ঢাকা , শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫ , ৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
গাজায় ইসরায়েলি নির্মম গণহত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ নড়াইলে সৌদি প্রবাসী হত্যা হামলা-ভাঙচুরের পর পুরুষশূন্য গ্রাম প্রেস সচিবের মন্তব্যকে ‘অযাচিত’ বলছে ভারত রাজধানীতে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের ‘কাফন মিছিল’ আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা অনৈক্যের সুর রাজনীতিতে বাড়ছে অবিশ্বাস দলিতদের পরিবর্তনে সরকারের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ- আনু মুহাম্মদ মালয়েশিয়ায় অভিযানে ১৬৫ বাংলাদেশি আটক জাবির থিসিসের ফলাফল বিপর্যয়ের অভিযোগ ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ১০ জন হাসপাতালে ভর্তি চীনের অর্থায়নে পঞ্চগড়ে হাসপাতাল নির্মাণের দাবি যশোরে আগুনে পুড়লো ফার্মের ৪৪ হাজার মুরগি ঈদের পর থেকে বাজারে সবজির দাম বাড়তি চার মাসের সন্তানকে বিক্রি করে মোবাইল কেনেন মা! মানহীন কিন্ডারগার্টেনে ধ্বংস শিশুর ভবিষ্যৎ টিসিবির জন্য কেনা হবে ৫৪২ কোটি টাকার তেল সৌদি আরব-মরক্কো থেকে ৪৬৬ কোটি টাকার সার কিনবে সরকার জেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তাসহ ৫ জন দুদকের হাতে গ্রেফতার টিপাইমুখ বাঁধ দেয়ার প্রতিবাদ করায় ইলিয়াস আলী গুম হন- রিজভী কনটেইনারবাহী জাহাজ চলবে দুই বন্দরে
* গণহত্যায় উস্কানি দেয়ায় ৩২ সিনিয়র সাংবাদিকের নামে মামলা * সাংবাদিকদের নামে হত্যা মামলায় সম্পাদক পরিষদের উদ্বেগ * জয়পুরহাটে সাংবাদিকদের ফাঁসানোর অভিযোগ * সাংবাদিকদের খুনের মামলায় অব্যাহতি চায় ডিইউজে * হত্যা মামলায় জড়ানো প্রত্যাখ্যান করেছে সাংবাদিক সমাজ

মামলার কবলে সাংবাদিক সমাজ

  • আপলোড সময় : ০৪-০৯-২০২৪ ১২:২৫:৪৩ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ০৪-০৯-২০২৪ ১২:২৫:৪৩ পূর্বাহ্ন
মামলার কবলে সাংবাদিক সমাজ
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হাসিনা সরকারের পতনের পর রাজধানীসহ দেশজুড়ে হত্যাকাণ্ডে উস্কানীর অভিযোগে মন্ত্রী-এমপিদের পাশাপাশি সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা করা হচ্ছে। গণহত্যায় উস্কানি দেয়ায় ইতোমধ্যে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে ৩২ সিনিয়র সাংবাদিকের নামে মামলা আসামি করা হয়েছে। রাজনীতি ও ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর এখন পর্যন্ত জেলা-উপজেলায় কর্মরত পেশাদার সাংবাদিকদের নামে হত্যা, গুলি ও ভাঙচুরের অভিযোগে মোট ১৪টি মামলা করা হয়েছে। এসব মামলায় ৩৭ জন সাংবাদিককে আসামি করা হয়েছে।
জানা গেছে, এসব হত্যা মামলা দেওয়া হয়েছে বিভিন্ন পত্রিকা, বেসরকারি টিভি চ্যানেলের সাংবাদিক ও সম্পাদকদের বিরুদ্ধেও। কোনো কোনো সাংবাদিককে একাধিক হত্যা মামলায় জড়িয়ে একাধিকবার রিমান্ডেও নেওয়া হয়েছে। আর ঢালাওভাবে এভাবে সাংবাদিকদের নামে মামলা দেওয়াটা প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। মানবাধিকার সাংস্কৃতিক ফাউন্ডেশন (এমএসএফ) অনুসন্ধানে এসব তথ্য উঠে এসেছে। সম্প্রতি  কোনাবাড়ীতে ঘটনার দিনের প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, ছেলেটিকে গুলি করার পর বস্তায় ভরে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। ওই দিন তার মতো আরো কয়েকজনের মরদেহ গুম করেছে থানা পুলিশ। তাদের মধ্যে মো. হূদয়ের হদিস না মেলায় পাঁচ স্থানীয় সাংবাদিককেও হত্যা মামলার আসামি করা হয়েছে। কোনাবাড়ীর ঘটনায় যে পাঁচ সাংবাদিককে আসামি করা হয়েছে, তারা হলেন, দৈনিক সমকালের কালিয়াকৈর