সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন গণভবনকে ছাত্র-জনতার ‘গণঅভ্যুত্থানের স্মৃতি জাদুঘর’ বানানোর পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম। এটি বাস্তবায়নের জন্য শিগগিরই একটি কমিটিও ঘোষণা করা হবে বলেও জানান তিনি। গতকাল শনিবার সকালে গণভবন পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন। এ সময় সঙ্গে ছিলেন শিল্প এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ। তারাও গণভবন ঘিরে পরিকল্পনার কথা জানান। উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেন, ইতোমধ্যে আমাদের কেবিন্যাটে সিদ্ধান্ত হয়েছে- গণভবন নামে প্রধানমন্ত্রীর যে বাসভবনটি ছিল, সেটিকে জুলাই অভ্যুত্থানের স্মৃতি জাদুঘরে রূপান্তর করা হবে। যেহেতু ৩৬ জুলাই বা ৫ আগস্ট... জনগণ এটি জয় করেছে। অনেক রক্ত ও আত্মত্যাগের বিনিময়ে ৫ আগস্টের মুহূর্তটি পেয়েছি। সেটি জনগণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া এবং জনগণের বিজয়কে ধারণ করে রাখার উদ্দেশ্যেই এই জাদুঘর করা হবে। তিনি বলেন, শুধু বাংলাদেশে নয়, আমরা পৃথিবীর বুকেই এই জাদুঘরকে একটি নিদর্শন করে রাখতে চাই যে, স্বৈরাচারী, ফ্যাসিস্ট, খুনি রাষ্ট্রনায়কদের আসলে কী পরিণতি হয় এবং জনগণই যে ক্ষমতার মালিক; সে বিষয়টিকে একটি নিদর্শন হিসেবে সারা পৃথিবীর বুকে রাখার জন্যই আমরা গণভবনটিকে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের স্মৃতি জাদুঘর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সেই উদ্দেশ্যেই আমরা আজ (গতকাল শনিবার) প্রাথমিক পরিদর্শন করেছি। এরইমধ্যে গণপূর্ত ও স্থাপত্যবিভাগের দায়িত্বশীলদের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে উল্লেখ করে নাহিদ ইসলাম বলেন, আমরা তাদের কাছ থেকে প্রাথমিক পরামর্শ নিয়েছি এবং আমাদের আকাক্সক্ষার কথাও তাদের জানিয়েছি। এরইমধ্যে একটি কমিটি গঠনেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। হয়তো আগামীকালের (আজ রোববার ) মধ্যেই কমিটি গঠন করা হয়ে যাবে। কমিটি হলে হয়তো আগামী সপ্তাহ থেকেই আমরা কাজ শুরু করবো। যাতে দ্রুত এটি উদ্বোধন করা যায়, সে জন্য দ্রুত কাজ সম্পন্ন করতেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কমিটিতে কারা থাকবেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, যারা জাদুঘর বিশেষজ্ঞ, স্থাপত্যের সঙ্গে যুক্ত আছেন তারাই কমিটিতে থাকবেন। সেইসঙ্গে বিদেশ থেকেও জাদুঘর বিশেষজ্ঞ বা এমন অভ্যুত্থানের স্মৃতি জাদুঘর করার অভিজ্ঞতা রয়েছে, তাদেরও পরামর্শ নিতে বলা হয়েছে। এখানে কী ধরনের স্মৃতি ধরে রাখা হবে জানতে চাইলে উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানের যে ৩৬ দিনের ঘটনাবলি, তার দিনলিপি এখানে থাকবে। আন্দোলনে যারা শহীদ রয়েছেন, তাদের স্মৃতি থাকবে, তালিকা থাকবে। এই আন্দোলন ছাড়াও গত ১৬ বছরে... এই অভ্যুত্থানটা মূলত গত ১৬ বছরের আন্দোলনের মুহূর্ত হিসেবে আমরা ৫ আগস্ট পেয়েছিলাম। তাই এই ১৬ বছরে যে নিপীড়ন হয়েছে, যারা গুমের শিকার হয়েছেন তাদেরও তালিকা থাকবে, যাদের বিচারবহির্ভূতভাবে হত্যা করা হয়েছে... এইসব বিষয়ে একটি প্রতিনিধিত্ব জাদুঘরে থাকবে। এই স্থাপত্যটি (গণভবন) যে ভগ্নাবশেষ অবস্থায় আছে, সেটিকে এ অবস্থায় রেখেই জাদুঘরটি করা হবে বলেও জানান তিনি। উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেন, স্থাপত্যটি ভগ্ন অবস্থায় রেখেই কিছু ডিজিটাল কার্যক্রমের মাধ্যমে জাদুঘরটি থাকবে। গত ১৬ বছরের একটি চিত্রই সেখানে তুলে ধরার চেষ্টা করবো। পরবর্তী সময়ে কেউ প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হলে তিনি কোথায় থাকবেন, জানতে চাইলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা থেকে সরকারের জায়গা পাওয়া উপদেষ্টা বলেন, সেটা পরবর্তী সময়ে চিন্তা করে দেখা যাবে। আপাতত সরকারের প্রধান উপদেষ্টা যেখানে (রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনা) আছেন, সেখানেই থাকবেন।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

জাদুঘর করতে হচ্ছে কমিটি, নেয়া হবে বিদেশি অভিজ্ঞদের পরামর্শ
- আপলোড সময় : ০৮-০৯-২০২৪ ০২:২৯:১৭ অপরাহ্ন
- আপডেট সময় : ০৮-০৯-২০২৪ ০২:২৯:১৭ অপরাহ্ন


কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