বেসরকারি টিভি স্টেশন সময় টিভির সম্প্রচার বন্ধের আদেশ স্থগিত চেয়ে করা আবেদন নিষ্পত্তি করে দিয়েছে আপিল বিভাগ। ইতোমধ্যে সম্প্রচার শুরু হওয়ায় আবেদনটি অকার্যকর হয়ে পড়েছে বলে গতকাল রোববার জানিয়ে দেয় প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ। আবেদনকারী সময় টিভির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহমেদ জোবায়েরের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন; সঙ্গে ছিলেন অ্যাডভোকেট সাকিব মাহবুব। সময় মিডিয়া লিমিটেডের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট আহসানুল করিম। অ্যাডভোকেট আহসানুল করিম বলেন, “হাই কোর্টের দেওয়ার সাত দিন বন্ধের সময় শেষে ইতোমধ্যে সময় টিভি সম্প্রাচারে এসেছে। তাই এখন আপিলকারীর আবেদনটির কার্যকারিতা নেই। তাই তা খারিজ করে আদালত বিষয়টি নিষ্পত্তি করে দিয়েছেন।”
গণ আন্দোলনে গত ৫ অগাস্ট সরকার পতনের দিন সময় টিভিসহ বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের কার্যালয়ে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এতে সাময়িক সময়ের জন্য সময় টিভি বন্ধ হয়ে যায়। পরে আবারও সম্প্রচারে আসে সময় টেলিভিশন। এরপরই সামনে আসে মালিকানা সংক্রান্ত দ্বন্দ্ব। শেষ পর্যন্ত তা আদালতে গড়ায়। গত ১০ অগাস্ট গুলশানের সিটি হাউজে সময় মিডিয়া লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদের সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে সময় টিভির নতুন ব্যবস্থাপনা পরিচালক নির্ধারণ করা হয়। সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পরিচালনা পর্ষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সময় টেলিভিশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহীর পদ থেকে আহমেদ জোবায়েরকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি পরিচালক শম্পা রহমানকে ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সময় মিডিয়া লিমিটেডের সব কার্যক্রম এখন থেকে নতুন দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালকের নির্দেশনায় পরিচালিত হবে। এ অব্যাহতির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে গত ১৪ অগাস্ট হাই কোর্টের কোম্পানি বেঞ্চে রিট আবেদন করেন আহমেদ জোবায়ের। এদিকে সময় মিডিয়া লিমিটেডের এক রিট আবেদনে হাই কোর্ট সময় টিভির সম্প্রচার এক সপ্তাহের জন্য বন্ধ হয়ে যায়। ওই রায়ের বিরুদ্ধে আহমেদ জোবায়ের আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে গেলে স্থগিতাদেশ না দিয়ে শুনানির জন্য আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠিয়ে দেয়। ২০০৯ সালে লাইসেন্সের জন্য আবেদন করা সময় টেলিভিশন পরীক্ষামূলক সম্প্রচার শেষে ২০১১ সালের ১৭ এপ্রিল বাণিজ্যিক সম্প্রচারে আসে। লাইসেন্স নেওয়ার সময় তৎকালীন মন্ত্রী কামরুল ইসলামের ভাগ্নে আহমেদ জোবায়েরের নামে ৯৩ শতাংশ শেয়ার ছিল। ব্যবসায়িক ও পারিবারিক সূত্রের তথ্য, এর মধ্যে ৯০ শতাংশ শেয়ার কামরুল ইসলামের হলেও কাগজে কলমে তা ছিল আহমেদ জোবায়েরের নামে। অন্য অংশীদারদের মধ্যে কামরুল ইসলামের ভাই মোরশেদুল ইসলামের ৩ শতাংশ এবং নিয়াজ মোরশেদ ও তুষার আবদুল্লাহর ২ শতাংশ করে শেয়ার ছিল। এরপর দেশের অন্যতম শীর্ষ ব্যবসায়ী গোষ্ঠী সিটি গ্রুপ সময় টেলিভিশনে ৬৫ কোটি টাকা বিনিয়োগ করে। তাদের কাছে ৭৫ শতাংশ শেয়ার ছেড়ে দেওয়া হয়। তবে ব্যবস্থাপনার নিয়ন্ত্রণ জোবায়েরের মাধ্যমে মন্ত্রী কামরুলের পরিবারের কাছে থেকে যায়। পরে তুষার আবদুল্লাহ সময় টিভি ছেড়ে যান।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

সময় টিভির সম্প্রচার নিয়ে আবেদনের নিষ্পত্তি
- আপলোড সময় : ০২-০৯-২০২৪ ০১:২৩:৩৮ অপরাহ্ন
- আপডেট সময় : ০২-০৯-২০২৪ ০১:২৩:৩৮ অপরাহ্ন


কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