প্রতিনিধি এম তুষারী, বাংলা টিভির গাজীপুর প্রতিনিধি মো. শহিদুল ইসলাম, দৈনিক ভোরের ডাকের গাজীপুর প্রতিনিধি এম মোমিন রানা, দৈনিক সময়ের দেশ পত্রিকার গাজীপুর প্রতিনিধি মো. কবির হোসেন ও দৈনিক সকালের সময় পত্রিকার কোনাবাড়ী থানা প্রতিনিধি মো. মোখলেসুর রহমান। তবে মামলা প্রসঙ্গে সমকালের কালিয়াকৈর প্রতিনিধি এম তুষারী বলেন, তিনি কালিয়াকৈর প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। কোনাবাড়ী এলাকায় যাওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। আগে প্রকাশিত কোনো সংবাদের জের ধরে কেউ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তার নামসহ অন্য সংবাদকর্মীদের নাম জড়িয়ে দিয়েছে। মোমিন রানা বলেন, তিনিসহ পাঁচ সাংবাদিকের কেউ রাজনীতি করেন না। ঘটনার দিন সেখানে ছিলেনও না। শত্রুতাবশত কেউ মামলায় তাঁদের নাম জাড়িয়ে থাকতে পারে। মামলার বাদী মো. ইব্রাহীম সাংবাদিকদের বলেন, তিনি সাংবাদিকদের কাউকে চেনেন না। যে দোকান থেকে মামলার এজাহার টাইপ করা হয়েছে সেখান থেকে তাঁদের নাম দেওয়া হতে পারে। এজাহারে প্রথমে পুলিশের নাম ছিল। পরে পুলিশের নাম বাদ দিতে পরামর্শ দেওয়া হয় থানা থেকে। পরে পুলিশের নাম বাদ দিয়ে এজাহার দেন। গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশে ভারপ্রাপ্ত কমিশনার মো. জিয়াউল হক বলেন, সংবাদকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা হওয়ার বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখা হবে। এ ছাড়া তদন্ত ছাড়া কাউকে অযথা হয়রানি করা হবে না। তবে গাজীপুর প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শাহ রিপন বলেন, উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সাংবাদিকদের নাম মামলায় জড়ানো হয়েছে। এটি বাকস্বাধীনতার পরিপন্থী। দ্রুত মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। অন্যথায় আন্দোলনসহ বৃহত্তর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সম্প্রতি সাংবাদিকদের নামে ১৪টি মামলার মধ্যে তিনটি হত্যা মামলা হয়েছে ঢাকায়। বগুড়া ও গাজীপুরে একটি করে, জয়পুরহাটে দুটি হত্যা ও তিনটি গুলি করার অভিযোগে মামলা,  সিলেটে একটি বিস্ফোরক মামলা, রংপুরে দুটি মামলার মধ্যে একটি হত্যা ও অপরটি ভাঙচুরের মামলা হয়েছে। এ ছাড়া রাজশাহীতে চাঁদাবাজি ও সাইবার আইনে একটি মামলা করা হয়েছে। ২৯ আগস্ট আইনজীবী এম এইচ গাজী তামিম জুলাইয়ে ছাত্র আন্দোলনের সময় গণহত্যার অভিযোগে শেখ হাসিনা ও ৩২ জন সিনিয়র সাংবাদিকসহ ৫২ জনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থায় অভিযোগ করেছেন। একই দিন আন্দোলনে গণহত্যার অভিযোগে ৩০ জন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে আরেকটি অভিযোগ করেন আব্দুর রাজ্জাক নামের আরেক ব্যক্তি। তিনি আন্দোলনে নিহত রিয়ানের বাবা।
মামলা নিয়ে যা বলছেন অপরাধ ও সমাজ বিশ্লেষকরা: অপরাধ ও সমাজ বিশ্লেষকরা বলছেন, কেউ হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকলে কিংবা হুকুম দিলে অবশ্যই তাঁর বিরুদ্ধে মামলা হবে। তবে যারা ঘটনার ধারে কাছেও নেই, তাদের নামে হত্যা মামলা হলে ভয়ের সংস্কৃতি তৈরি করবে। বিশেষজ্ঞরা এও বলছেন, বিনা অপরাধে যেন কেউ নির্যাতনের শিকার না হয় সেদিকে নজর দেওয়া জরুরি। তবে সাংবাদিকরাও সমালোচনা বা বিতর্কের ঊর্ধ্বে নন। তাদেরও কোনো মতাদর্শ থাকতে পারে। কিন্তু সেটা ফলাতে গিয়ে যদি তাদের লেখালেখি বা বক্তব্যে কেউ আহত কিংবা ক্ষতিগ্রস্ত হন, সেটার আইনি ব্যবস্থা আছে। তাই বলে যত্রতত্র মামলা টুকে দেওয়া ন্যায়বিচারের পরিপন্থী। এতে মামলা ও বিচারব্যবস্থার প্রতি মানুষের অনাস্থা তৈরি হবে। এ বিষয়ে অপরাধ ও সমাজ বিশ্লেষক অধ্যাপক ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, যদি কোনো সাংবাদিক অন্যায় কাজ করে থাকেন, অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি। কিন্তু কাউকে হেয়প্রতিপন্ন কিংবা হয়রানি করতে যত্রতত্র মামলায় আসামি করা মোটেও উচিত না। এতে করে সুবিচার করার প্রক্রিয়াকেও প্রশ্নবিদ্ধ করে।
