ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ , ২০ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
রাজধানীতে বকেয়া বেতনের দাবিতে শ্রমিকদের সড়ক অবরোধ আমতলীতে প্রকাশিত সংবাদের গুরুত্ব ধামাচাপা দিতে গিয়ে সুপারের সংবাদ সম্মেলন গাজীপুরে সন্ত্রাসী সুমন শেখের টর্চার সেলে পুলিশের অভিযান, গ্রেফতার ৩ ডিজিটাল হচ্ছে বিনিয়োগকারীদের নিরাপত্তা ছাড়পত্র গণধর্ষণের হুমকি দেওয়া আলী হুসেন ঢাবি থেকে বহিষ্কার নির্বাচন সামনে রেখে ৪ হাজার এএসআই নিয়োগ দেওয়া হবে-আইজিপি মাতারবাড়ী মহেশখালীকে সাংহাই সিঙ্গাপুরের মতো দেখতে চাই-আশিক চৌধুরী মহেশখালী-মাতারবাড়ীতে নতুন শহরের জন্ম হবে পল্টন মোড় অবরোধ গণঅধিকার পরিষদের জাতীয় পার্টির রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ চেয়ে ইসিতে আবেদন আগস্টে সড়ক, রেল ও নৌ-পথ দুর্ঘটনায় নিহত ৫৬৩ নির্বাচন বানচালে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র হতে পারে-ডা. জাহিদ রাষ্ট্রপতির সঙ্গে নবনিযুক্ত ২৫ বিচারপতি সাক্ষাৎ রাষ্ট্রনিযুক্ত শেখ হাসিনার আইনজীবী অসুস্থ, জেরা হয়নি রাজসাক্ষীর ফেরারি আসামিকে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা রংপুরে জ্বালানি তেলের সংকট, কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি কেরানীগঞ্জ-৩ আসন ঘিরে সরব রাজনৈতিক অঙ্গন চট্টগ্রামে স্থানীয়দের সঙ্গে পর্যটকদের সংঘর্ষ আহত ১৫ ৯০ দিনের মধ্যে তদন্তের নির্দেশ লোহালিয়া নদীতে মিলল ২ যুবকের লাশ
আগুন থেকে বাঁচতে পানির জন্য হাহাকার

