ঢাকা , বুধবার, ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ , ২৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
মেধাস্বত্ব সংরক্ষণে সেল প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ ইউজিসির বিপুল আমদানিতেও ভোজ্যতেলের বাজার অস্থিতিশীল চিন্ময় দাসের জামিন প্রশ্নে হাইকোর্টের রুল মুক্তিযোদ্ধা তথ্যভাণ্ডার তৈরিতে অনিয়ম এ সরকারও কুমিল্লা থেকে খুনের ইতিহাস শুরু করেছে-শামসুজ্জামান দুদু যুব সমাজ দেশে জীবন ও জীবিকার নিশ্চয়তা পাচ্ছে না-জিএম কাদের ট্রাম্পের শুল্কনীতির অস্থিরতায় বিশ্ব অর্থনীতির ঝুঁকি বাড়ছে সাংবাদিকদের ওপর নির্যাতন বাড়ছে পাচার অর্থ ফেরাতে কানাডার সহযোগিতা চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা ২৩৯৯ কোটি টাকা ব্যয়ে ক্রয় কমিটিতে ১২ প্রস্তাব অনুমোদন প্রশাসন ক্যাডারের তরুণদের হতাশা-ক্ষোভ গুচ্ছে থাকছে ২০ বিশ্ববিদ্যালয় ৯ বছরেও ফেরেনি রিজার্ভ চুরির অর্থ কারাগার থেকে ফেসবুক চালানো সম্ভব নয় ৮ ফেব্রুয়ারি ছয় সংস্কার কমিশনের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশ-আসিফ নজরুল এক সপ্তাহ পর ক্লাসে ফিরলেন তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা কোটায় উত্তাল জাবি সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনব্যবস্থা সমর্থন করছি না-মান্না চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগের ৪৬ নেতাকর্মী গ্রেফতার বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় ধাপের আখেরি মোনাজাত আজ
শ্রমিক আন্দোলন হ আন্দোলনের মুখে বন্ধ সাভারের ৬০ পোশাক কারখানা হ কারখানায় কারখানায় ইটপাটকেল নিক্ষেপ হ দাবি আদায়ে মহাসড়ক অবরোধ করে শ্রমিকরা হ শিল্প খাতে শ্রমিক অসন্তোষে শিল্পমালিকদের বাড়ছে উদ্বেগ

​অস্থিরতায় টালমাটাল পোশাক খাত

  • আপলোড সময় : ০৫-০৯-২০২৪ ১১:৩৪:২৬ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ০৫-০৯-২০২৪ ১১:৩৪:২৬ পূর্বাহ্ন
​অস্থিরতায় টালমাটাল পোশাক খাত গাজীপুরের বিভিন্ন উপজেলার কয়েকটি কারখানায় নানা দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন শ্রমিকরা। তারা মহাসড়ক অবরোধ করলেও পরে পুলিশের অনুরোধে ও আশ্বাসে সড়ক ছেড়ে যান। বুধবার গাজীপুর সদর, মহানগরের বাসন এলাকা, শ্রীপুর, কালিয়াকৈর, রাজন্দ্রেপুর এলাকায় কয়েকটি শিল্প প্রতিষ্ঠানে শ্রমিকরা আন্দোলন শুরু করে। শ্রীপুরে আর কে সিরামিক কারখানার শ্রমিকরা বেতন বৃদ্ধিসহ ৯ দফা দাবিতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে অবস্থান করে বিক্ষোভ করেছে। এসময় মহাসড়কের উভয় পাশে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়। ছবিটি শ্রীপুর থেকে তোলা