সাংবাদিকদের নামে হত্যা মামলায় সম্পাদক পরিষদের উদ্বেগ: সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে নির্বিচার হত্যা মামলা দেওয়ার ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়ে এ বিষয়ে সুস্পষ্ট অবস্থান নিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সম্পাদক পরিষদ। মঙ্গলবার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে তার সরকারি বাসভবন যমুনায় মতবিনিময় সভা শেষে পরিষদের সভাপতি ও ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহ্?ফুজ আনাম এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, আমরা চাই, বাংলাদেশে একটা নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হোক। সেখানে আমি একজন সম্পাদক হিসেবে যেটা উত্থাপন করেছি, সেটা হচ্ছে সাংবাদিকদের নিশ্চয়তা এবং তাঁদের ব্যাপারে যেভাবে যত্রতত্র খুনের মামলা হচ্ছে, সেটা যাতে বন্ধ হয় এবং সরকার যেন সুস্পষ্ট অবস্থান নেয়। সাংবাদিকদের যদি দোষ থাকে, তারা যদি দুর্নীতি করে থাকেন, তাহলে আলাদা মামলা হতে পারে। কিন্তু এইভাবে (ঢালাও খুনের মামলা) যেন না হয়।
জয়পুরহাটে সাংবাদিকদের ফাঁসানোর অভিযোগ: জয়পুরহাটেও সাংবাদিকদের ফাঁসানোর অভিযোগ উঠেছে। ৩১ আগস্ট সদর থানায় হোসাইন আহমেদ নামে এক শিক্ষার্থী অভিযোগপত্র দেন। আসামির তালিকায় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ছাড়াও নাম দেয়া হয় ৪ সাংবাদিকের। হোসাইনের অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, তার দুই পায়ে গুলি ছোড়ে ১০ নম্বর আসামি আব্দুর রহিম। অথচ তালিকায় ১০ নম্বর আসামি হিসেবে আছে সাংবাদিক হারুনুর রশিদের নাম। তিনি জানান, নিজস্ব পেশার সততা আমরা বজায় রাখি। এভাবে একের পর এক মামলা যদি হয় আমাদের নামে তাহলে আমরা কোথায় যাব। তবে স্থানীয় ছাত্র সমন্বয়করা বলছেন, বিষয়টি নিন্দনীয় ও বিব্রতকর।
উস্কানির দায়ে ৩২ সাংবাদিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ: জুলাই গণহত্যার ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৫২ জনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থায় আরও একটি অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে। এরমধ্যে গণহত্যায় উস্কানি দেয়ায় ৩২ জন সিনিয়র সাংবাদিককেও অভিযুক্ত করা হয়েছে। সম্প্রতি বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এম এইচ গাজী তামিম। তিনি জানান, আন্দোলনে নিহত রিহানের বাবা গোলাম রাজ্জাক আন্তর্জাতিক আদালতে এ আবেদন করেন। এই আইনজীবী জানান, যারা ৩ আগস্ট শেখ হাসিনার সাথে দেখা করেছিলেন এবং সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্ন করে উস্কানি দিয়েছেন এবং টক শো করে গণহত্যার বৈধতা দিয়েছেন, মূলত তাদেরকেই অভিযুক্ত করা হয়েছে এই অভিযোগে।
