ঢাকা , বুধবার, ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ , ২৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
মেধাস্বত্ব সংরক্ষণে সেল প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ ইউজিসির বিপুল আমদানিতেও ভোজ্যতেলের বাজার অস্থিতিশীল চিন্ময় দাসের জামিন প্রশ্নে হাইকোর্টের রুল মুক্তিযোদ্ধা তথ্যভাণ্ডার তৈরিতে অনিয়ম এ সরকারও কুমিল্লা থেকে খুনের ইতিহাস শুরু করেছে-শামসুজ্জামান দুদু যুব সমাজ দেশে জীবন ও জীবিকার নিশ্চয়তা পাচ্ছে না-জিএম কাদের ট্রাম্পের শুল্কনীতির অস্থিরতায় বিশ্ব অর্থনীতির ঝুঁকি বাড়ছে সাংবাদিকদের ওপর নির্যাতন বাড়ছে পাচার অর্থ ফেরাতে কানাডার সহযোগিতা চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা ২৩৯৯ কোটি টাকা ব্যয়ে ক্রয় কমিটিতে ১২ প্রস্তাব অনুমোদন প্রশাসন ক্যাডারের তরুণদের হতাশা-ক্ষোভ গুচ্ছে থাকছে ২০ বিশ্ববিদ্যালয় ৯ বছরেও ফেরেনি রিজার্ভ চুরির অর্থ কারাগার থেকে ফেসবুক চালানো সম্ভব নয় ৮ ফেব্রুয়ারি ছয় সংস্কার কমিশনের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশ-আসিফ নজরুল এক সপ্তাহ পর ক্লাসে ফিরলেন তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা কোটায় উত্তাল জাবি সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনব্যবস্থা সমর্থন করছি না-মান্না চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগের ৪৬ নেতাকর্মী গ্রেফতার বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় ধাপের আখেরি মোনাজাত আজ
লেবার রিসোর্স অ্যান্ড সাপোর্ট সেন্টারের তথ্য

ঝুঁকিপূর্ণ কাজে বাধ্য শিপব্রেকিং শ্রমিকরা

  • আপলোড সময় : ০৯-০৯-২০২৪ ১২:৩১:৪৪ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ০৯-০৯-২০২৪ ১২:৩১:৪৪ পূর্বাহ্ন
ঝুঁকিপূর্ণ কাজে বাধ্য শিপব্রেকিং শ্রমিকরা
 * প্রতি বছর দুর্ঘটনায় মৃত্যুর পাশাপাশি ব্যাপক আহত হয় * প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা না রাখাই দুর্ঘটনার মূল কারণ * ২০১৫ সাল থেকে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ১২৪ জন
চট্টগ্রাম ব্যুরো
গত শনিবার চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের এনএস করপোরেশন নামে একটি শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ডে বিস্ফোরণে ১২ জন দগ্ধ হয়েছেন একজন মারা গিয়েছে। তাদের মধ্যে সাত জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। শিপইয়ার্ডে প্রায়ই এমন দুর্ঘটনায় হতাহত হচ্ছেন বহু মানুষ। গত নয় বছরে (২০১৫ সাল থেকে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত) দুর্ঘটনায় শিপ ইয়ার্ডগুলোতে নিহত হয়েছেন ১২৪ জন। বেসরকারি সংস্থা লেবার রিসোর্স অ্যান্ড সাপোর্ট সেন্টার সূত্র জানিয়েছে, প্রতি বছরই শিপব্রেকিং ইয়ার্ডগুলোতে দুর্ঘটনায় মৃত্যুর পাশাপাশি ব্যাপক আহত হওয়ার ঘটনা ঘটছে। প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা না রাখায় দুর্ঘটনার মূল কারণ বলেও মনে করছে সংস্থাটি। সংস্থাটির হিসেবে ২০১৫ সাল থেকে চলতি বছরের ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ১২৪ জন। এর মধ্যে ২০১৫ সালে ১৬ জন, ২০১৬ সালে ১৮ জন, ২০১৭ সালে ১৯ জন, ২০১৮ সালে ১৩ জন, ২০১৯ সালে ২৩ জন, ২০২০ সালে ১০ জন, ২০২১ সালে ৯ জন, ২০২২ সালে ৭ জন, ২০২৩ সালে ৭ জন এবং চলতি বছর ২০২৪ সালে দুর্ঘটনায় দুইজন নিহত হয়েছেন। চলতি বছরে জুন পর্যন্ত ছয় মাসে