অস্থিরতায় পোশাক খাতে টালমাটালের মধ্যে আশুলিয়ায় শ্রমিক আন্দোলনের মুখে আরও ৬০টি পোশাক কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এর আগে শ্রমিকদের আন্দোলনের কারণে গাজীপুর, টঙ্গী, আশুলিয়া, কালিয়াকৈর, চন্দ্রা, নরসিংদী ও নারায়ণগঞ্জ শিল্পাঞ্চলে শতাধিক কারখানা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর দেশ চালানোর দায়িত্ব পেয়েছে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। তাদের সেই দায়িত্বের আজ বৃহস্পতিবার এক মাসও পূর্ণ হয়েছে। কিন্তু শুরু থেকে নিজেদের দাবি-দাওয়া নিয়ে একের পর এক রাজপথে নামছে বিভিন্ন পক্ষ। পুলিশ-প্রশাসন-আনসারের ক্ষোভ-বিক্ষোভ দ্রুত মোটামুটি সামলে নিয়েছে সরকার। পোশাক খাতের শ্রমিকরা তাদের দাবি-দাওয়া নিয়ে গত কয়েক দিন ধরেই বিচ্ছিন্নভাবে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করে আসছে।
শ্রমিকদের আন্দোলন ছড়িয়ে পড়েছে গাজীপুর, টঙ্গী, আশুলিয়া, কালিয়াকৈর, চন্দ্রা, নরসিংদী ও নারায়ণগঞ্জ শিল্পাঞ্চলে। গতকাল বুধবার চাকরি এবং নিয়োগে নারী-পুরুষের সমান অধিকারসহ বিভিন্ন দাবিতে গাজীপুরে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন পোশাক শ্রমিকরা। এসময় বিচ্ছিন্নভাবে টঙ্গী বিসিক, ভোগরা বাইপাস, বাঘের বাজার ও মাওনা এলাকায় শ্রমিকরা জড়ো হয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। এ সময় বেশ কয়েকটি শিল্প কারখানায় ভাঙচুরের চেষ্টা করলে সেনাবাহিনী ও শিল্প পুলিশের সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এখন শিল্প খাতে শ্রমিক অসন্তোষ মাথাচাড়া দেয়ায় শিল্প মালিক ও সরকারের উদ্বেগ প্রতিদিনই বাড়ছে।
তবে বিভিন্ন স্থানে শ্রমিক অসন্তোষের পেছনে আওয়ামী লীগের লোকজনসহ বহিরাগতরা রয়েছে জানিয়ে শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেছেন, আজ বৃহস্পতিবার থেকে তাদের বিরুদ্ধে অ্যাকশন শুরু হবে।
জানা গেছে, সাভারের আশুলিয়ায় শ্রমিক আন্দোলনের মুখে অন্তত ৬০টি পোশাক কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। তবে কোথাও বড় ধরনের বিশৃঙ্খলার খবর পাওয়া যায়নি। ছুটি ঘোষণার পর কিছুটা হট্টগোল করেছেন কয়েকটি কারখানার শ্রমিকরা। তাদের বুঝিয়ে শান্ত করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। গতকাল বুধবার সকাল থেকে আশুলিয়ার জিরাবো, ঘোষবাগ, সরকার মার্কেট, নরসিংহপুর, নিশ্চিন্তপুর ও পল্লিবিদ্যুৎ এলাকায় শ্রমিক বিক্ষোভ শুরু হয়। এর জেরে পোশাক কারখানাগুলোতে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়। শ্রমিকরা জানান, টানা কয়েকদিন বিভিন্ন পোশাক কারখানায় নানা দাবিতে শ্রমিকরা বিক্ষোভ করছেন। মালিকপক্ষ তাদের কিছু কিছু দাবি গত মঙ্গলবার মেনেও নিয়েছিল। তবে এখন বলছে, তাদের পক্ষে সব দাবি মেনে নেয়া সম্ভব নয়। এতে বিভিন্ন কারখানার শ্রমিকরা উত্তেজিত হয়ে কারখানার সামনে ও সড়কে বিক্ষোভ করেন।
আরও জানা গেছে, সকালে হা-মীম গার্মেন্টসের কয়েক হাজার পোশাক শ্রমিক কাজে যোগ দেন। পরে তাদের কারখানায় হঠাৎ সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়। হা-মীমের শ্রমিকরা শারমিন গার্মেন্টসের সামনে গেলে তাদের কারখানার শ্রমিকরাও বের হয়ে আসেন। এরপর জিরাবো, ঘোষবাগ, নরসিংহপুর, নিশ্চিন্তপুর এলাকার যতগুলো পোশাক কারখানা ছিল সেগুলোতে গতকাল  বুধবারের জন্য সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়।