সাংবাদিকদের খুনের মামলায় অব্যাহতি চায় ডিইউজে: রাজনীতির পটপরিবর্তনের পর বিভিন্ন স্থানে সাংবাদিকদের খুনের মামলায় জড়ানোয় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে)। এ ধরনের মামলা থেকে সাংবাদিকদের অবিলম্বে অব্যাহতি দিতে অন্তর্র্বতী সরকারের প্রধান উপদেষ্টাসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে সংগঠনটি। গত ৩০ আগস্ট গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে এ অনুরোধ জানিয়েছেন ডিইউজের সভাপতি সোহেল হায়দার চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক আকতার হোসেন। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ৫ আগস্ট রাজনীতি ও ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর একের পর এক খুনের মামলায় পেশাদার সাংবাদিকদের জড়ানো হচ্ছে। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় পঞ্চাশের বেশি সাংবাদিকের বিরুদ্ধে খুনের মামলা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ সাংবাদিকতার পাশাপাশি বিভিন্ন সাংবাদিক ইউনিয়ন ও প্রেসক্লাবের নেতৃত্বে রয়েছেন। এই ব্যক্তিরা সাংবাদিকতার মাধ্যমে একদিকে জনগণের তথ্যপ্রাপ্তির অধিকার নিশ্চিত করছেন, অন্যদিকে সাংবাদিক সমাজের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। কিন্তু তাঁদের বিরুদ্ধে একের পর এক হত্যা মামলা দেওয়া কোনো শুভ ইঙ্গিত বহন করে না। বিবৃতিতে নেতৃদ্বয় বলেন, কোনো সাংবাদিকের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ সুনির্দিষ্টভাবে প্রমাণিত হলে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা হতেই পারে। কিন্তু বিগত সরকারকে বিভিন্নভাবে সহযোগিতার অভিযোগ দিয়ে খুনের মামলায় জড়িয়ে দেওয়া সমীচীন নয়। এসব মামলায় গ্রেপ্তারের পর আদালত প্রাঙ্গণে হেনস্তা ও নির্যাতনের যে ঘটনা লক্ষ করা গেছে, তা-ও কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। তাই এ ধরনের ন্যক্কারজনক হামলা ও নির্যাতনের ঘটনার সঙ্গে জড়িত দুর্বৃত্তদের অবিলম্বে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা উচিত। সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ঢালাওভাবে খুনের মামলা দেওয়ার ঘটনা একদিকে পুরো সাংবাদিক সমাজকে আতঙ্কিত করে তুলছে, অন্যদিকে জনগণের মনেও ভীতি ছড়িয়ে দিচ্ছে বলেও মনে করে ডিইউজে। সংগঠনটি বলছে, এটি বৈষম্যমুক্ত রাষ্ট্র ও সমাজগঠনের অঙ্গীকারের ক্ষেত্রে অন্তরায় সৃষ্টি করতে পারে। তাই সাংবাদিক ও সাংবাদিক নেতাদের বিরুদ্ধে এ ধরনের মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহার করার আহ্বান জানানো হয়।
হত্যা মামলায় জড়ানো প্রত্যাখ্যান করেছে সাংবাদিক নেতারা: গত ৩১ আগস্ট জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত এক প্রতিবাদ সমাবেশে সাংবাদিকদের হত্যা মামলায় জড়ানো ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছেন ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে) নেতারা। এদিন সাংবাদিক সাগর সারোয়ার ও মেহেরুন রুনিসহ সব সাংবাদিক হত্যাকাণ্ডের বিচার এবং সাংবাদিক সুরক্ষা আইন প্রণয়ন এবং সাইবার সিকিউরিটি আইন বাতিলের দাবি জানিয়েছে। এ সময় ছাত্র-জনতার আন্দোলনের পর সাংবাদিকদের হত্যা মামলায় জড়ানোকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করা হয়। এ সময় বিএফইউজে সভাপতি রুহুল আমিন গাজী বলেন, আমরা ভেবেছিলাম ফ্যাসিবাদ পতনের পর কোনো দাবি নিয়ে রাজপথে নামতে হবে না। তবে দুঃখের বিষয় হচ্ছে, সাগর রুনি হত্যাকাণ্ডের বিচার চাইতে আমাদের রাজপথে নামতে হচ্ছে। এটা নিয়ে এত টালবাহানা কেন? তিনি বলেন, কিছু সাংবাদিকের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করা হয়েছে। আমরা এটা ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করি। হত্যা মামলা করতে হলে আপনাকে নিশ্চিত হতে হবে। শুধু শুধু একজনের নামে হত্যা মামলা করা আমরা ঠিক মনে করছি না। যার যেটুকু অপরাধ তার শুধু সেটুকুই শাস্তি হওয়া উচিত। কিন্তু হত্যা মামলার মতো মামলা করতে হলে আপনাকে যথাযথ প্রমাণ উপস্থাপন করে মামলা করতে হবে।
 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স