ঢাকা , মঙ্গলবার, ০৩ জুন ২০২৫ , ১৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
সরকারি চাকরি আইন বাতিলের দাবিতে সচিবালয়ে বিক্ষোভে কর্মচারীরা ওসি প্রদীপ ও লিয়াকতের মৃত্যুদণ্ড ৬ জনের যাবজ্জীবন বহাল কালো টাকা সাদা করার বিধান সংস্কারের সম্পূর্ণ বিপরীত-টিআইবি দূরত্ব ঘুচিয়ে চমৎকার জুলাই সনদ তৈরির প্রত্যাশা প্রধান উপদেষ্টার সারাদেশে একযোগে ২৫২ বিচারককে বদলি টেকসই অর্থনীতির বাজেট এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বঞ্চনার গল্প যেন অরণ্যেরোদন চাকরি অধ্যাদেশ বাতিলে ৩ উপদেষ্টাকে স্মারকলিপি দিলেন কর্মচারীরা রাষ্ট্র সংস্কারে উপেক্ষিত নারী তারেক রহমানসহ সব আসামির খালাসের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি শেখ হাসিনার আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু-আইন উপদেষ্টা শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামানের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি প্রথমবারের মতো বিটিভির স্টুডিও থেকে হচ্ছে বাজেট ঘোষণা ঘাটতি কমানোর লক্ষ্য নিয়ে নতুন বাজেট আজ দুধ শুধু পণ্য নয় এটি সংস্কৃতির অংশÑ মৎস্য উপদেষ্টা রাঙামাটিতে টানা বৃষ্টি পাহাড় ধসের ঝুঁকি সিলেটে টিলা ধসে একই পরিবারের ৪ জনের মৃত্যু বিজিএমইএ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় পেয়েছে ‘ফোরাম’ প্যানেল বাংলাদেশি যুবককে গুলি করে লাশ নিয়ে গেছে বিএসএফ জাপা চেয়ারম্যানসহ ২৮০ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে হত্যা চেষ্টার মামলা

নোয়াখালীতে এখনো পানিবন্দি ১২ লাখ মানুষ

  • আপলোড সময় : ২১-০৯-২০২৪ ১২:৫২:২৬ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ২১-০৯-২০২৪ ১২:৫২:২৬ পূর্বাহ্ন
নোয়াখালীতে এখনো পানিবন্দি ১২ লাখ মানুষ
নোয়াখালী প্রতিনিধি
নোয়াখালীতে এখনো প্রায় ১২ লাখ মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে। দৈনন্দিন কাজে যেতে আসতে ভুগতে হচ্ছে নানা বিড়ম্বনা। পানি মাড়িয়ে তাদের চলাচল করতে হচ্ছে। ফলে বানভাসীরা ভুগছে নানান ধরনের পানিবাহিত রোগে। জেলার ৮ টি উপজেলার গ্রামীণ রাস্তাঘাট, স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসার মাঠসহ বিভিন্ন স্থানে রয়েছে বন্যার পানি। কোথাও হাঁটু সমান, আবার কোথাও তার চেয়ে একটু কম। প্রায় এক মাসেরও বেশি সময় ধরে পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে জেলাবাসী। জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তার কার্যালয়ের সূত্রে জানা যায়, জেলাতে বন্যাকবলিত বিভিন্ন উপজেলায় ১২ লাখ ৬৫ হাজার ৩০০ মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছেন। এসব এলাকার ৩৬১টি অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে বর্তমানে ৩৫ হাজার ৮৩৪ জন বানভাসি রয়েছে। নোয়াখালী পৌরসভার ৩ নং ওয়ার্ডের লক্ষীণারায়নপুর গ্রামের ইমাম উদ্দিন বলেন, আমাদের বাড়ির রাস্তায় অনেক দিন ধরে পানি জমে আছে। নামার জায়গা নেই। আশাপাশের পুকুর জলাশয় ভরাট। তাই সহজেই জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি পাচ্ছি না। হরিনারায়নপুর গ্রামের গোলাম হোসেন বলেন, প্রতিদিন পানি মাড়িয়ে অফিসে যেতে হয়। ঘর থকে যাওয়ার সময় নরমাল কাপড় পরে বাহির হই। অফিসে গিয়ে সেটা পাল্টে অফিসিয়াল ড্রেস পড়ি। আসার সময় আবার নরমাল ড্রেস পড়ে বাহির হই। এভাবে প্রায় মাসখানেক চলছে। এজাজ আহমেদ নামে একজন পৌরবাসী বলেন, শহরের পানি নিষ্কাশনের মূল পয়েন্ট ছাগলমারা খাল। সেটি প্রভাবশালী একটি মহল দখল করে গড়ে তুলেছে স্বর্ণকার পাড়া। বহুতল ভবন হওয়ায় পানি নিষ্কাশন হচ্ছেনা। এর ফলে পুরো শহর জুড়ে রয়েছে জলাবদ্ধতা। আশা করি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিশেষ নজর দিবে। আজিুজর রহমান নামে আরেকজন বলেন, শহরের জলাবদ্ধতায় পৌরসভা কর্তৃপক্ষ দায় এড়াতে পারেন না। তারা বর্ষা মৌসুম শুরুর আগে ড্রেন-খাল-নালা-জলাশয় কিছুই সংস্কার করেনি। ফলে অতি বৃষ্টির কারণে ভারী জলাবদ্ধতার দেখা দেয়। পরে তা বন্যায় রুপ নেয়। যা এখনও আছে। কবির হোসেন নামে একজন নিম্ন আয়ের কর্মজীবী জানান, পানিবন্দি অবস্থায় খুবই দুর্বিষহ সময় কাটছে। ঘরে পানি ওঠার পর পরিবার নিয়ে পাশের একটি বহুতল ভবনে আশ্রয় নিয়েছিলেন। ঘর থেকে পানি নেমে যাওয়ার পর ফিরে আসেন। বন্যায় ঘরের মেঝেসহ অনেক মালামাল নষ্ট হয়ে গেছে। অনেক কষ্টে ঘরটি বসবাসযোগ্য করতে হয়েছে। কিন্তু ঘরের চারদিকে পানি না কমায় ভোগান্তি শেষ হচ্ছে না। ঘর থেকে বাহির হলেই ময়লা কাদাযুক্ত পানি। পরিবারের সবার পায়ের অবস্থা খুবই খারাপ। তবুও জীবিকার তাগিদে বের হতে হয়। সায়েদ আলী নামে আরেকজন বলেন, আমাদের বাড়িতে ২০টি পরিবারের বসবাস। পূর্ব পুরুষ থেকে এই বাড়ির সবাই এক সাথে থাকে। মুরুব্বী যারা বেঁচে আছেন, তারা বলছেন এমন বন্যা আর কখনো দেখেননি। পুরো বাড়ির সবাই এক সাথ হয়ে পাশের স্কুলের আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছি। যাওয়ার সময় এক কাপড়ে গিয়েছি। কিছু নেওয়ার সময়ও পায়নি। এমন ভাবে হুহু করে পানি প্রবেশ করেছে, কোনো রকমে পরিবারের ছোট সদস্যদের নিয়ে ছুটে গিয়েছি আশ্রয়কেন্দ্রে। আশরাফ হোসেন নামে একজন বলেন, ঘরের সামনে এখনও প্রচুর পানি। সেই পানির সঙ্গে পুকুর-নালা-ডোবা, খাল-বিল- বাথরুমের ময়লা পানি মিশে একাকার। বাধ্য হয়ে এসব পানি মাড়িয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। অনেকে পানিবাহিত রোগে ভুগছে। বানভাসিদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, পানি নিষ্কাশনের জন্য বেশ কয়েকটি খাল স্থানীয় প্রশাসন ও স্বেচ্ছাসেবীদের উদ্যোগে পরিষ্কার করা হয়েছে। এর পরও পানি নামছে খুবই ধীরগতিতে। এর মধ্যে আবার মাঝখানে টানা দু’দিন বৃষ্টির কারণে জলাবদ্ধতা আরও বেড়ে গেছে। নতুন করে প্রায় সাড়ে তিন হাজার মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে হয়েছে। জেলা প্রশাসক খন্দকার ইসতিয়াক আহমেদ বলেন, আমি যোগদান করেছি মাত্র কয়েকদিন হলো। জলাবদ্ধতার বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখছি। উপজেলাগুলো ঘুরে দেখেছি। জলাবদ্ধতা নিরসনে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স
প্রতিবেদকের তথ্য