আশুলিয়া শিল্প পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার সারোয়ার আলম বলেন, আজ বৃহস্পতিবার সকালে শ্রমিকরা কাজে যোগ দেন। পরে একটি বড় গার্মেন্টস ছুটি দিলে কয়েক হাজার পোশাক শ্রমিক রাস্তায় নেমে আসেন। তখন অন্তত আরও ৬০টি পোশাক কারখানা সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে। এখন পর্যন্ত কোথাও কোনো বড় ধরনের বিশৃঙ্খলার খবর পাওয়া যায়নি।
পুলিশ সুপার আরও বলেন, আমাদের এবং সেনাবাহিনীর সামনে শ্রমিকদের কিছু দাবি মেনে নিয়েছিলেন কারখানা কর্তৃপক্ষ। এখন তারা বলছেন, শ্রমিকদের দাবি মেনে নিতে পারবেন না। এতে শ্রমিকরা উত্তেজিত হয়ে পড়েন। তবে তাদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরানো হয়েছে বলে জানান শিল্প পুলিশের এই কর্মকর্তা।
এদিকে গাজীপুরের তৃতীয় দিনের মতো গতকাল বুধবার পোশাক, সিরামিক এবং ওষুধ কারখানায় বেতন বৃদ্ধি, শ্রমিকদের সঙ্গে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দুর্ব্যবহার, চাকরিচ্যুত শ্রমিকদের পুনরায় নিয়োগ, শ্রমিক নিয়োগে বৈষম্য এবং পুরুষ শ্রমিকদের বিনা নোটিশে অযৌক্তিক কারণ দেখিয়ে ছাঁটাই বন্ধসহ বিভিন্ন দাবিতে বিক্ষোভসহ মহাসড়ক অবরোধ করছেন শ্রমিকরা। সকাল সাড়ে ৮টার দিক থেকে ‘বাংলাদেশ বেকার সংগঠন’ নামে একটি দল গাজীপুর নগরের চান্দনা চৌরাস্তাসহ বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভ শুরু করে। আন্দোলনরত শ্রমিকরা বিভিন্ন কারখানার গেটে গিয়ে ইটপাটকেল ছোড়েন। কারখানার ভেতরে কর্মরত শ্রমিকরা তাদের প্রতিহত করতে অবস্থান নিলে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা পিছু হটেন। বিক্ষিপ্তভাবে আন্দোলনকারী শ্রমিকরা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে অবস্থান নিলে যানজটের সৃষ্টি হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শিল্প পুলিশ এবং সেনাবাহিনী যৌথভাবে কাজ করছে।
শিল্প পুলিশ জানায়, সকালে যথা নিয়মে কারখানায় কাজে যোগ দেন শ্রমিকরা। চাকরিচ্যুত শ্রমিকরা তাদের পুনরায় নিয়োগসহ বিভিন্ন দাবিতে কারখানার বাইরে বিক্ষোভ শুরু করেন। কর্তৃপক্ষ একের পর এক কারখানা ছুটি ঘোষণা করে। গাজীপুর মহানগরের চান্দনা চৌরাস্তা, সাইনবোর্ড, জিরানি বাজার, কোনাবাড়ী, বাসন, জেলার বাঘের বাজার, শ্রীপুরের নয়নপুর এলাকায় বিক্ষোভ করেন শ্রমিকরা।
জেলার কালিয়াকৈর উপজেলার তেলিরচালা এলাকায় ট্রান্সকম বেভারেজ কারখানার শ্রমিকরা ২০ দফা দাবিতে আন্দোলন করছেন। শ্রমিকরা তাদের চাকরি স্থায়ীকরণ, প্রতি মাসের ৫ তারিখের মধ্যে বেতন, নারী শ্রমিকদের নাইট ডিউটি বাতিলসহ ২০ দফা দাবি জানান।
