নিত্যপণ্যের সরবরাহ বাড়ায় রাজধানীর বাজারগুলোতে সপ্তাহের ব্যবধানে সব ধরনের সবজি ও মাছের দাম স্থিতিশীল রয়েছে। তবে এতে স্বস্তি ফেরেনি ক্রেতাদের মনে। একদিকে নতুন সরকারের কাছে নিত্যপণ্যের দাম কমার প্রত্যাশা পুরোপুরি বাস্তবায়ন না হওয়া এবং অন্যদিকে পণ্যের সরবরাহে সমস্যা পরিলক্ষিত হওয়ার কারণে দাম বৃদ্ধির সম্ভাবনা থাকায় জনমনে বাজার পরিস্থিতি নিয়ে ফের শঙ্কা দেখা দিচ্ছে।
ক্রেতাদের ভাষ্য, শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর এক শ্রেণির পুলিশ ও রাজনৈতিক কর্মীদের দ্বারা পথে পথে পণ্য পরিবহণ থেকে চাঁদাবাজি বন্ধ হওয়ার খবর শোনা গিয়েছিলো। এতে ২/৩ দিন পণ্যের দাম কিছুটা কমেও এসেছিলো। কিন্তু গত কয়েকদিন ধরে আবার বাজার অস্থির হয়ে উঠেছে। ফলে বাজার পরিস্থিতি নিয়ে সন্দেহ দেখা দিয়েছে। তবে বিক্রেতারা জানিয়েছেন, এখনো পণ্য পরিবহণ পুরোপুরি স্বাভাবিক না হওয়ায় এবং সরবরাহ চেইনে সমস্যা বিদ্যমান থাকায় পণ্যের দাম কমছে না। বাজারগুলোতে ব্রয়লার মুরগি কেজিতে ১০ টাকা কমে ১৬০ থেকে ১৬৫ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। তবে গত সপ্তাহের চেয়ে দাম বৃদ্ধি পেয়ে কাঁচামরিচ ৩৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। গতকাল শুক্রবার বেশ কয়েকিট বাজার ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র। মিরপুর শেওড়াপাড়া এলাকার তরকারি বিক্রেতা মো. শাহজাহান মিয়া বলেন, ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকায় ১ পাল্লা (৫ কেজি) মরিচ কিনে এনে ৩৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেও চালান থাকে না। আর বেশির ভাগ ক্রেতা ১০ থেকে ২০ টাকার কাঁচামরিচ কিনতে আসেন। এতে করে লাভ হয় না। তিনি বলেন, অনেক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীই দাম বাড়তি থাকার কারণে মরিচ বিক্রি করছেন না। আর ১ পাল্লা মরিচ সারা দিনে বিক্রিও হয় না। সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে বেশিরভাগ সবজির দাম স্থিতিশীল রয়েছে। বাজারগুলোতে গ্রীষ্মকালীন সবজি কচুরমুখী ৭০ থেকে ৮০ টাকা, বেগুন প্রতি কেজি ৬০ থেকে ৮০ টাকা, করলা ৮০ টাকা, কাঁকরোল ৮০ টাকা, পটল ৫০ টাকা, ঢেঁড়স ৫০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, প্রতি পিস লাউ বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা, পেঁপে প্রতি কেজি ৪০ টাকা, ধুন্দল ৫০ থেকে ৬০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, কচুর লতি ৮০ টাকা, ঝিঙা ৬০ টাকা ও শসা ৪০ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। বাজারগুলোতে ফুলকপি ৫০ থেকে ৬০ টাকা পিস, পাকা টমেটো প্রকারভেদে ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা ও গাজর ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। এসব বাজারে লেবুর হালি ১৫ থেকে ৩০ টাকা, ধনেপাতা ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। কলা হালি বিক্রি হয়েছে ৪০ টাকা। আর মিষ্টি কুমড়ার কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা। এছাড়া বাজারগুলোতে লালশাক ১৫ টাকা আঁটি, লাউশাক ৪০ টাকা, মুলাশাক ১৫ টাকা, পালংশাক ১৫ থেকে ২০ টাকা, কলমিশাক ১০ টাকা, পুঁইশাক ৩০ টাকা আঁটি দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে।
