ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫ , ৯ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের নিয়ম উল্টে দিতে পারবেন ট্রাম্প? শেখ হাসিনাকে গ্রেফতারে রেড অ্যালার্ট জারি রোবট অলিম্পিয়াডে সোনাসহ ১০ পদক জিতলো বাংলাদেশ ভোমরা সীমান্তে যৌথ মাপ-জরিপ স্থগিত বিএসএফের কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ, বিজিবির বাধা মালয়েশিয়া পাচারের সময় ১৭ রোহিঙ্গাসহ আটক ২০ শিশুখাদ্যে ভ্যাট, ক্ষুব্ধ অভিভাবকরা শ্রীলঙ্কায় টেনিস টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের কাব্য সেমিতে জেলফেরত শীর্ষ সন্ত্রাসীরা জড়িয়ে পড়ছে অপরাধে বৈষম্যবিরোধীদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে মারামারি নারীসহ আহত ৭ আরএফএলর ২০ হাজার পণ্যের সমাহার পুলিশের সব ইউনিটে একই পোশাক থাকবে- ডিএমপি কমিশনার ঢেলে সাজানো হচ্ছে বিচার বিভাগ টিকা না পেয়ে সড়কে অবস্থান প্রবাসীদের কেন ভ্যাট বাড়ানো হলো কিছুদিন পর জানা যাবে কোটাবিরোধী সমালোচনায় আওয়ামী লীগ কোটায় বেকায়দায় সরকার জব্দ অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা উদ্ধারের প্রস্তুতি দুর্নীতি চুরি ব্যক্তিগত স্বার্থ ছাড়া আমলাদের কোনো চিন্তা নেই-মির্জা ফখরুল মঙ্গলে নভোচারী পাঠানো ও পানামা খাল দখলের ঘোষণা
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ এখন পর্যন্ত অনুমানমূলক

  • আপলোড সময় : ১৪-০৯-২০২৪ ০৩:৪১:১৫ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১৪-০৯-২০২৪ ০৩:৪১:১৫ অপরাহ্ন
শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ এখন পর্যন্ত অনুমানমূলক
ভারতে অবস্থানরত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাংলাদেশে প্রত্যর্পণের প্রশ্নটি এখন পর্যন্ত অনুমানমূলক (হাইপোথিটিক্যাল) বলে উল্লেখ করেছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। গত বৃহস্পতিবার সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জ্যাসওয়াল। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ব্রিফিংয়ের বিবরণী অনুসারে, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস-এর সাংবাদিক ইয়েসি মুখপাত্রের কাছে জানতে চান, বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক মাসেরও বেশি সময় ধরে ভারতে আছেন। তাকে প্রত্যর্পণের বিষয়ে বাংলাদেশি কিছু কর্মকর্তার মন্তব্যের খবর পাওয়া গেছে। এই বিষয়ে ভারতের সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো যোগাযোগ করা হয়েছে বা মৌখিক নোট পেয়েছে? এছাড়া, এখানে শেখ হাসিনার আনুষ্ঠানিক স্ট্যাটাস কী? তিনি কি রাজনৈতিক আশ্রয়ে রয়েছেন নাকি এই বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে? একটি স্পষ্টতার বিষয়ে জানতে চাই, তিনি কতদিন ভারতে থাকতে পারবেন? এই বিষয়ে কোনো কূটনৈতিক সীমাবদ্ধতা আছে কি? জবাবে মুখপাত্র রণধীর জ্যাসওয়াল বলেছেন, প্রণয় আপনি প্রত্যর্পণ নিয়ে প্রশ্ন করেছেন। দেখুন, এই বিষয়ে আমরা আগেও বলেছি, বর্তমান প্রেক্ষাপটে এটি একটি অনুমানমূলক প্রশ্ন। আমি আগের সংবাদ সম্মেলনেও এ বিষয়ে আপনার প্রশ্নের জবাব দিয়েছি। সুতরাং, এখন পর্যন্ত প্রত্যর্পণের এই প্রশ্নটি আমাদের দৃষ্টিতে নিতান্তই অনুমানমূলক এবং আমরা এই জাতীয় প্রশ্নের উত্তর দেই না। এই ধরনের অনুমানমূলক প্রশ্নের উত্তর দেওয়া আমাদের চর্চায় নেই। মুখপাত্র আরও বলেছেন, আপনি যে