মেহেরপুরে পুকুর ভরাট করে কংক্রিটের ভবন উঠছে

  • আপলোড সময় : ১৫-০৯-২০২৪ ১২:২২:৫৭ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১৫-০৯-২০২৪ ১২:২২:৫৭ পূর্বাহ্ন
মেহেরপুরে পুকুর ভরাট করে কংক্রিটের ভবন উঠছে
মেহেরপুর থেকে দিলরুবা খাতুন
মেহেরপুর জেলায় গত দুই বছরে চাষযোগ্য সমতল জমিতে দুই শতাধিক পুকুর খনন হয়েছে গ্রাম পর্যায়ে। যা জেলার মাছের চাহিদা পূরণ করে দেশের মানুষের প্রোটিন চাহিদা পূরণে ভূমিকা রাখছে। জেলা শহরে ৬৫টি পুকুর ছিলো।
৬০টি পুকুর ভরাট করে আবাসিক ভবন নির্মিত হয়েছে। অন্যগুলো এখনো দখল বা ভরাট করে ভবন নির্মিত না হলেও পানিশূন্য।
জলাধার ভরাট করে অট্টালিকা নির্মাণ বা মেহেরপুরকে কংক্রিটের শহরে রূপান্তর করে এখন শহরবাসী আগুন থেকে বাঁচতে পানির জন্য হাহাকার করছে। পৌর এলাকায় একযুগ আগেও ৬৫টি পুকুরে বার্ষিক ১৬০ মেট্রিক টন মাছ উৎপাদন হতো। যা পৌরবাসীর প্রোটিন চাহিদা পূরণে ভূমিকা রাখতো। পুকুর ভরাটের কারণে মাছ উৎপাদনও বন্ধ হয়ে গেছে। ফায়ার সার্ভিসও আইনগতভাবে পুকুর ভরাট বন্ধে ভূমিকা রাখতে পারে। কিন্তু তারাও পুকুর ভরাট বন্ধে এ পর্যন্ত কোন ভূমিকা রাখেনি।
প্রাকৃতিক জলাধার সংরক্ষণে আইন থাকলেও তার ছিটে ফোঁটাও প্রয়োগ নেই। যে যার ক্ষমতা দিয়ে জলাধারগুলো ভরাট করে ফেলেছে। ফলে পানির উৎস দিন দিন কমছে। সরকারি জরিপ অনুযায়ী, জেলায় জনসংখ্যা বৃদ্ধিতে আবাসন চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় গত তিন দশকে সরকারি ও বেসরকারি পুকুর ভরাট করা হয়েছে। যে কটি খাল ও পুকুর এখনো দখল বা ভরাট হয়নি, সেগুলো ময়লা-আবর্জনার স্তুপে ঠাসা।
ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে সংরক্ষিত পানির বাইরে পানির বড় উৎস না পাওয়ায় আগুন নেভাতে গিয়ে বিপাকে পড়েন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। মেহেরপুর সদর উপজেলায় ৯৯৪টি পুকুর থাকলেও সেগুলো জনবসতি এলাকা থেকে দুরে। সেগুলোতে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে মাছ চাষ হয়। ফলে অগ্নিকাণ্ডের সময় কোন কাজে আসেনা সেসব জলাধার। মেহেরপুর পৌর এলাকায় ৬৫টি পুকুর থাকলেও কোনটির অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়, সরকারি কলেজ, পুলিশ লাইনে পুকুর থাকলেও সেগুলোতে কোন পানির অস্তিত্ব নেই।
পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী আবু হেনা মোস্তফা কামাল জানান- পুকুর ভরাট করে অনেকেই ভবন নির্মানে নক্সা অনুমোদনের জন্য আবেদন করেন। পুকুর থাকায় নক্সা অনুমোদন করা হয়না। কিন্তু ঢাকা থেকে অনুমোদন নিয়ে আসে। তখন পৌরসভার কিছুই করার থাকেনা। এ কারণেই শহরে যেসব পুকুর ছিল, সেগুলো আর নেই।
পুকুর ভরাট করে ভবন নির্মানের অনুমোদন না পাওয়া নুর হোসেনের অভিযোগ- নগর উদ্যানের পূর্বদিকে পৌরসভার নিজস্ব একটি পুকুর ছিলো। পৌর পানিশাখার অফিস নির্মানের প্রয়োজনে ওই পুকুর ভরাট করে পাকা স্থাপনা করা হয়েছে। তাহলে  পৌর নাগরিকদের জন্য পৃথক আইন চরমভাবে বিমাতাসুলভ। 
 মেহেরপুর জেলা ফায়ার সার্ভিসের উপ পরিচালক সাকরিয়া হায়দার জানান- চলতি বছরে সদর উপজেলায় ৭৪টি অগ্নিকান্ড ঘটেছে। পানির অভাবে আগুন নিয়ন্ত্রণ করতে বেগ পেতে হচ্ছে। নিজস্ব দুটি গাড়িতে সাড়ে ৮শ লিটার পানি ধারণ ক্ষমতা। ছোট খাটো অগ্নিকান্ড এই রিজার্ভ পানিই যথেষ্ট। বড় অগ্নিকাণ্ডের সময় তাদের পানির জন্য বিপাকে পড়তে হয়। তিনি আরও বলেন- অগ্নিকান্ডের খবর পাবার সাথে সাথে ঘন্টা বাজানো হয়। কেউ নামাজে থাকলেও নামাজ ছেড়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে গাড়ি নিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে যায়। পথে যেটুকু দেরি হয় তাহচ্ছে জেলা শহরের সরুপথে জ্যাম থাকার কারণে। অগ্নিকাণ্ডর নিকটবর্তী স্থানে জলাধারের অভাব অপরদিকে শহরের সরুপথ আগুন নিয়ন্ত্রণে আমাদের ফায়ার সার্ভিসের জন্য অন্তরায়।  
আইনের ফাঁক গলিয়ে কীভাবে পুকুর ভরাট হচ্ছে, তারও উদাহরণ হিসেবে পৌর মেয়র মাহফুজুর রহমান রিটন বলেন,    জলাধার রক্ষা আইন অমান্য করলে যে সাজা দেয়া হয় তা খুবই কম। একটি পুকুর ভরাট করে যদি কয়েক কোটি টাকার সুবিধা পাওয়া যায়, কয়েক লাখ টাকা জরিমানা করা হলেও অনেকেই পুকুর ভরাট করে জরিমানা গুনবে। এ জন্য ২০০০ সালে আইন হওয়ার পরও অনেক পুকুর ভরাট হয়েছে। সরকারি প্রতিষ্ঠানের তত্বাবধানের যেসব পুকুর ও জলাধার আছে, সেগুলোও ভরাট হচ্ছে।
 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স
প্রতিবেদকের তথ্য

সর্বশেষ সংবাদ