শ্রীপুরের নয়নপুর এলাকায় আর এ কে সিরামিক কারখানার শ্রমিকরা বেতন বৃদ্ধিসহ ৯ দফা দাবিতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন। এ সময় মহাসড়কের উভয় পাশে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়। পরে সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে এসে শ্রমিকদের দাবি নিয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার প্রস্তাব দিলে বেলা ১১টায় তারা মহাসড়ক ছেড়ে চলে যান।
গাজীপুরের রাজেন্দ্রপুর এলাকায় ইউনি হেলথ ফার্মাসিউটিক্যালস (ওষুধ উৎপাদনকারী) কারখানায় শ্রমিকরা বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলন করছেন। শ্রমিকরা তাদের বেতন বৈষম্য দূর করাসহ কয়েকটি দাবি জানান। অপরদিকে, সকালে গাজীপুর সদর উপজেলার ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের বাঘের বাজার এলাকায় গোল্ডেন রিফিট পোশাক কারখানার গেটে গিয়ে ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা করেন। খবর পেয়ে সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে শ্রমিকদের বোঝানোর চেষ্টা করলে তারা কারখানা গেট ধরে টানাটানি শুরু করেন। একপর্যায়ে তারা মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন।
এ সময় সেনাসদস্যরা আন্দোলনরত শ্রমিকদের ধাওয়া দিলে তার ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।
এছাড়াও গাজীপুর মহানগরের বাসন এলাকায় শ্রমিক নিয়োগে বৈষম্য রোধে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন শ্রমিকরা। চাকরিতে পুরুষ শ্রমিকদের কোনও নোটিশ ছাড়াই যখন তখন কর্তৃপক্ষ চাকুরিচ্যুত করে। সেখানে নারী শ্রমিকদের নিয়োগে কোনও সমস্যা হয় না।
শ্রমিক নেতা আরমান বলেন, গত মঙ্গলবার আমরা বাংলাদেশ বেকার সংগঠনের সঙ্গে আলোচনা করেছি। তারা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে বেকারত্বের বিষয়গুলো তুলে ধরবেন। এ বিষয়ে শিল্প পুলিশের পুলিশ সুপার (এসপি) তাদের সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছিলেন। গতকাল বুধবার তাদের কোনও কর্মসূচির কথা ছিল না। তারপরও সকালে ৪০০-৫০০ শ্রমিক গাজীপুর বাইপাস এলাকায় আন্দোলনে নামেন। তিনি আরও বলেন, কয়েকদিন হলো বিভিন্ন সংগঠনের নামে আন্দোলন হচ্ছে। এজন্য আমরা আন্দোলনরত শ্রমিকদের নিয়ে আলোচনা করেছি। প্রতি কারখানার কর্তৃপক্ষ তাদের নিজ নিজ অবস্থান থেকে সুযোগসন্ধানীদের দিয়ে ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে হবে।
গাজীপুর শিল্প পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইমরান আহম্মেদ জানান, গতকাল সকাল থেকেই শ্রমিকরা আন্দোলন করছে। আন্দোলনরত শ্রমিকদের সঙ্গে কারখানা কর্তৃপক্ষ আলোচনা করার আশ্বাস দিলে তারা মহাসড়ক ছেড়ে চলে যায়।
শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেছেন, বিভিন্ন স্থানে শ্রমিক অসন্তোষের পেছনে আওয়ামী লীগের লোকজনসহ বহিরাগতরা রয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার থেকে তাদের বিরুদ্ধে অ্যাকশন শুরু হবে। শ্রম উপদেষ্টা আরও বলেন, শ্রমিক অসন্তোষ নিয়ে আমরা মালিক ও শ্রমিকপক্ষের সঙ্গে একাধিক সভা করেছি। আমাদের শিল্প উপদেষ্টা তিনিও কথা বলছেন। সব শ্রমিক নেতার কাছ থেকে আমরা এটাই জানতে পেরেছি, এখন যে আন্দোলনগুলো হচ্ছে, শ্রমিক নেতারা এ আন্দোলনের প্রকৃতিটা নিজেরাও বুঝে উঠতে পারছেন না। কারণ এখানে কোনো নির্দিষ্ট দাবি উঠে আসছে না। কোনো নির্দিষ্ট দফা পাওয়া যাচ্ছে না।