স্ট্যাটাসের কথা বলেছেন, বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী একটি নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে, স্বল্প নোটিশে ও তার নিরাপত্তার জন্য এখানে এসেছিলেন। এর বাইরে জানানোর মতো আমার কাছে আর কোনো তথ্য নেই। ব্রিফিংয়ে বার্তা সংস্থা পিটিআইয়ের সাংবাদিক জানতে চান, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূস সম্প্রতি কিছু মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, ভারতে অবস্থান করে হাসিনার রাজনৈতিক মন্তব্য এক ধরনের অবন্ধুত্বসূলভ আচরণ ও তাকে চুপ থাকতে হবে। তিনি আরও বলেছিলেন, আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য সব রাজনৈতিক দলকে একটি ইসলামি দল হিসেবে চিত্রিত করার যে আখ্যান, ভারতকে অবশ্যই সেটি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। এগুলো ড. ইউনূসের বেশ কড়া মন্তব্য। এই মন্তব্যগুলোকে আপনি কীভাবে দেখছেন? জবাবে জ্যাসওয়াল বলেন, দেখুন, বাংলাদেশের প্রতি আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি আমি আগেও স্পষ্ট করেছি এবং আজও ইয়েশির প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার সময় আমি স্পষ্ট করে বলেছিলাম যে, অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান উপদেষ্টা ও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানের সঙ্গে আমাদের হাইকমিশনার সাক্ষাৎ করতে গিয়েছিলেন। তখন ভারত উভয় দেশের জনগণের সমৃদ্ধি, নিরাপত্তা ও উন্নয়নের আশা-আকাক্সক্ষা পূরণে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করে যাবে বলে জানিয়েছিলেন। তিনি আমাদের নিজ নিজ জাতীয় অগ্রাধিকার অনুযায়ী সম্পর্ককে এগিয়ে নেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলেন। তাই বর্তমানে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি এমনই। উল্লেখ্য, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে ভারতে চলে যান শেখ হাসিনা। এখনও ভারতে অবস্থান করছেন তিনি। এর আগে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূস ভারতীয় বার্তা সংস্থা পিটিআইকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ভারতে কেউই শেখ হাসিনার অবস্থানে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছে না। আমরা তাকে ফেরাতে চাই। তিনি ভারতে আছেন এবং মাঝে মাঝে তিনি কথা বলছেন, যা সমস্যাজনক। তিনি চুপ থাকলে মানুষ এটাকে ভুলে যেত। কিন্তু ভারতে বসে তিনি কথা বলছেন, নির্দেশ দিচ্ছেন যা কেউ পছন্দ করছে না। এই বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মঙ্গলবার জার্মানির বার্লিনে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেছিলেন, আপনারা জানেন, বাংলাদেশে সরকার পরিবর্তন হয়েছে। আমরা স্পষ্টতই এই সরকারের সঙ্গে কাজ করছি। এটি আমরা কূটনৈতিক চ্যানেলের মাধ্যমে করি, সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে নয়।