শিপ ইয়ার্ডগুলোতে ১২টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ১২ জন আহত এবং দুইজন নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। সংস্থাটির কো-অর্ডিনেটর ফজলুল কবির মিন্টুবলেন, ‘শিপইয়ার্ডে শনিবারের দুর্ঘটনাটি খুব বেশি ভয়াবহ ছিল। ১২ জন আহতদের মধ্যে ৮ জনের অবস্থা গুরুতর। গ্যাস দিয়ে জাহাজের ধাতব অংশ কাটতে গিয়ে আগুন গিয়ে পড়ে অয়েল ট্যাংকে। এতেই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। যে শিপইয়ার্ডে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে সেটি গ্রিন শিপইয়ার্ডের অন্তর্ভুক্ত। এসব ইয়ার্ড ঝুঁকি এড়াতে অনেক নিয়ম-কানুন মেনে চলে। তাই গ্রিন শিপইয়ার্ডে এমন ভয়াবহ দুর্ঘটনা নতুন করে উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠেছে। বর্তমানে ৩০ থেকে ৩৫টি শিপইয়ার্ড আছে। সেগুলোর মধ্যে গ্রিন শিপইয়ার্ড আছে মাত্র চারটি। আরও ৫-৬টি শিপইয়ার্ড গ্রিন শিপইয়ার্ডে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার প্রক্রিয়ায় রয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘দেশে করোনা মহামারির আগে ১৫০টির বেশি শিপইয়ার্ড ছিল। করোনা মহামারির পর তা কমে হয়েছিল ৫৫ থেকে ৬০টি। দেশে ডলার সংকট শুরু হওয়ার পর এ ধকল সহ্য করতে না পেরে আরও বেশ কয়েকটি শিপইয়ার্ড বন্ধ হয়ে ১০ থেকে ১৫টিতে এসে ঠেকে। চলতি বছর শিপইয়ার্ড বেড়ে ৩০ থেকে ৩৫টিতে হয়েছে।’ জাহাজভাঙা শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন ফোরামের আহ্বায়ক তপন দত্ত বলেন, ‘গত শনিবার শিপইয়ার্ডে যে দুর্ঘটনা ঘটেছে তা অত্যন্ত ভয়াবহ। আহত ১২ জনের মধ্যে ৮ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। নিয়ম না মেনে কাজ করার কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। এ দুর্ঘটনার জন্য যারাই দায়ী তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘গ্রিন শিপইয়ার্ডগুলোতে অনেক নিয়ম-কানুন মানার কথা। গ্রিন এবং সাধারণ ইয়ার্ডগুলোতে দেখা যায়, তারা সরাসরি শ্রমিক নিয়োগ না দিয়ে জাহাজ কাটার জন্য ঠিকাদার নিয়োগ করে। ওই ঠিকাদার আবার সাব-ঠিকাদার নিয়োগ দেয়। ঠিকাদাররা তাড়াতাড়ি কাজ শেষ করার জন্য কোনো নিয়ম মানছেন না। নিয়ম না মানার কারণেই এ দুর্ঘটনা। ‘ইয়ার্ডগুলোতে মজুরি বোর্ডের নির্ধারণ করা মজুরি দেওয়া হচ্ছে না শ্রমিকদের। মানা হচ্ছে না শ্রম আইন। রাত ৮টার পর জাহাজ না কাটার জন্য বলা হলেও সেই নির্দেশনাও মানছে না অনেক ইয়ার্ড।’ বাংলাদেশ শিপ ব্রেকার অ্যান্ড রিসাইক্লার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএসবিআরএ) সহকারী সচিব নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘এনএস করপোরেশন শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ডে দুর্ঘটনায় ১২ জন আহত হয়েছেন। দুর্ঘটনার কারণ এখনও জানা যায়নি।’ সীতাকুণ্ড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল উদ্দিন বলেন, ‘শিপব্রেকিং ইয়ার্ডে দুর্ঘটনায় আজ (গতকাল) ১২ জন আহত হয়েছেন। আমরা আমাদের মতো করে দুর্ঘটনার স্থান পরিদর্শন করেছি। কী কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে তার প্রাথমিক কারণও আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছি।’ এ ঘটনায় কেউ মামলা করলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান ওসি।
 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স