যারা সাধারণত শ্রমিক আন্দোলন করেন, তারাও সেখানে সেভাবে নেই। বহিরাগত লোকজনের আধিক্য দেখা যাচ্ছে। কিছু কিছু জায়গায় মালিকপক্ষ বেতন দিতে দেরি করছে, এজন্য আন্দোলন হচ্ছে। কয়েকটি স্পেসিফিক ফ্যাক্টরি আছে সেখানে মালিকপক্ষ পালিয়ে গেছে। সেখানে কিছুটা অসন্তোষ হয়েছে। সেগুলো আমরা অ্যাড্রেস করছি, সেগুলোর জন্য সরকার সফট লোন ঘোষণা দিয়েছে। সেটার পরিধি আরও বাড়ানো হবে। উপদেষ্টা বলেন, তবে এই ছোট ছোট কয়েকটি সুনির্দিষ্ট জায়গায় অসন্তোষকে কেন্দ্র করে যে জায়গাগুলোতে ফ্যাক্টরি ক্লাস্টারগুলো আছে, সেখানে দেখা গেছে বহিরাগতরা এসে এবং বেকার যুব সংঘ নামে যারা কখনো শ্রম এরিয়ার মধ্যে কখনো আন্দোলন করেনি, গাড়ি ভাঙচুরের মতো ঘটনা ঘটেছে। তিনি আরও বলেন, শ্রমিক নেতারাই আমাকে বললেন যে তারা সেখানে হেঁটে এসেছেন এবং তারা দেখেছেন যে, হেলমেট ও হাফপ্যান্ট পরা যারা টোকাই, যাদের টাকা দিয়ে বিভিন্ন প্রোগ্রামের জন্য ভাড়া করা হয়। তাদের সেখানে দেখা গেছে। তিনি আরও বলেন, যারা ঝুট ব্যবসা নিয়ে সন্ত্রাস করছে, আওয়ামী লীগের লোকেরা যে সিন্ডিকেটগুলো সামলাতো তারা তো সেগুলো ছেড়ে চলে গেছে। এখন যারা সেগুলো দখলের পাঁয়তারা করছে এবং সেখানে সন্ত্রাস করছে, তাদের এবং যারা বহিরাগত তাদের বিরুদ্ধে সরকার কঠোর ব্যবস্থা নেবে, সেটা গত মঙ্গলবারও বলেছি। স্থানীয়ভাবে আওয়ামী লীগও আছে কিছু জায়গায়। কিছু স্থানীয় বিএনপি নেতাও রয়েছেন বলে আমরা সংশ্লিষ্টতা পেয়েছি। বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে আমাদের এ বিষয়ে কথা হচ্ছে। তারা যাতে তাদের নিবৃত রাখেন।
স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী যেসব আওয়ামী লীগ নেতা এখনো রয়ে গেছেন তাদের বিরুদ্ধে আমরা কঠোর অবস্থানে যাবো। উপদেষ্টা আরও বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে যে তথ্য রয়েছে, সেটার ভিত্তিতে তাদের গ্রেফতার করা হবে। সেখানে যে জনদুর্ভোগ তৈরি হয়েছে, সেটার জন্য পুলিশ ব্যবস্থা নেবে। পরিস্থিতি কতদিনের মধ্যে স্বাভাবিক হবে বলে মনে করছেন, জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, আজ বৃহস্পতিবার থেকে অ্যাকশন শুরু হবে, সেখানে ক্ষতি হয় এমন কোনো অ্যাকশন পুলিশ নেবে না। রাস্তাগুলো খালি করার জন্য যথাযথ অ্যাকশন নেবে। যারা ইন্ধন জোগাচ্ছে তাদের গ্রেফতার করা হবে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে জানিয়ে আসিফ মাহমুদ বলেন, আমাদের শ্রমিক নেতারা আশ্বস্ত করেছেন, যে শ্রমিকরা আন্দোলন করছে তাদের বোঝাবেন। তাদের সমস্যার সমাধানে আরও বৈঠক করবো। সমস্যা সমাধানে মালিক এবং শ্রমিকপক্ষ মিলে এগিয়ে যাবো।

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স