.৫০ কোটি। রুদ্র কনস্ট্রাকশন এর টার্ন ওভারে বিভিন্ন কাজের সার্টিফিকেট অন্য ঠিকাদারের কাগজে নির্বাহী প্রকৌশলী নাসরুল্লাহ নিজে স্বাক্ষর করে রুদ্র কনস্ট্রাকশনের নামে দিয়ে দেয়। ইজিপিতে যা তদন্ত করলে পাওয়া যাবে। অধিকতর তদন্ত করলে সরকারি অর্থের এই ভয়াবহ লুটপাটের বিষয়টি জাতির সামনে পরিষ্কার হয়ে যাবে।
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর, কুমিল্লা জেলায় ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরে সমগ্রদেশে নিরাপদ পানি সরবরাহ প্রকল্পে প্রায় ৫০০০ টি নলকূপ বরাদ্দ হয়েছে। উক্ত বরাদ্দের প্রেক্ষিতে ৩১টি প্যাকেজ দরপত্রের আহ্বান করা হয়। তাছাড়াও উক্ত ঠিকাদারের ২৫টি কাজের মধ্যে ১৬ টি কাজ (৫০ কোটি টাকার) পাশ করে দেয়া হয়েছে। ব্যাংকের লাইন অফ ক্রেডিট ব্যাংক কর্তৃক ৯টি কাজ করে ২য় নিম্নদরদাতাকে দেয়া হয়েছে। যাহা বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলার নং-৪৬, তারিখঃ ১৩/১০/২০২১ মোতাবেক সম্পূর্ণটাই অনৈতিক। কামাল এন্টারপ্রাইজের নামের কাজগুলি নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নাসরুল্লাহ ওয়াক অর্ডারের ৪% কমিশনের বিনিময়ে তিনি এই কাজগুলি বিভিন্ন ঠিকাদারের কাছে বিক্রি করেছেন যা তদন্ত করলে উঠে আসবে।
এছাড়াও তিনি ঠিকাদারদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করে প্রধান প্রকৌশলী সাইফুর রহমান, প্রকল্প পরিচালক তুষার মোহন সাধু খাঁ, স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলামের নাম ভাঙ্গিয়ে কার্যাদেশের ১০% টাকা গ্রহণ করে তিনি নিজে আত্মসাৎ করেন। জানা গেছে, সারা বাংলাদেশে ১০% খবং এ কাজ হয়। কিন্তু মন্ত্রীর সমন্বয়ক কামাল হোসেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলামের প্রভাব খাটিয়ে উক্ত কাজ ১০% উর্ধ্ব দরে পাশ করিয়ে নেয়। তাছাড়া নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নাসরুল্লাহ স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলামের প্রভাব খাটিয়ে বিভিন্ন কাজে অনিয়ম চালিয়ে আসছে। সমগ্রদেশ প্রকল্পের এই ১২টিসহ মোট ১৭ টি দরপত্রে প্রায় ৫ কোটির টাকার লেনদেন হয়। অর্থ আত্মসাতের উদ্দেশ্যে সাইট প্রস্তুত না করে দরপত্র আহ্বান করার ফলে অদ্যবধি কোন কাজ শুরু করতে পারে নাই। কনস্ট্রাকশন এর নামে কার্যাদেশ প্রদান করা হয়। একক অভিজ্ঞতা অনুযায়ী মেসার্স রুদ্র কনস্ট্রাকশন এর কোন অভিজ্ঞতার সনদ নাই। যা ইজিপিতে তদন্ত করলে পাওয়া যাবে।
অপর একটি সূত্র জানায়, কুমিল্লা আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের দালালের সহকারী ছিলেন মো. কামাল হোসেন। মাত্র কয়েক বছরের ব্যবধানে তিনি এখন শত শত কোটি টাকার মালিক। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সাবেক মন্ত্রী তাজুল ইসলামের সান্নিধ্যে এসে যেন আলাদিনের চেরাগ হাতে পেয়েছেন তার কথিত উন্নয়ন সমন্বয়কারী ও ব্যক্তিগত সহকারী (পিএস) পরিচয় দেয়া মো. কামাল হোসেন। টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, জমি দখল, সালিশ বৈঠক, ঠিকাদারি কাজে অনিয়ম, থানায় তদবিরসহ নানা দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর কৌশলে আত্মগোপনে চলে যান কামাল। একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছেন, তিনি দুবাইয়ে রয়েছেন।