বাংলাদেশ ও আদানিকে নিজেদের মধ্যে বসে সমস্যা সমাধানের পরামর্শ: বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে বসে বিদ্যুতের বকেয়া-বিষয়ক সমস্যা সমাধানে আদানি গোষ্ঠীকে পরামর্শ দিয়েছে ভারত। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ব্রিফিংয়ের বিবরণী অনুসারে, দ্য হিন্দুর সাংবাদিক গোড্ডায় আদানির প্রকল্পের বিষয়ে বাংলাদেশ সরকার গোড্ডা বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ক্রয় চুক্তি পর্যালোচনার বিষয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনের কথা ইঙ্গিত করে জানতে চান, আপনি কি মনে করেন আদানি গ্রুপের সঙ্গে প্রকল্পটি পর্যালোচনা করার অধিকার বাংলাদেশ সরকারের রয়েছে? এছাড়া, আপনি কি মনে করেন, এটি ভারত সরকারের পাশাপাশি বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে কিছু বোঝাপড়ার লঙ্ঘন হবে? জবাবে মুখপাত্র বলেন, আপনি যেটি উল্লেখ করছেন তা একটি বেসরকারি প্রকল্প। এটি দুটি পক্ষের মধ্যে ক্রেতা-বিক্রেতার চুক্তিতে আবদ্ধ। একটি পক্ষ যেটি ভারতীয় ও অপর পক্ষ বাংলাদেশি। তাই, এই চুক্তি থেকে তারা কী চায় তা উভয় পক্ষেরই সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয়। এটি একটি ক্রেতা-বিক্রেতাৃএটি একটি বেসরকারি লেনদেনের বিষয়। সুতরাং তারা যদি এই বিশেষ লেনদেনের চুক্তিতে থাকেন তবে, তাদের বসতে হবে ও সমস্যাগুলো সমাধান করতে হবে। গত বৃহস্পতিবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাদেশের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শীর্ষ কর্মকর্তার বরাতে এক প্রতিবেদনে দাবি করেছেন, বিদ্যুৎ সরবরাহকারী আদানি পাওয়াসহ ভারতের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যক্রম পর্যালোচনা করবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শীর্ষ কর্মকর্তা বলেছিলেন, ভারতীয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর বিশেষ করে আদানি গ্রুপের কার্যক্রম পর্যালোচনা করা হবে। কী ধরনের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে; এর শর্তগুলো কী-এসব নিয়ে। কারণ বিদেশি কোনো কোম্পানি বাংলাদেশের আইন অমান্য করতে পারবে না। তিনি আরও বলেন, এই তদন্তের মূল লক্ষ্য ভারতীয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে লক্ষ্যবস্তু বানানো নয়। বরং বাংলাদেশ আসলে আদানি পাওয়ারকে কত টাকা দিচ্ছে, সেটা যৌক্তিক কিনা, সেসব প্রশ্নের জবাব খোঁজা হবে। উল্লেখ্য, বিদ্যুৎ-জ¦ালানি খাতের আদানি গ্রুপের একটি প্রতিষ্ঠান আদানি পাওয়ার। ২০১৭ সালের ৫ নভেম্বর বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের ও আদানি পাওয়ার (ঝাড়খণ্ড) লিমিটেড (এপিজেএল)-এর মধ্যে বিদ্যুৎ কেনার চুক্তি হয়। ২৫ বছরের জন্য ১ হাজার ৪৯৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি (পিপিএ) স্বাক্ষর করে তারা। চুক্তির আওতায় বাংলাদেশকে বিদ্যুৎ দিতে ভারতের ঝাড়খণ্ডের গড্ডায় বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করে আদানি পাওয়ার। এখনও সেখান থেকে বিদ্যুৎ আমদানি করছে ঢাকা। গত ৯ সেপ্টেম্বর ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, আদানি বাংলাদেশকে বকেয়া ৫০০ মিলিয়ন ডলার না পাওয়ার কথা জানিয়েছে। এদিকে, ব্রিফিংয়ে অপর এক সাংবাদিক ভারত, নেপাল ও বাংলাদেশের মধ্যে ট্রানজিট সংক্রান্ত ত্রিপক্ষীয় চুক্তির বর্তমান জানতে চাইলে মুখপাত্র বলেন, আপনি জানেন, বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য এই বিশেষ ত্রিপক্ষীয় চুক্তিটি কিছুদিন আগে করা হয়েছিল। এটির সঠিক কার্যকারিতা, প্রযুক্তিগত বিবরণ, ইত্যাদি নিয়ে আমি এখনই আপনাকে আপডেট দিতে পারছি না। তবে আমার মনে হয়, এই বিশেষ চুক্তিটি চলমান রয়েছে ও এটি কাজ করছে। তবে আমি এই বৈঠক শেষে শিগগিরই আপনাকে আপডেট জানাব।
 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স