বাজারগুলোতে সপ্তাহের ব্যবধানে দেশি পেঁয়াজ ও আলু কেজিতে ৫ টাকা কমে যথাক্রমে ১২০ ও ৫৫ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। এসব বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ১০ টাকা কমে ব্রয়লার মুরগি ১৬০ থেকে ১৬৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। গত সপ্তাহে ব্রয়লার ১৬৫ থেকে ১৭৫ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। বাজারগুলোতে সোনালি মুরগিও কেজিতে ২০ টাকা কমে ২৫০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। সোনালি হাইব্রিড ২২০ থেকে ২৩০ টাকা, দেশি মুরগি ৫৫০ টাকা, লেয়ার লাল মুরগি ৩১০ টাকা ও সাদা লেয়ার ৩০০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। এসব বাজারে গরুর মাংস কেজি প্রতি ৬৫০ থেকে ৭৮০ টাকা, গরুর কলিজা ৭৮০ টাকা, গরুর মাথার মাংস ৪৫০ টাকা, গরুর বট ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা ও খাসির মাংস কেজি প্রতি ১ হাজার ১৫০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। বাজারগুলোতে এক ডজন লাল ডিম বিক্রি হয়েছে ১৬০ টাকায়, হাঁসের ডিম ১৮০ টাকায়, দেশি মুরগির ডিমের হালি ৮৫ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে। সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারগুলোতে ৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ মাছ কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৯০০ থেকে ১ হাজার ১০০ টাকা ও ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রামের মাছ ১ হাজার ৪০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। এক কেজি শিং মাছ চাষের (আকারভেদে) বিক্রি হয়েছে ৩৫০ থেকে ৫৫০ টাকায়, প্রতি কেজি রুই মাছের দাম বেড়ে (আকারভেদে) ৩৫০ থেকে ৫০০ টাকায়, দেশি মাগুর মাছ ৮০০ থেকে ১ হাজার ১০০ টাকা, মৃগেল ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকায়, চাষের পাঙাস ১৯০ থেকে ২২০ টাকায়, চিংড়ি প্রতি কেজি ৮০০ থেকে ১ হাজার ৪০০ টাকায়, বোয়াল মাছ প্রতি কেজি ৫০০ থেকে ৮০০ টাকায়, কাতল ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায়, পোয়া মাছ ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকায়, পাবদা মাছ ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকায়, তেলাপিয়া মাছ ২২০ টাকায়, চাষের কই মাছ ২১০ থেকে ২২০ টাকায়, মলা ৬০০ টাকা, বাতাসি টেংরা ১ হাজার ৩০০ টাকায়, টেংরা মাছ ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, কাচকি মাছ ৫০০ টাকায়, পাঁচ মিশালি মাছ ২২০ টাকায়, রুপচাঁদা ১ হাজার ২০০ টাকা, বাইম মাছ ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৪০০ টাকা, দেশি কই মাছ ১ হাজার ২০০ টাকা, সোল মাছ ৬০০ থেকে ৯০০ টাকা, আইড় মাছ ৬৫০ থেকে ৮০০ টাকা, বেলে মাছ ৮০০ টাকা ও কাইকলা মাছ ৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। এসব বাজারে ৫ কেজি সোয়াবিন তেল ৮১৮ টাকা, দেশি মশুর ডাল ১৪০ টাকা, মিনিকেট চাল ৭৩ টাকা, নাজিরশাইল ৭৫ থেকে ৮০ টাকা, রসুন ২২০ টাকা ও আদা ২৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata
ক্রেতা-বিক্রেতার মত এখনো পণ্য পরিবহণ পুরোপুরি স্বাভাবিক না হওয়ায় এবং সরবরাহ চেইনে সমস্যা বিদ্যমান থাকায় পণ্যের দাম কমছে না
সবজির দাম স্থিতিশীল হলেও স্বস্তিতে নেই ক্রেতা
- আপলোড সময় : ১৭-০৮-২০২৪ ১২:৫২:৫১ পূর্বাহ্ন
- আপডেট সময় : ১৭-০৮-২০২৪ ১২:৫২:৫১ পূর্বাহ্ন
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