জানা যায়, কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ উপজেলার লক্ষণপুর গ্রামের কৃষক নূর মোহাম্মদের ছেলে কামাল হোসেন কুমিল্লা আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে এক দালালের সহকারী হিসেবে কাজ করতেন। প্রায় ১১ বছর আগে কুমিল্লার তৎকালীন সংসদ সদস্য তাজুল ইসলামের সঙ্গে পরিচয়ের মাধ্যমে তার ভাগ্যের চাকা বদলে যেতে থাকে। ২০১৮ সালে তাজুল ইসলাম স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রীর দায়িত্ব পেলে তাকে মন্ত্রীর উন্নয়ন সমন্বয়ক হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয় বলে কামাল প্রচার করতে থাকেন। কামাল কুমিল্লা এলজিইডি অফিসের টেন্ডারবাজির নিয়ন্ত্রণ, ঠিকাদারি, মন্ত্রীর কমিশন বাণিজ্য এবং অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে ফুলে-ফেঁপে উঠতে থাকেন। মাস্টার এন্টারপ্রাইজ নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে লাকসাম-মনোহরগঞ্জ এলজিইডির বেশির ভাগ ঠিকাদারি বাগিয়ে নিতেন। কোটি কোটি টাকার কাজ কমিশন নিয়ে সাব কন্ট্রাক্টে দিতেন। তার বিরুদ্ধে ৯ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০২৩ সালের ২৩ নভেম্বর দুদক কুমিল্লার সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক পাপন কুমার সাহা বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। দুদকের অনুসন্ধানে তার নিজ নামে স্থাবর ও অস্থাবর মিলিয়ে ১৫ কোটি ১৭ লাখ ৮৯ হাজার ২৫৫ টাকার সম্পদের তথ্য পাওয়া যায়।
দুদকসূত্র জানান, তার পারিবারিক ব্যয়, পরিশোধিত কর, অপরিশোধিত দায়সহ ১৭ কোটি ১৩ লাখ ৯৯ হাজার ২৬ টাকার নিট সম্পদ পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ৮ কোটি ২০ লাখ ২১ হাজার ৮০ টাকার সম্পদের বৈধ উৎস পাওয়া গেছে। আর ৮ কোটি ৯৩ লাখ ৭৭ হাজার ৯৪৬ টাকার সম্পদের কোনো বৈধ উৎস পাওয়া যায়নি। এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, কুমিল্লার আদর্শ উপজেলায় তার নামে ১০ তলায় দুটি ফ্লোর ও ছয় তলা ভবন, কুমিল্লা সদরসহ বিভিন্ন জায়গায় ৫০০ শতক জমি, টয়োটা হ্যারিয়ার গাড়ি এবং ব্যাংকে গচ্ছিত ৮ কোটি টাকার বেশি সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে। তবে স্থানীয়রা বলছেন, কামালের বিপুল সম্পদের সিকিভাগও দুদকের তদন্তে আসেনি। তার কুমিল্লার হাউজিং এস্টেটে একাধিক বাড়ি, কান্দিরপাড় এলাকায় বিগ বাজার সুপার মার্কেট, একই এলাকায় অনেক ফ্ল্যাট, ঢাকায় ফ্ল্যাট ও প্লট এবং কৃষি ও অকৃষি জমির তথ্য বের করতে পারেনি দুদক। স্থানীয়রা জানান, শুধু কুমিল্লা শহরেই কামালের ২০০ থেকে ৩০০ কোটি টাকার সম্পদ রয়েছে। তার মোট সম্পদের পরিমাণ ৬০০ কোটি টাকার বেশি। তারা তার এসব অবৈধ সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার দাবি জানিয়েছেন।
দুদক কুমিল্লার উপপরিচালক ফজলুর রহমান বলেন, ঠিকাদার কামাল হোসেনের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। তার বিষয়ে তদন্ত অব্যাহত আছে। এ বিষয়ে অভিযুক্ত কামাল হোসেনের বক্তব্য নেয়ার চেষ্টা করা হলেও আত্মগোপনে থাকায় তা সম্ভব হয়নি। তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটিও বন্ধ রয়েছে। এদিকে ৫ আগস্ট দেশের পট পরিবর্তনের পর কামাল কৌশলে দুবাই পাড়ি জমিয়েছেন। একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স